Ajker Patrika

বৈশ্বিক সংকটেও দেশে খাদ্যনিরাপত্তা সুরক্ষিত আছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮: ০৭
বৈশ্বিক সংকটেও দেশে খাদ্যনিরাপত্তা সুরক্ষিত আছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চলমান বৈশ্বিক সংকটেও দেশে খাদ্যনিরাপত্তা সুরক্ষিত আছে। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় এমপি শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। 

করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বে খাদ্যপণ্যসহ সব ক্ষেত্রে জোগানব্যবস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে শহীদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সংকট মোকাবিলার মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ সরকার প্রতিনিয়ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। 

খাদ্যনিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে সংসদনেতা বলেন, কৃষি গবেষণা, সম্প্রসারণ ও কৃষি ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উপকরণ ও নীতিসহায়তার ফলে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছে। 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ এখন ২৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৪১টি কোম্পানি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে। বিভিন্ন জোনে ৫০টি শিল্পকারখানা নির্মাণাধীন রয়েছে। এসব শিল্পকারখানা থেকে এ পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য উৎপাদন হয়েছে এবং ২৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি রয়েছে। এই শিল্পসমুহে প্রায় ৫০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। 

শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও সরকার তা নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের ওপর এর প্রভাব প্রশমনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

২০২৫ সালের মধ্যে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা ২৮ হাজার ১৩৪ মেগাওয়াট। ১১ হাজার ৬০৯ মেগাওয়াট সক্ষমতার ৩০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০২৩ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে এগুলো পর্যায়ক্রমে চালু হবে। ২ হাজার ৪২৯ মেগাওয়াট সক্ষমতার ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এটি চালু হবে বলে আশা করা যায়। 

তিন মেয়াদে ৮৫৪ কিমি সড়ক চার লেন

জাতীয় পার্টির সাংসদ হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারের তিন মেয়াদে ৮৫৪ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ, ১২ হাজার ৪৩৪ কিমি মহাসড়ক উন্নয়ন এবং ১ লাখ ২৩ হাজার ২৫৪ মিটার দৈর্ঘ্যের ১ হাজার ১৩১টি সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ৫৭৪ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ, ৪ হাজার ৬৩৪ কিমি মহাসড়ক উন্নয়ন এবং ৬৪ হাজার ৮৪৪ মিটার দৈর্ঘ্যের ৭৫০টি সেতু নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। 

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশের ৫৫ লাখ ৬১৭টি পরিবার অর্থাৎ প্রায় ২৮ লাখ মানুষকে ঘর প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে। 

গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে প্রচেষ্টা চলছে

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকগুলো দেশ নিজ নিজ দেশের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানায়। পরে আলোচনার মাধ্যমে ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। যেহেতু ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে, সেহেতু একই বিষয়ে আরও একটি আন্তর্জাতিক দিবস পালনের প্রস্তাবটি সমীচীন হবে না। 

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও কয়েকজন শহীদ পরিবারের সদস্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, গণহত্যা নিয়ে কাজ করে এমন ব্যক্তি ও সংগঠনও বাংলাদেশে গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে। 

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় পৃথিবীতে সংঘটিত অন্য যেকোনো গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় প্রক্রিয়ার মতোই জটিল এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে, বন্ধুরাষ্ট্রসহ, গণহত্যাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের স্বীকৃতি আদায় এবং বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি প্রদানের পক্ষে বিশ্বজনমত গড়ে তোলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় সহজ হবে। এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ৩১ কোটি টাকা ঋণ: সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামান। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামান। ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া ও অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক ঋণ অনুমোদন করে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমিলা জামানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মামলাগুলো করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বশির আহমেদের প্রতিষ্ঠান বি অ্যান্ড বি ইলেকট্রনিকসের কর্মচারী মোস্তাফিজুর রহমান ও সিন্ডিকেট সদস্য মো. আবুল কালামের সহায়তায় কৌশলে গ্রামের সহজ-সরল কৃষক ও খণ্ডকালীন শ্রমিক নুরুল বশর, মোহাম্মদ আয়ুব, মো. ইউনুছ ও মো. ফরিদুল আলমের ব্যক্তিগত তথ্য (এনআইডি, ছবি ইত্যাদি) সংগ্রহ করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে এসব ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ঋণ অনুমোদন করানো হয়। পরবর্তীতে অনুমোদিত ঋণের ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়।

দুদক বলেছে, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে আসামিরা দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪০৬ / ৪০৯ / ৪২০ / ৪৬৭ / ৪৬৮ / ৪৭১ / ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪ (২) (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দুদকের মামলায় ইউসিবিএল ও ইউসিবি পিএলসি’র এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য এবং সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ, একই প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী ও ইউসিবি পিএলসি’র সাবেক চেয়ারম্যান রুকমিলা জামান,

ইউসিবিএল পোর্ট শাখার (চট্টগ্রাম) এভিপি ও অপারেশন ম্যানেজার মো. আব্দুল আউয়াল, এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. আবু বকর খান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার জামাল উদ্দিন, এভিপি জিয়াউল করিম খান এবং একই শাখার ভিপি ও শাখা প্রধান মো. জাহিদ হায়দারকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

এ ছাড়া আরামিট পিএলসি সংশ্লিষ্ট দুই ব্যবসায়ী—মডেল ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মিছাবাহুল আলম এবং ক্ল্যাসিক ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী ও এজিএম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের নাম রয়েছে মামলায়।

আলোক ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, বি অ্যান্ড বি ইলেকট্রনিকসের কর্মচারী মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং দিদারুল আলমকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

একই সঙ্গে ইউসিবি পিএলসি’র এক্সিকিউটিভ কমিটির আরও কয়েকজন সাবেক পরিচালক বজল আহমেদ বাবুল (সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান), এম এ সবুর, ইউনুছ আহমদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও আসিফুজ্জামান চৌধুরীর নামও মামলার আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাস্তার পাশে জ্বালানি তেল বিক্রি সাময়িক বন্ধ থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩০
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

নাশকতামূলক ঘটনা ও অঘটন ঠেকাতে রাস্তার পাশে জ্বালানি তেল বিক্রি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি জানান, আসন্ন ১৩ নভেম্বরকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘শক্ত অবস্থানে’ রয়েছে এবং কোনো ধরনের সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাস্তার পাশে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘রাস্তার পাশে তেল বিক্রি কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকবে। এই তেল দিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের অঘটন ঘটিয়ে ফেলে।’ তিনি ইঙ্গিত দেন, এই তেল ব্যবহার করেই নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সাম্প্রতিক অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই। তাঁর মন্তব্য, ‘বড় ধরনের কোনো মিছিল হচ্ছে না। বাসে আগুন ও কয়েকটা জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। এগুলো যাতে আর ঘটাতে না পারে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

এ সময় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও জনবহুল স্থানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার কথা উল্লেখ করেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, মেট্রোরেল ও রেলওয়ে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের কথা জানান উপদেষ্টা।

১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ জানাবেন। এ উপলক্ষে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ওই দিন ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘১৩ নভেম্বরের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত অবস্থান নিয়েছে। তারা শক্ত অবস্থানে থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। কোনো আশঙ্কা এখানে নেই।’

তিনি জনগণের প্রতি সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর অনুরোধ করেন। উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, সন্ত্রাসীরা যেন সহজে জামিন না পায়, সে বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি জামিন প্রদানকারীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘সহজে যাতে জামিন না পায়, এ জন্য আমরা তাদেরও অনুরোধ করব, যারা জামিন দেয়, তারা যাতে সন্ত্রাসীদের জামিন না দেয়।’

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান বেগবান করা হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু কিছু (অস্ত্র) রয়ে গেছে বাইরে। এগুলো যেন তাড়াতাড়ি উদ্ধার করা যায়, সে চেষ্টা চলছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিকে সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি নির্বাচনের দিন মোতায়েন হতে যাওয়া বাহিনীর একটি হিসাব দেন: এর মধ্যে আনসার সদস্য সাড়ে ৫ লাখ, পুলিশ দেড় লাখ, সেনাসদস্য ১ লাখ, বিজিবি ৩৫ হাজার, কোস্ট গার্ডের ৪ হাজারের মতো সদস্য মোতায়েন করা হবে।

মিয়ানমার থেকে মাদক আসা কিছুটা কমলেও তা আশাব্যঞ্জক নয় বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে মাদক ছড়িয়ে পড়েছে। মাদক নির্মূলে সবার দায়িত্ব নিতে হবে।’

এ ছাড়া রাজধানীতে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার দুটি ঘটনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই দুটি ঘটনা সন্ত্রাসী বাহিনীর নিজেদের মধ্যে হয়েছে। জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সীমান্ত রক্ষা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো সন্ত্রাসী বাইরে থেকে দেশে ঢুকতে না পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আর্মি সার্ভিস কোরের ৪৪ তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সেনাপ্রধান। ছবি: আইএসপিআর
আর্মি সার্ভিস কোরের ৪৪ তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সেনাপ্রধান। ছবি: আইএসপিআর

একুশ শতকের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অত্যাধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা অর্জনের জন্য আর্মি সার্ভিস কোরের (এএসসি) সদস্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

আজ মঙ্গলবার খুলনা জেলার জাহানাবাদ সেনানিবাসস্থ আর্মি সার্ভিস কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল (এএসসিসিঅ্যান্ডএস)-এ অনুষ্ঠিত কোরের ৪৪ তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেনাপ্রধান এই বার্তা দেন।

সম্মেলনে উপস্থিত এএসসির সব ইউনিট অধিনায়কদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় সেনাপ্রধান কোরের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য এবং দেশমাতৃকার সেবায় তাদের অনবদ্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্র এবং লজিস্টিকসের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এএসসির ভূমিকার গুরুত্ব অপরিসীম।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান কোরের সদস্যদের নিজেদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে বলেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কেবল প্রচলিত সামরিক প্রশিক্ষণ নয়, বরং প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং গবেষণায় বিনিয়োগের মাধ্যমেই এএসসি কোরের সামগ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধি সম্ভব।

আর্মি সার্ভিস কোরের ৪৪ তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সেনাপ্রধান। ছবি: আইএসপিআর
আর্মি সার্ভিস কোরের ৪৪ তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সেনাপ্রধান। ছবি: আইএসপিআর

এএসসিসিঅ্যান্ডএস-এর সম্মেলনস্থলে আগত কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সেনাপ্রধান কোরের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, গবেষণা, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশদভাবে আলোকপাত করেন।

সেনাবাহিনী প্রধান এএসসিসিঅ্যান্ডএস-এ পৌঁছালে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান জিওসি, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (আর্টডক) ; জিওসি, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, যশোর এরিয়া এবং কমান্ড্যান্ট, এএসসিসিঅ্যান্ডএস।

সম্মেলনে উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন জিওসি, আর্টডক; মহাপরিচালক, বিএমটিএফ; জিওসি ৫৫ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, যশোর এরিয়া; চেয়ারম্যান, সেনা কল্যাণ সংস্থা; সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ; কমান্ড্যান্ট, এএসসিসিএন্ডএস; বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মি সার্ভিস কোরের সব ইউনিটের অধিনায়ক এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বেতন দিতে সম্মতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বেতন দিতে সম্মতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

গতকাল সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব (বাস্তবায়ন অনুবিভাগ-১) মো. মাহবুবুল আলমের সই করা অফিস আদেশ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

অফিস আদেশে ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষক পদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. মাহবুবুল আলম বলেন, তিনটি শর্তে প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে নির্ধারণে অর্থ বিভাগ সম্মতি জানিয়েছে। গত রোববার জারি করা ওই আদেশ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

মাহবুবুল আলম বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক পদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে যেসব শর্ত দিয়েছে, সেগুলো মানা, বিধিমালা অনুসারে নিয়োগ এবং অন্য বিধিবিধান ও আনুষ্ঠানিকতা মানার শর্তে এই সম্মতি দিয়েছে বাস্তবায়ন অনুবিভাগ।

গত ২৮ জুলাই অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ ও অক্টোবরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষক পদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার সম্মতি দিয়েছিল।

২৮ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, সরকার দেশের ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষক পদের বেতন স্কেল বিদ্যমান ১১তম গ্রেড (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) এবং ১২তম গ্রেড (প্রশিক্ষণবিহীন) থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণে সম্মতি দেয়।

এর মধ্য দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করা হয়।

এদিকে গত ২৭ অক্টোবর গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদাসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সর্বোচ্চ আদালতে রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ওই ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ম গ্রেডে নির্ধারণে মন্ত্রণালয়টি বাধ্য হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত