Ajker Patrika

ডিবির হারুনকে ‘জিন’ ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল: সাবেক আইজিপি মামুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও সাবেক ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও সাবেক ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের যেকোনো ‘সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পারদর্শী’ হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদকে ‘জিন’ বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দিতে এ তথ্য জানান সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

তাঁর ভাষ্য, সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন হারুন। আন্দোলন দমন, সমন্বয়কদের আটক ও তাঁদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে চাপ প্রয়োগসহ নানা কর্মকাণ্ডে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে সাবেক আইজিপি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আন্দোলন শুরু হলে সারা দেশে সেনা মোতায়েন করা হয়। এরপর ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতেই ধানমন্ডিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় কোর কমিটির বৈঠক হতো।

বৈঠকে তিনি ছাড়াও উপস্থিত থাকতেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব টিপু সুলতান ও রেজা মোস্তফা, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, র্যাব মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের প্রধানেরা। সাবেক আইজিপির দাবি, এসব বৈঠকে আন্দোলন দমন ও সরকারের পক্ষে নানা নির্দেশনা দেওয়া হতো।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘কোর কমিটির এক বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করার সিদ্ধান্ত হয়। ডিজিএফআই ওই প্রস্তাব দেয়, আমি বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আমি রাজি হই। ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ডিজিএফআই ও ডিবি তাদের আটক করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে এসে সরকারের সঙ্গে আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাদের আত্মীয়স্বজনকেও ডিবিতে এনে চাপ দেওয়া হয়। সমন্বয়কদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে টেলিভিশনে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়।’

এ ব্যাপারে ডিবিপ্রধান হারুন ‘অগ্রণী ভূমিকা’ পালন করে দাবি করে সাবকে আইজিপি বলেন, ‘ডিবিপ্রধান হারুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিন বলে ডাকতেন। কারণ, সে সরকারের নির্দেশনা পালনে পারদর্শী ছিল।’

চৌধুরী মামুন বলেন, ‘আন্দোলনের একপর্যায়ে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নজরদারি, তাদের অবস্থান নির্ণয় ও গুলি করে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করা হয়। হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। যার পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন র‍্যাবের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ। পরে আন্দোলন দমনে সরাসরি লিথাল উইপন ব্যবহার করে এবং আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলো ভাগ করে ব্লকরেইড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা’র বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

বাসস, ঢাকা  
ক্যাপ: বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের চূড়ান্ত বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ
ক্যাপ: বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের চূড়ান্ত বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ

দেশের শিশু-কিশোরদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের জনপ্রিয় মঞ্চ বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা তাঁর দপ্তরের ‘শাপলা হল’-এ প্রবেশ করেন এবং জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বিজয়ীদের সম্মাননা প্রদান শুরু হয়।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতাটি সারা দেশের হাজারো শিশুর অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম দীর্ঘদিনের ও জনপ্রিয় শিশু প্রতিযোগিতা হিসেবে পরিচিত।

ক্যাপ: বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের চূড়ান্ত বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ
ক্যাপ: বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের চূড়ান্ত বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ

প্রতিযোগিতায় নাচ, গান, আবৃত্তি, কৌতুক, গল্প বলা এবং অভিনয়সহ মোট ১২টি ভিন্ন ভিন্ন সৃজনশীল বিভাগে শিশুরা তাদের প্রতিভা তুলে ধরে। আঞ্চলিক ও বিভাগীয় পর্যায়ের কঠিন প্রতিযোগিতা শেষে নির্বাচিত প্রতিযোগীদের নিয়ে চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

আজ প্রধান উপদেষ্টা ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের চূড়ান্ত বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। শিশু-কিশোরদের সৃজনশীলতা ও মননশীলতা বিকাশে এই প্রতিযোগিতাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে অভিমত প্রকাশ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণা ১৭ নভেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী ১৭ নভেম্বর রায় দেবেন ট্রাইব্যুনাল।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণার জন্য এ তারিখ ধার্য করে দেন।

এদিকে এই রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে অর্ধশতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্বরত।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্য- বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিন রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক এবং চৌধুরী মামুন কারাগারে রয়েছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপনকালে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ সাজার (মৃত্যুদণ্ড) আবেদন জানান। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের খালাস চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

চলতি বছরের ১ জুন এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে ১৬ জুন নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বিজ্ঞপ্তি জারির পরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রতক্ষ্যদর্শীসহ ৫৪ জন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা না পেলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায় দেখতে চান উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, মূল প্লেয়ারদের সহযোগিতা না পেলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা দরকার।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে সভাপতি হিসেবে স্বাগত বক্তব্য দেন সিইসি। এ সময় প্রথম পর্বে ডাক পাওয়া সংলাপে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, এলডিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেস, এনপিপির প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।

দলগুলোর উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘দেখুন, খেলবেন আপনারা। আপনারা প্লেয়ার, আমরা রেফারির ভূমিকায়। প্রকৃত অর্থে একদম নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায় থাকতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া রেফারির কাজ করা বড় মুশকিল। সুষ্ঠুভাবে খেলা পরিচালনা করা মুশকিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, জাতির কাছে আমরা সুষ্ঠু সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে উপহার দিতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা নিয়েই এ উপহার দিতে হবে। মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা নিতে হবে। কারণ, মূল প্লেয়ারদের সহযোগিতা না পেলে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হয়ে যাবে। আমরা আপনাদের সঙ্গে পেতে চাই, আমাদের চেষ্টার মধ্যে সঙ্গে পেতে চাই।’

এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার করা প্রয়োজন, আপনারা অন্যভাবে নেবেন না। এখন নিবন্ধিত দল রয়েছে ৫৪ টা। বড় ছোট নেই, সব দলই আমাদের কাছে সমান, সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাই। বড় ছোট মাপার ক্রাইটেরিয়া আমাদের কাছে নেই। আমাদের কাছে যারা নিবন্ধিত, সবাই আমাদের কাছে সমান।’

নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরে—এ তিনটি ফেইজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান সিইসি।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নেওয়া, সরকারি কর্মকর্তা ও কারা হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের ভোট নেওয়াসহ বিভিন্ন কাজের বিষয় তুলে ধরেন সিইসি। এর সঙ্গে গণভোটের বিষয়টি অফিসিয়ালি না জানলেও কাজের পরিধির কথা তুলে ধরেন তিনি।

সিইসি বলেন, ‘সুন্দর জাতীয় নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য আপনাদের সঙ্গে পেতে চাই। আমাদের অনেকগুলো অতিরিক্ত দায়িত্ব এসে পড়েছে—আউট অব কান্ট্রি ভোটিংয়ের দিকে যাচ্ছি, নির্বাচনী কাজে জড়িতদের ভোটের ব্যবস্থা, সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটের ব্যবস্থা। আরেকটি বিষয় খুবই আলোচনায় আছে যে রেফারেন্ডাম একটা বিষয়, এখনো অফিসিয়ালি আমরা কিছু জানি না। কিন্তু আলোচনা যা দেখতেছি, এইটাও যদি আমাদের ওপর এসে পড়ে! এমনিতেই তো এক ধরনের বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে, একটি বিশেষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি একটা ভিন্নধর্মী আপনারা সবাই জানেন। নরমাল ইলেকশনে আপনারা যতটুকু সহযোগিতা করেন, এই ইলেকশনে আরও বেশি সহযোগিতা লাগবে। অনেকগুলো এক্সট্রা বার্ডেন এসে গেছে যেগুলো নরমালি আগের ইলেকশন কমিশনের কাঁধে ছিল না।

সোশাল মিডিয়ার অপব্যবহারের বিষয়টিকে মুসিবত উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘এ মুসিবত, এআই অপব্যবহার করে বোগাস জিনিস ছুড়ে দেওয়া আগে ছিল না।...যুদ্ধ কত ফ্রন্টে করতে হচ্ছে আমাদের। কতটা ফ্রন্টে আমাদের যুদ্ধ করতে হবে। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া পারব না। আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

সংলাপে নির্বাচনকে সামনে রেখে আচরণবিধি প্রতিপালনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি জানান নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি ঢাকা পোস্টার দিয়ে ছেয়ে গেছে। অথচ আচরণবিধিতে আমরা পোস্টার নিষিদ্ধ করেছি। এসব পোস্টার নিজ উদ্যোগে সরাতে হবে। না সরালে আমরা স্পেয়ার করব না। তফসিল ঘোষণার পর আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ব।’

তফসিল ঘোষণার আগেই পোস্টার সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করেন সিইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাইব্যুনালে সেনাবাহিনী-র‍্যাব-পুলিশ-বিজিবির কঠোর নিরাপত্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৫১
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে অর্ধশতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্বরত আছেন।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরেজমিনে হাইকোর্টের সামনে বিজিবি ও পুলিশ সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে। এ সময় অর্ধশতাধিক পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ওই এলাকায় দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে। হাইকোর্টের ভেতরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনেও রয়েছেন পুলিশ, র‍্যাব এবং সেনাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই তারিখ ধার্য করবেন।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে রায়ের দিন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আজ লকডাউন ঘোষণা করায় এবং কয়েক দিন ধরে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ও সংলগ্ন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে গতকাল বুধবার সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্য- বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিন রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক এবং চৌধুরী মামুন কারাগারে রয়েছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপনকালে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ সাজার (মৃত্যুদণ্ড) আবেদন জানান। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের খালাস চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

চলতি বছরের ১ জুন এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে ১৬ জুন নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বিজ্ঞপ্তি জারির পরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রতক্ষ্যদর্শীসহ ৫৪ জন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।

নিরাপত্তা জোরদার

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি এবং গত কয়েক দিনের নাশকতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়ন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে সেনাসদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একটি সূত্র বলেছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং মামলাটির সংবেদনশীলতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বৃহস্পতিবার পর্যাপ্তসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি রুখে দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: প্রসিকিউটর মিজানুল

ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গতকাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, দেশে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা রুখে দেবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বচ্ছ এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে তারা এটা বলছে।

সহিংসতাকে ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল বলেন, এটাকে হুমকি মনে করেন না। তিনি মনে করেন, বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য করছে। এই ট্রাইব্যুনাল কোনোভাবেই কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। বিচারের ক্ষেত্রে বিচারকেরা স্বাধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত