আপনার জিজ্ঞাসা
ইসলাম ডেস্ক
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। সুগন্ধি ব্যবহার করাকে ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে। আমরা জানি, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও সুগন্ধি খুব পছন্দ করতেন। কিন্তু বর্তমান বাজারের বেশির ভাগ পারফিউম বা বডি স্প্রেতে অ্যালকোহল থাকে। আমার প্রশ্ন, এ ধরনের অ্যালকোহলযুক্ত পারফিউম ব্যবহার করা কি শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ হবে? এই সুগন্ধিগুলো ব্যবহার করে কি নামাজ আদায় করা যাবে?
নজরুল ইসলাম মোল্লা, সিরাজগঞ্জ
উত্তর: ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং আধুনিক মুসলিম সমাজে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা। ইসলাম পরিচ্ছন্নতা ও সুগন্ধি ব্যবহারের প্রতি যে গুরুত্ব আরোপ করেছে, তা কোরআন ও হাদিস থেকে সুস্পষ্ট। তবে পারফিউমে ব্যবহৃত অ্যালকোহলের বিধান নিয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কিছু বিভ্রান্তি দেখা যায়। এ বিষয়ে ইসলামি ফিকহবিদগণ যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
শরিয়তের মূলনীতি ও অ্যালকোহলের বিধান
ইসলামে মদ বা নেশাজাতীয় পানীয় পান করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কোরআন ও হাদিসের বহু জায়গায় এর নিষেধাজ্ঞা প্রমাণিত। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরগুলো শয়তানের অপবিত্র কাজ। সুতরাং তোমরা তা থেকে বেঁচে থাকো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা মায়িদা: ৯০)
তবে ফকিহগণ এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে বলেছেন, মদের এই নিষেধাজ্ঞা প্রধানত সেই অ্যালকোহলের ওপর প্রযোজ্য, যা আঙুর, খেজুর, কিশমিশ বা এ-জাতীয় ফল থেকে তৈরি করা হয়। এ ধরনের অ্যালকোহলকে ‘খামর’ বা নেশা সৃষ্টিকারী হিসেবে গণ্য করা হয়।
পারফিউমে ব্যবহৃত অ্যালকোহল ও ফিকহি নির্দেশনা
আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন অ্যালকোহলের বিভিন্ন উৎস ও প্রকারভেদ দেখা যায়। বর্তমানে পারফিউম, বডি স্প্রে, ওষুধ ও অন্যান্য প্রসাধনীতে যে ধরনের অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয়, তা সাধারণত আঙুর বা খেজুর থেকে তৈরি হয় না; বরং এগুলো মূলত আলু, গম, ভুট্টা অথবা পেট্রোলিয়াম দ্রব্য থেকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়। এ ধরনের অ্যালকোহলকে ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় খামর (নেশাজাতীয় পানীয়) হিসেবে গণ্য করা হয় না।
দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া অনুযায়ী, যে অ্যালকোহল আঙুর বা খেজুর থেকে তৈরি হয় না, তা ব্যবহার করা জায়েজ। ফিকহে হানাফির প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ফাতহুল মুলহিমে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে ওষুধ ও পারফিউমে যে বেশির ভাগ অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয়, তা আঙুর বা খেজুর থেকে তৈরি হয় না। তাই উমুমুল বালওয়া; অর্থাৎ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া সমস্যার কারণে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর অভিমত গ্রহণ করার সুযোগ আছে।’ এই মূলনীতি অনুসারে, যেহেতু বর্তমানে অ্যালকোহলমুক্ত পারফিউম খুঁজে বের করা কঠিন এবং ব্যবহৃত অ্যালকোহল মূলত কৃত্রিম উৎস থেকে আসে, তাই এর ব্যবহারকে বৈধ বলে মনে করা হয়।
নামাজের ক্ষেত্রে সতর্কতা ও উত্তম পন্থা
যদিও এ ধরনের পারফিউম ব্যবহার করা জায়েজ। তবু কিছু ফকিহ নামাজের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। নামাজের জন্য আমাদের শরীর, পোশাক ও স্থান পবিত্র হওয়া জরুরি। এই পবিত্রতার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে অনেক আলেম অ্যালকোহলমুক্ত পারফিউম ব্যবহার করাকে উত্তম মনে করেন।
এ ধরনের পারফিউমে এমন কোনো উপাদান নেই, যা নিয়ে ইসলামি শরিয়তের ফিকহি মাসআলায় মতভেদ থাকতে পারে। তাই নামাজের সময় সম্পূর্ণ মানসিক প্রশান্তি ও পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে অ্যালকোহলমুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করা ভালো। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ইসলামিক এবং অ্যালকোহলমুক্ত পারফিউম বা আতর খুব সহজে পাওয়া যায়।
উত্তর দিয়েছেন,মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক
প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম। সুগন্ধি ব্যবহার করাকে ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে। আমরা জানি, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও সুগন্ধি খুব পছন্দ করতেন। কিন্তু বর্তমান বাজারের বেশির ভাগ পারফিউম বা বডি স্প্রেতে অ্যালকোহল থাকে। আমার প্রশ্ন, এ ধরনের অ্যালকোহলযুক্ত পারফিউম ব্যবহার করা কি শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ হবে? এই সুগন্ধিগুলো ব্যবহার করে কি নামাজ আদায় করা যাবে?
নজরুল ইসলাম মোল্লা, সিরাজগঞ্জ
উত্তর: ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং আধুনিক মুসলিম সমাজে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা। ইসলাম পরিচ্ছন্নতা ও সুগন্ধি ব্যবহারের প্রতি যে গুরুত্ব আরোপ করেছে, তা কোরআন ও হাদিস থেকে সুস্পষ্ট। তবে পারফিউমে ব্যবহৃত অ্যালকোহলের বিধান নিয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কিছু বিভ্রান্তি দেখা যায়। এ বিষয়ে ইসলামি ফিকহবিদগণ যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
শরিয়তের মূলনীতি ও অ্যালকোহলের বিধান
ইসলামে মদ বা নেশাজাতীয় পানীয় পান করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কোরআন ও হাদিসের বহু জায়গায় এর নিষেধাজ্ঞা প্রমাণিত। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরগুলো শয়তানের অপবিত্র কাজ। সুতরাং তোমরা তা থেকে বেঁচে থাকো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা মায়িদা: ৯০)
তবে ফকিহগণ এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে বলেছেন, মদের এই নিষেধাজ্ঞা প্রধানত সেই অ্যালকোহলের ওপর প্রযোজ্য, যা আঙুর, খেজুর, কিশমিশ বা এ-জাতীয় ফল থেকে তৈরি করা হয়। এ ধরনের অ্যালকোহলকে ‘খামর’ বা নেশা সৃষ্টিকারী হিসেবে গণ্য করা হয়।
পারফিউমে ব্যবহৃত অ্যালকোহল ও ফিকহি নির্দেশনা
আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন অ্যালকোহলের বিভিন্ন উৎস ও প্রকারভেদ দেখা যায়। বর্তমানে পারফিউম, বডি স্প্রে, ওষুধ ও অন্যান্য প্রসাধনীতে যে ধরনের অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয়, তা সাধারণত আঙুর বা খেজুর থেকে তৈরি হয় না; বরং এগুলো মূলত আলু, গম, ভুট্টা অথবা পেট্রোলিয়াম দ্রব্য থেকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়। এ ধরনের অ্যালকোহলকে ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় খামর (নেশাজাতীয় পানীয়) হিসেবে গণ্য করা হয় না।
দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া অনুযায়ী, যে অ্যালকোহল আঙুর বা খেজুর থেকে তৈরি হয় না, তা ব্যবহার করা জায়েজ। ফিকহে হানাফির প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ফাতহুল মুলহিমে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে ওষুধ ও পারফিউমে যে বেশির ভাগ অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয়, তা আঙুর বা খেজুর থেকে তৈরি হয় না। তাই উমুমুল বালওয়া; অর্থাৎ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া সমস্যার কারণে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর অভিমত গ্রহণ করার সুযোগ আছে।’ এই মূলনীতি অনুসারে, যেহেতু বর্তমানে অ্যালকোহলমুক্ত পারফিউম খুঁজে বের করা কঠিন এবং ব্যবহৃত অ্যালকোহল মূলত কৃত্রিম উৎস থেকে আসে, তাই এর ব্যবহারকে বৈধ বলে মনে করা হয়।
নামাজের ক্ষেত্রে সতর্কতা ও উত্তম পন্থা
যদিও এ ধরনের পারফিউম ব্যবহার করা জায়েজ। তবু কিছু ফকিহ নামাজের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। নামাজের জন্য আমাদের শরীর, পোশাক ও স্থান পবিত্র হওয়া জরুরি। এই পবিত্রতার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে অনেক আলেম অ্যালকোহলমুক্ত পারফিউম ব্যবহার করাকে উত্তম মনে করেন।
এ ধরনের পারফিউমে এমন কোনো উপাদান নেই, যা নিয়ে ইসলামি শরিয়তের ফিকহি মাসআলায় মতভেদ থাকতে পারে। তাই নামাজের সময় সম্পূর্ণ মানসিক প্রশান্তি ও পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে অ্যালকোহলমুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করা ভালো। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ইসলামিক এবং অ্যালকোহলমুক্ত পারফিউম বা আতর খুব সহজে পাওয়া যায়।
উত্তর দিয়েছেন,মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক
ইসলামি ইতিহাসে জুমার দিনকে বলা হয় ‘সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন’। হাদিসে এসেছে, এ দিনেই হজরত আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এ দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন এবং এ দিনেই পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আবার কিয়ামতও সংঘটিত হবে জুমার দিনেই। তাই এ দিনের মাহাত্ম্য কেবল ইবাদতকেন্দ্রিক নয়, বরং মানবজাতির সৃষ্টিজীবনের এক...
৭ ঘণ্টা আগেপ্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি ন
৮ ঘণ্টা আগেএকটি জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো দুর্নীতি। এই ব্যাধি কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতিই বয়ে আনে না, বরং একটি রাষ্ট্রের নৈতিক কাঠামোকেও ভেতর থেকে ভেঙে দেয়। ইসলাম এমন এক পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যেখানে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র—সর্বস্তরে ন্যায়ের চর্চা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা
৮ ঘণ্টা আগেদামেস্কের বুকে শায়খ মুহিউদ্দিন মহল্লায়, ইয়াজিদ নদীর শান্ত ধারার পাশে দাঁড়িয়ে আছে এক ঐতিহাসিক নিদর্শন—শায়খ মুহিউদ্দিন ইবনুল আরাবি জামে মসজিদ। এর প্রতিটি ইট-পাথরে মিশে আছে শত শত বছরের ইতিহাস, আধ্যাত্মিকতা আর শিল্পের নৈপুণ্য।
৯ ঘণ্টা আগে