Ajker Patrika

সাদা-কালো শোভাযাত্রা চবির চারুকলায়

মিনহাজ তুহিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় 
সাদা-কালো শোভাযাত্রা চবির চারুকলায়

বর্ণিল ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নতুন বছর বরণ করে নিল দেশবাসী। বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছিল রঙিন আয়োজন। এগুলোর মধ্যে ব্যতিক্রম ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট। সেখান থেকেও বের হয়েছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা। তবে সেই শোভাযাত্রা বর্ণাঢ্য তো ছিলই না, বর্ণিলও ছিল না। ছিল সাদা-কালো।

সংস্কারকাজের জন্য বন্ধ থাকায় এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে বর্ষবরণের কোনো আয়োজন রাখেনি কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভিন্নধর্মী এই আয়োজন করেছেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ইনস্টিটিউটের দেয়ালে তাঁরা এঁকে দিয়েছেন প্রতিবাদী সাদা-কালো দেয়ালচিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, চারুকলা ইনস্টিটিউটের ভেতরে সংস্কারকাজ চলমান থাকায় সেখানে আলাদা করে বর্ষবরণের কোনো আয়োজন রাখা হয়নি।বর্ষবরণের সব আয়োজন এবার মূল ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয়ভাবে করা হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও মূল ক্যাম্পাসে মঙ্গল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, বিভিন্ন দেশীয় খেলার আয়োজন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চারুকলা বন্ধ রাখা ও বর্ষবরণের কোনো আয়োজন না রাখার প্রতিবাদে নিজেদের উদ্যোগেই বর্ষবরণ করেছেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। সংস্কারকাজের জন্য ভেতরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইনস্টিটিউটের বাইরেই পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন করেন তাঁরা। শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁদের এবারের আয়োজন ছিল প্রতিবাদের অংশ। গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় চারুকলা ইনস্টিটিউটের মূল ফটক থেকে সাদা-কালো মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু করে। সেটি চট্টেশ্বরী মোড় হয়ে কাজীর দেউড়ি গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বাঁশ ও কাগজ দিয়ে তৈরি মাছ, ট্যাপা পুতুলের কাঠামো ছিল। পাশাপাশি বাঘ, প্যাঁচা ও কাকতাড়ুয়ার মুখোশও ছিল। অন্যদিকে ইনস্টিটিউটের বাইরের দেয়ালে ‘বৈশাখ গুম হয়ে গেছে’, ‘আমাদের বৈশাখ কই’, ‘চারুকলা সংস্কার নয়, স্থানান্তর চাই’ ইত্যাদি স্লোগান লিখেছেন শিক্ষার্থীরা।

চারুকলা স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি। তিনি জানান, চারুকলার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অর্থায়নে পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপিত হয়েছে। তাঁরা এবার ম্যুরাল বা দেয়ালচিত্র তৈরি করেছেন সাদা-কালো রঙের। অভি বলেন, ‘কালো রঙের মাধ্যমে আমরা শোক প্রকাশ করছি। কারণ, আমাদের চারুকলায় বৈশাখকে মেরে ফেলা হচ্ছে। আমাদের শোভাযাত্রাজুড়েও সাদা-কালো রং ছিল।’

২০১০ সালের পর এবারই চারুকলা ইনস্টিটিউটে কর্তৃপক্ষের কোনো আয়োজন ছিল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অসুখ সেরে ওঠার পর ঘরে ইতিবাচক শক্তি ফিরিয়ে আনার উপায়

ফিচার ডেস্ক
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ঋতুর বেদিতে এখন হেমন্ত বাস করছে। আবহাওয়ার কারণেই এই মৌসুমে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত অনেকেই অসুখে পড়ছেন। বাড়ির সবাই একসঙ্গে অসুখে পড়ার ঘটনাও যে ঘটছে না, তা কিন্তু নয়। আর এমন হলে বাড়ির সবগুলো ঘর একসঙ্গে যেমন অগোছালো হয়ে যায়, তেমনি বাড়ির উৎফুল্ল ও তরতাজাভাবটাও কেমন উবে যায়। ঘরের যেদিকেই চোখ পড়ে, সেদিকেই অগোছালোভাব। ঘরদোর পরিপাটি না থাকলে বা নোংরা হলে অনেকেই আবার তীব্র অ্যাংজাইটিতে ভোগেন। তখন কোনো কাজেই ঠিকঠাক মন বসানো যায় না। তাই অসুখ সেরে ওঠার পর ঘরে ইতিবাচক শক্তি ফিরিয়ে আনতে বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী এই কাজগুলো করতে পারেন, যা ঘরকে তো পরিপাটি করে তুলবেই; আপনিও প্রাণশক্তি ফিরে পাবেন। বাস্তুশাস্ত্র সম্পর্কে তো নতুন করে বলার কিছু নেই। তা-ও বলে রাখি, এটি মূলত প্রাচীন ভারতীয় স্থাপত্য এবং নকশাব্যবস্থা; যা মেনে সাজালে ঘরে সুখ, আয়, সুস্বাস্থ্য ও ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পায়।

ঘরের অস্বাস্থ্যকর বাতাস বের হতে দিন

ঘরের অস্বাস্থ্যকর বাতাস দূর করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, বাতাস চলাচলের জন্য জানালা খুলে রাখা। এতে ঘরের গুমোটভাবটা কেটে যাবে। ঘর হয়ে উঠবে ফুরফুরে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

দেয়ালে একাধিক আয়না লাগান

ঘরের উৎফুল্লভাব ফিরিয়ে আনতে দেয়ালে আয়না সেটে দিতে পারেন। এতে জানালা দিয়ে আলো প্রবেশ করে তা আয়নার মধ্য় দিয়ে প্রতিফলিত হয়ে পুরো ঘরে ছড়িয়ে যাবে। বাস্তুমতে, বাড়িতে দেয়ালে আয়না লাগানো হলে নেতিবাচক শক্তি দূর হয়। তবে শোয়ার ঘরে আয়না রাখার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক থাকা চাই। বিছানার অপর পাশে আয়না না রাখার নির্দেশ রয়েছে বাস্তুশাস্ত্রে। রাখলেও তা পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখা চাই।

অদ্ভুত পেইন্টিং সরিয়ে ফেলুন

মানসিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে এমন পেইন্টিং বাড়িতে থেকে থাকলে, তা সরিয়ে ফেলুন। বাড়িতে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা শোক প্রকাশ পায়—এমন কোনো পেইন্টিং থাকে তাহলে অ্যাংজাইটি আরও বাড়তে পারে।

ঘর মোছার পানিতে লবণ ব্যবহার করুন

লবণকে বলা হয় প্রাকৃতিক পরিষ্কারক। রোগ থেকে সেরে ওঠার পর ঘর মোছার পানিতে এক টেবিল চামচ লবণ ফেলে পুরো বাড়ির মেঝে মুছে নিন। এতে জীবাণু তো দূর হবেই, মেঝেও হবে ঝকঝকে। ঘরে দুর্গন্ধ থাকলে তা-ও কেটে যাবে।

দরজায় পিতলের ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখুন

বাড়িতে প্রবেশের দরজায় একটি পিতলের ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। ঘণ্টার শব্দ মনকে প্রশান্ত করে। মুড ভালো রাখতে ও ঘরে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে ঘণ্টার ধ্বনি সত্য়িই কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

দেয়ালে হলুদ রং করুন

চোখ কপালে উঠল তো! হলুদের মধ্য়েও কিন্তু অনেক সুন্দর শেড রয়েছে। যে শেডগুলো করলে ঘরে একটা তরতাজাভাব ফিরে আসবে। ইদানীং মাস্টার্ড ইয়েলো রং করাচ্ছেন অনেকে বারান্দায় বা ঘরের কোনো একটা ফিচার ওয়ালে। এতে ঘরের প্রাণহীনভাবটাও দূর হচ্ছে, সঙ্গে ঘর হয়ে উঠছে আনন্দ ও কর্মশক্তির প্রেরণা।

ভাঙা ও অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলুন

পুরোনো চেয়ার থেকে শুরু করে কলম পর্যন্ত, যেসব জিনিসপত্র ও পরিধেয় আর আপনার কাজে লাগছে না—সেগুলো দান করে দিন। ঘরের বিভিন্ন কোনায় ও আলমারিতে আমরা এমন কিছু জিনিসপত্র ও কাপড়চোপড় জমিয়ে রাখি, যেগুলো প্রয়োজনেও লাগছে না; আবার ফেলে বা কাউকে দিয়ে দেওয়াও হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে যেগুলো দান করা সম্ভব, সেগুলো দান করে দিন। অন্যদিকে ভাঙা কাপ, পিরিচ বা কোনাভাঙা ফুলদানি; ফেলে দিন। এতে ঘর অনেকটাই হালকা হবে, মনটাও ভারমুক্ত থাকবে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

কমলার সুগন্ধিযুক্ত এয়ার ফ্রেশনার স্প্রে করুন

কমলার সুগন্ধ আমাদের মনকে প্রফুল্ল করে তোলে। ঘরে কমলার সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়লে বাতাসটাও যেন আরও ফুরফুরে হয়ে ওঠে। তাই দিনে অন্তত একবার ঘরে কমলার সুগন্ধযুক্ত এয়ার ফ্রেশনার স্প্রে করুন। বাড়িতে কমলা থাকলে, সেগুলোর খোসা ও দারুচিনি একসঙ্গে পানিতে ফুটিয়ে নিন আধঘণ্টা। এতে ঘরে সুন্দর সুগন্ধ ভেসে বেড়াবে দীর্ঘক্ষণ।

ঘর সাজানোর উপকরণে বদল আনুন

পিতল, ব্রোঞ্জ, অ্যালুমিনিয়াম বা তামার উইন্ড চাইম ঝোলাতে পারেন। এতে বাতাসের দোলায় সুন্দর সুরে তা বাজতে থাকবে। ঘর হয়ে উঠবে জীবন্ত। এ ছাড়া বাড়িতে ফুলদানিতে তাজা ফুল রাখতে পারেন। তাজা ফুল রাখলে মন থেকে উদ্বেগ, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার মতো নেতিবাচক আবেগ দূর হয়।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ঘরের বিভিন্ন কোণে গাছ রাখুন

সহজেই ঘরে বেড়ে ওঠে—এমন গাছ রাখুন। লাকি ব্যাম্বু, মানিপ্ল্যান্ট, স্নেকপ্ল্যান্ট ইত্যাদি সহজেই ঘরে রাখা যেতে পারে।

প্রাকৃতিক পরিশোধন

সূর্যের আলোতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা প্রাকৃতিকভাবে ঘরকে জীবাণুমুক্ত করে এবং বাতাসকে বিশুদ্ধ করে। এটি ঘরে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া সূর্যের আলো গায়ে পড়লে মন প্রফুল্ল থাকে ও কাজকর্মে উৎসাহ পাওয়া যায়।

সূত্র: ম্যাজিক ব্রিকস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রক্তচাপ ও অনিদ্রা—দুই সমস্যার সমাধান এক ভেষজে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আপনি কি ঘুমের সমস্যার জন্য প্রাকৃতিক সমাধান খুঁজছেন? তাহলে ক্যামোমাইল একবার ব্যবহার করে দেখুন।

ক্যামোমাইল এমন এক ভেষজ, যা প্রাচীন গ্রিক যুগ থেকে পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাচীন গ্রিকরা প্রাকৃতিক চিকিৎসায় দক্ষ ছিলেন। তাঁরা জানতেন, এই ভেষজে আছে অ্যাপিজেনিন নামের এক রাসায়নিক উপাদান, যা শরীর শান্ত করে এবং ঘুম ঘুম ভাব আনে।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুষ্টিবিদ বেথ জেরওনি বলেন, ‘ক্যামোমাইল মূলত হালকা ঘুমের ওষুধের মতো কাজ করে। কয়েক চুমুক খেলে এটি সত্যিই আপনাকে ঘুমাতে সাহায্য করবে।’

তবে এই উদ্ভিদের উপকারিতা এখানেই শেষ নয়।

প্রথমত, ক্যামোমাইল চায়ের শান্তিদায়ক প্রভাব রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।

ডেইজি ফুলের মতো দেখতে এই উদ্ভিদ পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের মতো ভিটামিন ও মিনারেলসে ভরপুর।

ইউসিএলএ হেলথের তথ্যমতে, পটাশিয়াম (একধরনের ইলেকট্রোলাইট) আমাদের স্নায়ুতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করে এবং হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে; বিশেষ করে যাঁরা বেশি লবণ খান, তাঁদের জন্য এটি উপকারী।

তবে বেশির ভাগ আমেরিকানই পর্যাপ্ত পটাশিয়াম পান না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীদের দৈনিক ২ হাজার ৬০০ মিলিগ্রাম এবং পুরুষদের ৩ হাজার ৪০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া দরকার।

রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের তথ্যানুযায়ী, এক কাপ ক্যামোমাইল চায়ে প্রায় ২১ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে।

দৈনিক পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণে শাকপাতা, মিষ্টিআলু, কলা ও অ্যাভোকাডো ভালো উৎস হতে পারে।

পটাশিয়ামের মতোই ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে। মায়ো ক্লিনিকের মতে, হৃদ্‌যন্ত্র, পেশি ও স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যক্রমের জন্যও ক্যালসিয়াম অপরিহার্য।

তথ্যসূত্র: দি ইনডিপেনডেন্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চুল লম্বা করার ৮ কার্যকর উপায়

বিভাবরী রায়
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৪
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ঝলমলে লম্বা চুল কে না চায়? কিন্তু পর্যাপ্ত পুষ্টি না পাওয়ায় এবং নানা ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কারণে চুলের প্রাকৃতিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে, চুলের বৃদ্ধির জন্য তাহলে কী করণীয়...? এককথায় বলতে গেলে চুল বড় হবে খুব সহজে, যদি নিয়মিত সঠিক চর্চা করা যায়। এই সহজ টিপসগুলো অনুসরণ করুন, তারপর নিজের চোখে ফলাফল ধরা দেবে—

নিয়মিত চুল ছাঁটাই

হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। আট-দশ সপ্তাহ পর নিয়মিত ছাঁটাই করলে চুল দ্রুত বড় হতে পারে। অতিরিক্ত ধুলোবালু ও রোদের তাপের কারণে চুলের প্রান্তভাগ বা আগা তুলনামূলক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে চুলের আগা ফেটে যায়। নিয়মিত চুল ছাঁটাই করার মাধ্যমে সেই ক্ষতিগ্রস্ত ও ফেটে যাওয়া আগা কেটে ফেলা হলে চুল নতুন করে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে। যার ফলে কোনো বাধা ছাড়াই চুল লম্বা হতে পারে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

কন্ডিশনারকে করুন নিত্যসঙ্গী

হয়তো লক্ষ করেছেন, চুলের আগার অংশ গোড়ার অংশের চেয়ে তুলনামূলক পাতলা এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর কারণ হচ্ছে, নিচের প্রান্তটি গোড়ার অংশের মতো ভালোভাবে পুষ্টি পায় না। প্রতিবার চুল ধোয়ার পরে কন্ডিশনিং করা হলে চুলের আগার অংশ অনেকটা ক্ষয়ক্ষতি সারিয়ে ওঠার সুযোগ পায়। কন্ডিশনার ব্যবহারের ফলে চুল সুস্থতা ফিরে পায়। ফলে দ্রুত লম্বা হতে পারে।

ঈষদোষ্ণ তেল ম্যাসাজ করুন

চুলে ঈষদোষ্ণ তেল ম্যাসাজ করলে স্ট্রেস দূর হয়, এটা নিশ্চয়ই জানেন। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন এভাবে তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে আপনার চুল সুস্থ থাকবে, দ্রুত বেড়ে উঠবে ও চুল পড়া কমে যাবে। চুল দ্রুত বড় করতে চাইলে নারকেল বা জলপাই তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অ্যাসেনশিয়াল তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুল আঁচড়ান

অতিরিক্ত আঁচড়ানোর ফলে চুল পড়ার আশঙ্কা থাকে, এ কথা অনেকেই শুনেছেন। কিন্তু এটা তখনই ঘটবে, যখন চিরুনি বেছে নিতে ভুল করবেন। চিকন দাঁতের চিরুনি এড়াতে পারলে ভালো। মোটা দাঁতের চিরুনি চুলের জন্য সব সময় ভালো। এগুলো ব্যবহার করলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। রাতে ঘুমানোর আগে কমপক্ষে ৫০ বার এমন চিরুনি দিয়ে চুলের সামনে থেকে পেছনের দিকে ও মাথার সব চুল উল্টে পেছন থেকে সামনের দিকে আঁচড়ান। এতে চুল দ্রুত বড় বা লম্বা হবে।

চুল লম্বা করার জন্য খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি পান করা চাই। বাহ্য়িকভাবে পুষ্টি জোগাতে ডিমের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল এবং ভিটামিন ‘ই’ ক্যাপসুলের জেল মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। এ ছাড়াও মাথার ত্বকে পেঁয়াজের রস ম্যাসাজ করলে চুল দ্রুত বড় হয়। শোভন সাহা, কসমেটোলজিস্ট, শোভন মেকওভার

ভেজা চুল তোয়ালে দিয়ে মুড়িয়ে রাখবেন না

শ্যাম্পু করে চুল ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে ভেজা চুল মুড়িয়ে রাখার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। এই অভ্যাসের নেতিবাচক ফল সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। ভেজা চুলের গোড়া নরম থাকে। ফলে ভেজা তোয়ালে দিয়ে এভাবে মুড়ে রাখলে চুল ভাঙা ও পড়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই চুল ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে মুছে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

৩ মিনিট ব্যাকব্রাশ

অদ্ভুত শোনাতে পারে, কিন্তু চুল দ্রুত বড় করতে চাইলে প্রতিদিন ৩ মিনিট চুল ব্যাকব্রাশ করুন। এতে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং চুল দ্রুত বড় হয়।

মানসিক চাপকে বিদায় জানান

মানসিক চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর অসংখ্য ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে, চুল পড়া তার মধ্যে অন্যতম। কাজের কারণে বা ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে অতিরিক্ত চাপ চুলের বৃদ্ধি ব্যাহত করতে পারে। চুলের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টিকারী মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠতে ধ্যান, যোগব্যায়াম বা অন্যান্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যেতে পারে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ডিমের মাস্ক ব্যবহার

ডিম দিয়ে তৈরি প্রোটিন প্যাক দিয়ে কিন্তু চুলে সহজে পুষ্টি জোগাতে পারেন। প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিম, আপনার চুলকে পুষ্ট করতে ও নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে অলৌকিকভাবে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। মাত্র এক চা-চামচ জলপাই তেল একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে মিশিয়ে পুরো চুল এবং মাথার ত্বকে লাগান। এভাবে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন। মাসে একবার এই মাস্ক ব্যবহার করুন। তিন থেকে ছয় মাস পর অবিশ্বাস্য ফল পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জলপাই রসুনের ঝাল আচার

ফিচার ডেস্ক
ছবি: রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা
ছবি: রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা

জলপাইয়ের মৌসুমে প্রায় সব বাড়িতে আচার তৈরি করা হয়। যাঁরা এই প্রথমবারের মতো জলপাইয়ের আচার তৈরির কথা ভাবছেন, তাঁদের জন্য জলপাই রসুনের ঝাল আচারের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।

উপকরণ

জলপাই সেদ্ধ এক কেজি, দেশি রসুনের কোয়া আধা কেজি, বোম্বাই মরিচ ১০ থেকে ১২টা, হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া, ধনেগুঁড়া, জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ করে, আদা ও রসুনবাটা এক টেবিল চামচ, লবণ ও বিট লবণ স্বাদমতো, সরিষাবাটা ২ টেবিল চামচ, পাঁচফোড়ন ২ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২টা, সরিষার তেল ২ কাপ, চিনি আধা কাপ, সিরকা আধা কাপ।

প্রণালি

জলপাই বোঁটা ফেলে ধুয়ে সেদ্ধ করে চটকে নিন। অন্য একটি বাটিতে রসুনের কোয়া, বোম্বাই মরিচ, হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া, ধনেগুঁড়া, বিট লবণ, লবণ, চিনি একসঙ্গে মেখে রেখে দিন। এবার কড়াইতে সরিষার তেল গরম হলে তেজপাতার ফোড়ন দিন। পরে বাটিতে রাখা উপকরণ দিয়ে রান্না করুন ৫-৭ মিনিট। জলপাই দিয়ে আবার নেড়ে রান্না করুন। চুলার তাপ বাড়ানোই থাকবে। তেল ছেড়ে এলে চুলার তাপ কমিয়ে নেড়েচেড়ে লবণ দেখে নামিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল এই মৌসুমের জলপাই রসুনের ঝাল আচার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত