শোয়েব সাম্য সিদ্দিক
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত আজ এক অভূতপূর্ব রূপান্তরের পথে। আমরা দেখতে পাই, প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে এআই হয়ে উঠেছে এই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। ২০২৪ সালে সংসদে পাস হওয়া পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিটাল ব্যাংক গাইডলাইন শাখাহীন অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিংয়ের নতুন কাঠামো তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে জরুরি হয়ে পড়েছে গ্রাহক যাচাই, সাইবার সুরক্ষা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহারের। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, এআই এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং ব্যাংকগুলোর টিকে থাকার অন্যতম শর্ত।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটি ৪৪ লাখে, যার অর্ধেকের বেশি নারী গ্রাহক। যেহেতু এটি নারীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বড় অগ্রগতি, সেহেতু বলা যায় এজেন্ট ব্যাংকিং শুধু আর্থিক সেবার বিকেন্দ্রীকরণই ঘটাচ্ছে না, বরং নারীর ক্ষমতায়নের পথও প্রশস্ত করছে। একইভাবে, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস খাতে লেনদেনের পরিমাণ এক বছরে ২৮% বেড়েছে, যা মোটাদাগে বলতে গেলে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনীতিকে নতুন প্রাণ দিচ্ছে।
মূলকথা হলো, এআই এখন ব্যাংক ও এমএফএস খাতে অপরিহার্য হাতিয়ার। এটি ট্রানজেকশন লেভেল রিস্ক স্কোরিং, বটচালিত গ্রাহকসেবা এবং জালিয়াতি শনাক্তকরণের মাধ্যমে প্রতিটি লেনদেন রিয়েল টাইমে যাচাই করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে যেখানে মানুষের পক্ষে কোটি কোটি লেনদেন নজরদারি করা সম্ভব নয়, সেখানে এআই তা দক্ষভাবে করছে, যা গ্রাহকের আস্থা বহুগুণে বাড়িয়ে তুলছে।
সন্দেহ নেই যে এআইচালিত জালিয়াতি প্রতিরোধ ব্যাংকিং খাতে আস্থার নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। আগে যেখানে অনেক জালিয়াতি দীর্ঘ সময় পর ধরা পড়ত, এখন তাৎক্ষণিকভাবে অস্বাভাবিক কার্যকলাপ শনাক্ত হচ্ছে। যেমন অল্প সময়ে একাধিক বড় লেনদেন, হঠাৎ ভিন্ন লোকেশনে লেনদেন শুরু হওয়া কিংবা অস্বাভাবিক প্যাটার্ন দেখা গেলে এআই সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক সংকেত দিচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, এই পরিবর্তন গ্রাহকদের ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে আস্থাশীল করছে এবং ব্যাংকিং খাতকে আরও স্থিতিশীল করছে।
বাস্তবতা হলো, এআই নতুন গ্রাহক অনবোর্ডিং প্রক্রিয়াকেও সহজ করেছে। ফেস রিকগনিশন, স্বয়ংক্রিয় ইকে ওয়াই সি যাচাই, আচরণভিত্তিক অফার সবকিছুই এখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক এবং দ্রুততর। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে ব্যাংকিং খাত এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি গ্রাহকবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক।
প্রসঙ্গত বলা যায়, দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ইতিমধ্যেই এআইকে গ্রহণ করেছে। যেমন ব্র্যাক ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআইচালিত কাস্টমার সাপোর্ট যুক্ত করেছে, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে রোবোটিক প্রসেস অটোমেশন এনেছে, ইসলামী ব্যাংক ইকে ওয়াই সি প্রক্রিয়ায় ফেস ম্যাচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, সোনালী ব্যাংক চালু করেছে আধুনিক সোনালী ই-ওয়ালেট এবং বিকাশ তাদের মেন্যুবারে যুক্ত করেছে এআইচালিত ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট AVA। এগুলো প্রমাণ করে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য ব্যাংকগুলোর জন্য এআই এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
তবে মনে রাখা দরকার, উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বহুগুণে বাড়ছে। ব্যাংকিং যত প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছে, প্রতারকেরাও তত উন্নত কৌশল নিচ্ছে। আগে প্রতারণা সীমাবদ্ধ ছিল জাল স্বাক্ষর বা ভুয়া কাগজে, এখন তা রূপ নিয়েছে সাইবার আক্রমণে। ফিশিং ই-মেইল, ম্যালওয়্যার, ডেটা ব্রিচ কিংবা সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য চুরি হচ্ছে। এমনকি, এআইচালিত প্রতারণাও দেখা দিচ্ছে, যেমন ডিপফেক দিয়ে মুখ নকল, ভুয়া ভয়েস কল, কিংবা বট ব্যবহার করে একসঙ্গে হাজারো ভুয়া লেনদেন। এই প্রেক্ষাপটে জরুরি হয়ে পড়েছে কঠোর সাইবার সুরক্ষা।
আমরা দেখতে পাই যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সব ব্যাংকের জন্য নিয়মিত আইটি অডিট, লগ মনিটরিং ও ইনসিডেন্ট রেসপন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মানুষের পক্ষে যেখানে হাজারো লগ ফাইল বা কোটি কোটি লেনদেন পর্যবেক্ষণ করা অসম্ভব, সেখানে এআই মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত শিখছে এবং নতুন হুমকি শনাক্ত করছে। উপসংহার দাঁড়ায় যে এই প্রযুক্তিই এখন ব্যাংকিং সাইবার নিরাপত্তার প্রথম প্রতিরক্ষা।
সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আস্থায়। আগে অনেকে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে দ্বিধায় থাকলেও এখন রিয়েল টাইম পর্যবেক্ষণ ও দ্রুত প্রতিরোধ ব্যবস্থা দেখে আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন। এর ফলে ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল হচ্ছে, আর্থিক অপরাধ কমছে এবং গ্রাহকেরা নিশ্চিন্তে ডিজিটাল লেনদেনে যুক্ত হচ্ছেন। নিঃসন্দেহে বলা যায়, এআই এখন ব্যাংকিং টিকে থাকার মূল ভিত্তি।
এআইকে চাকরির প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং মানুষের দক্ষতার সহযাত্রী হিসেবে দেখতে হবে। ইতিহাস বলে প্রতিটি শিল্পবিপ্লবেই ধারণা ছিল প্রযুক্তি কাজ কেড়ে নেবে কিন্তু বাস্তবে নতুন সুযোগই তৈরি হয়েছে। একইভাবে, ব্যাংকিং খাতে এআই রুটিন কাজ দ্রুত করছে, ফলে মানবকর্মীরা মনোযোগ দিচ্ছেন কৌশলগত সিদ্ধান্ত, নতুন সেবা উদ্ভাবন ও গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নয়নে। এতে অপারেশনাল খরচ যেমন কমছে, তেমনি সেবার গতি বাড়ছে। আমরা দেখতে পাই, শহরের পাশাপাশি প্রান্তিক ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যেও ব্যাংকিং সেবার গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা বেড়েছে।
তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, গ্রাহকের আস্থা বজায় রাখতে ডেটা সুরক্ষা অপরিহার্য। এআই যত বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে, তত বেশি গ্রাহকের ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্য সিস্টেমে যুক্ত হচ্ছে। সুতরাং, কঠোর নীতি, নিয়মিত অডিট এবং উন্নত এনক্রিপশন প্রযুক্তি প্রয়োগ এখন সময়ের দাবি। শেষ বিচারে বলা যায়, এআইচালিত ব্যাংকিং কেবল শহুরে জনগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সবশেষে বলা যায়, সঠিক নীতি, প্রশিক্ষণ ও সুরক্ষার মাধ্যমে এআই শুধু ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করবে না, বরং ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলে বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে।
লেখক: ব্যাংকার ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত আজ এক অভূতপূর্ব রূপান্তরের পথে। আমরা দেখতে পাই, প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে এআই হয়ে উঠেছে এই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। ২০২৪ সালে সংসদে পাস হওয়া পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিটাল ব্যাংক গাইডলাইন শাখাহীন অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিংয়ের নতুন কাঠামো তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে জরুরি হয়ে পড়েছে গ্রাহক যাচাই, সাইবার সুরক্ষা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় এআই ব্যবহারের। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, এআই এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং ব্যাংকগুলোর টিকে থাকার অন্যতম শর্ত।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটি ৪৪ লাখে, যার অর্ধেকের বেশি নারী গ্রাহক। যেহেতু এটি নারীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বড় অগ্রগতি, সেহেতু বলা যায় এজেন্ট ব্যাংকিং শুধু আর্থিক সেবার বিকেন্দ্রীকরণই ঘটাচ্ছে না, বরং নারীর ক্ষমতায়নের পথও প্রশস্ত করছে। একইভাবে, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস খাতে লেনদেনের পরিমাণ এক বছরে ২৮% বেড়েছে, যা মোটাদাগে বলতে গেলে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনীতিকে নতুন প্রাণ দিচ্ছে।
মূলকথা হলো, এআই এখন ব্যাংক ও এমএফএস খাতে অপরিহার্য হাতিয়ার। এটি ট্রানজেকশন লেভেল রিস্ক স্কোরিং, বটচালিত গ্রাহকসেবা এবং জালিয়াতি শনাক্তকরণের মাধ্যমে প্রতিটি লেনদেন রিয়েল টাইমে যাচাই করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে যেখানে মানুষের পক্ষে কোটি কোটি লেনদেন নজরদারি করা সম্ভব নয়, সেখানে এআই তা দক্ষভাবে করছে, যা গ্রাহকের আস্থা বহুগুণে বাড়িয়ে তুলছে।
সন্দেহ নেই যে এআইচালিত জালিয়াতি প্রতিরোধ ব্যাংকিং খাতে আস্থার নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। আগে যেখানে অনেক জালিয়াতি দীর্ঘ সময় পর ধরা পড়ত, এখন তাৎক্ষণিকভাবে অস্বাভাবিক কার্যকলাপ শনাক্ত হচ্ছে। যেমন অল্প সময়ে একাধিক বড় লেনদেন, হঠাৎ ভিন্ন লোকেশনে লেনদেন শুরু হওয়া কিংবা অস্বাভাবিক প্যাটার্ন দেখা গেলে এআই সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক সংকেত দিচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, এই পরিবর্তন গ্রাহকদের ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে আস্থাশীল করছে এবং ব্যাংকিং খাতকে আরও স্থিতিশীল করছে।
বাস্তবতা হলো, এআই নতুন গ্রাহক অনবোর্ডিং প্রক্রিয়াকেও সহজ করেছে। ফেস রিকগনিশন, স্বয়ংক্রিয় ইকে ওয়াই সি যাচাই, আচরণভিত্তিক অফার সবকিছুই এখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক এবং দ্রুততর। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে ব্যাংকিং খাত এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি গ্রাহকবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক।
প্রসঙ্গত বলা যায়, দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ইতিমধ্যেই এআইকে গ্রহণ করেছে। যেমন ব্র্যাক ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআইচালিত কাস্টমার সাপোর্ট যুক্ত করেছে, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে রোবোটিক প্রসেস অটোমেশন এনেছে, ইসলামী ব্যাংক ইকে ওয়াই সি প্রক্রিয়ায় ফেস ম্যাচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, সোনালী ব্যাংক চালু করেছে আধুনিক সোনালী ই-ওয়ালেট এবং বিকাশ তাদের মেন্যুবারে যুক্ত করেছে এআইচালিত ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট AVA। এগুলো প্রমাণ করে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য ব্যাংকগুলোর জন্য এআই এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
তবে মনে রাখা দরকার, উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বহুগুণে বাড়ছে। ব্যাংকিং যত প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছে, প্রতারকেরাও তত উন্নত কৌশল নিচ্ছে। আগে প্রতারণা সীমাবদ্ধ ছিল জাল স্বাক্ষর বা ভুয়া কাগজে, এখন তা রূপ নিয়েছে সাইবার আক্রমণে। ফিশিং ই-মেইল, ম্যালওয়্যার, ডেটা ব্রিচ কিংবা সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য চুরি হচ্ছে। এমনকি, এআইচালিত প্রতারণাও দেখা দিচ্ছে, যেমন ডিপফেক দিয়ে মুখ নকল, ভুয়া ভয়েস কল, কিংবা বট ব্যবহার করে একসঙ্গে হাজারো ভুয়া লেনদেন। এই প্রেক্ষাপটে জরুরি হয়ে পড়েছে কঠোর সাইবার সুরক্ষা।
আমরা দেখতে পাই যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সব ব্যাংকের জন্য নিয়মিত আইটি অডিট, লগ মনিটরিং ও ইনসিডেন্ট রেসপন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মানুষের পক্ষে যেখানে হাজারো লগ ফাইল বা কোটি কোটি লেনদেন পর্যবেক্ষণ করা অসম্ভব, সেখানে এআই মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত শিখছে এবং নতুন হুমকি শনাক্ত করছে। উপসংহার দাঁড়ায় যে এই প্রযুক্তিই এখন ব্যাংকিং সাইবার নিরাপত্তার প্রথম প্রতিরক্ষা।
সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আস্থায়। আগে অনেকে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে দ্বিধায় থাকলেও এখন রিয়েল টাইম পর্যবেক্ষণ ও দ্রুত প্রতিরোধ ব্যবস্থা দেখে আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন। এর ফলে ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল হচ্ছে, আর্থিক অপরাধ কমছে এবং গ্রাহকেরা নিশ্চিন্তে ডিজিটাল লেনদেনে যুক্ত হচ্ছেন। নিঃসন্দেহে বলা যায়, এআই এখন ব্যাংকিং টিকে থাকার মূল ভিত্তি।
এআইকে চাকরির প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং মানুষের দক্ষতার সহযাত্রী হিসেবে দেখতে হবে। ইতিহাস বলে প্রতিটি শিল্পবিপ্লবেই ধারণা ছিল প্রযুক্তি কাজ কেড়ে নেবে কিন্তু বাস্তবে নতুন সুযোগই তৈরি হয়েছে। একইভাবে, ব্যাংকিং খাতে এআই রুটিন কাজ দ্রুত করছে, ফলে মানবকর্মীরা মনোযোগ দিচ্ছেন কৌশলগত সিদ্ধান্ত, নতুন সেবা উদ্ভাবন ও গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নয়নে। এতে অপারেশনাল খরচ যেমন কমছে, তেমনি সেবার গতি বাড়ছে। আমরা দেখতে পাই, শহরের পাশাপাশি প্রান্তিক ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যেও ব্যাংকিং সেবার গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা বেড়েছে।
তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, গ্রাহকের আস্থা বজায় রাখতে ডেটা সুরক্ষা অপরিহার্য। এআই যত বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে, তত বেশি গ্রাহকের ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্য সিস্টেমে যুক্ত হচ্ছে। সুতরাং, কঠোর নীতি, নিয়মিত অডিট এবং উন্নত এনক্রিপশন প্রযুক্তি প্রয়োগ এখন সময়ের দাবি। শেষ বিচারে বলা যায়, এআইচালিত ব্যাংকিং কেবল শহুরে জনগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সবশেষে বলা যায়, সঠিক নীতি, প্রশিক্ষণ ও সুরক্ষার মাধ্যমে এআই শুধু ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করবে না, বরং ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলে বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে।
লেখক: ব্যাংকার ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
দেশে অনেক ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু সবকিছুই পুঁজিবাদের দুঃশাসনের অধীনেই; বাস্তবতা হচ্ছে, একমাত্র ক্ষমতা-বদল ভিন্ন তেমন কোনো রদবদল ঘটেনি। সবই আগের নিয়মে বহাল রয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে আরও অবনতি লক্ষ করা যাচ্ছে। বরং বলা যায়, পুঁজিবাদের চেহারার আরও উন্মোচন ঘটেছে। তালেবান বিতাড়নের নামে আফগানিস্তান দখল করা হয়েছে, কি
২ ঘণ্টা আগেএকটি দেশের তরুণ প্রজন্ম হলো তার ভবিষ্যতের দিকনির্দেশক। তরুণেরা আসলে দেশের প্রাণশক্তি, তাদের হাতে লুকিয়ে থাকে দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। কিন্তু যখন সেই তরুণেরা কাজ পায় না, তখন তাদের স্বপ্নগুলো যেন ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাওয়া নদীর মতো নিঃশেষ হয়ে যায়। শিক্ষিত হয়েও যখন হাতে কাজ নেই, তখন হতাশা, দুশ্চিন্তা আর অস
৩ ঘণ্টা আগেগাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অসুস্থ গরু জবাই করে, সেই গরুর মাংস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। এ কথা শুনে মন খারাপ হয়ে গেল। আমাদের এই দেশে খানিকটা প্রোটিন খাওয়া যে অনেকের কাছেই বিলাসিতা, সে কথা কে না জানে! পৃথিবীর সবচেয়ে কম প্রোটিন খায় যে দেশগুলো, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ফলে, অর্ধেকের কম দামে সুন্দরগঞ্জে
৩ ঘণ্টা আগেরাজনীতির মাঠে অশালীন শব্দ ব্যবহার করলে আর মিথ্যা কথা বললে জনপ্রিয়তা বাড়ে—এ রকম বক্তব্যসহ সহকর্মী জাহাঙ্গীর আলমের লেখা একটি উপসম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবারের আজকের পত্রিকায়। ব্যাপারটা বেশ কৌতূহলোদ্দীপক।
১ দিন আগে