অর্চি হক, ঢাকা
‘পুরা রুম তহন অন্ধকার। ১০-১২ জন ছিলাম মনে হয়। একটু জায়গা ফাঁকা ছিল। একজন কইল, এইখান দিয়া একজনের পর একজন পা ধইরা ধইরা বাইর হওয়া যাইব। প্রথম দুইজন বাইর হয়। তিন নম্বর ছিলাম আমি। আমার পর আর কেউ বাইর হইতে পারছে কি না জানি না।’ বলছিলেন সাভারের রানা প্লাজা ধসে আহত পোশাকশ্রমিক রোজিনা বেগম। দুর্ঘটনার ২ মাস ২৪ দিন আগে ইথারটেক্স ফ্যাশনসে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি ৩ হাজার টাকার মতো বেতনে। ঘরে তখন ১৫ মাসের শিশুকন্যা। স্বপ্ন ছিল, কাজ করে মেয়ের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়ার পাশাপাশি লেখাপড়ার ব্যবস্থাও করবেন। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।
সেদিন ভবনের ষষ্ঠ তলায় কর্মরত ছিলেন রোজিনা। দুর্ঘটনায় হাত-পা গুরুতরভাবে জখম হয় তাঁর। তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকেও স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ফিরে পাননি।
এখনো ট্রমা (মানসিক আঘাত) কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তাই নতুন করে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তিন সন্তানের এই জননী খরচ মেটাতে না পেরে বড় মেয়ের পড়াশোনা চতুর্থ শ্রেণির পরই বন্ধ করে দিয়েছেন। রোজিনা বলেন, ‘দুই-তিন জায়গায় কাজ নিছিলাম। কিন্তু চাইর-পাঁচ দিনের বেশি করতে পারি নাই। বিল্ডিংয়ে ঢুকলেই অসুস্থ হইয়া পড়ি। মনে হয় চাপা পড়ছি।’
রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও রোজিনার মতো শ্রমিকদের বঞ্চনা কাটেনি। একাধিক সমীক্ষা ও শ্রম অধিকারকর্মীদের পর্যবেক্ষণমতে, গত ১১ বছরে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর পরিবেশ বদলেছে। আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিলের (আরএসসি) আওতায় ১ হাজার ৮৮৭টি কারখানা পর্যবেক্ষণে আছে। আর নিরাপদ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে ৩৫০টি। অন্যদিকে রেমিডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেলের (আরসিসি) পর্যবেক্ষণাধীন ৬৫৯টি কারখানা।
তবে শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, কারখানাগুলোর ভবনের নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও পরিবারগুলোকে এত বছরেও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। আহতদের পুনর্বাসনও করা হয়নি।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া কর্মীদের ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ এখনো কর্মহীন। সমীক্ষাটি গত বছর এপ্রিলে প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর কিছু পরিবর্তন এসেছে। কারখানা ভবনগুলোর মানোন্নয়ন হয়েছে। তবে শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন হয়নি। দোষীরা এখনো শাস্তি পায়নি। শ্রমিকদের পুনর্বাসন হয়নি। ন্যায্য ক্ষতিপূরণও পাননি।’
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন বাবদ সব ধরনের সহায়তাই দেওয়া হয়েছে। তবে আহত শ্রমিক রোজিনা বেগম জানান, রানা প্লাজা ধসের পর সাভার ক্যান্টনমেন্ট থেকে দেওয়া কার্ডের মাধ্যমে তিনি ৫০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। এর বাইরে কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি৷
রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩২ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক। আহত হয়েছিলেন প্রায় আড়াই হাজার।
ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরিকুল আলম বলেন, ‘আমি নতুন জয়েন করেছি। এখনই সঠিকভাবে বলতে পারছি না।’
শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘তাজরীন ও রানা প্লাজার হত্যাকাণ্ড গোটা পৃথিবীকে দেখিয়েছিল যে আমাদের কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকেরা কতটা অনিরাপদ ও অসহায়। এখনো দেশে শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় ১-২ লাখ টাকা মাত্র। অথচ আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে মালিকের অবহেলায় শ্রমিকের মৃত্যুতে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা।’
‘পুরা রুম তহন অন্ধকার। ১০-১২ জন ছিলাম মনে হয়। একটু জায়গা ফাঁকা ছিল। একজন কইল, এইখান দিয়া একজনের পর একজন পা ধইরা ধইরা বাইর হওয়া যাইব। প্রথম দুইজন বাইর হয়। তিন নম্বর ছিলাম আমি। আমার পর আর কেউ বাইর হইতে পারছে কি না জানি না।’ বলছিলেন সাভারের রানা প্লাজা ধসে আহত পোশাকশ্রমিক রোজিনা বেগম। দুর্ঘটনার ২ মাস ২৪ দিন আগে ইথারটেক্স ফ্যাশনসে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি ৩ হাজার টাকার মতো বেতনে। ঘরে তখন ১৫ মাসের শিশুকন্যা। স্বপ্ন ছিল, কাজ করে মেয়ের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়ার পাশাপাশি লেখাপড়ার ব্যবস্থাও করবেন। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।
সেদিন ভবনের ষষ্ঠ তলায় কর্মরত ছিলেন রোজিনা। দুর্ঘটনায় হাত-পা গুরুতরভাবে জখম হয় তাঁর। তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকেও স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ফিরে পাননি।
এখনো ট্রমা (মানসিক আঘাত) কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তাই নতুন করে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তিন সন্তানের এই জননী খরচ মেটাতে না পেরে বড় মেয়ের পড়াশোনা চতুর্থ শ্রেণির পরই বন্ধ করে দিয়েছেন। রোজিনা বলেন, ‘দুই-তিন জায়গায় কাজ নিছিলাম। কিন্তু চাইর-পাঁচ দিনের বেশি করতে পারি নাই। বিল্ডিংয়ে ঢুকলেই অসুস্থ হইয়া পড়ি। মনে হয় চাপা পড়ছি।’
রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও রোজিনার মতো শ্রমিকদের বঞ্চনা কাটেনি। একাধিক সমীক্ষা ও শ্রম অধিকারকর্মীদের পর্যবেক্ষণমতে, গত ১১ বছরে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর পরিবেশ বদলেছে। আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিলের (আরএসসি) আওতায় ১ হাজার ৮৮৭টি কারখানা পর্যবেক্ষণে আছে। আর নিরাপদ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে ৩৫০টি। অন্যদিকে রেমিডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেলের (আরসিসি) পর্যবেক্ষণাধীন ৬৫৯টি কারখানা।
তবে শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, কারখানাগুলোর ভবনের নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও পরিবারগুলোকে এত বছরেও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। আহতদের পুনর্বাসনও করা হয়নি।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া কর্মীদের ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ এখনো কর্মহীন। সমীক্ষাটি গত বছর এপ্রিলে প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর কিছু পরিবর্তন এসেছে। কারখানা ভবনগুলোর মানোন্নয়ন হয়েছে। তবে শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন হয়নি। দোষীরা এখনো শাস্তি পায়নি। শ্রমিকদের পুনর্বাসন হয়নি। ন্যায্য ক্ষতিপূরণও পাননি।’
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন বাবদ সব ধরনের সহায়তাই দেওয়া হয়েছে। তবে আহত শ্রমিক রোজিনা বেগম জানান, রানা প্লাজা ধসের পর সাভার ক্যান্টনমেন্ট থেকে দেওয়া কার্ডের মাধ্যমে তিনি ৫০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। এর বাইরে কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি৷
রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩২ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক। আহত হয়েছিলেন প্রায় আড়াই হাজার।
ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরিকুল আলম বলেন, ‘আমি নতুন জয়েন করেছি। এখনই সঠিকভাবে বলতে পারছি না।’
শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘তাজরীন ও রানা প্লাজার হত্যাকাণ্ড গোটা পৃথিবীকে দেখিয়েছিল যে আমাদের কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকেরা কতটা অনিরাপদ ও অসহায়। এখনো দেশে শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় ১-২ লাখ টাকা মাত্র। অথচ আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে মালিকের অবহেলায় শ্রমিকের মৃত্যুতে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা।’
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ইতালি থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঢাকাগামী ফ্লাইট (বিজি ৩৫৬) বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি ফিউমিসিনো বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল।
৪ ঘণ্টা আগেপদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ঋণচুক্তির সময় ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) উল্লেখ না থাকা কিছু কাজ পরে প্রয়োজনে যুক্ত হয়েছে। বাড়তি এসব কাজে খরচ হয়েছে ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (ডলারের বর্তমান বিনিময়হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯৪৭ কোটি টাকা)। এই টাকা ঋণ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে প্রকল্পটিতে
১০ ঘণ্টা আগেজুলাই সনদের আইনি বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে আজ রোববার (১০ আগস্ট) থেকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে তাঁরা প্রাথমিকভাবে সুপ্রিম কোর্টের মতামত, গণভোট ও অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা
১৫ ঘণ্টা আগেপ্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে জনশক্তি রপ্তানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ৫টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে। দেশটির শ্রম বাজারের বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ জনশক্ত
১৫ ঘণ্টা আগে