Ajker Patrika

আদালতে মামলাজট

৯ মাসে মামলা বেড়েছে ২ লাখ

  • গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আদালতগুলোতে বিচারাধীন মামলা ছিল ৪৪,৪৩,৫১০টি।
  • চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিচারাধীন মামলা বেড়ে হয়েছে ৪৬,৫২,২৬০টি।
  • আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ ও অধস্তন—সব আদালতে মামলার সংখ্যা বেড়েছে।
এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা  
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ১২
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সর্বোচ্চ থেকে অধস্তন; সব আদালতেই বেড়েছে মামলাজট। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৯ মাসে সারা দেশের আদালতগুলোতে মামলা বেড়েছে ২ লাখের বেশি। মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্বের কারণে ভোগান্তি ও হয়রানি বাড়ছে বিচারপ্রার্থীদের।

আইনজীবীরা বলছেন, মামলা দায়েরের অনুপাতে বিচারকের অপ্রতুলতার কারণে নিষ্পত্তির সংখ্যা কম। বিভিন্ন আদালতের অবকাঠামোগত সংকট থাকার পাশাপাশি মিথ্যা মামলা এবং সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ের প্রবণতাও মামলাজটের জন্য দায়ী। মামলাজট কমাতে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব এখনো বাস্তবায়ন করেনি সরকার। অবশ্য মামলা নিষ্পত্তিতে গতি আনতে সম্প্রতি সরকার ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালত পৃথক করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের আদালতগুলোতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫১০টি। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে (সর্বোচ্চ আদালত) ২৮ হাজার ৯০১টি, হাইকোর্ট বিভাগে ৫ লাখ ৭৭ হাজার ২৮০টি এবং অধস্তন আদালতে ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ৩২৯টি মামলা বিচারাধীন ছিল।

তবে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ লাখ ৫২ হাজার ২৬০টি। এর মধ্যে আপিল বিভাগে ৩৭ হাজার ২টি, হাইকোর্ট বিভাগে ৬ লাখ ১৬ হাজার ৪৫৩টি এবং অধস্তন আদালতে ৩৯ লাখ ৯৮ হাজার ৮০৫টি। অর্থাৎ গত ৯ মাসে মামলা বেড়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৭৫০টি। এর মধ্যে আপিল বিভাগে বেড়েছে ৮ হাজার ১০১টি মামলা। এ ছাড়া তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩৩১টি মামলা।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বলেন, ‘বর্তমান প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচার বিভাগের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। বিচার বিভাগ সচিবালয় বাস্তবায়ন পর্যায়ে রয়েছে। জেলা আদালতের মামলা নিষ্পত্তির জন্য মনিটরিং টিম করেছেন। অনেক জেলা আদালতে তিনি নিজে গেছেন। আশা করি মামলা নিষ্পত্তি বাড়বে। আপিল বিভাগে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মামলা বেশি। ওসব মামলায় অনেক সময় লাগে। এ কারণে আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি কম হয়েছে।

জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, অনেক মামলা হচ্ছে। মিথ্যা মামলাও হচ্ছে। মামলা দায়েরের অনুপাতে নিষ্পত্তি কম হচ্ছে বলে জট বাড়ছে। নিষ্পত্তি কম হওয়ার কারণ হলো—বিচারকের সংখ্যা কম, লজিস্টিক সাপোর্ট কম এবং জেলা আদালতে প্রয়োজন অনুযায়ী এজলাস না থাকা। এখন বিচারপ্রার্থীরা জেলা আদালতের পরে উচ্চ আদালতে রিভিউ পর্যন্ত দেখতে চান। আগে ১০ শতাংশ মামলা রিভিউ পর্যন্ত আসত। এখন ৯০ শতাংশই রিভিউ পর্যন্ত আসে। সুশাসন না হলে মামলা বাড়তে থাকবে। তাই মামলা নিষ্পত্তির জন্য মহাপরিকল্পনা করা উচিত।

সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে ধীরগতি

মামলাজট নিরসনসহ বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছিল বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এর মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়, জেলা আদালত ও সুপ্রিম কোর্টে রাষ্ট্রীয় আইনজীবী নিয়োগে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস, বিচারপতি নিয়োগ আইন, ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন, বিচারক ও আদালতের নিরাপত্তায় মার্শাল সার্ভিস, বিচারকদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, আদালত ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার অন্যতম। এর মধ্যে কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলেও বেশির ভাগই বাস্তবায়ন হয়নি। এসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে মামলাজট নিরসন ও বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে সহায়ক হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানতে চাইলে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য তানিম হোসেইন শাওন বলেন, উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে আইন হয়েছে। লিগ্যাল এইড আইন, দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের কার্যবিধিতে কিছু সংস্কার হয়েছে। পৃথক অ্যাটর্নি সার্ভিস আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তবে বিএনপি-সমর্থক আইনজীবীরা এতে আপত্তি জানিয়েছেন। তিনি আশা করছেন, এটা হবে। ফৌজদারি মামলা তদন্তে পৃথক তদন্ত সংস্থার সুপারিশ বাস্তবায়নে সময় লাগবে। অবকাঠামোগত বিষয়টি সমাধান করা দীর্ঘমেয়াদি কাজ। তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের বেশ কিছু কাজ সুপ্রিম কোর্টে আটকে আছে। এর মধ্যে রয়েছে, আদালত ব্যবস্থাপনা, আপিল বিভাগে আইনজীবী এনরোলমেন্ট ও সিনিয়র আইনজীবী এনরোলমেন্ট, আদালতের সময় বাঁচাতে অনলাইনে মেনশন স্লিপ নেওয়া ইত্যাদি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত