Ajker Patrika

মানুষ কেন মিথ্যা বলে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ০০
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

পৃথিবীতে কেউই নিজেদের মিথ্যাবাদী ভাবতে চায় না। কিন্তু সত্যি বলতে, সবাইকে কখনো না কখনো মিথ্যা বলতে হয়। ছোট ছোট সাদা মিথ্যা থেকে শুরু করে অনিয়ন্ত্রিত মিথ্যা। এ ধরনের কথা বলার ধরন অনেক রকম। শিশুরাও বুঝে না বুঝে মিথ্যা বলে। তাই মিথ্যা বলা হয়তো একটি প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি।

তবে মিথ্যা বলাটা কখনোই ভালো আচরণ নয়। এটি মানুষের মধ্যে বিশ্বাস ভাঙে, ব্যক্তিগত ও পেশাগত সম্পর্কগুলোতে গুরুতর সমস্যা তৈরি করে। মিথ্যা বলার কারণগুলো খুবই বৈচিত্র্যময়। অনেক সময় মানুষ নিজেকে রক্ষা করতে, আবার অনেক সময় অন্যদের নিয়ন্ত্রণ করতে মিথ্যা বলে। কেউ কেউ নিজের মানসিক অবস্থার কারণে বা অভ্যাসগতভাবে মিথ্যা বলে। এই কারণগুলো বুঝলে আমরা মিথ্যার পেছনের মনস্তাত্ত্বিক বাস্তবতা জানতে পারি এবং আরও বেশি সহানুভূতিশীল হতে পারি।

আত্মরক্ষা ও দায় এড়ানো

মিথ্যা বলার বড় কারণ হলো নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কেউ কোনো শাস্তি বা অসুবিধার সম্মুখীন হতে না চাইলেই মিথ্যা বলতে পারে। দায়িত্ব থেকে পলায়ন কিংবা নিজের ভুল গোপন করাও এর মধ্যে পড়ে। দায় এড়ানোর জন্য কেউ মিথ্যা বলে কিংবা কোনো বিষয় লুকিয়ে রাখে। এটি অনেক সময় আসক্তি বা অন্য বদভ্যাসের সঙ্গে জড়িত থাকে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

অন্যকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাবিত করা

কিছু মানুষ মিথ্যা বলে অন্যদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। অথবা তাদের ভাবনা ও কাজ পরিবর্তনের ইচ্ছা জাগে। কেউ তাদের পরিচয়, কাজ বা গন্তব্য সম্পর্কে মিথ্যা বলে অন্যদের প্রশংসা পেতে চায়। এটি সামাজিক পরিসরে এবং বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য করা হয়।

স্বার্থপরতা ও প্রতিশোধ

নিজের ভালো দেখানোর জন্য বা অন্যকে নিচে নামানোর জন্য মিথ্যা বলে কেউ কেউ। কারও ক্ষতি করার এবং প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মিথ্যা বলে অনেকে। কিছু মানুষ আছে, যারা কোনো কারণে নিজের হওয়া ক্ষতির ক্ষতিপূরণ নিতে মিথ্যা বলে।

আত্মসম্মান ও পারিপার্শ্বিক অবস্থান উন্নত করা

কেউ তার কাজ বা ব্যক্তিত্ব বড় দেখানোর জন্য মিথ্যা বলতে পারে। অন্যের কাছে নিজেকে উঁচু করার জন্য অথবা জনপ্রিয় হতে মিথ্যা বলাও সাধারণ ব্যাপার। আবার কেউ কেউ সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা এবং মনোযোগ আকর্ষণের জন্যও মিথ্যা বলে। কেউ মানুষদের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য মিথ্যা বলতে পারে, আবার অনেকে শুধু গোপনীয়তা বজায় রাখতে মিথ্যা ব্যবহার করে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

অভ্যাস ও অভ্যস্ততা

বারবার মিথ্যা বলার অভ্যাস তৈরি হলে তা একপর্যায়ে স্বাভাবিক আচরণে পরিণত হয়, যা ‘অভ্যাসগত মিথ্যা’ হিসেবে পরিচিত। আবার অন্য কাউকে কষ্ট না দিতে বা রক্ষা করতে মিথ্যা বলা হয়। এটা ভালো উদ্দেশ্য থেকে হলেও বিষয়টি মিথ্যা।

ভয়, লজ্জা ও অনীহা

ভয়ের কারণেও মানুষ মিথ্যা বলে; যেমন লজ্জা, নিজেকে ছোট মনে হওয়া, অন্যের সামনে খারাপ পরিস্থিতি এড়াতে মিথ্যা বলা। আবার কেউ উত্তেজনা ও বিরক্তি থেকেও হুট করে মিথ্যা বলে ফেলেন। মিথ্যা বলে জীবনে কিছু উত্তেজনা বা নাটক তৈরি করতে চান, যা অন্যদের মনোরঞ্জনও হতে পারে।

কৌতূহল ও ঈর্ষা

অনেকে মিথ্যা বলে পরিস্থিতি কী হয় তা দেখার জন্য, যা সাধারণত শিশুসুলভ একটি আচরণ। অনেক সময় হিংসা ও লোভ থেকেও মানুষ মিথ্যা বলে। অন্যের সম্পদ বা সাফল্য দেখে ঈর্ষা থেকে কেউ মিথ্যা বলতে পারে।

বাস্তবতা অস্বীকার ও মানসিক প্রক্রিয়া

কিছু মানুষ এমনভাবে মিথ্যা বলে যে তারা নিজেদের ভুল ধারণাকেই সত্যি মনে করতে শুরু করে। বাস্তবতাকে অস্বীকার করার জন্য তারা মিথ্যা বলতে পারে।

অলসতা ও কাজ এড়িয়ে যাওয়া

কাজ করতে ইচ্ছা না হলে কিংবা সময় নষ্ট করতে কেউ মিথ্যা বলতে পারে।

অতিরঞ্জন ও সত্য লুকানো

কেউ কখনো মিথ্যা বলে সত্যকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করে, আবার কেউ মিথ্যা বলে বিষয়গুলো বড় করে তোলে।

সূত্র: এভরিডে হেলথ, হেলথ ডটকম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে রেখে ‘৪ কোটি টাকা আদায়’

সব কমিটি থেকে নারীদের সিস্টেমেটিক্যালি সাইড করা হয়েছে: সামান্তা শারমিন

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

একে একে আট বিয়ে, নয়বারের বেলায় গ্রেপ্তার ‘লুটেরা দুলহান’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত