Ajker Patrika

বাগেরহাট ডিসি অফিসের সাবেক উমেদারের বিরুদ্ধে ২৪৫ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাগেরহাট ডিসি অফিসের সাবেক উমেদারের বিরুদ্ধে ২৪৫ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলা

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক উমেদার (এমএলএসএস) আব্দুল মান্নান তালুকদারসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২৪৫ কোটি ২৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে বাগেরহাট সদর থানায় মামলাটি করা হয়।

মামলার অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন মো. আনিসুর রহমান (৬২), সালেহা বেগম ও আব্দুল মান্নানের স্ত্রী জেসমিন নাহার।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ১৯ হাজার ৯৬৭ জন সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করা হয়। পরে এসব অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে-বেনামে ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়।

তদন্তে জানা যায়, আব্দুল মান্নান তালুকদার ১৯৮৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এমএলএসএস পদে চাকরি করেন। চাকরিরত অবস্থায় তিনি জমি কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেন। অবসরে যাওয়ার পর তিনি ‘মানুষ মানুষের জন্য’ স্লোগানে ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটিতে মান্নান ও তাঁর পরিবারের মালিকানা ছিল ৯৫ শতাংশ এবং অন্য ৫ শতাংশের মালিক ছিলেন আনিসুর রহমান।

প্রতিষ্ঠানটি সুদবিহীন ‘হালাল ব্যবসার’ নামে প্রচারণা চালিয়ে ৫ হাজার টাকা থেকে যেকোনো অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগে আকৃষ্ট করত। বিনিয়োগের চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ মুনাফার কথা বলা হতো। এভাবে অর্থ সংগ্রহ করে তা গোপনে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবসায় স্থানান্তর করেন।

তদন্তে আরও জানা যায়, সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ৬৬ কোটি ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা মান্নানের মালিকানাধীন সাবিল গ্রুপের ছয়টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো এজাক্স জুট মিলস লিমিটেড (খুলনা), সাবিল ড্রেজিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (বাগেরহাট), সাবিল জেনারেল হাসপাতাল (পিরোজপুর), সাবিল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প, সাবিল ল প্লাজা ও সাবিল মৎস্য প্রকল্প।

বাকি অর্থও বিভিন্ন নামে-বেনামে সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রতারণা ও অর্থ পাচারের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়ায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট তদন্ত করছে।

সিআইডি জানিয়েছে, অর্থের পূর্ণ প্রবাহ শনাক্ত, সম্পদ জব্দ ও সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...