Ajker Patrika

প্রবাসীদের সরকারের দেওয়া সুবিধার বিষয়ে প্রচারণার সুপারিশ সংসদীয় কমিটির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রবাসীদের সরকারের দেওয়া সুবিধার বিষয়ে প্রচারণার সুপারিশ সংসদীয় কমিটির

প্রবাসীদের জন্য সরকার দেওয়া স্বল্পসুদে ঋণ ও অন্যান্য সুবিধাদি যেন তাঁরা সঠিকভাবে পায়— সে জন্য প্রচারণা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে অর্থ মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এ ছাড়া আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে অ-আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করে কমিটি। তবে এটি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। 

বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবাস আয় বাড়ানোর জন্য রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের অ-আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। প্রবাস আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গত প্রায় তিন দশক ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। 

এতে বলা হয়, রেমিট্যান্স আনয়নের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি-সহায়তার ফলে প্রবাস আয়ের প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি সরকারের গৃহীত এরূপ নীতি-সহায়তার কার্যকারিতার প্রমাণ। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ধীর হয়ে যাওয়া প্রবাস আয়ের গতি বৃদ্ধি করতে নতুন নীতি-সহায়তা প্রদান করলে তা ফলপ্রসূ হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে বিদ্যমান আর্থিক সুবিধার পাশাপাশি কিছু অ-আর্থিক বা নন-ফাইন্যান্সিয়াল সুবিধা প্রদান করলে তা রেমিট্যান্স প্রেরণকারী এবং তার পরিবারের সদস্যদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, যা ভবিষ্যতে তাঁদের অধিক হারে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, বর্তমান সরকারের ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ের উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, উক্ত সময়ে গড়ে প্রতিবছর বাংলাদেশের মোট আমদানি হয়েছে ৪৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং একই সময়ে গড়ে প্রতি বছর প্রবাস আয় এসেছে ১৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ এ সময়ে প্রতি বছর গড় আমদানি মূল্যের ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশের সমপরিমাণ অংশই প্রবাস আয় দ্বারা মেটানো হয়েছে।

প্রবাসীদের কিছু অ–আর্থিক সুবিধা দেওয়া যেতে পারে প্রতিবেদনে বলা হয়। তার মধ্যে আছে—রেমিট্যান্স প্রেরণকারী স্থায়ীভাবে স্বদেশে ফিরলে তার অ-কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি সেবা প্রদানকারী অফিসে অগ্রাধিকার দেওয়া; দেশে অবতরণকালে সকল বিমানবন্দরে রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর যথাযথ অভ্যর্থনা নিশ্চিত করা এবং ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিশেষ ডেড স্থাপন।

এতে আরও বলা হয়, রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষ স্মার্ট কার্ড প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা; রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বাংলাদেশের যে কোনো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তিতে বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদান; রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সকল সরকারি কার্যালয়ে সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান।

এ ছাড়া আরও কিছু সুবিধা দেওয়া যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যেমন—রেমিটার স্মার্টকার্ড দেওয়া যেতে পারে, রেমিটারদের সন্তানদের জন্য সরকারি, বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা ব্যবস্থা প্রচলন করা যেতে পারে; রেমিট্যান্স প্রেরণকারী বাংলাদেশিদের ওয়ার্ক পারমিট নবায়নের ফি হ্রাস করা যেতে পারে; পাসপোর্টসহ দূতাবাসে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স কার্ডধারীদের অগ্রাধিকার প্রদান; প্রবাসীদের জন্য সরকারের সেবাসমূহের প্রচার।

কমিটির সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন কমিটির সদস্য ও অর্থ মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, এম এ মান্নান, এ কে আবদুল মোমেন, আহমেদ ফিরোজ কবির, আবুল কালাম আজাদ ও রুনু রেজা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত