ফারিহা জামান নাবিলা
একটি দেশের তরুণ প্রজন্ম হলো তার ভবিষ্যতের দিকনির্দেশক। তরুণেরা আসলে দেশের প্রাণশক্তি, তাদের হাতে লুকিয়ে থাকে দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। কিন্তু যখন সেই তরুণেরা কাজ পায় না, তখন তাদের স্বপ্নগুলো যেন ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাওয়া নদীর মতো নিঃশেষ হয়ে যায়। শিক্ষিত হয়েও যখন হাতে কাজ নেই, তখন হতাশা, দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতা তাদের ঘিরে ধরে। ফলে পুরো দেশই হারায় সম্ভাবনার আলো।
অস্বীকার করা যাবে না যে বাংলাদেশ আজ তরুণ প্রজন্মের দেশ। বিপুলসংখ্যক তরুণ শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের বাজারে প্রবেশ করছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেই সুযোগ আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। শিক্ষিত তরুণেরাও চাকরি পাচ্ছে না। কারণ, তাদের শিক্ষা ও শ্রমবাজারের চাহিদার মধ্যে ফারাক তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, গার্মেন্টস, কৃষি, টেকনিক্যাল খাতে আবার দক্ষ জনবল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে একদিকে বেকারত্ব বাড়ছে, অন্যদিকে কর্মী সংকটও দেখা দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্যমতে, বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ১১ শতাংশ, যা মোট বেকারত্বের দ্বিগুণ। প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে, কিন্তু নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে তার তুলনায় অনেক কম। অন্যদিকে, আবার দক্ষ শ্রমিকও পাওয়া যায় না। এর মানে, সমস্যা শুধু চাকরির অভাব নয়, বরং দক্ষতার ঘাটতি ও বাজারের চাহিদার সঙ্গে অমিল।
বাংলাদেশে বেকারত্বের অনেক কারণ রয়েছে, তার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম বাস্তব কাজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ডিগ্রিধারী অনেক, কিন্তু টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল দক্ষতাসম্পন্ন তরুণ কম। দ্রুত প্রযুক্তি পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারায় অনেকেই অযোগ্য হয়ে পড়েন। সরকারি ও বেসরকারি খাতে পর্যাপ্ত নতুন চাকরি তৈরি হচ্ছে না। তরুণদের মধ্যে অনেকের দৃষ্টি শুধু সরকারি চাকরির ওপর, অন্য সুযোগগুলোকে তারা অবমূল্যায়ন করে। নতুন চাকরিপ্রার্থীদের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়, কিন্তু তারা সুযোগ না পেয়ে পিছিয়ে যায়।
আমরা যদি এই বেকারত্ব দূর করতে চাই তাহলে প্রতিটি তরুণকে বাজারোপযোগী দক্ষতায় প্রশিক্ষিত করতে হবে। তরুণদের ব্যবসা শুরু করার জন্য সহজ ঋণ, ফান্ড এবং ট্রেনিং দিতে হবে। উচ্চশিক্ষার সঙ্গে শিল্প, প্রযুক্তি ও কৃষি খাতের চাহিদার মিল তৈরি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়, ট্রেনিং সেন্টার ও শিল্পকারখানাকে একসঙ্গে যুক্ত করতে হবে। দক্ষ জনবল তৈরি করে বিদেশে পাঠাতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দরকার।
শুধু চাকরি নয়, ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সিং বা স্বনির্ভরতার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সুদমুক্ত ঋণ, স্টার্টআপ ফান্ড ও বিশেষ সুবিধা করে দেওয়া দরকার। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে ইন্ডাস্ট্রি-ইউনিভার্সিটি লিঙ্কেজ তৈরি করা। বিদেশে চাকরির জন্য চাহিদাসম্পন্ন দক্ষতার ট্রেনিং চালু করা। ডিজিটাল ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং এবং ই-কমার্সকে জাতীয়ভাবে প্রমোট করা। সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে তরুণদের নতুন পেশায় আগ্রহী করা।
বেকারত্ব ও দক্ষতার সংকট শুধু ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, এটি জাতীয় উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা। যদি তরুণদের যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে তারা হবে বাংলাদেশের অগ্রগতির চালিকাশক্তি। সরকার, সমাজ ও পরিবার—সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। তরুণদের হাতে কাজ দিতে হবে, স্বপ্ন দিতে হবে। তাহলেই আজকের সংকট একদিন সম্ভাবনায় রূপ নেবে।
লেখক: গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
একটি দেশের তরুণ প্রজন্ম হলো তার ভবিষ্যতের দিকনির্দেশক। তরুণেরা আসলে দেশের প্রাণশক্তি, তাদের হাতে লুকিয়ে থাকে দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। কিন্তু যখন সেই তরুণেরা কাজ পায় না, তখন তাদের স্বপ্নগুলো যেন ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাওয়া নদীর মতো নিঃশেষ হয়ে যায়। শিক্ষিত হয়েও যখন হাতে কাজ নেই, তখন হতাশা, দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতা তাদের ঘিরে ধরে। ফলে পুরো দেশই হারায় সম্ভাবনার আলো।
অস্বীকার করা যাবে না যে বাংলাদেশ আজ তরুণ প্রজন্মের দেশ। বিপুলসংখ্যক তরুণ শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের বাজারে প্রবেশ করছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেই সুযোগ আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। শিক্ষিত তরুণেরাও চাকরি পাচ্ছে না। কারণ, তাদের শিক্ষা ও শ্রমবাজারের চাহিদার মধ্যে ফারাক তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, গার্মেন্টস, কৃষি, টেকনিক্যাল খাতে আবার দক্ষ জনবল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে একদিকে বেকারত্ব বাড়ছে, অন্যদিকে কর্মী সংকটও দেখা দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্যমতে, বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ১১ শতাংশ, যা মোট বেকারত্বের দ্বিগুণ। প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে, কিন্তু নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে তার তুলনায় অনেক কম। অন্যদিকে, আবার দক্ষ শ্রমিকও পাওয়া যায় না। এর মানে, সমস্যা শুধু চাকরির অভাব নয়, বরং দক্ষতার ঘাটতি ও বাজারের চাহিদার সঙ্গে অমিল।
বাংলাদেশে বেকারত্বের অনেক কারণ রয়েছে, তার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম বাস্তব কাজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ডিগ্রিধারী অনেক, কিন্তু টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল দক্ষতাসম্পন্ন তরুণ কম। দ্রুত প্রযুক্তি পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারায় অনেকেই অযোগ্য হয়ে পড়েন। সরকারি ও বেসরকারি খাতে পর্যাপ্ত নতুন চাকরি তৈরি হচ্ছে না। তরুণদের মধ্যে অনেকের দৃষ্টি শুধু সরকারি চাকরির ওপর, অন্য সুযোগগুলোকে তারা অবমূল্যায়ন করে। নতুন চাকরিপ্রার্থীদের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়, কিন্তু তারা সুযোগ না পেয়ে পিছিয়ে যায়।
আমরা যদি এই বেকারত্ব দূর করতে চাই তাহলে প্রতিটি তরুণকে বাজারোপযোগী দক্ষতায় প্রশিক্ষিত করতে হবে। তরুণদের ব্যবসা শুরু করার জন্য সহজ ঋণ, ফান্ড এবং ট্রেনিং দিতে হবে। উচ্চশিক্ষার সঙ্গে শিল্প, প্রযুক্তি ও কৃষি খাতের চাহিদার মিল তৈরি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়, ট্রেনিং সেন্টার ও শিল্পকারখানাকে একসঙ্গে যুক্ত করতে হবে। দক্ষ জনবল তৈরি করে বিদেশে পাঠাতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দরকার।
শুধু চাকরি নয়, ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সিং বা স্বনির্ভরতার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সুদমুক্ত ঋণ, স্টার্টআপ ফান্ড ও বিশেষ সুবিধা করে দেওয়া দরকার। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে ইন্ডাস্ট্রি-ইউনিভার্সিটি লিঙ্কেজ তৈরি করা। বিদেশে চাকরির জন্য চাহিদাসম্পন্ন দক্ষতার ট্রেনিং চালু করা। ডিজিটাল ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং এবং ই-কমার্সকে জাতীয়ভাবে প্রমোট করা। সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে তরুণদের নতুন পেশায় আগ্রহী করা।
বেকারত্ব ও দক্ষতার সংকট শুধু ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, এটি জাতীয় উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা। যদি তরুণদের যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে তারা হবে বাংলাদেশের অগ্রগতির চালিকাশক্তি। সরকার, সমাজ ও পরিবার—সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। তরুণদের হাতে কাজ দিতে হবে, স্বপ্ন দিতে হবে। তাহলেই আজকের সংকট একদিন সম্ভাবনায় রূপ নেবে।
লেখক: গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
দেশে অনেক ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু সবকিছুই পুঁজিবাদের দুঃশাসনের অধীনেই; বাস্তবতা হচ্ছে, একমাত্র ক্ষমতা-বদল ভিন্ন তেমন কোনো রদবদল ঘটেনি। সবই আগের নিয়মে বহাল রয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে আরও অবনতি লক্ষ করা যাচ্ছে। বরং বলা যায়, পুঁজিবাদের চেহারার আরও উন্মোচন ঘটেছে। তালেবান বিতাড়নের নামে আফগানিস্তান দখল করা হয়েছে, কি
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত আজ এক অভূতপূর্ব রূপান্তরের পথে। আমরা দেখতে পাই, প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে এআই হয়ে উঠেছে এই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। ২০২৪ সালে সংসদে পাস হওয়া পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিটাল ব্যাংক গাইডলাইন শাখাহীন অ্যাপনির্ভর ব্যাংকিংয়ের নতুন কাঠামো তৈরি করেছ
২ ঘণ্টা আগেগাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অসুস্থ গরু জবাই করে, সেই গরুর মাংস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। এ কথা শুনে মন খারাপ হয়ে গেল। আমাদের এই দেশে খানিকটা প্রোটিন খাওয়া যে অনেকের কাছেই বিলাসিতা, সে কথা কে না জানে! পৃথিবীর সবচেয়ে কম প্রোটিন খায় যে দেশগুলো, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ফলে, অর্ধেকের কম দামে সুন্দরগঞ্জে
৩ ঘণ্টা আগেরাজনীতির মাঠে অশালীন শব্দ ব্যবহার করলে আর মিথ্যা কথা বললে জনপ্রিয়তা বাড়ে—এ রকম বক্তব্যসহ সহকর্মী জাহাঙ্গীর আলমের লেখা একটি উপসম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবারের আজকের পত্রিকায়। ব্যাপারটা বেশ কৌতূহলোদ্দীপক।
১ দিন আগে