জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
বোর্শকে যদি আপনি সাধারণ স্যুপ বলে চালিয়ে দিতে চান, তাহলে যুদ্ধরত রাশিয়া ও ইউক্রেনের যেকোনো নাগরিকই কষ্ট পাবে। অন্তত বোর্শের মাহাত্ম্য এড়িয়ে গেলে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে বোর্শের পক্ষে সমঝোতা তৈরি হতে দেরি হবে না। যে রুশ সৈন্যটি কিয়েভের দিকে রকেট ছুড়ছে কিংবা যে ইউক্রেনীয় সৈন্য রাশিয়ান সৈন্যের দিকে তাক করে আছে কালাশনিকভ, দুপুরের খাবার টেবিলে সে দুজনই কিন্তু অপেক্ষা করে থাকে বোর্শের জন্য। আহা! কী প্রাণদায়িনী খাবার এই বোর্শ!
যখন সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়েছিলাম, তখন এক থালা ভাতের জন্য সেকি আহাজারি! ক্যানটিনে থরে থরে কত খাবার সাজানো, কিন্তু ভাতের সঙ্গে কি তার কোনো তুলনা হয়? তবে একসময় প্লেটভর্তি বোর্শে মজে যেতে সময় লাগেনি। ক্যানটিনে খেতে গেলে অন্য কিছু খাওয়া হোক বা না হোক, বোর্শ কিন্তু থাকতেই হবে। সঙ্গে এক টুকরো কালো রুটি। তোফা খাবার!
বোর্শের লালচে রংটা আসে বিট থেকে। টক বাঁধাকপিও এ জন্য দায়ী। তবে আমাদের দেশে তো বাঁধাকপিকে টক করে তৈরি করা হয় না, তাই বিটের ওপরই রাখতে হবে ভরসা। আর বোর্শের মধ্যে যখন চর্বিদার গরুর মাংস, আলু, গাজর, বাঁধাকপি ভেসে বেড়াতে থাকে, তখন জিবে জল এলে তা অগ্রাহ্য করার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং সবার আগে এক পাত্র বোর্শ নিয়ে পেটকে শান্তি দেওয়াই হবে কর্তব্য।
যখন প্রথম বোর্শ খাই, তখন জানতামও না, কে এই খাদ্যের জন্মদাতা। তা নিয়ে রয়েছে দ্বন্দ্ব। ইউক্রেন বলে, বোর্শ তো আমার জাতীয় খাদ্য। এদিকে রাশিয়া বলে, আমি কি বোর্শের ওপর থেকে দাবি ছেড়ে দিয়েছি? যুদ্ধটা প্রথমে ছিল রসিকতায় মোড়া। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর বোর্শকে নিজের বলে দাবি করার ব্যাপারটি পেল আন্তর্জাতিক মাত্রা। ইউক্রেনই বোর্শের জন্মদাতা, এ রকম একটা সিদ্ধান্তও দিয়ে দিল ইউনেসকো। কিন্তু সেই প্রাচীনকালের ‘কিয়েভ রুশ’ থেকে যে দেশগুলো জন্মেছে, তারা কেন বোর্শের ওপর থেকে দাবি ছাড়বে, আপনিই বলুন! বোর্শকে দক্ষিণ স্লাভিয়ান মানুষের ঐতিহ্য বললে ভুল হবে না। তবে ইউক্রেন, রাশিয়া, বেলারুশ, পোল্যান্ড, মালদাভিয়া, রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া—সবখানেই বোর্শের দেখা মিলবে। সবাই এই সুস্বাদু খাবার নিয়ে গর্ব করতে পারে। মজার ব্যাপার, বিভিন্ন দেশের হেঁশেলে ঢুকে বোর্শ তার চেহারাও বদলে ফেলে। কোথাও কোথাও ধোঁয়া ওঠা বোর্শের চেয়ে ঠান্ডা বোর্শের প্রতিও পক্ষপাত দেখা যায়।
ভাবার কোনো কারণ নেই যে বোর্শ নামের এই খাবার স্লাভিয়ান বলে বাংলাদেশে বসে আপনি রান্না করতে বা খেতে পারবেন না। খুবই সহজ রান্না। এত কথা না বলে বরং রেসিপিটিই বলে দিই। এই খাবার তৈরি করতে হলে কেজি দুয়েক গরুর চাপের মাংস নেবেন। ৪ লিটার পানিতে দেড় ঘণ্টা স্টক তৈরি করবেন।
বোর্শকে দক্ষিণ স্লাভিয়ান মানুষের ঐতিহ্য বললে ভুল হবে না। তবে ইউক্রেন, রাশিয়া, বেলারুশ, পোল্যান্ড, মালদাভিয়া, রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া—সবখানেই বোর্শের দেখা মিলবে।
এবার মাংস নামিয়ে নিয়ে আলু দিন স্টকে। মাংস ছোট ছোট করে কেটে স্টকে ছেড়ে দিন। হাড়গুলো ফেলে দিন। অন্য একটি ফ্রাইপ্যান বা কড়াইয়ে তেল নিয়ে তাতে রসুনকুচি দিন। বাদামি হওয়ার আগেই তাতে যোগ করুন পেঁয়াজকুচি। একটু পর দিন আধা কেজি টমেটো। টমেটোর পানি শুকিয়ে গেলে যোগ করুন টমেটো সস। এবার কুচি করে রাখা গাজর আর বিট দিয়ে দিন। পানি শুকিয়ে গেলে পুরো মিশ্রণটি ঢেলে দিন স্টকে আনন্দে ঘুরতে থাকা আলু আর মাংসের মধ্যে। চুলা বন্ধ করার আগে দিয়ে দিন একটু মোটা মোটা কুচি করে কেটে রাখা বাঁধাকপি। এর অনুষঙ্গ হিসেবে রাখতে পারেন রাশান সালাদ। আর কেউ যদি গরুর মাংসের বদলে মুরগি দিয়ে রান্না করতে চান, সেটাও করতে পারেন। তবে খাসি বা ভেড়ার মাংসে এটি রান্না হয় না ঐতিহ্যগতভাবে।
তারপর? তার আর পর নেই। শুধু প্লেট বা বাটিতে নিতে হবে। চামচ দিয়ে বোর্শের আস্বাদ গ্রহণ করার সময় বাদামি রুটিকেও হাতের নাগালের মধ্যে রাখুন। নইলে খাওয়াটা জমবে না।
বোর্শকে যদি আপনি সাধারণ স্যুপ বলে চালিয়ে দিতে চান, তাহলে যুদ্ধরত রাশিয়া ও ইউক্রেনের যেকোনো নাগরিকই কষ্ট পাবে। অন্তত বোর্শের মাহাত্ম্য এড়িয়ে গেলে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে বোর্শের পক্ষে সমঝোতা তৈরি হতে দেরি হবে না। যে রুশ সৈন্যটি কিয়েভের দিকে রকেট ছুড়ছে কিংবা যে ইউক্রেনীয় সৈন্য রাশিয়ান সৈন্যের দিকে তাক করে আছে কালাশনিকভ, দুপুরের খাবার টেবিলে সে দুজনই কিন্তু অপেক্ষা করে থাকে বোর্শের জন্য। আহা! কী প্রাণদায়িনী খাবার এই বোর্শ!
যখন সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়েছিলাম, তখন এক থালা ভাতের জন্য সেকি আহাজারি! ক্যানটিনে থরে থরে কত খাবার সাজানো, কিন্তু ভাতের সঙ্গে কি তার কোনো তুলনা হয়? তবে একসময় প্লেটভর্তি বোর্শে মজে যেতে সময় লাগেনি। ক্যানটিনে খেতে গেলে অন্য কিছু খাওয়া হোক বা না হোক, বোর্শ কিন্তু থাকতেই হবে। সঙ্গে এক টুকরো কালো রুটি। তোফা খাবার!
বোর্শের লালচে রংটা আসে বিট থেকে। টক বাঁধাকপিও এ জন্য দায়ী। তবে আমাদের দেশে তো বাঁধাকপিকে টক করে তৈরি করা হয় না, তাই বিটের ওপরই রাখতে হবে ভরসা। আর বোর্শের মধ্যে যখন চর্বিদার গরুর মাংস, আলু, গাজর, বাঁধাকপি ভেসে বেড়াতে থাকে, তখন জিবে জল এলে তা অগ্রাহ্য করার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং সবার আগে এক পাত্র বোর্শ নিয়ে পেটকে শান্তি দেওয়াই হবে কর্তব্য।
যখন প্রথম বোর্শ খাই, তখন জানতামও না, কে এই খাদ্যের জন্মদাতা। তা নিয়ে রয়েছে দ্বন্দ্ব। ইউক্রেন বলে, বোর্শ তো আমার জাতীয় খাদ্য। এদিকে রাশিয়া বলে, আমি কি বোর্শের ওপর থেকে দাবি ছেড়ে দিয়েছি? যুদ্ধটা প্রথমে ছিল রসিকতায় মোড়া। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর বোর্শকে নিজের বলে দাবি করার ব্যাপারটি পেল আন্তর্জাতিক মাত্রা। ইউক্রেনই বোর্শের জন্মদাতা, এ রকম একটা সিদ্ধান্তও দিয়ে দিল ইউনেসকো। কিন্তু সেই প্রাচীনকালের ‘কিয়েভ রুশ’ থেকে যে দেশগুলো জন্মেছে, তারা কেন বোর্শের ওপর থেকে দাবি ছাড়বে, আপনিই বলুন! বোর্শকে দক্ষিণ স্লাভিয়ান মানুষের ঐতিহ্য বললে ভুল হবে না। তবে ইউক্রেন, রাশিয়া, বেলারুশ, পোল্যান্ড, মালদাভিয়া, রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া—সবখানেই বোর্শের দেখা মিলবে। সবাই এই সুস্বাদু খাবার নিয়ে গর্ব করতে পারে। মজার ব্যাপার, বিভিন্ন দেশের হেঁশেলে ঢুকে বোর্শ তার চেহারাও বদলে ফেলে। কোথাও কোথাও ধোঁয়া ওঠা বোর্শের চেয়ে ঠান্ডা বোর্শের প্রতিও পক্ষপাত দেখা যায়।
ভাবার কোনো কারণ নেই যে বোর্শ নামের এই খাবার স্লাভিয়ান বলে বাংলাদেশে বসে আপনি রান্না করতে বা খেতে পারবেন না। খুবই সহজ রান্না। এত কথা না বলে বরং রেসিপিটিই বলে দিই। এই খাবার তৈরি করতে হলে কেজি দুয়েক গরুর চাপের মাংস নেবেন। ৪ লিটার পানিতে দেড় ঘণ্টা স্টক তৈরি করবেন।
বোর্শকে দক্ষিণ স্লাভিয়ান মানুষের ঐতিহ্য বললে ভুল হবে না। তবে ইউক্রেন, রাশিয়া, বেলারুশ, পোল্যান্ড, মালদাভিয়া, রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া—সবখানেই বোর্শের দেখা মিলবে।
এবার মাংস নামিয়ে নিয়ে আলু দিন স্টকে। মাংস ছোট ছোট করে কেটে স্টকে ছেড়ে দিন। হাড়গুলো ফেলে দিন। অন্য একটি ফ্রাইপ্যান বা কড়াইয়ে তেল নিয়ে তাতে রসুনকুচি দিন। বাদামি হওয়ার আগেই তাতে যোগ করুন পেঁয়াজকুচি। একটু পর দিন আধা কেজি টমেটো। টমেটোর পানি শুকিয়ে গেলে যোগ করুন টমেটো সস। এবার কুচি করে রাখা গাজর আর বিট দিয়ে দিন। পানি শুকিয়ে গেলে পুরো মিশ্রণটি ঢেলে দিন স্টকে আনন্দে ঘুরতে থাকা আলু আর মাংসের মধ্যে। চুলা বন্ধ করার আগে দিয়ে দিন একটু মোটা মোটা কুচি করে কেটে রাখা বাঁধাকপি। এর অনুষঙ্গ হিসেবে রাখতে পারেন রাশান সালাদ। আর কেউ যদি গরুর মাংসের বদলে মুরগি দিয়ে রান্না করতে চান, সেটাও করতে পারেন। তবে খাসি বা ভেড়ার মাংসে এটি রান্না হয় না ঐতিহ্যগতভাবে।
তারপর? তার আর পর নেই। শুধু প্লেট বা বাটিতে নিতে হবে। চামচ দিয়ে বোর্শের আস্বাদ গ্রহণ করার সময় বাদামি রুটিকেও হাতের নাগালের মধ্যে রাখুন। নইলে খাওয়াটা জমবে না।
মে দিবস মানেই ছুটির দিন। এদিন সকাল-সকাল কাজে যাওয়ার তাড়া নেই। আর এবার তো মে দিবস বৃহস্পতিবার পড়ায় সাপ্তাহিক ছুটির বাইরে আরও একটা দিন বাড়তি ছুটি পাওয়া গেল। তাতেই মনটা ফুরফুরে লাগছে, তাই না? তবে এক দিন বেশি ছুটি পেয়ে কি শুয়ে-বসেই কাটাবেন? মে মাসের প্রথম দিনটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে উদ্যাপন করতে পারেন।
৪ ঘণ্টা আগেবছরের পর বছর ধরে যদি প্রিয় ডেনিমের পোশাকগুলো পরতে চান, তাহলে যত্ন তো নিতেই হবে। কিছু উপায় জেনে নিলে যত্ন নেওয়াটাও হবে সহজ। আজ ৩০ এপ্রিল, ডেনিম দিবস। আজ থেকেই মেনে চলুন ডেনিমের পোশাক ভালো রাখার উপায়গুলো।
১৩ ঘণ্টা আগেটক দইয়ে চিনি, নাকি লবণ মেশাবেন, সেটা নির্ভর করছে দই খাওয়ার কারণের ওপর। অর্থাৎ কেন দই খাচ্ছেন, তার ওপর। দুটির স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ভিন্ন ভিন্ন। টক দইয়ে উপস্থিত প্রচুর পুষ্টি উপাদান এবং প্রোবায়োটিকসের কারণে নিয়মিত টাটকা দই খাওয়া কিছু রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
১ দিন আগেবলিউড নায়িকারা মা হওয়ার পরও কী করে ফিট থাকেন, এটা নিয়ে সবারই প্রশ্ন। এরপরের প্রশ্নটি হলো, মা হওয়ার পরও কীভাবে তাঁরা ক্যারিয়ার সামলাচ্ছেন। ভোগ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি ফিচারে জানা গেছে, বলিউড তারকা মায়েদের প্যারেন্টিং বিষয়ে। এতে নতুন ও কর্মজীবী মায়েদেরও কিছু টিপস দিয়েছেন তাঁরা।
১ দিন আগে