ইজাজুল হক
পশুপাখির প্রতি ইসলাম বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। জীবনধারণে পশুপাখির গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ তা থেকে নানাভাবে উপকৃত হয়। পৃথিবীকে আবাদ ও প্রাণোচ্ছল রাখতে পশুপাখির সহায়তার বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা পশুপাখির নামে বেশ কয়েকটি সুরার নামকরণ করেন। যেমন, বাকারা, আনআম, নাহল ইত্যাদি। ইসলামে পশুপাখির গুরুত্ব বোঝাতে এই একটি প্রমাণই যথেষ্ট।
ইসলামে পশুপাখির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হলো, তাদের কোনো প্রকার কষ্ট না দেওয়া। জাবির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) একবার মুখে আঘাতের চিহ্ন আছে এমন এক গাধার পিঠে চড়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, ‘গাধাটিকে যে আঘাত করেছে, তার ওপর আল্লাহর অভিশাপ।’ আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘পশুপাখিদের যারা কষ্ট দেয়, তাদের প্রতি রাসুল (সা.) অভিশাপ দিয়েছেন।’ অর্থাৎ, পশুপাখিকে কষ্ট দেওয়া, নির্যাতন করা এবং রূঢ় আচরণ করা ইসলামের দৃষ্টিতে অপরাধ।
পশুপাখির ব্যাপারে ইসলামের মূলনীতি হলো, তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা এবং অভুক্ত রাখা হারাম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক নারীকে শাস্তি দেওয়া হয়। কারণ সে তার বিড়ালকে খাবারদাবার দিত না এবং বাইরের দুনিয়ায় ছেড়েও দিত না।’ সাহল ইবনুল হানযালিয়াহ বলেন, রাসুল (সা.) চলার পথে একবার প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত এক উট দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, ‘এসব ভাষাহীন পশুর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। উত্তমভাবে তাতে আরোহণ করো। উত্তমভাবেই মাংস ভক্ষণ করো।’
পশুপাখি যে জন্য সৃষ্টি করা হয়, তাতেই কাজে লাগাতে রাসুল (সা.) নির্দেশ দেন। এগুলোকে কাজে লাগানোর প্রধান উদ্দেশ্যও নির্ধারণ করে দেন। তিনি বলেন, ‘খবরদার, জীবজন্তুর পিঠকে কাজের মিম্বার বানাবে না। আল্লাহ তাআলা তোমাদের এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা এ জন্য দিয়েছেন যে যাতে তারা তোমাদের এমন জনপদে বহন করে নিয়ে যায়, সেখানে অনেক কষ্টে তোমাদের পৌঁছাতে হতো।’
পশুপাখির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হলো, তাদের প্রতি দয়ার্দ্র হতে হবে। কোমল আচরণ করতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, এক ব্যক্তি পথ চলছিল। সে প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত। একটি কূপ সামনে পেল। সে তাতে নেমে পানি পান করল। এরপর বের হয়ে দেখল, একটি কুকুর তৃষ্ণায় হাঁপাচ্ছে এবং রাস্তার কাদা খাচ্ছে। লোকটি বলল, এ কুকুরটি আমার মতোই প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত। এরপর কূপে নেমে মোজা ভরে পানি তুলে আনল। কুকুরের মুখে তা ধরে রাখল। কুকুর পান করল এবং আল্লাহর কাছে লোকটির জন্য কৃতজ্ঞতা জানাল। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন। সাহাবিরা প্রশ্ন করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, জীবজন্তুর খেদমত করলেও কি নেকি মিলবে?’ তিনি বললেন, ‘যেকোনো প্রাণীর খেদমতে নেকি মিলবে।’
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. বলেন, একবার আমরা রাসুল (সা.) এর সফরসঙ্গী ছিলাম। তিনি প্রাকৃতিক কাজ সারতে যান। আমরা একটি চড়ুই দেখতে পাই। তার সঙ্গে দুটি বাচ্চা ছিল। আমরা বাচ্চা দুটি ধরে ফেলি। মা চড়ুইটি ছটফট করছিল। প্রিয়নবী (সা.) এসে বললেন, ‘বাচ্চা ধরে চড়ুইটিকে কষ্ট দিচ্ছে কারা? বাচ্চাগুলো ফিরিয়ে দাও।’
এ ছাড়া পশুপাখির অধিকার রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা হলো, তাদের জন্য ঘাসযুক্ত চারণভূমি রাখতে হবে। চারণভূমি না থাকলে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কোমল। কোমলতা পছন্দ করেন। কোমল আচরণে প্রসন্ন হন। কোমলতায় তাঁর সাহায্য থাকে, রূঢ়তায় থাকে না। এসব ভাষাহীন জীবকে যখন বাহন হিসেবে ব্যবহার করবে, তখন প্রাপ্য অধিকার তাদের দাও। চারণভূমিতে খাদ্য না থাকলে হাড্ডিসার হওয়ার আগেই তাদের সরিয়ে নাও।’
পশুপাখির প্রতি ইসলাম সর্বোচ্চ দয়া প্রদর্শন করে। তাদের প্রতি সদাচার করা এবং কষ্টানুভূতিকে সম্মান জানানো আবশ্যক। এ মহান আদর্শের বাস্তবায়নে রাসুল (সা.) পশুপাখি জবাই করার সময় কষ্ট দিতেও নিষেধ করেন। জবাই করার জন্য টেনেহিঁচড়ে নিয়ে শারীরিক কষ্ট দেওয়া যাবে না। জবাইয়ের দা-ছুরি ভোঁতা হওয়া যাবে না। ছুরি-চাকু দেখিয়ে মানসিক কষ্ট দেওয়া যাবে না। এসবের কারণে তারা মৃত্যুর কষ্টের চেয়ে বেশি কষ্ট পায়।
পশুপাখির প্রতি ইসলাম বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। জীবনধারণে পশুপাখির গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ তা থেকে নানাভাবে উপকৃত হয়। পৃথিবীকে আবাদ ও প্রাণোচ্ছল রাখতে পশুপাখির সহায়তার বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা পশুপাখির নামে বেশ কয়েকটি সুরার নামকরণ করেন। যেমন, বাকারা, আনআম, নাহল ইত্যাদি। ইসলামে পশুপাখির গুরুত্ব বোঝাতে এই একটি প্রমাণই যথেষ্ট।
ইসলামে পশুপাখির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হলো, তাদের কোনো প্রকার কষ্ট না দেওয়া। জাবির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) একবার মুখে আঘাতের চিহ্ন আছে এমন এক গাধার পিঠে চড়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, ‘গাধাটিকে যে আঘাত করেছে, তার ওপর আল্লাহর অভিশাপ।’ আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘পশুপাখিদের যারা কষ্ট দেয়, তাদের প্রতি রাসুল (সা.) অভিশাপ দিয়েছেন।’ অর্থাৎ, পশুপাখিকে কষ্ট দেওয়া, নির্যাতন করা এবং রূঢ় আচরণ করা ইসলামের দৃষ্টিতে অপরাধ।
পশুপাখির ব্যাপারে ইসলামের মূলনীতি হলো, তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা এবং অভুক্ত রাখা হারাম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক নারীকে শাস্তি দেওয়া হয়। কারণ সে তার বিড়ালকে খাবারদাবার দিত না এবং বাইরের দুনিয়ায় ছেড়েও দিত না।’ সাহল ইবনুল হানযালিয়াহ বলেন, রাসুল (সা.) চলার পথে একবার প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত এক উট দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, ‘এসব ভাষাহীন পশুর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। উত্তমভাবে তাতে আরোহণ করো। উত্তমভাবেই মাংস ভক্ষণ করো।’
পশুপাখি যে জন্য সৃষ্টি করা হয়, তাতেই কাজে লাগাতে রাসুল (সা.) নির্দেশ দেন। এগুলোকে কাজে লাগানোর প্রধান উদ্দেশ্যও নির্ধারণ করে দেন। তিনি বলেন, ‘খবরদার, জীবজন্তুর পিঠকে কাজের মিম্বার বানাবে না। আল্লাহ তাআলা তোমাদের এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা এ জন্য দিয়েছেন যে যাতে তারা তোমাদের এমন জনপদে বহন করে নিয়ে যায়, সেখানে অনেক কষ্টে তোমাদের পৌঁছাতে হতো।’
পশুপাখির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হলো, তাদের প্রতি দয়ার্দ্র হতে হবে। কোমল আচরণ করতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, এক ব্যক্তি পথ চলছিল। সে প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত। একটি কূপ সামনে পেল। সে তাতে নেমে পানি পান করল। এরপর বের হয়ে দেখল, একটি কুকুর তৃষ্ণায় হাঁপাচ্ছে এবং রাস্তার কাদা খাচ্ছে। লোকটি বলল, এ কুকুরটি আমার মতোই প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত। এরপর কূপে নেমে মোজা ভরে পানি তুলে আনল। কুকুরের মুখে তা ধরে রাখল। কুকুর পান করল এবং আল্লাহর কাছে লোকটির জন্য কৃতজ্ঞতা জানাল। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন। সাহাবিরা প্রশ্ন করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, জীবজন্তুর খেদমত করলেও কি নেকি মিলবে?’ তিনি বললেন, ‘যেকোনো প্রাণীর খেদমতে নেকি মিলবে।’
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. বলেন, একবার আমরা রাসুল (সা.) এর সফরসঙ্গী ছিলাম। তিনি প্রাকৃতিক কাজ সারতে যান। আমরা একটি চড়ুই দেখতে পাই। তার সঙ্গে দুটি বাচ্চা ছিল। আমরা বাচ্চা দুটি ধরে ফেলি। মা চড়ুইটি ছটফট করছিল। প্রিয়নবী (সা.) এসে বললেন, ‘বাচ্চা ধরে চড়ুইটিকে কষ্ট দিচ্ছে কারা? বাচ্চাগুলো ফিরিয়ে দাও।’
এ ছাড়া পশুপাখির অধিকার রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা হলো, তাদের জন্য ঘাসযুক্ত চারণভূমি রাখতে হবে। চারণভূমি না থাকলে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কোমল। কোমলতা পছন্দ করেন। কোমল আচরণে প্রসন্ন হন। কোমলতায় তাঁর সাহায্য থাকে, রূঢ়তায় থাকে না। এসব ভাষাহীন জীবকে যখন বাহন হিসেবে ব্যবহার করবে, তখন প্রাপ্য অধিকার তাদের দাও। চারণভূমিতে খাদ্য না থাকলে হাড্ডিসার হওয়ার আগেই তাদের সরিয়ে নাও।’
পশুপাখির প্রতি ইসলাম সর্বোচ্চ দয়া প্রদর্শন করে। তাদের প্রতি সদাচার করা এবং কষ্টানুভূতিকে সম্মান জানানো আবশ্যক। এ মহান আদর্শের বাস্তবায়নে রাসুল (সা.) পশুপাখি জবাই করার সময় কষ্ট দিতেও নিষেধ করেন। জবাই করার জন্য টেনেহিঁচড়ে নিয়ে শারীরিক কষ্ট দেওয়া যাবে না। জবাইয়ের দা-ছুরি ভোঁতা হওয়া যাবে না। ছুরি-চাকু দেখিয়ে মানসিক কষ্ট দেওয়া যাবে না। এসবের কারণে তারা মৃত্যুর কষ্টের চেয়ে বেশি কষ্ট পায়।
পবিত্র কোরআন—যে গ্রন্থের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে মুমিন হৃদয়। দিশেহারা মানুষ পায় সঠিক পথের দিশা। এ গ্রন্থে রয়েছে উপদেশ গ্রহণে আগ্রহীদের জন্য অনন্য উপদেশ। আর যারা মুখ ফিরিয়ে নেয় কোরআন থেকে, তাদের জন্য এতে বর্ণিত হয়েছে সতর্কবার্তা।
৬ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৩ ঘণ্টা আগেইসলামের বিচারব্যবস্থায় বৈষম্যের কোনো স্থান নেই। বিচারের রায় কার্যকরে বিশ্বনবী (সা.) আপনজন-ভিন্নজন, স্বজাতি-বিজাতি এবং দেশি-বিদেশি কারও মাঝেই কোনো ধরনের ভেদাভেদকে প্রশ্রয় দিতেন না। মক্কা বিজয়ের সময় আরবের সবচেয়ে কুলীন বংশ কুরাইশ গোত্রের এক মহিলা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হন।
২১ ঘণ্টা আগেমানুষের মুখের ভাষা তার অন্তরের প্রতিচ্ছবি। একজন মুমিনের মুখের ভাষা শুধু তার ব্যক্তিগত আচরণ নয়; বরং তার ইমান, চরিত্র এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের পরিচায়ক। ইসলাম এমন একটি জীবনব্যবস্থা, যা মানুষের প্রতিটি দিককে শুদ্ধ ও সুন্দর করার শিক্ষা দেয়। মুখের ভাষা তার অন্যতম।
১ দিন আগে