ড. মো. গোলাম ছারোয়ার
ডেঙ্গু হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক তালিকাভুক্ত একটি নেগলেক্টেড ট্রপিক্যাল ডিজিজ। অর্থাৎ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, যারা বিশ্বপরিক্রমায় অনুমিত বাসস্থানের সুবিধায় নিজেদের উপনীত করতে ব্যর্থ, মূলত তাদের রোগ। মশা-মাছির জন্য যে পরিবেশ অনুকূল, নিশ্চিতভাবে বলা যায়, মানুষের জন্য সেই পরিবেশ অনুপযুক্ত। যার অর্থ পরিবেশের দূষণ, পানির ব্যবস্থাপনা, পয়ঃপ্রণালি নিষ্কাশন প্রভৃতি বাংলাদেশের নগরায়ণের নিত্যসঙ্গী। যত সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা রয়েছে, সেগুলোর বর্জ্য ও পানির ব্যবস্থাপনা প্রধানতম সমস্যা। তাই তো সেই সুবিধাটুকু ভেক্টর বা মশা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গেই গ্রহণ করে মনের আনন্দে রোগের জীবাণু বহন ও বিস্তার ঘটিয়ে মানুষের অতি মূল্যবান প্রাণের সংহার করেই চলছে।
এখন মশাবাহিত রোগ আর বর্ষাবেষ্টনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এবং ঢাকার গণ্ডিতেও আবদ্ধ নয়। পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, ডেঙ্গুর ভয়াল থাবায় যে ইতিহাস বিখ্যাত তাণ্ডবলীলার ঘটনা ঘটেছিল, তা ২০২৩ সালে। যেখানে বর্ষা-পরবর্তী সেপ্টেম্বর মাস ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। ওই বছরের এই মাসে সারা বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আক্রান্ত হয়েছিল এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর প্রায় এক-চতুর্থাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল এ মাসে। অক্টোবর মাসও ছিল খুবই ভয়ার্ত। নভেম্বরেও ডেঙ্গুতে একই রকম ভয়াবহতা লক্ষ করা যায়। একইভাবে ২০২৪ সালেও ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আক্রান্ত লক্ষ করা যায় অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে, যার মধ্যে নভেম্বরের কার্ভটি ছিল একেবারে শীর্ষে।
এখন আসি ২০২৫ সালে। এখন পর্যন্ত অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আক্রান্তের স্থান দখল করে রেখেছে। সেপ্টেম্বরেও একইভাবে কার্ভ শুরু হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আরও তিন মাস এই ভয়াল কার্ভ বেড়েই চলবে। এর লাগাম থামানোর যত প্যারামিটার রয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশও যদি সক্রিয়ভাবে কাজ করত, তাহলে এমন নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হতো না। মশকনিধন কার্যক্রমে ব্যবহৃত ব্যবস্থাপনার অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে কীটনাশকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। সার্বিক দিক বিবেচনায় কীটনাশক একটি আপৎকালীন কার্যকর পদ্ধতি। মশক দমনের জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক মশার জীবনচক্রের লার্ভাল স্টেজে লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্ট স্টেজে অ্যাডালটিসাইড প্রয়োগ করা হয়।
যদি সঠিক মাত্রায়, সঠিক সময়ে, সঠিক পদ্ধতিতে বৈজ্ঞানিকভাবে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়, তবে অবশ্যই মশার ঘনত্ব কমবে। আর মশার ঘনত্ব কমলে নিশ্চিতভাবে কমবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ও মৃত্যুর হার। এখন প্রশ্ন হলো, কীটনাশকের গুণগত মান, গুদামজাতকরণ প্রক্রিয়া, প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি, মেয়াদোত্তীর্ণ বিষাক্ত কীটনাশকের পরিবহন ডিসপোজাল পদ্ধতি—সবকিছুই হতে হবে বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করে। একটি কার্যকর আইনের মাধ্যমে এসওপি বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর অনুসরণ করে। এই দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে সর্বমহল থেকে প্রতিধ্বনি উঠেছে প্রয়োগকৃত কীটনাশক কি আসলেই কীটনাশক বা অন্য কিছু? দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হয়তোবা নিজেরাও এই বিষয়টি আঁচ করে থাকবেন। এ বিষয়টি যদি যথাযথভাবে সমাধান করা না হয়, তবে বছরের পর বছর অকার্যকর বা মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা কাঙ্ক্ষিত মাত্রার অ্যাকটিভ ইনগ্রেডেন্ট ও ফর্মুলেন্টবিহীন কীটনাশকের ব্যবহার শুধু মশার সেকেন্ডারি পেস্ট আউট ব্রেকই ঘটাবে না, ভয়াবহভাবে ভেঙে ফেলবে আমাদের প্রকৃতির ভারসাম্যকে। কারণ, যদি সঠিক ও কার্যকর মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ না হয়, তবে টার্গেট পতঙ্গ না মরে মারা যাবে উপকারী কীটপতঙ্গ বা টার্গেট পতঙ্গের শত্রু, যা টার্গেট পতঙ্গের বা ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের দৌরাত্ম্য মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি করবে। এমন কথাও শোনা যায়, যেখানে এই কীটনাশক ক্রয়ের সময় যে নমুনা যাচাই-বাছাই করা হয় এবং মাঠে যে কীটনাশক নিয়মিত প্রয়োগ করা হয়, তার গঠন ও কার্যকারিতার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য থাকার আশঙ্কা রয়েছে। আবার কেনার পর কী প্রক্রিয়ায় তা গুদামজাত করা হয়েছে, তার ওপরও এই কার্যকারিতার হেরফের হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই সকল প্রকার অনিশ্চয়তার অবসান ঘটাতে পারে ব্যবহৃত কীটনাশকের কার্যকরী উপাদানের কার্যকারিতার পরীক্ষা এবং ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
তবে এই পরীক্ষা হতে হবে কোনো অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব থেকে। একই সঙ্গে একই নমুনা একটি বিশেষজ্ঞ টিমের উপস্থিতিতে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সংগ্রহ করে তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে অ্যাক্রিডেটেড ল্যাবে পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে হবে। যত দিন পর্যন্ত এই কার্যকরী উপাদানের সঠিকতার পরিমাপ না করা হবে, তত দিন মশার ঘনত্ব কোনোভাবেই কমানো সম্ভব হবে না বলে অনেকের ধারণা। সম্ভব হবে না মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ও মৃত্যুহার কমানো।
বাংলাদেশের মতো এমন জনবহুল দেশে জনস্বাস্থ্যের গুরুত্ব যেমনভাবে উপেক্ষিত, উপেক্ষিত নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ডামাডোলে মানুষের মৌলিক বিষয়গুলো চাপা পড়ে যায় গুরুত্বের তালিকা থেকে। মনে রাখা প্রয়োজন, প্রতিটি জীবনই অতিগুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরোধযোগ্য কোনো রোগ যদি একটি জীবনও কেড়ে নেয়, তা হবে অনাকাঙ্ক্ষিত। রাষ্ট্রের প্রতিটি দায়িত্বপ্রাপ্তই এর অংশীজন। যারা মারা যাচ্ছে, তারা আমাদের সবারই আপনজন। নিজের স্বজন। কার্যকরী উপাদান পরীক্ষা আরও অন্য কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবহৃত ম্যালাথিয়ন ইতিমধ্যে তার বিষাক্ততার কারণে প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করেছে বলে বিভিন্ন দেশে প্রমাণিত। আমরা জানি যে কোনো বিষাক্ত পদার্থ পেস্টিসাইড হিসেবে একাদিক্রমে পাঁচ বছর ব্যবহৃত হলে তার কার্যকারিতা ও টার্গেট পোকামাকড়ের প্রতিরোধী হয়ে ওঠার মাত্রা কীটনাশকের কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। আমাদের মনে থাকার কথা, ১৯৩৯ সালে যখন পল হ্যারম্যান মুলার ডিডিটি আবিষ্কার করেন, তখন সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। তাই তো ১৯৪৮ সালে তাঁকে মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তাঁর এই জগদ্বিখ্যাত আবিষ্কার মানবজাতির অভিশাপে পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি। যার বিস্তর প্রমাণ মেলে রাসেল কার্সনের সাইলেন্ট স্প্রিং বইটিতে। তাই তো প্রচলিত বিষাক্ত পদার্থের কার্যকরী উপাদান পরীক্ষার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোল উপাদানগুলোর প্রয়োগের ওপর জোর দেওয়ার সময় এসেছে। পরিবেশ ও মানবজাতির সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রচলিত কীটনাশকগুলোর বৈজ্ঞানিক এবং বাস্তবভিত্তিক অ্যানালাইসিস করে তার প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিকল্প নেই।
ডেঙ্গু হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক তালিকাভুক্ত একটি নেগলেক্টেড ট্রপিক্যাল ডিজিজ। অর্থাৎ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, যারা বিশ্বপরিক্রমায় অনুমিত বাসস্থানের সুবিধায় নিজেদের উপনীত করতে ব্যর্থ, মূলত তাদের রোগ। মশা-মাছির জন্য যে পরিবেশ অনুকূল, নিশ্চিতভাবে বলা যায়, মানুষের জন্য সেই পরিবেশ অনুপযুক্ত। যার অর্থ পরিবেশের দূষণ, পানির ব্যবস্থাপনা, পয়ঃপ্রণালি নিষ্কাশন প্রভৃতি বাংলাদেশের নগরায়ণের নিত্যসঙ্গী। যত সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা রয়েছে, সেগুলোর বর্জ্য ও পানির ব্যবস্থাপনা প্রধানতম সমস্যা। তাই তো সেই সুবিধাটুকু ভেক্টর বা মশা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গেই গ্রহণ করে মনের আনন্দে রোগের জীবাণু বহন ও বিস্তার ঘটিয়ে মানুষের অতি মূল্যবান প্রাণের সংহার করেই চলছে।
এখন মশাবাহিত রোগ আর বর্ষাবেষ্টনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এবং ঢাকার গণ্ডিতেও আবদ্ধ নয়। পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, ডেঙ্গুর ভয়াল থাবায় যে ইতিহাস বিখ্যাত তাণ্ডবলীলার ঘটনা ঘটেছিল, তা ২০২৩ সালে। যেখানে বর্ষা-পরবর্তী সেপ্টেম্বর মাস ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। ওই বছরের এই মাসে সারা বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আক্রান্ত হয়েছিল এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর প্রায় এক-চতুর্থাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল এ মাসে। অক্টোবর মাসও ছিল খুবই ভয়ার্ত। নভেম্বরেও ডেঙ্গুতে একই রকম ভয়াবহতা লক্ষ করা যায়। একইভাবে ২০২৪ সালেও ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আক্রান্ত লক্ষ করা যায় অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে, যার মধ্যে নভেম্বরের কার্ভটি ছিল একেবারে শীর্ষে।
এখন আসি ২০২৫ সালে। এখন পর্যন্ত অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আক্রান্তের স্থান দখল করে রেখেছে। সেপ্টেম্বরেও একইভাবে কার্ভ শুরু হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আরও তিন মাস এই ভয়াল কার্ভ বেড়েই চলবে। এর লাগাম থামানোর যত প্যারামিটার রয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশও যদি সক্রিয়ভাবে কাজ করত, তাহলে এমন নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হতো না। মশকনিধন কার্যক্রমে ব্যবহৃত ব্যবস্থাপনার অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে কীটনাশকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। সার্বিক দিক বিবেচনায় কীটনাশক একটি আপৎকালীন কার্যকর পদ্ধতি। মশক দমনের জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক মশার জীবনচক্রের লার্ভাল স্টেজে লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্ট স্টেজে অ্যাডালটিসাইড প্রয়োগ করা হয়।
যদি সঠিক মাত্রায়, সঠিক সময়ে, সঠিক পদ্ধতিতে বৈজ্ঞানিকভাবে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়, তবে অবশ্যই মশার ঘনত্ব কমবে। আর মশার ঘনত্ব কমলে নিশ্চিতভাবে কমবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ও মৃত্যুর হার। এখন প্রশ্ন হলো, কীটনাশকের গুণগত মান, গুদামজাতকরণ প্রক্রিয়া, প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি, মেয়াদোত্তীর্ণ বিষাক্ত কীটনাশকের পরিবহন ডিসপোজাল পদ্ধতি—সবকিছুই হতে হবে বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করে। একটি কার্যকর আইনের মাধ্যমে এসওপি বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর অনুসরণ করে। এই দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে সর্বমহল থেকে প্রতিধ্বনি উঠেছে প্রয়োগকৃত কীটনাশক কি আসলেই কীটনাশক বা অন্য কিছু? দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হয়তোবা নিজেরাও এই বিষয়টি আঁচ করে থাকবেন। এ বিষয়টি যদি যথাযথভাবে সমাধান করা না হয়, তবে বছরের পর বছর অকার্যকর বা মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা কাঙ্ক্ষিত মাত্রার অ্যাকটিভ ইনগ্রেডেন্ট ও ফর্মুলেন্টবিহীন কীটনাশকের ব্যবহার শুধু মশার সেকেন্ডারি পেস্ট আউট ব্রেকই ঘটাবে না, ভয়াবহভাবে ভেঙে ফেলবে আমাদের প্রকৃতির ভারসাম্যকে। কারণ, যদি সঠিক ও কার্যকর মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ না হয়, তবে টার্গেট পতঙ্গ না মরে মারা যাবে উপকারী কীটপতঙ্গ বা টার্গেট পতঙ্গের শত্রু, যা টার্গেট পতঙ্গের বা ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের দৌরাত্ম্য মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি করবে। এমন কথাও শোনা যায়, যেখানে এই কীটনাশক ক্রয়ের সময় যে নমুনা যাচাই-বাছাই করা হয় এবং মাঠে যে কীটনাশক নিয়মিত প্রয়োগ করা হয়, তার গঠন ও কার্যকারিতার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য থাকার আশঙ্কা রয়েছে। আবার কেনার পর কী প্রক্রিয়ায় তা গুদামজাত করা হয়েছে, তার ওপরও এই কার্যকারিতার হেরফের হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই সকল প্রকার অনিশ্চয়তার অবসান ঘটাতে পারে ব্যবহৃত কীটনাশকের কার্যকরী উপাদানের কার্যকারিতার পরীক্ষা এবং ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
তবে এই পরীক্ষা হতে হবে কোনো অ্যাক্রিডেটেড ল্যাব থেকে। একই সঙ্গে একই নমুনা একটি বিশেষজ্ঞ টিমের উপস্থিতিতে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সংগ্রহ করে তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে অ্যাক্রিডেটেড ল্যাবে পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে হবে। যত দিন পর্যন্ত এই কার্যকরী উপাদানের সঠিকতার পরিমাপ না করা হবে, তত দিন মশার ঘনত্ব কোনোভাবেই কমানো সম্ভব হবে না বলে অনেকের ধারণা। সম্ভব হবে না মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ও মৃত্যুহার কমানো।
বাংলাদেশের মতো এমন জনবহুল দেশে জনস্বাস্থ্যের গুরুত্ব যেমনভাবে উপেক্ষিত, উপেক্ষিত নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ডামাডোলে মানুষের মৌলিক বিষয়গুলো চাপা পড়ে যায় গুরুত্বের তালিকা থেকে। মনে রাখা প্রয়োজন, প্রতিটি জীবনই অতিগুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরোধযোগ্য কোনো রোগ যদি একটি জীবনও কেড়ে নেয়, তা হবে অনাকাঙ্ক্ষিত। রাষ্ট্রের প্রতিটি দায়িত্বপ্রাপ্তই এর অংশীজন। যারা মারা যাচ্ছে, তারা আমাদের সবারই আপনজন। নিজের স্বজন। কার্যকরী উপাদান পরীক্ষা আরও অন্য কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবহৃত ম্যালাথিয়ন ইতিমধ্যে তার বিষাক্ততার কারণে প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করেছে বলে বিভিন্ন দেশে প্রমাণিত। আমরা জানি যে কোনো বিষাক্ত পদার্থ পেস্টিসাইড হিসেবে একাদিক্রমে পাঁচ বছর ব্যবহৃত হলে তার কার্যকারিতা ও টার্গেট পোকামাকড়ের প্রতিরোধী হয়ে ওঠার মাত্রা কীটনাশকের কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। আমাদের মনে থাকার কথা, ১৯৩৯ সালে যখন পল হ্যারম্যান মুলার ডিডিটি আবিষ্কার করেন, তখন সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। তাই তো ১৯৪৮ সালে তাঁকে মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তাঁর এই জগদ্বিখ্যাত আবিষ্কার মানবজাতির অভিশাপে পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি। যার বিস্তর প্রমাণ মেলে রাসেল কার্সনের সাইলেন্ট স্প্রিং বইটিতে। তাই তো প্রচলিত বিষাক্ত পদার্থের কার্যকরী উপাদান পরীক্ষার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব বায়োলজিক্যাল কন্ট্রোল উপাদানগুলোর প্রয়োগের ওপর জোর দেওয়ার সময় এসেছে। পরিবেশ ও মানবজাতির সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রচলিত কীটনাশকগুলোর বৈজ্ঞানিক এবং বাস্তবভিত্তিক অ্যানালাইসিস করে তার প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিকল্প নেই।
দিনকয়েক আগে ফেসবুকে একটি স্ক্রিনশটসহ পোস্টে চোখ আটকে যায়। সেখানে এক ফ্রান্সপ্রবাসী বাংলাদেশি লিখেছেন, তিনি ১২ ঘণ্টা উবার চালিয়ে আয় করেছেন ১৬৯ ইউরো—বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২১ হাজার টাকা। এই আয়ে তিনি সন্তুষ্ট এবং জানিয়েছেন—এ জন্যই তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে এসেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেছোট্ট একটা খবর ছাপা হয়েছে ১৮ সেপ্টেম্বরের আজকের পত্রিকার ৬ পৃষ্ঠায়। শিরোনাম, ‘১০ টাকায় ইলিশ বিক্রির ঘোষণা, না পেয়ে ঘেরাও’। খবরটি দেখে প্রথমেই চোখে ভেসে উঠল ক্ষুব্ধ হতদরিদ্র মানুষের অবয়ব। ইলিশ মাছ যে বহু আগেই সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে, সে কথা সবাই জানে।
৩ ঘণ্টা আগেব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত মানবতাবাদী শিক্ষক, শিক্ষা চিন্তক পাওলো ফ্রেইরের (মতান্তরে উচ্চারণ ‘ফ্রেইরি’) শিক্ষাভাবনা বিগত এবং চলমান শতাব্দীতে সারা দুনিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। মানবিক শিক্ষাপ্রেমী ফ্রেইরে মনে করতেন, শিক্ষা হবে মানুষের ক্ষমতায়নের মূল চাবিকাঠি, যার দ্বারা সে নিজেকে...
৩ ঘণ্টা আগেহঠাৎ জ্বলে ওঠা নেপালের জেনারেশন জেড বিদ্রোহ যেমন দ্রুতই থেমে গেছে, তেমনি এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল না। বরং এর অভিঘাত ভবিষ্যতের রাজনীতিকে স্পষ্টভাবে প্রভাবিত করবে। নেপালের সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, প্রতিটি আন্দোলনই রাষ্ট্রকে নতুনভাবে গড়ে তুলেছে।
১ দিন আগে