হুসাইন আহমদ

বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাটা এখন বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদেশি কোম্পানির আউটলেটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেদিন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বাটা। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার একাধিক স্থানে বাটার শোরুমে হামলা চালিয়ে জুতাসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। এর জন্য সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে যে বাটা জড়িয়ে আছে, সেই বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। বিষয়টি জানেন না অনেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পাওয়া একমাত্র বিদেশি ব্যক্তিটি ছিলেন বাটার তখনকার বাংলাদেশপ্রধান।
তাঁর নাম উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ওলন্দাজ নাগরিক ঔডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি, যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাদের তালিকায় বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১৭ নম্বরে আছে তাঁর নাম।
১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বীর প্রতীক পদকের সম্মানীর টাকা তিনি দান করে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ৮৪ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঔডারল্যান্ড
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে জন্ম নেওয়া ঔডারল্যান্ড ১৭ বছর বয়সে ১৯৩৪ সালে বাটা শু কোম্পানিতে শু শাইনার বা জুতা পলিশের কাজ নেন। দুই বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত রয়্যাল সিগন্যাল কোরে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডো হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) অংশ নেন।

১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাটা শু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ঢাকায় আসেন ঔডারল্যান্ড। কয়েক মাসের মধেই তিনি কোম্পানি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই আরেক যুদ্ধের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ঔডারল্যান্ড।
১৯৭১ সালের ৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে টঙ্গীর মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক-জনতার মিছিল। সেই মিছিলে প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালায় ইপিআর বাহিনী। ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এর প্রভাব পড়ে টঙ্গীর বাটা কোম্পানির কারখানাতেও। স্বচক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ও তাণ্ডব দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধের দুই দশক পর বন্ধু আনোয়ার ফারিদিকে লেখা এক চিঠিতে ঔডারল্যান্ড বলেন, ‘তাই ১৯৭১ সালের মার্চে যখন ট্যাংক ও পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় ঢুকে পড়ে, আমি যেন আবার ফিরে গিয়েছিলাম আমার যৌবনের ইউরোপীয় অভিজ্ঞতায়।’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালু করলে ঔডারল্যান্ড প্রথম সুযোগেই শহরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলেন, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। এসব ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান। বাঙালিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও এমন একটি গণহত্যা; নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা দেখেছিলেন তিনি। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গেরিলা সৈনিক হিসেবে লড়েছিলেন তিনি। ঠিক ২৯ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতা ও নির্মমতা তাঁর সৈনিক জীবনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।
বাটা কোম্পানির মতো বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। এই সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ‘কারফিউ পাস’ পেয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। নিষিদ্ধ সময়েও শহরে চলাচল করতে পারতেন তিনি। নিজের ফোর্ড ফেয়ারলেন গাড়িতে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা ওড়াতেন বলে বাড়তি নিরাপত্তা পেতেন।
প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠতা। সেনানিবাসে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরও অনেক সামরিক অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সামরিক অফিসারদের সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

ফলে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ পান ঔডারল্যান্ড। সংগৃহীত সব তথ্য তিনি গোপনে পাঠিয়ে দিতেন ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার ও জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। পাকিস্তানিদের তাণ্ডবলীলা যখন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতার আলোকে শুরু করেন গেরিলা প্রশিক্ষণের কাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন সংঘটিত হতে থাকে। মেজর হায়দারের দেওয়া এক সনদে পাওয়া যায়, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসাসামগ্রী, গরম কাপড় ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
বাটার কিছু কর্মীকে নিয়ে গোপন দল গঠন করেন ঔডারল্যান্ড। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন বাটার পার্সোনেল ম্যানেজার এ কে এম আবদুল হাই, চিকিৎসক হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও হুমায়ুন কবির খান।
ঔডারল্যান্ডের ঘনিষ্ঠ আবদুল হাই দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঔডারল্যান্ড বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তিনি এ দেশকে ভালোবেসেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের শুরুর দিকে ঔডারল্যান্ডের পরামর্শে তিনি সপরিবার টঙ্গীর বাটা কারখানা এলাকায় চলে যান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী পাশের টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি) দখল করে নিলে ঝুঁকি দেখে কারখানার মাঠে দুটো বাংকার তৈরি করেন ঔডারল্যান্ড। বাংকারগুলো পরে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার সময় ৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচায়।

ঔডারল্যান্ডের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল তুলে ধরে হাই বলেন, ‘আস্থা অর্জনের জন্য ঔডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের প্রশংসা করতেন, আর বাঙালিদের সমালোচনা করতেন। তখন তাঁরা নির্দ্বিধায় নিজেদের পরিকল্পনা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করত। এই সব তথ্য আমরা ঢাকার জিঞ্জিরায় একটি গোপন আস্তানায় পাঠাতাম, যেখান থেকে তা ওসমানীর কাছে পৌঁছে যেত।’
স্ত্রী ও কন্যাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিজের বাসার দরজা খুলে দিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন তিনি; নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জুতা, কম্বল এবং ওষুধ পাঠাতেন। নিজের একটি পিস্তল তিনি সেক্টর ২-এর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুলকে দেন। ডা. হাফিজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করেছিলেন ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধ চলাকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতাও পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে তিনি আবার পুরোনো কর্মস্থল বাটায় যোগ দেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এ দেশেই ছিলেন ঔডারল্যান্ড। পরে বাটার পক্ষ থেকে তাঁকে বদলি করা হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে প্রায়ই তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে বলতেন: ‘বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসা; পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আবেগের এ ধারা অব্যাহত রেখো।’ ঔডারল্যান্ড নিজেই লিখেছেন, ‘ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।’
কেবল চাকরির সূত্রে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এই দেশ তাঁর জন্মভূমি নয়, তবু ভালোবেসে ফেলেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা এত তীব্র ছিল যে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। যদি ধরা পড়তেন, নেমে আসত অত্যাচারের নির্মম খড়গ, গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাঁকে হত্যা করতেও দ্বিধা করত না হানাদারেরা। তবু নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ ঔডারল্যান্ডকে উদ্বেলিত করেছিল। তাই তো এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তাই উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রত্যেক মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এ দেশের মানুষ চিরশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাঁকে। আর তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে বাটা। বিনম্র শ্রদ্ধা এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা/ মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের ভূমিকা/ সোহরাব হাসান
তথ্যচিত্র: বীর প্রতীক ওডারল্যান্ড/ মাহবুবুর রহমান
Tribute: A friend in need/ Prabir Barua Chowdhury
আরও খবর পড়ুন:

বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাটা এখন বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদেশি কোম্পানির আউটলেটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেদিন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বাটা। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার একাধিক স্থানে বাটার শোরুমে হামলা চালিয়ে জুতাসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। এর জন্য সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে যে বাটা জড়িয়ে আছে, সেই বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। বিষয়টি জানেন না অনেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পাওয়া একমাত্র বিদেশি ব্যক্তিটি ছিলেন বাটার তখনকার বাংলাদেশপ্রধান।
তাঁর নাম উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ওলন্দাজ নাগরিক ঔডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি, যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাদের তালিকায় বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১৭ নম্বরে আছে তাঁর নাম।
১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বীর প্রতীক পদকের সম্মানীর টাকা তিনি দান করে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ৮৪ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঔডারল্যান্ড
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে জন্ম নেওয়া ঔডারল্যান্ড ১৭ বছর বয়সে ১৯৩৪ সালে বাটা শু কোম্পানিতে শু শাইনার বা জুতা পলিশের কাজ নেন। দুই বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত রয়্যাল সিগন্যাল কোরে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডো হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) অংশ নেন।

১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাটা শু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ঢাকায় আসেন ঔডারল্যান্ড। কয়েক মাসের মধেই তিনি কোম্পানি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই আরেক যুদ্ধের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ঔডারল্যান্ড।
১৯৭১ সালের ৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে টঙ্গীর মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক-জনতার মিছিল। সেই মিছিলে প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালায় ইপিআর বাহিনী। ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এর প্রভাব পড়ে টঙ্গীর বাটা কোম্পানির কারখানাতেও। স্বচক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ও তাণ্ডব দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধের দুই দশক পর বন্ধু আনোয়ার ফারিদিকে লেখা এক চিঠিতে ঔডারল্যান্ড বলেন, ‘তাই ১৯৭১ সালের মার্চে যখন ট্যাংক ও পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় ঢুকে পড়ে, আমি যেন আবার ফিরে গিয়েছিলাম আমার যৌবনের ইউরোপীয় অভিজ্ঞতায়।’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালু করলে ঔডারল্যান্ড প্রথম সুযোগেই শহরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলেন, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। এসব ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান। বাঙালিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও এমন একটি গণহত্যা; নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা দেখেছিলেন তিনি। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গেরিলা সৈনিক হিসেবে লড়েছিলেন তিনি। ঠিক ২৯ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতা ও নির্মমতা তাঁর সৈনিক জীবনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।
বাটা কোম্পানির মতো বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। এই সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ‘কারফিউ পাস’ পেয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। নিষিদ্ধ সময়েও শহরে চলাচল করতে পারতেন তিনি। নিজের ফোর্ড ফেয়ারলেন গাড়িতে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা ওড়াতেন বলে বাড়তি নিরাপত্তা পেতেন।
প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠতা। সেনানিবাসে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরও অনেক সামরিক অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সামরিক অফিসারদের সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

ফলে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ পান ঔডারল্যান্ড। সংগৃহীত সব তথ্য তিনি গোপনে পাঠিয়ে দিতেন ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার ও জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। পাকিস্তানিদের তাণ্ডবলীলা যখন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতার আলোকে শুরু করেন গেরিলা প্রশিক্ষণের কাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন সংঘটিত হতে থাকে। মেজর হায়দারের দেওয়া এক সনদে পাওয়া যায়, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসাসামগ্রী, গরম কাপড় ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
বাটার কিছু কর্মীকে নিয়ে গোপন দল গঠন করেন ঔডারল্যান্ড। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন বাটার পার্সোনেল ম্যানেজার এ কে এম আবদুল হাই, চিকিৎসক হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও হুমায়ুন কবির খান।
ঔডারল্যান্ডের ঘনিষ্ঠ আবদুল হাই দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঔডারল্যান্ড বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তিনি এ দেশকে ভালোবেসেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের শুরুর দিকে ঔডারল্যান্ডের পরামর্শে তিনি সপরিবার টঙ্গীর বাটা কারখানা এলাকায় চলে যান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী পাশের টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি) দখল করে নিলে ঝুঁকি দেখে কারখানার মাঠে দুটো বাংকার তৈরি করেন ঔডারল্যান্ড। বাংকারগুলো পরে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার সময় ৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচায়।

ঔডারল্যান্ডের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল তুলে ধরে হাই বলেন, ‘আস্থা অর্জনের জন্য ঔডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের প্রশংসা করতেন, আর বাঙালিদের সমালোচনা করতেন। তখন তাঁরা নির্দ্বিধায় নিজেদের পরিকল্পনা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করত। এই সব তথ্য আমরা ঢাকার জিঞ্জিরায় একটি গোপন আস্তানায় পাঠাতাম, যেখান থেকে তা ওসমানীর কাছে পৌঁছে যেত।’
স্ত্রী ও কন্যাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিজের বাসার দরজা খুলে দিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন তিনি; নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জুতা, কম্বল এবং ওষুধ পাঠাতেন। নিজের একটি পিস্তল তিনি সেক্টর ২-এর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুলকে দেন। ডা. হাফিজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করেছিলেন ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধ চলাকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতাও পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে তিনি আবার পুরোনো কর্মস্থল বাটায় যোগ দেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এ দেশেই ছিলেন ঔডারল্যান্ড। পরে বাটার পক্ষ থেকে তাঁকে বদলি করা হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে প্রায়ই তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে বলতেন: ‘বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসা; পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আবেগের এ ধারা অব্যাহত রেখো।’ ঔডারল্যান্ড নিজেই লিখেছেন, ‘ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।’
কেবল চাকরির সূত্রে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এই দেশ তাঁর জন্মভূমি নয়, তবু ভালোবেসে ফেলেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা এত তীব্র ছিল যে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। যদি ধরা পড়তেন, নেমে আসত অত্যাচারের নির্মম খড়গ, গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাঁকে হত্যা করতেও দ্বিধা করত না হানাদারেরা। তবু নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ ঔডারল্যান্ডকে উদ্বেলিত করেছিল। তাই তো এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তাই উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রত্যেক মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এ দেশের মানুষ চিরশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাঁকে। আর তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে বাটা। বিনম্র শ্রদ্ধা এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা/ মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের ভূমিকা/ সোহরাব হাসান
তথ্যচিত্র: বীর প্রতীক ওডারল্যান্ড/ মাহবুবুর রহমান
Tribute: A friend in need/ Prabir Barua Chowdhury
আরও খবর পড়ুন:
হুসাইন আহমদ

বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাটা এখন বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদেশি কোম্পানির আউটলেটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেদিন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বাটা। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার একাধিক স্থানে বাটার শোরুমে হামলা চালিয়ে জুতাসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। এর জন্য সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে যে বাটা জড়িয়ে আছে, সেই বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। বিষয়টি জানেন না অনেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পাওয়া একমাত্র বিদেশি ব্যক্তিটি ছিলেন বাটার তখনকার বাংলাদেশপ্রধান।
তাঁর নাম উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ওলন্দাজ নাগরিক ঔডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি, যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাদের তালিকায় বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১৭ নম্বরে আছে তাঁর নাম।
১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বীর প্রতীক পদকের সম্মানীর টাকা তিনি দান করে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ৮৪ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঔডারল্যান্ড
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে জন্ম নেওয়া ঔডারল্যান্ড ১৭ বছর বয়সে ১৯৩৪ সালে বাটা শু কোম্পানিতে শু শাইনার বা জুতা পলিশের কাজ নেন। দুই বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত রয়্যাল সিগন্যাল কোরে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডো হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) অংশ নেন।

১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাটা শু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ঢাকায় আসেন ঔডারল্যান্ড। কয়েক মাসের মধেই তিনি কোম্পানি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই আরেক যুদ্ধের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ঔডারল্যান্ড।
১৯৭১ সালের ৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে টঙ্গীর মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক-জনতার মিছিল। সেই মিছিলে প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালায় ইপিআর বাহিনী। ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এর প্রভাব পড়ে টঙ্গীর বাটা কোম্পানির কারখানাতেও। স্বচক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ও তাণ্ডব দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধের দুই দশক পর বন্ধু আনোয়ার ফারিদিকে লেখা এক চিঠিতে ঔডারল্যান্ড বলেন, ‘তাই ১৯৭১ সালের মার্চে যখন ট্যাংক ও পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় ঢুকে পড়ে, আমি যেন আবার ফিরে গিয়েছিলাম আমার যৌবনের ইউরোপীয় অভিজ্ঞতায়।’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালু করলে ঔডারল্যান্ড প্রথম সুযোগেই শহরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলেন, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। এসব ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান। বাঙালিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও এমন একটি গণহত্যা; নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা দেখেছিলেন তিনি। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গেরিলা সৈনিক হিসেবে লড়েছিলেন তিনি। ঠিক ২৯ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতা ও নির্মমতা তাঁর সৈনিক জীবনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।
বাটা কোম্পানির মতো বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। এই সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ‘কারফিউ পাস’ পেয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। নিষিদ্ধ সময়েও শহরে চলাচল করতে পারতেন তিনি। নিজের ফোর্ড ফেয়ারলেন গাড়িতে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা ওড়াতেন বলে বাড়তি নিরাপত্তা পেতেন।
প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠতা। সেনানিবাসে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরও অনেক সামরিক অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সামরিক অফিসারদের সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

ফলে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ পান ঔডারল্যান্ড। সংগৃহীত সব তথ্য তিনি গোপনে পাঠিয়ে দিতেন ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার ও জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। পাকিস্তানিদের তাণ্ডবলীলা যখন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতার আলোকে শুরু করেন গেরিলা প্রশিক্ষণের কাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন সংঘটিত হতে থাকে। মেজর হায়দারের দেওয়া এক সনদে পাওয়া যায়, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসাসামগ্রী, গরম কাপড় ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
বাটার কিছু কর্মীকে নিয়ে গোপন দল গঠন করেন ঔডারল্যান্ড। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন বাটার পার্সোনেল ম্যানেজার এ কে এম আবদুল হাই, চিকিৎসক হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও হুমায়ুন কবির খান।
ঔডারল্যান্ডের ঘনিষ্ঠ আবদুল হাই দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঔডারল্যান্ড বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তিনি এ দেশকে ভালোবেসেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের শুরুর দিকে ঔডারল্যান্ডের পরামর্শে তিনি সপরিবার টঙ্গীর বাটা কারখানা এলাকায় চলে যান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী পাশের টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি) দখল করে নিলে ঝুঁকি দেখে কারখানার মাঠে দুটো বাংকার তৈরি করেন ঔডারল্যান্ড। বাংকারগুলো পরে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার সময় ৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচায়।

ঔডারল্যান্ডের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল তুলে ধরে হাই বলেন, ‘আস্থা অর্জনের জন্য ঔডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের প্রশংসা করতেন, আর বাঙালিদের সমালোচনা করতেন। তখন তাঁরা নির্দ্বিধায় নিজেদের পরিকল্পনা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করত। এই সব তথ্য আমরা ঢাকার জিঞ্জিরায় একটি গোপন আস্তানায় পাঠাতাম, যেখান থেকে তা ওসমানীর কাছে পৌঁছে যেত।’
স্ত্রী ও কন্যাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিজের বাসার দরজা খুলে দিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন তিনি; নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জুতা, কম্বল এবং ওষুধ পাঠাতেন। নিজের একটি পিস্তল তিনি সেক্টর ২-এর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুলকে দেন। ডা. হাফিজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করেছিলেন ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধ চলাকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতাও পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে তিনি আবার পুরোনো কর্মস্থল বাটায় যোগ দেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এ দেশেই ছিলেন ঔডারল্যান্ড। পরে বাটার পক্ষ থেকে তাঁকে বদলি করা হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে প্রায়ই তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে বলতেন: ‘বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসা; পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আবেগের এ ধারা অব্যাহত রেখো।’ ঔডারল্যান্ড নিজেই লিখেছেন, ‘ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।’
কেবল চাকরির সূত্রে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এই দেশ তাঁর জন্মভূমি নয়, তবু ভালোবেসে ফেলেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা এত তীব্র ছিল যে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। যদি ধরা পড়তেন, নেমে আসত অত্যাচারের নির্মম খড়গ, গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাঁকে হত্যা করতেও দ্বিধা করত না হানাদারেরা। তবু নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ ঔডারল্যান্ডকে উদ্বেলিত করেছিল। তাই তো এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তাই উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রত্যেক মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এ দেশের মানুষ চিরশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাঁকে। আর তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে বাটা। বিনম্র শ্রদ্ধা এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা/ মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের ভূমিকা/ সোহরাব হাসান
তথ্যচিত্র: বীর প্রতীক ওডারল্যান্ড/ মাহবুবুর রহমান
Tribute: A friend in need/ Prabir Barua Chowdhury
আরও খবর পড়ুন:

বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাটা এখন বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদেশি কোম্পানির আউটলেটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেদিন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বাটা। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার একাধিক স্থানে বাটার শোরুমে হামলা চালিয়ে জুতাসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। এর জন্য সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে যে বাটা জড়িয়ে আছে, সেই বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। বিষয়টি জানেন না অনেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পাওয়া একমাত্র বিদেশি ব্যক্তিটি ছিলেন বাটার তখনকার বাংলাদেশপ্রধান।
তাঁর নাম উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ওলন্দাজ নাগরিক ঔডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি, যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাদের তালিকায় বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১৭ নম্বরে আছে তাঁর নাম।
১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বীর প্রতীক পদকের সম্মানীর টাকা তিনি দান করে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ৮৪ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঔডারল্যান্ড
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে জন্ম নেওয়া ঔডারল্যান্ড ১৭ বছর বয়সে ১৯৩৪ সালে বাটা শু কোম্পানিতে শু শাইনার বা জুতা পলিশের কাজ নেন। দুই বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত রয়্যাল সিগন্যাল কোরে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডো হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) অংশ নেন।

১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাটা শু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ঢাকায় আসেন ঔডারল্যান্ড। কয়েক মাসের মধেই তিনি কোম্পানি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই আরেক যুদ্ধের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ঔডারল্যান্ড।
১৯৭১ সালের ৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে টঙ্গীর মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক-জনতার মিছিল। সেই মিছিলে প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালায় ইপিআর বাহিনী। ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এর প্রভাব পড়ে টঙ্গীর বাটা কোম্পানির কারখানাতেও। স্বচক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ও তাণ্ডব দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধের দুই দশক পর বন্ধু আনোয়ার ফারিদিকে লেখা এক চিঠিতে ঔডারল্যান্ড বলেন, ‘তাই ১৯৭১ সালের মার্চে যখন ট্যাংক ও পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় ঢুকে পড়ে, আমি যেন আবার ফিরে গিয়েছিলাম আমার যৌবনের ইউরোপীয় অভিজ্ঞতায়।’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালু করলে ঔডারল্যান্ড প্রথম সুযোগেই শহরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলেন, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। এসব ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান। বাঙালিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও এমন একটি গণহত্যা; নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা দেখেছিলেন তিনি। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গেরিলা সৈনিক হিসেবে লড়েছিলেন তিনি। ঠিক ২৯ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতা ও নির্মমতা তাঁর সৈনিক জীবনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।
বাটা কোম্পানির মতো বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। এই সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ‘কারফিউ পাস’ পেয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। নিষিদ্ধ সময়েও শহরে চলাচল করতে পারতেন তিনি। নিজের ফোর্ড ফেয়ারলেন গাড়িতে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা ওড়াতেন বলে বাড়তি নিরাপত্তা পেতেন।
প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠতা। সেনানিবাসে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরও অনেক সামরিক অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সামরিক অফিসারদের সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

ফলে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ পান ঔডারল্যান্ড। সংগৃহীত সব তথ্য তিনি গোপনে পাঠিয়ে দিতেন ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার ও জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। পাকিস্তানিদের তাণ্ডবলীলা যখন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতার আলোকে শুরু করেন গেরিলা প্রশিক্ষণের কাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন সংঘটিত হতে থাকে। মেজর হায়দারের দেওয়া এক সনদে পাওয়া যায়, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসাসামগ্রী, গরম কাপড় ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
বাটার কিছু কর্মীকে নিয়ে গোপন দল গঠন করেন ঔডারল্যান্ড। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন বাটার পার্সোনেল ম্যানেজার এ কে এম আবদুল হাই, চিকিৎসক হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও হুমায়ুন কবির খান।
ঔডারল্যান্ডের ঘনিষ্ঠ আবদুল হাই দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঔডারল্যান্ড বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তিনি এ দেশকে ভালোবেসেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের শুরুর দিকে ঔডারল্যান্ডের পরামর্শে তিনি সপরিবার টঙ্গীর বাটা কারখানা এলাকায় চলে যান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী পাশের টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি) দখল করে নিলে ঝুঁকি দেখে কারখানার মাঠে দুটো বাংকার তৈরি করেন ঔডারল্যান্ড। বাংকারগুলো পরে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার সময় ৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচায়।

ঔডারল্যান্ডের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল তুলে ধরে হাই বলেন, ‘আস্থা অর্জনের জন্য ঔডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের প্রশংসা করতেন, আর বাঙালিদের সমালোচনা করতেন। তখন তাঁরা নির্দ্বিধায় নিজেদের পরিকল্পনা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করত। এই সব তথ্য আমরা ঢাকার জিঞ্জিরায় একটি গোপন আস্তানায় পাঠাতাম, যেখান থেকে তা ওসমানীর কাছে পৌঁছে যেত।’
স্ত্রী ও কন্যাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিজের বাসার দরজা খুলে দিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন তিনি; নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জুতা, কম্বল এবং ওষুধ পাঠাতেন। নিজের একটি পিস্তল তিনি সেক্টর ২-এর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুলকে দেন। ডা. হাফিজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করেছিলেন ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধ চলাকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতাও পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে তিনি আবার পুরোনো কর্মস্থল বাটায় যোগ দেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এ দেশেই ছিলেন ঔডারল্যান্ড। পরে বাটার পক্ষ থেকে তাঁকে বদলি করা হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে প্রায়ই তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে বলতেন: ‘বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসা; পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আবেগের এ ধারা অব্যাহত রেখো।’ ঔডারল্যান্ড নিজেই লিখেছেন, ‘ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।’
কেবল চাকরির সূত্রে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এই দেশ তাঁর জন্মভূমি নয়, তবু ভালোবেসে ফেলেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা এত তীব্র ছিল যে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। যদি ধরা পড়তেন, নেমে আসত অত্যাচারের নির্মম খড়গ, গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাঁকে হত্যা করতেও দ্বিধা করত না হানাদারেরা। তবু নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ ঔডারল্যান্ডকে উদ্বেলিত করেছিল। তাই তো এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তাই উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রত্যেক মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এ দেশের মানুষ চিরশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাঁকে। আর তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে বাটা। বিনম্র শ্রদ্ধা এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা/ মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের ভূমিকা/ সোহরাব হাসান
তথ্যচিত্র: বীর প্রতীক ওডারল্যান্ড/ মাহবুবুর রহমান
Tribute: A friend in need/ Prabir Barua Chowdhury
আরও খবর পড়ুন:

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পাবনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সংসদীয় আসন হলো পাবনা-১, পাবনা-২, ফরিদপুর-২ ও ফরিদপুর-৪।
৫ ঘণ্টা আগে
বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
২০ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
১ দিন আগে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পাবনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সংসদীয় আসন হলো পাবনা-১, পাবনা-২, ফরিদপুর-২ ও ফরিদপুর-৪। হাইকোর্ট কোর্টের আদেশ অনুযায়ী সীমানায় এই পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিলো ইসি।
আজ শুক্রবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
তফসিল ঘোষণার আগে ইসি গাজীপুরের একটি আসন কমিয়ে এবং বাগেরহাটের একটি আসন ফেরত দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছিল কমিশন। এবার তফসিল ঘোষণার পর আরও চারটি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনল। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে এমন নজির দেখা যায়নি।
সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার প্রকাশিত গেজেটের তথ্যানুযায়ী, পাবনা-১ আসনের সীমানায় সাঁথিয়া উপজেলা এবং বেড়া উপজেলার বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন, চাকলা ইউনিয়ন ও কৈটোলা ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
পাবনা-২ আসনের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সুজানগর উপজেলা এবং উল্লিখিত একটি পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়ন (বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন, চাকলা ইউনিয়ন ও কৈটোলা ইউনিয়ন) ব্যতীত বেড়া উপজেলা।
আর ফরিদপুর-২ আসনের সীমানায় নগরকান্দা উপজেলা ও সালথা উপজেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে-ভাঙ্গা উপজেলা, চরভদ্রাসন উপজেলা এবং সদরপুর উপজেলা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পাবনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সংসদীয় আসন হলো পাবনা-১, পাবনা-২, ফরিদপুর-২ ও ফরিদপুর-৪। হাইকোর্ট কোর্টের আদেশ অনুযায়ী সীমানায় এই পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিলো ইসি।
আজ শুক্রবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
তফসিল ঘোষণার আগে ইসি গাজীপুরের একটি আসন কমিয়ে এবং বাগেরহাটের একটি আসন ফেরত দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছিল কমিশন। এবার তফসিল ঘোষণার পর আরও চারটি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনল। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে এমন নজির দেখা যায়নি।
সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার প্রকাশিত গেজেটের তথ্যানুযায়ী, পাবনা-১ আসনের সীমানায় সাঁথিয়া উপজেলা এবং বেড়া উপজেলার বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন, চাকলা ইউনিয়ন ও কৈটোলা ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
পাবনা-২ আসনের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সুজানগর উপজেলা এবং উল্লিখিত একটি পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়ন (বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন, চাকলা ইউনিয়ন ও কৈটোলা ইউনিয়ন) ব্যতীত বেড়া উপজেলা।
আর ফরিদপুর-২ আসনের সীমানায় নগরকান্দা উপজেলা ও সালথা উপজেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে-ভাঙ্গা উপজেলা, চরভদ্রাসন উপজেলা এবং সদরপুর উপজেলা।

উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বিদেশি, যিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই অস্ট্রেলীয়-ওলন্দাজ নাগরিক বাটা শু কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে।
০৯ এপ্রিল ২০২৫
বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
২০ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
১ দিন আগে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম।
১ দিন আগেআবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।
বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।
বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।
নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।
পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।
তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।
বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।
বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।
নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।
পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।
তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বিদেশি, যিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই অস্ট্রেলীয়-ওলন্দাজ নাগরিক বাটা শু কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে।
০৯ এপ্রিল ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পাবনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সংসদীয় আসন হলো পাবনা-১, পাবনা-২, ফরিদপুর-২ ও ফরিদপুর-৪।
৫ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
১ দিন আগে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।
সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।
আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।
সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।
আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বিদেশি, যিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই অস্ট্রেলীয়-ওলন্দাজ নাগরিক বাটা শু কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে।
০৯ এপ্রিল ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পাবনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সংসদীয় আসন হলো পাবনা-১, পাবনা-২, ফরিদপুর-২ ও ফরিদপুর-৪।
৫ ঘণ্টা আগে
বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
২০ ঘণ্টা আগে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’
তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’
তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বিদেশি, যিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই অস্ট্রেলীয়-ওলন্দাজ নাগরিক বাটা শু কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে।
০৯ এপ্রিল ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পাবনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সংসদীয় আসন হলো পাবনা-১, পাবনা-২, ফরিদপুর-২ ও ফরিদপুর-৪।
৫ ঘণ্টা আগে
বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
২০ ঘণ্টা আগে
রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
১ দিন আগে