ফিচার ডেস্ক
সময়টা ১৯৫৩ সালের জুন। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের অটোয়া শহরের অ্যালান বল নামের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর। জীবনের প্রথম বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়েছেন। তাঁর গন্তব্য পুয়ের্তো রিকো। সেখানে খালা মেরির কফি বাগানে গ্রীষ্মকালের ছুটি কাটাবেন। সেই ভ্রমণের জন্য তাঁকে নিজে টাকা জোগাড় করতে হয়েছিল কয়েক বছর ধরে বাড়তি কাজ করে। গ্রীষ্মে ঘাস কাটা আর শীতে তুষার পরিষ্কারের মতো কাজ করে টাকা জমিয়েছিলেন স্বপ্নের ভ্রমণের জন্য।
অটোয়া থেকে সরাসরি পুয়ের্তো রিকো যাওয়ার উপায় ছিল না। তাই প্রথমে ট্রেনে করে অ্যালানকে পৌঁছাতে হলো নিউইয়র্কে; সেখান থেকে বিমানে চড়ে যেতে হবে গন্তব্যে। জীবনের প্রথম ভ্রমণের মতো সে ফ্লাইটও ছিল অ্যালানের জীবনে প্রথম।
নিউইয়র্কে এসে অ্যালান থমকে দাঁড়ালেন সদ্য নির্মিত জাতিসংঘ সচিবালয় ভবনের সামনে। কিশোর বয়সের কৌতূহলে ঘুরে দেখলেন সেই আধুনিক স্থাপনা। পরিবারকে আশ্বস্ত করতে জাতিসংঘ ভবনের ছবিসহ একটি সাধারণ পোস্টকার্ড কিনলেন।
কার্ডে লিখলেন ছোট বার্তা, ‘আমি নিউইয়র্ক পর্যন্ত পৌঁছেছি।’ তারপর পাঠিয়ে দিলেন পোস্ট অফিসের মারফত। কিন্তু সেই পোস্টকার্ড আর পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি। অজানা কারণে হারিয়ে যায়। দীর্ঘ ৭২ বছর পর চলতি বছরের আগস্টে সেই পোস্টকার্ড হঠাৎ এসে হাজির হয় অটোয়া পোস্ট অফিসে!
পোস্টমাস্টারের দায়িত্ববোধ
পোস্টকার্ডটির ডাকমোহরে দিন, তারিখ ও সময় লেখা—১৯৫৩ সালের ১৭ জুন, রাত ৮টা। এত বছর ধরে কার্ডটি কোথায় ছিল, তা এক রহস্য। ধারণা করা হচ্ছে, এটি জাতিসংঘ ভবন বা নিউইয়র্ক ডাকঘরের ভেতর কোথাও হারিয়ে ছিল। পরে কোনো সংস্কার বা গোছগাছের সময় বেরিয়ে আসে। অটোয়ার পোস্টমাস্টার মার্ক থম্পসন কার্ডটি হাতে পেয়ে বুঝলেন, এটি ইতিহাসের অংশ। সহজভাবে ফেলে দেওয়ার মতো কিছু নয়। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, পরিবারের কাছে কিংবা প্রাপকের কাছে অবশ্যই এটি পৌঁছাতে হবে। খোঁজখবর শুরু করলেন স্থানীয়দের মধ্যে। এভাবেই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে সংবাদমাধ্যমে।
অনুসন্ধান শুরু
খবরে আগ্রহী হয়ে ওঠেন অবসরপ্রাপ্ত টেরি কার্বোনে। তিনি শখের বশে বংশতত্ত্ব গবেষণা করেন। টেরি ও তাঁর স্বেচ্ছাসেবকেরা পুরোনো সংবাদপত্র, রেকর্ড ও আর্কাইভ খুঁজতে শুরু করেন। স্থানীয় রেডডিক পাবলিক লাইব্রেরির নথিতেও অনুসন্ধান চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত অ্যালানকে খুঁজে পাওয়া যায়। যিনি এখন ডা. অ্যালান বল, বয়স ৮৮ বছর! আইডাহো অঙ্গরাজ্যের স্যান্ডপয়েন্ট শহরে বসবাস করেন।
জীবনের মোড় ঘোরানো ভ্রমণ
অ্যালান বল পরে জানান, ১৯৫৩ সালের সেই ভ্রমণ তাঁর জীবনের অন্যতম বড় অভিজ্ঞতা ছিল। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো না হলেও তিনি নিজে কাজ করে টাকা জমিয়েছিলেন। নিউইয়র্ক থেকে পুয়ের্তো রিকো যাওয়ার পথে প্রথমবার বিমানে চড়া, ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয়—সবকিছুই তাঁর কিশোর বয়সের জীবনে নতুন দিক খুলে দিয়েছিল। খালা মেরির কফি বাগানে কাটানো দিনগুলোকে তিনি আজও জীবনের অন্যতম শিক্ষণীয় সময় হিসেবে মনে করেন।
অবশেষে খুঁজে পাওয়া বার্তা
প্রায় সাত দশক পর স্থানীয় সাংবাদিক টম কলিন্স ফোন করে যখন জানালেন, তাঁর পাঠানো একটি পোস্টকার্ড পাওয়া গেছে, অ্যালান অবাক হয়ে যান। এরপর হাসতে থাকেন। কয়েক দিন পর স্যান্ডপয়েন্ট ডাকঘরের এক কর্মী তাঁর হাতে কার্ডটি তুলে দিয়ে মজা করে বলেন, ‘খুব দেরি হয়ে গেল, দুঃখিত।’ কার্ডটি হাতে নিয়ে অ্যালান স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। তিনি বললেন, ‘ভাবতেই পারিনি, এত বছর আগে লেখা একটি কার্ড হঠাৎ একদিন আমার হাতে ফিরে আসবে!’ ১৯৫৩ সালে পাঠানো সেই পোস্টকার্ড ৭২ বছর পর আড়াই হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে প্রেরকের হাতেই ফিরে এল! এতে অবদান রেখেছে এক পোস্টমাস্টারের দায়িত্ববোধ, সাংবাদিকের কৌতূহল ও স্বেচ্ছাসেবীর ধৈর্যশীল গবেষণা।
আজকের দিনে বার্তা পৌঁছাতে সেকেন্ডও লাগে না। অথচ ৭২ বছর ধরে হারিয়ে থাকা একটি পোস্টকার্ডের এমন ফিরে পাওয়ার ঘটনা চিঠির আবেগঘন মুহূর্তগুলো মনে করিয়ে দেয়। পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি ঠিকই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেরকের হাতেই ফিরে আসা এই কার্ড হয়ে উঠেছে ইতিহাস। এটি শুধু অ্যালান বলের ব্যক্তিগত স্মৃতিই নয়, এটি ডাকসেবার দীর্ঘ পথচলারও স্মৃতি ও নিদর্শন।
সূত্র: সিএনএন
সময়টা ১৯৫৩ সালের জুন। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের অটোয়া শহরের অ্যালান বল নামের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর। জীবনের প্রথম বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়েছেন। তাঁর গন্তব্য পুয়ের্তো রিকো। সেখানে খালা মেরির কফি বাগানে গ্রীষ্মকালের ছুটি কাটাবেন। সেই ভ্রমণের জন্য তাঁকে নিজে টাকা জোগাড় করতে হয়েছিল কয়েক বছর ধরে বাড়তি কাজ করে। গ্রীষ্মে ঘাস কাটা আর শীতে তুষার পরিষ্কারের মতো কাজ করে টাকা জমিয়েছিলেন স্বপ্নের ভ্রমণের জন্য।
অটোয়া থেকে সরাসরি পুয়ের্তো রিকো যাওয়ার উপায় ছিল না। তাই প্রথমে ট্রেনে করে অ্যালানকে পৌঁছাতে হলো নিউইয়র্কে; সেখান থেকে বিমানে চড়ে যেতে হবে গন্তব্যে। জীবনের প্রথম ভ্রমণের মতো সে ফ্লাইটও ছিল অ্যালানের জীবনে প্রথম।
নিউইয়র্কে এসে অ্যালান থমকে দাঁড়ালেন সদ্য নির্মিত জাতিসংঘ সচিবালয় ভবনের সামনে। কিশোর বয়সের কৌতূহলে ঘুরে দেখলেন সেই আধুনিক স্থাপনা। পরিবারকে আশ্বস্ত করতে জাতিসংঘ ভবনের ছবিসহ একটি সাধারণ পোস্টকার্ড কিনলেন।
কার্ডে লিখলেন ছোট বার্তা, ‘আমি নিউইয়র্ক পর্যন্ত পৌঁছেছি।’ তারপর পাঠিয়ে দিলেন পোস্ট অফিসের মারফত। কিন্তু সেই পোস্টকার্ড আর পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি। অজানা কারণে হারিয়ে যায়। দীর্ঘ ৭২ বছর পর চলতি বছরের আগস্টে সেই পোস্টকার্ড হঠাৎ এসে হাজির হয় অটোয়া পোস্ট অফিসে!
পোস্টমাস্টারের দায়িত্ববোধ
পোস্টকার্ডটির ডাকমোহরে দিন, তারিখ ও সময় লেখা—১৯৫৩ সালের ১৭ জুন, রাত ৮টা। এত বছর ধরে কার্ডটি কোথায় ছিল, তা এক রহস্য। ধারণা করা হচ্ছে, এটি জাতিসংঘ ভবন বা নিউইয়র্ক ডাকঘরের ভেতর কোথাও হারিয়ে ছিল। পরে কোনো সংস্কার বা গোছগাছের সময় বেরিয়ে আসে। অটোয়ার পোস্টমাস্টার মার্ক থম্পসন কার্ডটি হাতে পেয়ে বুঝলেন, এটি ইতিহাসের অংশ। সহজভাবে ফেলে দেওয়ার মতো কিছু নয়। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, পরিবারের কাছে কিংবা প্রাপকের কাছে অবশ্যই এটি পৌঁছাতে হবে। খোঁজখবর শুরু করলেন স্থানীয়দের মধ্যে। এভাবেই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে সংবাদমাধ্যমে।
অনুসন্ধান শুরু
খবরে আগ্রহী হয়ে ওঠেন অবসরপ্রাপ্ত টেরি কার্বোনে। তিনি শখের বশে বংশতত্ত্ব গবেষণা করেন। টেরি ও তাঁর স্বেচ্ছাসেবকেরা পুরোনো সংবাদপত্র, রেকর্ড ও আর্কাইভ খুঁজতে শুরু করেন। স্থানীয় রেডডিক পাবলিক লাইব্রেরির নথিতেও অনুসন্ধান চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত অ্যালানকে খুঁজে পাওয়া যায়। যিনি এখন ডা. অ্যালান বল, বয়স ৮৮ বছর! আইডাহো অঙ্গরাজ্যের স্যান্ডপয়েন্ট শহরে বসবাস করেন।
জীবনের মোড় ঘোরানো ভ্রমণ
অ্যালান বল পরে জানান, ১৯৫৩ সালের সেই ভ্রমণ তাঁর জীবনের অন্যতম বড় অভিজ্ঞতা ছিল। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো না হলেও তিনি নিজে কাজ করে টাকা জমিয়েছিলেন। নিউইয়র্ক থেকে পুয়ের্তো রিকো যাওয়ার পথে প্রথমবার বিমানে চড়া, ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয়—সবকিছুই তাঁর কিশোর বয়সের জীবনে নতুন দিক খুলে দিয়েছিল। খালা মেরির কফি বাগানে কাটানো দিনগুলোকে তিনি আজও জীবনের অন্যতম শিক্ষণীয় সময় হিসেবে মনে করেন।
অবশেষে খুঁজে পাওয়া বার্তা
প্রায় সাত দশক পর স্থানীয় সাংবাদিক টম কলিন্স ফোন করে যখন জানালেন, তাঁর পাঠানো একটি পোস্টকার্ড পাওয়া গেছে, অ্যালান অবাক হয়ে যান। এরপর হাসতে থাকেন। কয়েক দিন পর স্যান্ডপয়েন্ট ডাকঘরের এক কর্মী তাঁর হাতে কার্ডটি তুলে দিয়ে মজা করে বলেন, ‘খুব দেরি হয়ে গেল, দুঃখিত।’ কার্ডটি হাতে নিয়ে অ্যালান স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। তিনি বললেন, ‘ভাবতেই পারিনি, এত বছর আগে লেখা একটি কার্ড হঠাৎ একদিন আমার হাতে ফিরে আসবে!’ ১৯৫৩ সালে পাঠানো সেই পোস্টকার্ড ৭২ বছর পর আড়াই হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে প্রেরকের হাতেই ফিরে এল! এতে অবদান রেখেছে এক পোস্টমাস্টারের দায়িত্ববোধ, সাংবাদিকের কৌতূহল ও স্বেচ্ছাসেবীর ধৈর্যশীল গবেষণা।
আজকের দিনে বার্তা পৌঁছাতে সেকেন্ডও লাগে না। অথচ ৭২ বছর ধরে হারিয়ে থাকা একটি পোস্টকার্ডের এমন ফিরে পাওয়ার ঘটনা চিঠির আবেগঘন মুহূর্তগুলো মনে করিয়ে দেয়। পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি ঠিকই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেরকের হাতেই ফিরে আসা এই কার্ড হয়ে উঠেছে ইতিহাস। এটি শুধু অ্যালান বলের ব্যক্তিগত স্মৃতিই নয়, এটি ডাকসেবার দীর্ঘ পথচলারও স্মৃতি ও নিদর্শন।
সূত্র: সিএনএন
স্বস্তিকা মুখার্জি। অনেকের কাছে স্বস্তিকা মানে প্রাণের মানুষ। আবার কারও কাছে তিনি জীবনীশক্তির উৎস। তাঁকে দেখে যেন মেলে আত্মবিশ্বাসের পথ। দৃঢ় হয় মনোবল। নায়িকা বলতে আমাদের কল্পনায় যে চিরাচরিত প্রতিমা ভেসে ওঠে, তা থেকে অনেকটাই আলাদা এই লাস্যময়ী।
১ ঘণ্টা আগেআসামের কিংবদন্তি গায়ক জুবিন গার্গের শেষযাত্রায় শোকে স্তব্ধ পুরো গুয়াহাটি। প্রিয় শিল্পীকে বিদায় জানাতে লাখ লাখ ভক্ত শহরের রাস্তায় নেমে আসেন। চোখের জলে ভেসে যাওয়া সেই বিদায়ের মুহূর্ত এখন ইতিহাস। ‘লিমকা বুক অব রেকর্ডস’-এ ঘটনাকে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম জনসমাবেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই তালিকায় তাঁর আগে
১৪ ঘণ্টা আগেদীর্ঘদিন ধরে কোনো খবরাখবর মিলছিল না বলিউডের জনপ্রিয় তারকা ক্যাটরিনা কাইফের। ইনস্টায়ও খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না তিনি। ভক্তদের অনেকে অনুমান করছিলেন, এবার কি তবে ক্যাটের মা হওয়ার সময় এল! তাই কি তিনি আড়ালে রয়েছেন? জীবনসঙ্গী ভিকির দিক থেকেও তেমন কোনো আওয়াজ ছিল না বাবা হওয়ার ব্যাপারে।
২০ ঘণ্টা আগেঘুমানোর সময় অনেকেই ফ্যান চালিয়ে রাখেন। কারও মতে ফ্যানের শীতল বাতাস ও শব্দ দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে। তবে এ অভ্যাসের কিছু সুবিধা থাকার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। বিশেষ করে ফ্যানের বাতাস সরাসরি গায়ে লাগলে।
১ দিন আগে