Ajker Patrika

রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা না পেলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায় দেখতে চান উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, মূল প্লেয়ারদের সহযোগিতা না পেলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা দরকার।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে সভাপতি হিসেবে স্বাগত বক্তব্য দেন সিইসি। এ সময় প্রথম পর্বে ডাক পাওয়া সংলাপে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, এলডিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেস, এনপিপির প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।

দলগুলোর উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘দেখুন, খেলবেন আপনারা। আপনারা প্লেয়ার, আমরা রেফারির ভূমিকায়। প্রকৃত অর্থে একদম নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায় থাকতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া রেফারির কাজ করা বড় মুশকিল। সুষ্ঠুভাবে খেলা পরিচালনা করা মুশকিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, জাতির কাছে আমরা সুষ্ঠু সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে উপহার দিতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা নিয়েই এ উপহার দিতে হবে। মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা নিতে হবে। কারণ, মূল প্লেয়ারদের সহযোগিতা না পেলে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হয়ে যাবে। আমরা আপনাদের সঙ্গে পেতে চাই, আমাদের চেষ্টার মধ্যে সঙ্গে পেতে চাই।’

এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার করা প্রয়োজন, আপনারা অন্যভাবে নেবেন না। এখন নিবন্ধিত দল রয়েছে ৫৪ টা। বড় ছোট নেই, সব দলই আমাদের কাছে সমান, সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাই। বড় ছোট মাপার ক্রাইটেরিয়া আমাদের কাছে নেই। আমাদের কাছে যারা নিবন্ধিত, সবাই আমাদের কাছে সমান।’

নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরে—এ তিনটি ফেইজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান সিইসি।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নেওয়া, সরকারি কর্মকর্তা ও কারা হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের ভোট নেওয়াসহ বিভিন্ন কাজের বিষয় তুলে ধরেন সিইসি। এর সঙ্গে গণভোটের বিষয়টি অফিসিয়ালি না জানলেও কাজের পরিধির কথা তুলে ধরেন তিনি।

সিইসি বলেন, ‘সুন্দর জাতীয় নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য আপনাদের সঙ্গে পেতে চাই। আমাদের অনেকগুলো অতিরিক্ত দায়িত্ব এসে পড়েছে—আউট অব কান্ট্রি ভোটিংয়ের দিকে যাচ্ছি, নির্বাচনী কাজে জড়িতদের ভোটের ব্যবস্থা, সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটের ব্যবস্থা। আরেকটি বিষয় খুবই আলোচনায় আছে যে রেফারেন্ডাম একটা বিষয়, এখনো অফিসিয়ালি আমরা কিছু জানি না। কিন্তু আলোচনা যা দেখতেছি, এইটাও যদি আমাদের ওপর এসে পড়ে! এমনিতেই তো এক ধরনের বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে, একটি বিশেষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি একটা ভিন্নধর্মী আপনারা সবাই জানেন। নরমাল ইলেকশনে আপনারা যতটুকু সহযোগিতা করেন, এই ইলেকশনে আরও বেশি সহযোগিতা লাগবে। অনেকগুলো এক্সট্রা বার্ডেন এসে গেছে যেগুলো নরমালি আগের ইলেকশন কমিশনের কাঁধে ছিল না।

সোশাল মিডিয়ার অপব্যবহারের বিষয়টিকে মুসিবত উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘এ মুসিবত, এআই অপব্যবহার করে বোগাস জিনিস ছুড়ে দেওয়া আগে ছিল না।...যুদ্ধ কত ফ্রন্টে করতে হচ্ছে আমাদের। কতটা ফ্রন্টে আমাদের যুদ্ধ করতে হবে। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া পারব না। আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

সংলাপে নির্বাচনকে সামনে রেখে আচরণবিধি প্রতিপালনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি জানান নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি ঢাকা পোস্টার দিয়ে ছেয়ে গেছে। অথচ আচরণবিধিতে আমরা পোস্টার নিষিদ্ধ করেছি। এসব পোস্টার নিজ উদ্যোগে সরাতে হবে। না সরালে আমরা স্পেয়ার করব না। তফসিল ঘোষণার পর আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ব।’

তফসিল ঘোষণার আগেই পোস্টার সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করেন সিইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...