Ajker Patrika

মজলুমের পাশে দাঁড়ানোর দায়বদ্ধতা

নাঈমুল হাসান তানযীম 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীর বিভিন্ন ভূখণ্ডে আজ মুসলিম উম্মাহ নির্যাতিত, নিপীড়িত। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের মুসলমানেরা। একজন মুসলমান হিসেবে কথা ছিল তাদের পাশে দাঁড়ানো, সার্বিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়ানো এবং জালেম শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার। কিন্তু মুসলিম উম্মাহর নির্লিপ্ততা আর নীরব দর্শকের ভূমিকা দেখে মনে হয়, যেন কিছুই করার নেই! অথচ রাসুল (সা.)-এর সাহাবিগণ ছিলেন একে অপরের প্রতি জীবন উৎসর্গকারী। মজলুমের পক্ষে শক্ত অবস্থানকারী আর জালিমের বিপক্ষে তুমুল প্রতিরোধকারী।

তাঁরা ছিলেন এই হাদিসেরই জ্বলন্ত উদাহরণ—‘মুমিনদের দৃষ্টান্ত তাদের পারস্পরিক সম্প্রীতি, দয়ার্দ্রতা ও সহমর্মিতার দিক দিয়ে একটি মানব দেহের মতো, যখন তার একটি অঙ্গ অসুস্থ হয়, তখন তার সমগ্র দেহ তাপ ও অনিদ্রা ডেকে আনে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৬৩৫০)

কিন্তু আমাদের অবস্থা যেন সম্পূর্ণ উল্টো। হাজার হাজার মুসলিম, মুমিনকে চোখের সামনে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে, কিছুই করতে পারছি না আমরা। দাঁড়াচ্ছি না মজলুমের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানুষ যখন জালিমকে জুলুম করতে দেখে, তখন তারা যদি তার হাত ধরে প্রতিহত না করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা অতি শিগগির তাদের সকলকে তার ব্যাপক শাস্তিতে নিক্ষিপ্ত করবেন। (জামে তিরমিজি: ২১৬৮) আরেক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি এমন স্থানে অপর মুসলিমের সাহায্য পরিত্যাগ করে; যেখানে তার সম্ভ্রম-মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, আল্লাহ তাকে এমন স্থানে সাহায্য করা থেকে বিমুখ থাকবেন; যেখানে সে তাঁর সাহায্য কামনা করে। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের সম্ভ্রম-মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার স্থানে তাকে সাহায্য করে, আল্লাহ তাকে এমন স্থানে সাহায্য করবেন; যেখানে সে তাঁর সাহায্য প্রত্যাশা করে। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৮৪)

জালিমকে যেকোনোভাবে প্রতিহত করতে হবে। বুঝিয়ে হলে বুঝিয়ে অথবা অন্য কোনো পদ্ধতিতে। রাসুল (সা.) এক হাদিসে বলেন, ‘তুমি তোমার ভাইকে সাহায্য করো, সে জালেম হোক বা মজলুম।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, মজলুমকে সাহায্য করা; তা তো বুঝলাম। কিন্তু জালেমকে কীভাবে সাহায্য করব?’ তিনি বললেন, ‘তুমি তার হাত ধরে তাকে জুলুম থেকে বিরত রাখবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৪৪৪)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত