তানিম আহমেদ, ফেনী থেকে

ফেনী সদরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা একরামুল হক। গত বুধবার থেকে পানিবন্দী তাঁরা। পরিবারের লোকজন নিয়ে একটি মসজিদের দোতলায় থাকছেন। সঙ্গে থাকা খাবার দিয়ে দু-তিন দিন চললেও, এখন চরম সংকটে পরিবারটি।
একরামুল হক গতকাল শনিবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত দুই দিন মুড়ি ও চিড়া খেয়ে কাটিয়েছি। গত শুক্রবার সকালে বালুয়া চৌমুহনী বাজারে গিয়েও কোনো দোকানপাট খোলা পাইনি। সবাই ত্রাণ দিচ্ছে রাস্তার আশপাশের বাড়িতে; কিন্তু গ্রামের ভেতরের মানুষ কিচ্ছু পাচ্ছে না। সবাই কষ্ট আছে।’
হঠাৎ বন্যায় দিশেহারা ফেনীর বাসিন্দারা। পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় খাবার ও সুপেয় পানির সংকট তীব্র হয়েছে। ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলার দুর্গত কয়েকটি এলাকায় সরকারি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চোখে না পড়লেও, স্বেচ্ছাসেবীদের ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে। তবে সেসব মূল সড়ককেন্দ্রিক বেশি দেখা গেছে। নৌকায় করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছালেও তা অপ্রতুল বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
গতকাল বেলা ১১টার পর সদর উপজেলার জয়নাল হাজারী কলেজের গেটের সামনে উঁচু যাত্রীছাউনিতে কথা হয় বৃদ্ধা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, বুধবার আশ্রয়কেন্দ্রে আসার সময় দুটি গরু পাশের বাড়ির খামারে বেঁধে রেখে এসেছিলেন। শেষ সম্বল গরুর দেখাশোনা করতে হাজারী কলেজের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সাঁতরে মূল সড়কে আসেন নূরজাহান। রাস্তায় এসে নৌকা না পাওয়ায় অগত্যা ঠায় বসে থাকেন তিনি।
সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, নৌকা সমস্যার কারণে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। পানি কমায় এখন মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে।
টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে গত মঙ্গলবার থেকে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর ফেনী শহর ও সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন জেলাবাসী। শুক্রবার থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার পানি কমতে থাকলেও বাড়ে সোনাগাজী উপজেলায়। এতে বেশির ভাগ মানুষ আশপাশের বহুতল ভবন, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা-মসজিদে আশ্রয় নেন।
সোনাগাজী এলাকার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার পর লালপোল থেকে সোনাগাজীর সড়ক ধরে হাঁটতে থাকেন এ প্রতিবেদক। পুরো সড়কের কোথাও হাঁটুপানি, আবার কোথাও কোমরপানি ছিল। এ সময় তিন ঘণ্টায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের মতো গোবিন্দপুর, নতুন বাজার, বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় যান তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত স্বেচ্ছাসেবীদের কয়েকটি দলকে ট্রাক ও নৌকায় করে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা যায়। তবে এই কয়েক ঘণ্টায় চোখে পড়েনি সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম।
জাহেদা আক্তার নামের এক নারী জানান, তাঁরা একসঙ্গে আটটি পরিবার আছে। বন্যার কারণে চাপকল থেকে পানি নিতে পারছেন না। জাহেদা আক্তার বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে আট পরিবারের মানুষ। শুকনা খাবার থাইকলেও হানির কষ্টে আছি। হানি না হাইলে বন্যার হানি খাইতে হইব। হেট খারাপ হইলেও কিচ্ছু করার নেই।’
বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ছারোয়ার আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, নিজের টিনের ঘর ডুবে যাওয়ায় পাশের বাড়ির বহুতল ভবনের দোতলায় উঠেছেন। গ্রামের ভেতরে বাড়ি হওয়ায় ত্রাণ দিতে তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। ছারোয়ার আলম বলেন, ‘তিন দিন ধরে আরেকজনের বাইত আশ্রয় লইছি। মাইষে কইতেছে ত্রাণটান দিচ্ছে; কিন্তু চোখে দেখিনি। সরকারি রিলিফও পায় নাই।’
চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে আগত ত্রাণবাহী একটি ট্রাকে করে বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় এক কিলোমিটারের মতো ছিলেন এ প্রতিবেদক। সেখানে বেশির ভাগ মানুষকেই খাবারের পানি চাইতে দেখা যায়। ত্রাণের ট্রাক দেখলে আশপাশের ভবন থেকে পানি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায় মহিলাদের।
সরকারি ত্রাণ তেমন পাচ্ছে না, কিংবা সরকারের কাউকে দেখেনি এমন অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সরকারিভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে—একই সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগেও ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় কথা হয় জয়নাল হাজারী কলেজের ডিগ্রিপড়ুয়া দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তাঁরা জানান, মুরব্বিরা বলছেন তাঁদের জীবনে এমন বন্যা দেখেননি। বন্যার অভিজ্ঞতা থাকলে প্রস্তুতি নেওয়া যেত। অপ্রস্তুত থাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধারকাজে অংশ নিতে নৌকা, স্পিডবোট নিয়ে অনেকেই আসছেন দুর্যোগপূর্ণ এলাকায়। অনেক স্বেচ্ছাসেবী থাকলেও সরেজমিনে কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়নহীনতা লক্ষ করা গেছে। লালপোল থেকে সোনাগাজীর রাস্তায় একাধিক নৌকা ও স্পিডবোট দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দুটি নৌকার স্বেচ্ছাসেবকেরা জানিয়েছেন, মাঝি না থাকায় তাঁরা চালাতে পারছেন না। একই কারণে দুটি নৌকা ট্রাক থেকেও নামানো হয়নি। কীভাবে এই নৌকা ট্রাক থেকে নামানো হবে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তাঁদের।
ফেনী জেলার জয়নাল হাজারী কলেজের সামনে একটি নৌকা ত্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু মাঝি না থাকার কারণে কীভাবে তাঁরা ত্রাণ নিয়ে যাবেন, তা জানেন না। এ সময় পাশে দাঁড়ানো আরেকটি নৌকাকে তাঁদের মাঝি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায়।
বন্যার কারণে ফেনী শহরের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন বাকি উপজেলাগুলোর। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কের কারণে স্থানীয়রাও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। এ কারণে চলমান বন্যায় কী পরিমাণে ফেনীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে তথ্য এখনো সরকার দিতে পারছে না বলে জানা গেছে প্রশাসন সূত্রে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার দিনের বন্যায় যাঁরা যাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন, শুক্রবার থেকে তাঁদের মধ্যে খাবার ও সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস থাকলেও পুলিশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফেনীর নেটওয়ার্ক ডিসকানেকটেড। অতটা খবর আমার কাছেও নেই। আমরা যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু মিরসরাইয়ের পর আর যেতে পারিনি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, আস্তে আস্তে পানি কমতেছে। বিশেষ করে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার পানি কমতেছে। ওইদিকে সোনাগাজীর দিকে পানি বাড়তেছে।’
এখন পর্যন্ত ফেনীতে দুজন মারা গেছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ গতকাল পানিতে পড়ে ১ বছর বয়সী এক মেয়েশিশু মারা গেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন সূত্র। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কাছে দুজন মারা যাওয়ার তথ্য আছে। পানি কমলে এবং নেটওয়ার্ক সচল হলে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’

ফেনী সদরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা একরামুল হক। গত বুধবার থেকে পানিবন্দী তাঁরা। পরিবারের লোকজন নিয়ে একটি মসজিদের দোতলায় থাকছেন। সঙ্গে থাকা খাবার দিয়ে দু-তিন দিন চললেও, এখন চরম সংকটে পরিবারটি।
একরামুল হক গতকাল শনিবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত দুই দিন মুড়ি ও চিড়া খেয়ে কাটিয়েছি। গত শুক্রবার সকালে বালুয়া চৌমুহনী বাজারে গিয়েও কোনো দোকানপাট খোলা পাইনি। সবাই ত্রাণ দিচ্ছে রাস্তার আশপাশের বাড়িতে; কিন্তু গ্রামের ভেতরের মানুষ কিচ্ছু পাচ্ছে না। সবাই কষ্ট আছে।’
হঠাৎ বন্যায় দিশেহারা ফেনীর বাসিন্দারা। পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় খাবার ও সুপেয় পানির সংকট তীব্র হয়েছে। ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলার দুর্গত কয়েকটি এলাকায় সরকারি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চোখে না পড়লেও, স্বেচ্ছাসেবীদের ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে। তবে সেসব মূল সড়ককেন্দ্রিক বেশি দেখা গেছে। নৌকায় করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছালেও তা অপ্রতুল বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
গতকাল বেলা ১১টার পর সদর উপজেলার জয়নাল হাজারী কলেজের গেটের সামনে উঁচু যাত্রীছাউনিতে কথা হয় বৃদ্ধা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, বুধবার আশ্রয়কেন্দ্রে আসার সময় দুটি গরু পাশের বাড়ির খামারে বেঁধে রেখে এসেছিলেন। শেষ সম্বল গরুর দেখাশোনা করতে হাজারী কলেজের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সাঁতরে মূল সড়কে আসেন নূরজাহান। রাস্তায় এসে নৌকা না পাওয়ায় অগত্যা ঠায় বসে থাকেন তিনি।
সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, নৌকা সমস্যার কারণে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। পানি কমায় এখন মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে।
টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে গত মঙ্গলবার থেকে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর ফেনী শহর ও সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন জেলাবাসী। শুক্রবার থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার পানি কমতে থাকলেও বাড়ে সোনাগাজী উপজেলায়। এতে বেশির ভাগ মানুষ আশপাশের বহুতল ভবন, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা-মসজিদে আশ্রয় নেন।
সোনাগাজী এলাকার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার পর লালপোল থেকে সোনাগাজীর সড়ক ধরে হাঁটতে থাকেন এ প্রতিবেদক। পুরো সড়কের কোথাও হাঁটুপানি, আবার কোথাও কোমরপানি ছিল। এ সময় তিন ঘণ্টায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের মতো গোবিন্দপুর, নতুন বাজার, বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় যান তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত স্বেচ্ছাসেবীদের কয়েকটি দলকে ট্রাক ও নৌকায় করে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা যায়। তবে এই কয়েক ঘণ্টায় চোখে পড়েনি সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম।
জাহেদা আক্তার নামের এক নারী জানান, তাঁরা একসঙ্গে আটটি পরিবার আছে। বন্যার কারণে চাপকল থেকে পানি নিতে পারছেন না। জাহেদা আক্তার বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে আট পরিবারের মানুষ। শুকনা খাবার থাইকলেও হানির কষ্টে আছি। হানি না হাইলে বন্যার হানি খাইতে হইব। হেট খারাপ হইলেও কিচ্ছু করার নেই।’
বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ছারোয়ার আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, নিজের টিনের ঘর ডুবে যাওয়ায় পাশের বাড়ির বহুতল ভবনের দোতলায় উঠেছেন। গ্রামের ভেতরে বাড়ি হওয়ায় ত্রাণ দিতে তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। ছারোয়ার আলম বলেন, ‘তিন দিন ধরে আরেকজনের বাইত আশ্রয় লইছি। মাইষে কইতেছে ত্রাণটান দিচ্ছে; কিন্তু চোখে দেখিনি। সরকারি রিলিফও পায় নাই।’
চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে আগত ত্রাণবাহী একটি ট্রাকে করে বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় এক কিলোমিটারের মতো ছিলেন এ প্রতিবেদক। সেখানে বেশির ভাগ মানুষকেই খাবারের পানি চাইতে দেখা যায়। ত্রাণের ট্রাক দেখলে আশপাশের ভবন থেকে পানি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায় মহিলাদের।
সরকারি ত্রাণ তেমন পাচ্ছে না, কিংবা সরকারের কাউকে দেখেনি এমন অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সরকারিভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে—একই সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগেও ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় কথা হয় জয়নাল হাজারী কলেজের ডিগ্রিপড়ুয়া দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তাঁরা জানান, মুরব্বিরা বলছেন তাঁদের জীবনে এমন বন্যা দেখেননি। বন্যার অভিজ্ঞতা থাকলে প্রস্তুতি নেওয়া যেত। অপ্রস্তুত থাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধারকাজে অংশ নিতে নৌকা, স্পিডবোট নিয়ে অনেকেই আসছেন দুর্যোগপূর্ণ এলাকায়। অনেক স্বেচ্ছাসেবী থাকলেও সরেজমিনে কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়নহীনতা লক্ষ করা গেছে। লালপোল থেকে সোনাগাজীর রাস্তায় একাধিক নৌকা ও স্পিডবোট দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দুটি নৌকার স্বেচ্ছাসেবকেরা জানিয়েছেন, মাঝি না থাকায় তাঁরা চালাতে পারছেন না। একই কারণে দুটি নৌকা ট্রাক থেকেও নামানো হয়নি। কীভাবে এই নৌকা ট্রাক থেকে নামানো হবে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তাঁদের।
ফেনী জেলার জয়নাল হাজারী কলেজের সামনে একটি নৌকা ত্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু মাঝি না থাকার কারণে কীভাবে তাঁরা ত্রাণ নিয়ে যাবেন, তা জানেন না। এ সময় পাশে দাঁড়ানো আরেকটি নৌকাকে তাঁদের মাঝি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায়।
বন্যার কারণে ফেনী শহরের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন বাকি উপজেলাগুলোর। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কের কারণে স্থানীয়রাও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। এ কারণে চলমান বন্যায় কী পরিমাণে ফেনীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে তথ্য এখনো সরকার দিতে পারছে না বলে জানা গেছে প্রশাসন সূত্রে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার দিনের বন্যায় যাঁরা যাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন, শুক্রবার থেকে তাঁদের মধ্যে খাবার ও সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস থাকলেও পুলিশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফেনীর নেটওয়ার্ক ডিসকানেকটেড। অতটা খবর আমার কাছেও নেই। আমরা যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু মিরসরাইয়ের পর আর যেতে পারিনি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, আস্তে আস্তে পানি কমতেছে। বিশেষ করে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার পানি কমতেছে। ওইদিকে সোনাগাজীর দিকে পানি বাড়তেছে।’
এখন পর্যন্ত ফেনীতে দুজন মারা গেছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ গতকাল পানিতে পড়ে ১ বছর বয়সী এক মেয়েশিশু মারা গেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন সূত্র। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কাছে দুজন মারা যাওয়ার তথ্য আছে। পানি কমলে এবং নেটওয়ার্ক সচল হলে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’
তানিম আহমেদ, ফেনী থেকে

ফেনী সদরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা একরামুল হক। গত বুধবার থেকে পানিবন্দী তাঁরা। পরিবারের লোকজন নিয়ে একটি মসজিদের দোতলায় থাকছেন। সঙ্গে থাকা খাবার দিয়ে দু-তিন দিন চললেও, এখন চরম সংকটে পরিবারটি।
একরামুল হক গতকাল শনিবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত দুই দিন মুড়ি ও চিড়া খেয়ে কাটিয়েছি। গত শুক্রবার সকালে বালুয়া চৌমুহনী বাজারে গিয়েও কোনো দোকানপাট খোলা পাইনি। সবাই ত্রাণ দিচ্ছে রাস্তার আশপাশের বাড়িতে; কিন্তু গ্রামের ভেতরের মানুষ কিচ্ছু পাচ্ছে না। সবাই কষ্ট আছে।’
হঠাৎ বন্যায় দিশেহারা ফেনীর বাসিন্দারা। পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় খাবার ও সুপেয় পানির সংকট তীব্র হয়েছে। ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলার দুর্গত কয়েকটি এলাকায় সরকারি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চোখে না পড়লেও, স্বেচ্ছাসেবীদের ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে। তবে সেসব মূল সড়ককেন্দ্রিক বেশি দেখা গেছে। নৌকায় করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছালেও তা অপ্রতুল বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
গতকাল বেলা ১১টার পর সদর উপজেলার জয়নাল হাজারী কলেজের গেটের সামনে উঁচু যাত্রীছাউনিতে কথা হয় বৃদ্ধা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, বুধবার আশ্রয়কেন্দ্রে আসার সময় দুটি গরু পাশের বাড়ির খামারে বেঁধে রেখে এসেছিলেন। শেষ সম্বল গরুর দেখাশোনা করতে হাজারী কলেজের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সাঁতরে মূল সড়কে আসেন নূরজাহান। রাস্তায় এসে নৌকা না পাওয়ায় অগত্যা ঠায় বসে থাকেন তিনি।
সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, নৌকা সমস্যার কারণে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। পানি কমায় এখন মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে।
টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে গত মঙ্গলবার থেকে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর ফেনী শহর ও সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন জেলাবাসী। শুক্রবার থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার পানি কমতে থাকলেও বাড়ে সোনাগাজী উপজেলায়। এতে বেশির ভাগ মানুষ আশপাশের বহুতল ভবন, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা-মসজিদে আশ্রয় নেন।
সোনাগাজী এলাকার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার পর লালপোল থেকে সোনাগাজীর সড়ক ধরে হাঁটতে থাকেন এ প্রতিবেদক। পুরো সড়কের কোথাও হাঁটুপানি, আবার কোথাও কোমরপানি ছিল। এ সময় তিন ঘণ্টায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের মতো গোবিন্দপুর, নতুন বাজার, বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় যান তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত স্বেচ্ছাসেবীদের কয়েকটি দলকে ট্রাক ও নৌকায় করে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা যায়। তবে এই কয়েক ঘণ্টায় চোখে পড়েনি সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম।
জাহেদা আক্তার নামের এক নারী জানান, তাঁরা একসঙ্গে আটটি পরিবার আছে। বন্যার কারণে চাপকল থেকে পানি নিতে পারছেন না। জাহেদা আক্তার বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে আট পরিবারের মানুষ। শুকনা খাবার থাইকলেও হানির কষ্টে আছি। হানি না হাইলে বন্যার হানি খাইতে হইব। হেট খারাপ হইলেও কিচ্ছু করার নেই।’
বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ছারোয়ার আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, নিজের টিনের ঘর ডুবে যাওয়ায় পাশের বাড়ির বহুতল ভবনের দোতলায় উঠেছেন। গ্রামের ভেতরে বাড়ি হওয়ায় ত্রাণ দিতে তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। ছারোয়ার আলম বলেন, ‘তিন দিন ধরে আরেকজনের বাইত আশ্রয় লইছি। মাইষে কইতেছে ত্রাণটান দিচ্ছে; কিন্তু চোখে দেখিনি। সরকারি রিলিফও পায় নাই।’
চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে আগত ত্রাণবাহী একটি ট্রাকে করে বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় এক কিলোমিটারের মতো ছিলেন এ প্রতিবেদক। সেখানে বেশির ভাগ মানুষকেই খাবারের পানি চাইতে দেখা যায়। ত্রাণের ট্রাক দেখলে আশপাশের ভবন থেকে পানি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায় মহিলাদের।
সরকারি ত্রাণ তেমন পাচ্ছে না, কিংবা সরকারের কাউকে দেখেনি এমন অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সরকারিভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে—একই সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগেও ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় কথা হয় জয়নাল হাজারী কলেজের ডিগ্রিপড়ুয়া দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তাঁরা জানান, মুরব্বিরা বলছেন তাঁদের জীবনে এমন বন্যা দেখেননি। বন্যার অভিজ্ঞতা থাকলে প্রস্তুতি নেওয়া যেত। অপ্রস্তুত থাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধারকাজে অংশ নিতে নৌকা, স্পিডবোট নিয়ে অনেকেই আসছেন দুর্যোগপূর্ণ এলাকায়। অনেক স্বেচ্ছাসেবী থাকলেও সরেজমিনে কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়নহীনতা লক্ষ করা গেছে। লালপোল থেকে সোনাগাজীর রাস্তায় একাধিক নৌকা ও স্পিডবোট দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দুটি নৌকার স্বেচ্ছাসেবকেরা জানিয়েছেন, মাঝি না থাকায় তাঁরা চালাতে পারছেন না। একই কারণে দুটি নৌকা ট্রাক থেকেও নামানো হয়নি। কীভাবে এই নৌকা ট্রাক থেকে নামানো হবে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তাঁদের।
ফেনী জেলার জয়নাল হাজারী কলেজের সামনে একটি নৌকা ত্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু মাঝি না থাকার কারণে কীভাবে তাঁরা ত্রাণ নিয়ে যাবেন, তা জানেন না। এ সময় পাশে দাঁড়ানো আরেকটি নৌকাকে তাঁদের মাঝি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায়।
বন্যার কারণে ফেনী শহরের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন বাকি উপজেলাগুলোর। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কের কারণে স্থানীয়রাও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। এ কারণে চলমান বন্যায় কী পরিমাণে ফেনীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে তথ্য এখনো সরকার দিতে পারছে না বলে জানা গেছে প্রশাসন সূত্রে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার দিনের বন্যায় যাঁরা যাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন, শুক্রবার থেকে তাঁদের মধ্যে খাবার ও সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস থাকলেও পুলিশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফেনীর নেটওয়ার্ক ডিসকানেকটেড। অতটা খবর আমার কাছেও নেই। আমরা যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু মিরসরাইয়ের পর আর যেতে পারিনি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, আস্তে আস্তে পানি কমতেছে। বিশেষ করে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার পানি কমতেছে। ওইদিকে সোনাগাজীর দিকে পানি বাড়তেছে।’
এখন পর্যন্ত ফেনীতে দুজন মারা গেছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ গতকাল পানিতে পড়ে ১ বছর বয়সী এক মেয়েশিশু মারা গেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন সূত্র। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কাছে দুজন মারা যাওয়ার তথ্য আছে। পানি কমলে এবং নেটওয়ার্ক সচল হলে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’

ফেনী সদরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা একরামুল হক। গত বুধবার থেকে পানিবন্দী তাঁরা। পরিবারের লোকজন নিয়ে একটি মসজিদের দোতলায় থাকছেন। সঙ্গে থাকা খাবার দিয়ে দু-তিন দিন চললেও, এখন চরম সংকটে পরিবারটি।
একরামুল হক গতকাল শনিবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত দুই দিন মুড়ি ও চিড়া খেয়ে কাটিয়েছি। গত শুক্রবার সকালে বালুয়া চৌমুহনী বাজারে গিয়েও কোনো দোকানপাট খোলা পাইনি। সবাই ত্রাণ দিচ্ছে রাস্তার আশপাশের বাড়িতে; কিন্তু গ্রামের ভেতরের মানুষ কিচ্ছু পাচ্ছে না। সবাই কষ্ট আছে।’
হঠাৎ বন্যায় দিশেহারা ফেনীর বাসিন্দারা। পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় খাবার ও সুপেয় পানির সংকট তীব্র হয়েছে। ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলার দুর্গত কয়েকটি এলাকায় সরকারি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চোখে না পড়লেও, স্বেচ্ছাসেবীদের ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে। তবে সেসব মূল সড়ককেন্দ্রিক বেশি দেখা গেছে। নৌকায় করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছালেও তা অপ্রতুল বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
গতকাল বেলা ১১টার পর সদর উপজেলার জয়নাল হাজারী কলেজের গেটের সামনে উঁচু যাত্রীছাউনিতে কথা হয় বৃদ্ধা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, বুধবার আশ্রয়কেন্দ্রে আসার সময় দুটি গরু পাশের বাড়ির খামারে বেঁধে রেখে এসেছিলেন। শেষ সম্বল গরুর দেখাশোনা করতে হাজারী কলেজের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সাঁতরে মূল সড়কে আসেন নূরজাহান। রাস্তায় এসে নৌকা না পাওয়ায় অগত্যা ঠায় বসে থাকেন তিনি।
সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, নৌকা সমস্যার কারণে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। পানি কমায় এখন মেডিকেল টিম কাজ শুরু করেছে।
টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে গত মঙ্গলবার থেকে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর ফেনী শহর ও সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন জেলাবাসী। শুক্রবার থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার পানি কমতে থাকলেও বাড়ে সোনাগাজী উপজেলায়। এতে বেশির ভাগ মানুষ আশপাশের বহুতল ভবন, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা-মসজিদে আশ্রয় নেন।
সোনাগাজী এলাকার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার পর লালপোল থেকে সোনাগাজীর সড়ক ধরে হাঁটতে থাকেন এ প্রতিবেদক। পুরো সড়কের কোথাও হাঁটুপানি, আবার কোথাও কোমরপানি ছিল। এ সময় তিন ঘণ্টায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের মতো গোবিন্দপুর, নতুন বাজার, বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় যান তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত স্বেচ্ছাসেবীদের কয়েকটি দলকে ট্রাক ও নৌকায় করে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা যায়। তবে এই কয়েক ঘণ্টায় চোখে পড়েনি সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম।
জাহেদা আক্তার নামের এক নারী জানান, তাঁরা একসঙ্গে আটটি পরিবার আছে। বন্যার কারণে চাপকল থেকে পানি নিতে পারছেন না। জাহেদা আক্তার বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে আট পরিবারের মানুষ। শুকনা খাবার থাইকলেও হানির কষ্টে আছি। হানি না হাইলে বন্যার হানি খাইতে হইব। হেট খারাপ হইলেও কিচ্ছু করার নেই।’
বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ছারোয়ার আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, নিজের টিনের ঘর ডুবে যাওয়ায় পাশের বাড়ির বহুতল ভবনের দোতলায় উঠেছেন। গ্রামের ভেতরে বাড়ি হওয়ায় ত্রাণ দিতে তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। ছারোয়ার আলম বলেন, ‘তিন দিন ধরে আরেকজনের বাইত আশ্রয় লইছি। মাইষে কইতেছে ত্রাণটান দিচ্ছে; কিন্তু চোখে দেখিনি। সরকারি রিলিফও পায় নাই।’
চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে আগত ত্রাণবাহী একটি ট্রাকে করে বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় এক কিলোমিটারের মতো ছিলেন এ প্রতিবেদক। সেখানে বেশির ভাগ মানুষকেই খাবারের পানি চাইতে দেখা যায়। ত্রাণের ট্রাক দেখলে আশপাশের ভবন থেকে পানি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায় মহিলাদের।
সরকারি ত্রাণ তেমন পাচ্ছে না, কিংবা সরকারের কাউকে দেখেনি এমন অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সরকারিভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে—একই সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোগেও ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বালুয়া চৌমুহনী এলাকায় কথা হয় জয়নাল হাজারী কলেজের ডিগ্রিপড়ুয়া দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তাঁরা জানান, মুরব্বিরা বলছেন তাঁদের জীবনে এমন বন্যা দেখেননি। বন্যার অভিজ্ঞতা থাকলে প্রস্তুতি নেওয়া যেত। অপ্রস্তুত থাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধারকাজে অংশ নিতে নৌকা, স্পিডবোট নিয়ে অনেকেই আসছেন দুর্যোগপূর্ণ এলাকায়। অনেক স্বেচ্ছাসেবী থাকলেও সরেজমিনে কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়নহীনতা লক্ষ করা গেছে। লালপোল থেকে সোনাগাজীর রাস্তায় একাধিক নৌকা ও স্পিডবোট দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দুটি নৌকার স্বেচ্ছাসেবকেরা জানিয়েছেন, মাঝি না থাকায় তাঁরা চালাতে পারছেন না। একই কারণে দুটি নৌকা ট্রাক থেকেও নামানো হয়নি। কীভাবে এই নৌকা ট্রাক থেকে নামানো হবে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তাঁদের।
ফেনী জেলার জয়নাল হাজারী কলেজের সামনে একটি নৌকা ত্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু মাঝি না থাকার কারণে কীভাবে তাঁরা ত্রাণ নিয়ে যাবেন, তা জানেন না। এ সময় পাশে দাঁড়ানো আরেকটি নৌকাকে তাঁদের মাঝি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায়।
বন্যার কারণে ফেনী শহরের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন বাকি উপজেলাগুলোর। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কের কারণে স্থানীয়রাও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। এ কারণে চলমান বন্যায় কী পরিমাণে ফেনীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে তথ্য এখনো সরকার দিতে পারছে না বলে জানা গেছে প্রশাসন সূত্রে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার দিনের বন্যায় যাঁরা যাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন, শুক্রবার থেকে তাঁদের মধ্যে খাবার ও সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস থাকলেও পুলিশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফেনীর নেটওয়ার্ক ডিসকানেকটেড। অতটা খবর আমার কাছেও নেই। আমরা যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু মিরসরাইয়ের পর আর যেতে পারিনি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, আস্তে আস্তে পানি কমতেছে। বিশেষ করে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার পানি কমতেছে। ওইদিকে সোনাগাজীর দিকে পানি বাড়তেছে।’
এখন পর্যন্ত ফেনীতে দুজন মারা গেছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ গতকাল পানিতে পড়ে ১ বছর বয়সী এক মেয়েশিশু মারা গেছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন সূত্র। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কাছে দুজন মারা যাওয়ার তথ্য আছে। পানি কমলে এবং নেটওয়ার্ক সচল হলে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’

আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
১ ঘণ্টা আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী। পরিকল্পিতভাবে একযোগে বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বিজয়ের পরই তাঁদের অনেকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহের সন্ধান মেলে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী স্থানীয় আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরাই মূলত বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। আর এই দুই বাহিনীর মূল শক্তি ছিল স্বাধীনতাবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক শক্তি জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা। পাকসেনাদের আত্মসমর্পণের আগে ঢাকা শহরে ঘন ঘন কারফিউয়ের মধ্যে মাইক্রোবাস নিয়ে বেরিয়ে অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তাদের সহায়তা করেছিল ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালে ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ছাত্রসংঘের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও আলবদর কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। পলাতক আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে। দুই দেশই তাদের ফেরত দিচ্ছে না।
ট্রাইব্যনালের ১৫৪ পৃষ্ঠার রায়ে উঠে এসেছে, কীভাবে আশরাফুজ্জামান ও মুঈনুদ্দীন ১৯৭১ সালের ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আল বদর সদস্যদের নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যার পর বধ্যভূমিতে লাশ গুম করেছিলেন। আশরাফুজ্জামান ছিলেন হত্যাযজ্ঞের ‘চিফ এক্সিকিউটর’ ও মুঈনুদ্দীন ‘অপারেশন ইনচার্জ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আশরাফুজ্জামানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা ব্যক্তিগত দিনপঞ্জিতে হত্যার পরিকল্পনা ও একটি তালিকাও পাওয়া যায়।
জামায়াতের এই দুই ছাত্র নেতা ও তাদের সহযোগীদের হাতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাট্যকার মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ড. সিরাজুল হক খান, ড. আবুল খায়ের, ড. ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য।

সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সৈয়দ নাজমুল হক, এএনএম গোলাম মুস্তাফা, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, সেলিনা পারভীন, শহীদুল্লাহ কায়সার এবং চিকিৎসক মো. মর্তুজা, মো. ফজলে রাব্বি ও আলিম চৌধুরীকেও হত্যার পর গুম করে তারা।
‘ফ্যাসিস্ট’ জামায়াত
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছিল। আদালত বলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামী একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসাবে কাজ করেছে। ‘কিলিং স্কোয়াড’ আল বদরের নিয়ন্ত্রণ জামায়াতের হাতেই ছিল।
রায়ে বলা হয়, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ফ্যাসিস্ট জামায়াতে ইসলামীর সংগঠিত মহাপরিকল্পনার আলোকেই সে সময় আল বদর বাহিনীকে নামানো হয়। বাঙালি জাতিকে প্যারালাইজড করতে তারা বুদ্ধিজীবী-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিহীন করতে চেয়েছিল।
একাত্তরের ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে অপহরণের পর হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, ‘সন্তানের জন্য সেলিনা পারভীন প্রাণ ভিক্ষা চান, তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তার ছোট একটি ছেলে রয়েছে, যাকে দেখাশুনা করার আর কেউ নেই। কিন্তু নিষ্ঠুর হত্যাকারীরা তাকে ছাড়েনি। বেয়নেট দিয়ে তাকে তাতক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয় বলে প্রসিকিউশনের ২২ নম্বর সাক্ষী জানিয়েছেন। সেলিনা পারভীন ছিলেন একজন মা। ভীতিকর আক্রমণ কেবল সেলিনা পারভীনের ওপরই করা হয় নাই। বরং মাতৃত্বের ওপরও হয়েছে। এটা বরং মাতৃহন্তাও। অবর্ণনীয় এই নিষ্ঠুরতা মানবতার বিবেককে আঘাত করেছে।’
এর আগে জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায়ে দলটিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ আখ্যা দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলে পুলিশ প্রহরায় মুঈনুদ্দীনকে দেশে আসার সুযোগ করে দেয়ায় ওই দুই সামরিক শাসককেও ধিক্কার জানানো হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।
রায়ে বলা হয়, ‘এটা জাতির বড় একটি বিরাট লজ্জা (গ্রেট শেম) যে, জিয়া ও এরশাদ তাকে গ্রামের বাড়িতে যেতে দিয়েছেন। আত্মগোপনে গিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এই আসামিকে সে সময় পুলিশি নিরাপত্তাও দেয়া হয়। বিচারের মুখোমুখি করার পরিবর্তে তাকে রাষ্ট্রীয় মেশিনারি দিয়ে সম্মান দেয়া হলো।’

আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী। পরিকল্পিতভাবে একযোগে বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বিজয়ের পরই তাঁদের অনেকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহের সন্ধান মেলে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী স্থানীয় আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরাই মূলত বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। আর এই দুই বাহিনীর মূল শক্তি ছিল স্বাধীনতাবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক শক্তি জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা। পাকসেনাদের আত্মসমর্পণের আগে ঢাকা শহরে ঘন ঘন কারফিউয়ের মধ্যে মাইক্রোবাস নিয়ে বেরিয়ে অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তাদের সহায়তা করেছিল ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালে ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ছাত্রসংঘের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও আলবদর কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। পলাতক আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে। দুই দেশই তাদের ফেরত দিচ্ছে না।
ট্রাইব্যনালের ১৫৪ পৃষ্ঠার রায়ে উঠে এসেছে, কীভাবে আশরাফুজ্জামান ও মুঈনুদ্দীন ১৯৭১ সালের ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আল বদর সদস্যদের নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যার পর বধ্যভূমিতে লাশ গুম করেছিলেন। আশরাফুজ্জামান ছিলেন হত্যাযজ্ঞের ‘চিফ এক্সিকিউটর’ ও মুঈনুদ্দীন ‘অপারেশন ইনচার্জ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আশরাফুজ্জামানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা ব্যক্তিগত দিনপঞ্জিতে হত্যার পরিকল্পনা ও একটি তালিকাও পাওয়া যায়।
জামায়াতের এই দুই ছাত্র নেতা ও তাদের সহযোগীদের হাতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাট্যকার মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ড. সিরাজুল হক খান, ড. আবুল খায়ের, ড. ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য।

সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সৈয়দ নাজমুল হক, এএনএম গোলাম মুস্তাফা, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, সেলিনা পারভীন, শহীদুল্লাহ কায়সার এবং চিকিৎসক মো. মর্তুজা, মো. ফজলে রাব্বি ও আলিম চৌধুরীকেও হত্যার পর গুম করে তারা।
‘ফ্যাসিস্ট’ জামায়াত
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছিল। আদালত বলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামী একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসাবে কাজ করেছে। ‘কিলিং স্কোয়াড’ আল বদরের নিয়ন্ত্রণ জামায়াতের হাতেই ছিল।
রায়ে বলা হয়, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ফ্যাসিস্ট জামায়াতে ইসলামীর সংগঠিত মহাপরিকল্পনার আলোকেই সে সময় আল বদর বাহিনীকে নামানো হয়। বাঙালি জাতিকে প্যারালাইজড করতে তারা বুদ্ধিজীবী-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিহীন করতে চেয়েছিল।
একাত্তরের ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে অপহরণের পর হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, ‘সন্তানের জন্য সেলিনা পারভীন প্রাণ ভিক্ষা চান, তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তার ছোট একটি ছেলে রয়েছে, যাকে দেখাশুনা করার আর কেউ নেই। কিন্তু নিষ্ঠুর হত্যাকারীরা তাকে ছাড়েনি। বেয়নেট দিয়ে তাকে তাতক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয় বলে প্রসিকিউশনের ২২ নম্বর সাক্ষী জানিয়েছেন। সেলিনা পারভীন ছিলেন একজন মা। ভীতিকর আক্রমণ কেবল সেলিনা পারভীনের ওপরই করা হয় নাই। বরং মাতৃত্বের ওপরও হয়েছে। এটা বরং মাতৃহন্তাও। অবর্ণনীয় এই নিষ্ঠুরতা মানবতার বিবেককে আঘাত করেছে।’
এর আগে জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায়ে দলটিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ আখ্যা দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলে পুলিশ প্রহরায় মুঈনুদ্দীনকে দেশে আসার সুযোগ করে দেয়ায় ওই দুই সামরিক শাসককেও ধিক্কার জানানো হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।
রায়ে বলা হয়, ‘এটা জাতির বড় একটি বিরাট লজ্জা (গ্রেট শেম) যে, জিয়া ও এরশাদ তাকে গ্রামের বাড়িতে যেতে দিয়েছেন। আত্মগোপনে গিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এই আসামিকে সে সময় পুলিশি নিরাপত্তাও দেয়া হয়। বিচারের মুখোমুখি করার পরিবর্তে তাকে রাষ্ট্রীয় মেশিনারি দিয়ে সম্মান দেয়া হলো।’

ফেনী সদরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা একরামুল হক। গত বুধবার থেকে পানিবন্দী তাঁরা। পরিবারের লোকজন নিয়ে একটি মসজিদের দোতলায় থাকছেন। সঙ্গে থাকা খাবার দিয়ে দু-তিন দিন চললেও, এখন চরম সংকটে পরিবারটি।
২৫ আগস্ট ২০২৪
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ফেনী সদরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা একরামুল হক। গত বুধবার থেকে পানিবন্দী তাঁরা। পরিবারের লোকজন নিয়ে একটি মসজিদের দোতলায় থাকছেন। সঙ্গে থাকা খাবার দিয়ে দু-তিন দিন চললেও, এখন চরম সংকটে পরিবারটি।
২৫ আগস্ট ২০২৪
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
১ ঘণ্টা আগে
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, পছন্দসই পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন বৃহত্তর রাজনীতির একটা অঙ্গ হলেও বিচারকদের রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়। কেবল ক্ষমতাবান শাসকশ্রেণির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব নিলে বিচার বিভাগের আলাদা কোনো অস্তিত্বেরই প্রয়োজন নেই। সে কাজের জন্য নির্বাহী বিভাগ ও পুলিশই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ভিত্তি যে আদর্শকেই ধারণ করে গড়ে ওঠুক না কেন, বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আজ রোববার জেলা ও মহানগর দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১১ আগস্ট ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন রেফাত আহমেদ। অবসর নেওয়ার আগে আজ বিদায়ী ভাষণ দেন তিনি। ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন রেফাত আহমেদ।
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুনানিকালে কোনো বিশেষ পদবিধারী ব্যক্তি বা ক্ষমতাবান পক্ষকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া বিচারকের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘এই পৃথক সচিবালয় (সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়) প্রতিষ্ঠার কোনো স্বার্থকতা নেই, যদি না আমরা ব্যক্তিগত অসততার ব্যাপারে সতর্ক থাকি। একটি স্বাধীন সচিবালয় কেবল শুরু, সর্বশেষ উদ্দেশ্য নয়। আপনাদের উচিত, সততা আর যোগ্যতার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। অনুপার্জিত অর্থের বাসনা, অন্যায্য বিলাসী জীবন এবং অসংগত ক্ষমতার প্রতিপত্তি যদি আমাদের মনকে কলুষিত করে রাখে, তাহলে পৃথিবীর কোনো আইনি বিধানই আমাদের সামষ্টিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না।’
বিচারকদের উদ্দেশে রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘উন্নত জীবনমান ও কর্মপরিবেশের প্রতি প্রত্যাশা কখনোই ব্যক্তিগত ভোগ, আত্মতুষ্টি কিংবা সামাজিক মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য হতে পারে না। এর অন্তরে থাকতে হবে বিচারিক সক্ষমতার উন্নয়ন, জ্ঞানচর্চার সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের কর্মদক্ষতা অর্জনের সৎ প্রেরণা। এটি অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ সংস্কৃতি এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা এখনো একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারিনি। তবে বিদ্যমান সুযোগের ন্যূনতম সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিচারকদের বড় অংশের অনীহা ও কার্পণ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ—জ্ঞান অর্জন ও পাঠাভ্যাসকে আপনারা জীবনের পরম দায় হিসেবে নেবেন।’

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, পছন্দসই পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন বৃহত্তর রাজনীতির একটা অঙ্গ হলেও বিচারকদের রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়। কেবল ক্ষমতাবান শাসকশ্রেণির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব নিলে বিচার বিভাগের আলাদা কোনো অস্তিত্বেরই প্রয়োজন নেই। সে কাজের জন্য নির্বাহী বিভাগ ও পুলিশই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ভিত্তি যে আদর্শকেই ধারণ করে গড়ে ওঠুক না কেন, বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আজ রোববার জেলা ও মহানগর দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১১ আগস্ট ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন রেফাত আহমেদ। অবসর নেওয়ার আগে আজ বিদায়ী ভাষণ দেন তিনি। ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন রেফাত আহমেদ।
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুনানিকালে কোনো বিশেষ পদবিধারী ব্যক্তি বা ক্ষমতাবান পক্ষকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া বিচারকের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘এই পৃথক সচিবালয় (সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়) প্রতিষ্ঠার কোনো স্বার্থকতা নেই, যদি না আমরা ব্যক্তিগত অসততার ব্যাপারে সতর্ক থাকি। একটি স্বাধীন সচিবালয় কেবল শুরু, সর্বশেষ উদ্দেশ্য নয়। আপনাদের উচিত, সততা আর যোগ্যতার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। অনুপার্জিত অর্থের বাসনা, অন্যায্য বিলাসী জীবন এবং অসংগত ক্ষমতার প্রতিপত্তি যদি আমাদের মনকে কলুষিত করে রাখে, তাহলে পৃথিবীর কোনো আইনি বিধানই আমাদের সামষ্টিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না।’
বিচারকদের উদ্দেশে রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘উন্নত জীবনমান ও কর্মপরিবেশের প্রতি প্রত্যাশা কখনোই ব্যক্তিগত ভোগ, আত্মতুষ্টি কিংবা সামাজিক মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য হতে পারে না। এর অন্তরে থাকতে হবে বিচারিক সক্ষমতার উন্নয়ন, জ্ঞানচর্চার সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের কর্মদক্ষতা অর্জনের সৎ প্রেরণা। এটি অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ সংস্কৃতি এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা এখনো একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারিনি। তবে বিদ্যমান সুযোগের ন্যূনতম সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিচারকদের বড় অংশের অনীহা ও কার্পণ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ—জ্ঞান অর্জন ও পাঠাভ্যাসকে আপনারা জীবনের পরম দায় হিসেবে নেবেন।’

ফেনী সদরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা একরামুল হক। গত বুধবার থেকে পানিবন্দী তাঁরা। পরিবারের লোকজন নিয়ে একটি মসজিদের দোতলায় থাকছেন। সঙ্গে থাকা খাবার দিয়ে দু-তিন দিন চললেও, এখন চরম সংকটে পরিবারটি।
২৫ আগস্ট ২০২৪
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
১ ঘণ্টা আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সানাউল্লাহ বলেন, ‘আজকে একটা বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ডেকেছিলাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত উদ্ভূত বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। সামনের আমাদের কার্যক্রম এবং কৌশল কী হওয়া উচিত—সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তাঁদের বিভিন্ন মত শুনেছি।’
সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় একটা ঘটনা, যেটা আমাদের সবার সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপরে চোরাগোপ্তা হামলা। সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলছি না। সেখানকার আরও কিছু বিষয় সম্বন্ধে আমরা অবহিত হয়েছে। যেগুলোর সাথে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত।’
সানাউল্লাহ বলেন, ‘এখানে কয়েকটা বিষয় উঠে এসেছে যে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হচ্ছে সন্দেহভাজন হিসেবে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই একটা সখ্যতা গড়ে তুলে অত্যন্ত কাছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে যে তার একটা অতীত আছে, পেছনে তার একটা রাজনৈতিক ইন্টারেসিডেন্স (মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ) আছে এবং তার একটা ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা জানতে পারলাম যে রেবেল হান্ট বিশেষ করে—এক শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব সন্ত্রাসীদের অ্যারেস্ট করা হয়েছিল, তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গেছে এবং তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে আমাদের কী করণীয়—সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’
দেশে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সামনেও যে এটা সম্ভাবনা নাই, তা-ও বলছি না। আজকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এগুলো যাতে কঠোর হস্তে দমন করা হয় ... নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার। নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নাই।’
প্রার্থীদের বৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য নজরে আনলে এই নির্বাচন কমিশনার বলে, ‘আমার সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিশনের সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। উনি কী মন্তব্য করেছেন, কোন প্রেক্ষাপটে করেছেন, আমি যদি জানি পরে আমি আলোকপাত করতে পারব।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সানাউল্লাহ বলেন, ‘আজকে একটা বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ডেকেছিলাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত উদ্ভূত বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। সামনের আমাদের কার্যক্রম এবং কৌশল কী হওয়া উচিত—সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তাঁদের বিভিন্ন মত শুনেছি।’
সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় একটা ঘটনা, যেটা আমাদের সবার সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপরে চোরাগোপ্তা হামলা। সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলছি না। সেখানকার আরও কিছু বিষয় সম্বন্ধে আমরা অবহিত হয়েছে। যেগুলোর সাথে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত।’
সানাউল্লাহ বলেন, ‘এখানে কয়েকটা বিষয় উঠে এসেছে যে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হচ্ছে সন্দেহভাজন হিসেবে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই একটা সখ্যতা গড়ে তুলে অত্যন্ত কাছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে যে তার একটা অতীত আছে, পেছনে তার একটা রাজনৈতিক ইন্টারেসিডেন্স (মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ) আছে এবং তার একটা ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা জানতে পারলাম যে রেবেল হান্ট বিশেষ করে—এক শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব সন্ত্রাসীদের অ্যারেস্ট করা হয়েছিল, তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গেছে এবং তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে আমাদের কী করণীয়—সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’
দেশে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সামনেও যে এটা সম্ভাবনা নাই, তা-ও বলছি না। আজকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এগুলো যাতে কঠোর হস্তে দমন করা হয় ... নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার। নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নাই।’
প্রার্থীদের বৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য নজরে আনলে এই নির্বাচন কমিশনার বলে, ‘আমার সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিশনের সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। উনি কী মন্তব্য করেছেন, কোন প্রেক্ষাপটে করেছেন, আমি যদি জানি পরে আমি আলোকপাত করতে পারব।’

ফেনী সদরের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা একরামুল হক। গত বুধবার থেকে পানিবন্দী তাঁরা। পরিবারের লোকজন নিয়ে একটি মসজিদের দোতলায় থাকছেন। সঙ্গে থাকা খাবার দিয়ে দু-তিন দিন চললেও, এখন চরম সংকটে পরিবারটি।
২৫ আগস্ট ২০২৪
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
১ ঘণ্টা আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে
প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৩ ঘণ্টা আগে