Ajker Patrika

বঙ্গবন্ধু সেতুতে নির্মাণব্যয়ের চেয়ে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বেশি টোল আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জুন ২০২২, ১৯: ৫৪
বঙ্গবন্ধু সেতুতে নির্মাণব্যয়ের চেয়ে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বেশি টোল আদায়

বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত (মে, ২০২২) টোল আদায়ের পরিমাণ ৭ হাজার ১৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের তুলনায় টোল থেকে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি ১৫ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে। আর একই সময়ে মুক্তারপুর সেতুর টোল আদায় হয়েছে ১৮৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। 

আজ সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকারি দলের এমপি বেনজীর আহমেদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান।

এর আগে ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সংসদ অধিবেশনে সরকারদলীয় এমপি মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পর প্রথম বছরে টোল থেকে আদায় হয়েছিল ৯৯ লাখ টাকা। গত মে পর্যন্ত টোল আদায় হয়েছে ৭ হাজার ১৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আর সেতু নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। টোল আদায়ের অর্থ থেকে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়সহ সেতু কর্তৃপক্ষের অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের পর সেতু নির্বাহে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের ঋণ পরিশোধ করা হয়ে থাকে। তবে, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যাওয়ায় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো থেকে নেওয়া ঋণ সেতু থেকে আদায় করা টোলের মাধ্যমে ২০৩৪ সাল নাগাদ পরিশোধ করা শেষ হবে। 

আজ সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের এমপি এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট স্টাডি (ডিএইচইউটিএস) প্রতিবেদন (২০১০) মতে ঢাকার দুই সিটির অধিভুক্ত এরিয়াতে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ রাস্তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ঢাকা মহানগরীর চারপাশে বৃত্তাকার সুসমন্বিত মহাসড়ক ইনার রিং রোড নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’ 

আজকের পত্রিকা সবশেষ সংবাদ পেতে - এখানে ক্লিক করুন

সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি বেগম লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের ক্ষেত্রে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে আবেদনপত্রের সঙ্গে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ডোপ টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ হলে বা বিরূপ মন্তব্য থাকলে লাইসেন্স নবায়ন বা ইস্যু করা হচ্ছে না।

জাতীয় সম্পর্কিত পড়ুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাংবাদিক সুভাষ চন্দ্র সিংহ ও তাঁর স্ত্রীর ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাংবাদিক ও ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র সিংহ রায়। ছবি: সংগৃহীত
সাংবাদিক ও ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র সিংহ রায়। ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক ও ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র সিংহ রায় ও তাঁর স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মমতা হেনা লাভলীর ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ আজ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম।

সুভাষ চন্দ্র সিংহ ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন দুর্নীতির অভিযোগে চলমান অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তার।

এ প্রেক্ষাপটে সুভাষ চন্দ্র সিংহের চারটি ব্যাংক হিসাবে থাকা ১২ লাখ ১১ হাজার ১১২ টাকা ও মমতা হেনা লাভলীর পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৩০ লাখ ৬২ হাজার ৫৯০ টাকা অবরুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, সুভাষ সিংহ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূতভাবে অর্থ উপার্জন করে সে অর্থ নিজ ও স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবে আনয়নপূর্বক বৈধতা প্রদানের চেষ্টা ও বিদেশে টাকা পাচারের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তাঁরা তাঁদের ব্যাংক হিসাবে থাকা অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর বা স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। এ কারণে এসব হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া আবশ্যক।

এর আগে গত ২০ অক্টোবর এই দুজনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন একই আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রেলের বিভিন্ন স্থাপনায় আটটি নাশকতার চেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রেলের বিভিন্ন স্থাপনায় আটটি নাশকতার চেষ্টা

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঢাকা লকডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রেলের বিভিন্ন স্থাপনায় কমপক্ষে আটটি নাশকতার চেষ্টা চালানো হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা রেলওয়ে জেলায় চারটি, চট্টগ্রাম জেলায় দুটি, সিলেট ও খুলনা রেলওয়ে জেলায় একটি করে মোট আটটি নাশকতাচেষ্টার ঘটনা ঘটে।

এসব ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।

রেলওয়ের নথি থেকে জানা গেছে, ভৈরব রেলওয়ে থানা এলাকায় তিনটি ঘটনায় রেললাইনে টায়ার ও বস্তা জ্বালিয়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহাপুর এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরানো হয়। এরপর রাত সাড়ে ১২টায় দক্ষিণ মির্জানগরে টায়ার জ্বালানো হয়।

খামারহাটি রেলসেতুতে আজ সকাল সাড়ে ৫টায় বস্তা জ্বালিয়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়। প্রতিটি ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত আগুন নেভান। ফলে কোনো ক্ষতি হয়নি।

ঢাকার তেজগাঁও রেলস্টেশনে গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিত্যক্ত লাইনে থাকা নষ্ট কোচে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে কোচের দুটি সিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।

কক্সবাজার রেলস্টেশনের রেললাইনে গতকাল রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে টায়ার জ্বালানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভান। কোনো ক্ষতি হয়নি।

ফেনীর ফাজিলপুরে (লাকসাম রেলওয়ে থানা) গতকাল রাত ৩টার দিকে রেললাইনের পাশে গাছ কেটে রাখা হয়। পরে তা দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয়। ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হয়নি।

আখাউড়ায় দুবলা এলাকার ৩ নম্বর রেলসেতুতে গতকাল রাত ১টা ৪০ মিনিটে কাঠ, প্লাস্টিকের পাইপ ও কেরোসিন দিয়ে আপ ও ডাউন উভয় লাইনে আগুন লাগানো হয়। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাজবাড়ীর পাংশা এলাকায় গতকাল রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে বাবুপাড়া রেলসেতুতে কেরোসিন ঢেলে কাগজে আগুন ধরানোর চেষ্টা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা দুষ্কৃতকারীদের ধাওয়া করেন এবং আগুন নেভান।

এসব ঘটনায় রেল অবকাঠামোর বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের শনাক্তে তদন্ত শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন

দলগুলোর মতবিরোধের বিষয়গুলোতে যে সিদ্ধান্ত দিল অন্তর্বর্তী সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৩
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ছবি: পিআইডি

ঐকমত্য কমিশনের প্রণীত জুলাই সনদে সংবিধানবিষয়ক ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কিছু প্রস্তাবে সামান্য ভিন্নমত রয়েছে। প্রস্তাবগুলোর ক্ষেত্রে মতভিন্নতা খুব গভীর নয় বলে মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার। কেউ সংস্কার সংবিধানে করতে চেয়েছে, কেউ আইনের মাধ্যমে করতে চেয়েছে। কিন্তু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা, নীতি ও লক্ষ্য নিয়ে কারও মধ্যে মতভেদ নেই।

এসব বিবেচনায় রেখে ও রাজনৈতিক দলগুলো কর্তৃক স্বাক্ষরিত জুলাই সনদকে মূল দলিল হিসেবে ধরে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ অনুমোদন করেছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর শেষে গেজেট জারি করা হয়েছে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই আদেশে সরকার গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিধান নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সনদের সংবিধানবিষয়ক সংস্কার প্রস্তাবের ওপর গণভোট অনুষ্ঠান এবং পরে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত।

আজ বেলা আড়াইটার দিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা সব বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোটের আয়োজন করা হবে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনের মতো গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না। নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে। গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে উপযুক্ত সময়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে।’

এ দাবি ছিল বিএনপির। জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামি দলের দাবি ছিল, সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। এই দাবিতে তারা লাগাতার কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অবস্থান শিথিল। তারা বলেছে, গণভোট সংসদ নির্বাচনের দিন বা আগে অনুষ্ঠান নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই।

জুলাই সনদের আলোকে গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্নও নির্ধারণ করেছে সরকার। প্রশ্নটি হবে এ রকম:

‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার-সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?’

ক) নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।

খ) আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।

গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।

ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।

গণভোটের দিন এই চার বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে আপনাকে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে নাগরিকদের মতামত জানাতে হবে।

গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই প্রতিনিধিরা একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। এর মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।

তবে এর আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সুপারিশে বলা হয়েছিল, প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ থেকে ২৭০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করার বাধ্যবাধকতা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এ সময়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংস্কার প্রস্তাবগুলো সংবিধানে যুক্ত হবে। তবে চূড়ান্ত প্রস্তাবে সেই বাধ্যবাধকতা থাকছে না।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) রয়েছে। বাছাইপ্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপে ঐকমত্য কমিশন ‘র‍্যাংকড চয়েস’ পদ্ধতির কথা বলেছে। তবে বিএনপি এ পর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বাছাইয়ের দায়িত্ব সংসদকে দেওয়ার পক্ষে। যদিও অন্যান্য দল ‘র‍্যাংকড চয়েস’ পদ্ধতির পক্ষে। অবশেষে বিষয়টিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গণভোটে দিয়েছে।

এ ছাড়া উচ্চকক্ষে ভোটের অনুপাতে দলগুলোর প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়ে বিএনপি ছাড়া প্রায় সব দলেরই ঐকমত্য ছিল। সে ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না দিয়ে প্রস্তাবটি গণভোটে দেওয়া হয়েছে।

আজ ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুসারে সংবিধানে জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটিও আজকে অনুমোদিত আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একটি জাতির নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণে বাংলাদেশের সাংবিধানিক অভিজ্ঞতা বিষয়ে বক্তব্য দেবেন আলী রীয়াজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪২
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ওয়েবসাইটে অধ্যাপক আলী রীয়াজের সেমিনারের কথা। ছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ওয়েবসাইটে অধ্যাপক আলী রীয়াজের সেমিনারের কথা। ছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বাংলাদেশের মূল সংবিধান এবং পরে সংশোধনীর মাধ্যমে জাতি ও জাতীয়তাকে সংজ্ঞায়িত করে রাজনীতি ও সমাজে বিভেদ তৈরি করা হয়েছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার এই সেমিনারে বক্তব্য দেবেন ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সেমিনারের বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ‘সংবিধান, সাংবিধানিক উপাদান এবং দক্ষিণ এশিয়ায় গঠিত’ (Constitutions, Constituents, and the Constituted in South Asia)’ শিরোনামে সেমিনারটির আয়োজন করেছেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ডোনাল্ড ডেভিস।

সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান মূল সংবিধান এবং পরে সংশোধনীগুলোর মাধ্যমে জাতি ও জাতীয়তাকে সংজ্ঞায়িত ও পুনঃসংজ্ঞায়িত করেছে এবং কীভাবে এটি রাজনীতি ও সমাজে একটি বিভেদ রেখা তৈরি করেছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে।

স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার পরিচিতি হিসেবে জাতীয়তাকে ‘বাঙালি’ বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয় ওয়েবসাইটে। গণপরিষদের বিতর্কে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত বাঙালি সদস্যরা আদিবাসী অবাঙালি জনগণের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয়তার সংজ্ঞা চাওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেন।

১৯৭৮ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধান সংশোধন করে নাগরিকদের জাতীয়তা পুনঃসংজ্ঞায়িত করা হয়। সংশোধিত সংস্করণটি পরে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। নাগরিকদের জাতীয়তাকে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, যা জাতীয়তার জাতিগত উপাদানকে আঞ্চলিকতার চিহ্নিতকারী হিসেবে প্রতিস্থাপিত করে।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান ২০১১ সালে এক সংশোধনীর মাধ্যমে ‘বাঙালি’ ও ‘বাংলাদেশি’কে একত্র করার চেষ্টা করে। সেখানে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতিগতভাবে বাঙালি হিসেবে পরিচিত হবেন এবং বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাংলাদেশি বলিয়া পরিচিত হইবেন।’ কিন্তু এই শর্তটি সুস্পষ্টভাবে জাতিগত পরিচিতিকে প্রাধান্য দিয়েছে বলে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়।

অধ‍্যাপক রীয়াজ জাতীয় ঐকমত‍্য কমিশনের সহসভাপতির দায়িত্ব পালনের পর পেশাগত কাজে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। ১৮ নভেম্বর তাঁর দেশে ফেরার কথা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত