হাফেজ মাওলানা আল আমিন সরকার
একটি জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো দুর্নীতি। এই ব্যাধি কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতিই বয়ে আনে না, বরং একটি রাষ্ট্রের নৈতিক কাঠামোকেও ভেতর থেকে ভেঙে দেয়। ইসলাম এমন এক পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যেখানে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র—সর্বস্তরে ন্যায়ের চর্চা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কোরআন ও হাদিসে দুর্নীতির বিধান
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে দুর্নীতিকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না এবং বিচারকের কাছে তা উপস্থাপন কোরো না, যাতে অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ ভক্ষণ করতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.) এই বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘ঘুষদাতা ও ঘুষ গ্রহণকারী উভয়েই জাহান্নামের আগুনে থাকবে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৩৫৮০)। তিনি আরও বলেন, ‘আমার কন্যা ফাতিমাও যদি চুরি করত, আমি তার হাত কেটে দিতাম।’ (সহিহ বুখারি: ৬৭৮৮)। আরেকটি হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৮৯৩)।
এ আয়াত ও হাদিসগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়—দুর্নীতি কেবল একটি দুনিয়াবি অন্যায় নয়, বরং পরকালে এর জন্য ভয়াবহ শাস্তিরও ব্যবস্থা রয়েছে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে আলেম সমাজের করণীয়
ইসলামের ইতিহাসে ওলামায়ে কেরাম শুধু ইবাদত-বন্দেগিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রনীতির দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ছিলেন সোচ্চার। ইসলামের স্বর্ণযুগে ইমাম আবু হানিফা (রহ.) খলিফা মনসুরের বিচারপতির পদ প্রত্যাখ্যান করেন। শাসকদের দুর্নীতিপূর্ণ সিদ্ধান্তে সায় না দেওয়ায় তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত কারাগারেই তিনি ইন্তেকাল করেন। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) খলিফার চাপ উপেক্ষা করে সত্যের ওপর অটল ছিলেন এবং কঠোর নির্যাতন সত্ত্বেও বাতিলের সঙ্গে আপস করেননি। একইভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রহ.) দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে সমাজসংস্কারের ডাক দেন। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, হুসাইন আহমদ মাদানি ও শিবলি নোমানি (রহ.) ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেন এবং জাতিকে নৈতিকতার শিক্ষা দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখেন।
বর্তমান সময়ের আলেম সমাজেরও সমাজসংস্কারে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। এই ক্ষেত্রে তাদের করণীয় হলো:
একটি আদর্শ রাষ্ট্র কেবল বড় বড় অবকাঠামোর ওপর টিকে থাকে না, বরং নৈতিক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই আমাদের নৈতিক উন্নতির দিকে সব সময় নজর রাখতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে ওলামায়ে কেরামের জ্ঞান, চিন্তা ও নেতৃত্ব আজ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। তাঁরা যদি সমাজের প্রতিটি স্তরে নৈতিকতার আলো ছড়িয়ে দেন, তাহলে ইনশা আল্লাহ আমরা একদিন গড়ে তুলতে পারব দুর্নীতিমুক্ত এক কল্যাণরাষ্ট্র। আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
একটি জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো দুর্নীতি। এই ব্যাধি কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতিই বয়ে আনে না, বরং একটি রাষ্ট্রের নৈতিক কাঠামোকেও ভেতর থেকে ভেঙে দেয়। ইসলাম এমন এক পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যেখানে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র—সর্বস্তরে ন্যায়ের চর্চা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কোরআন ও হাদিসে দুর্নীতির বিধান
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে দুর্নীতিকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না এবং বিচারকের কাছে তা উপস্থাপন কোরো না, যাতে অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ ভক্ষণ করতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.) এই বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘ঘুষদাতা ও ঘুষ গ্রহণকারী উভয়েই জাহান্নামের আগুনে থাকবে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৩৫৮০)। তিনি আরও বলেন, ‘আমার কন্যা ফাতিমাও যদি চুরি করত, আমি তার হাত কেটে দিতাম।’ (সহিহ বুখারি: ৬৭৮৮)। আরেকটি হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৮৯৩)।
এ আয়াত ও হাদিসগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়—দুর্নীতি কেবল একটি দুনিয়াবি অন্যায় নয়, বরং পরকালে এর জন্য ভয়াবহ শাস্তিরও ব্যবস্থা রয়েছে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে আলেম সমাজের করণীয়
ইসলামের ইতিহাসে ওলামায়ে কেরাম শুধু ইবাদত-বন্দেগিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রনীতির দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ছিলেন সোচ্চার। ইসলামের স্বর্ণযুগে ইমাম আবু হানিফা (রহ.) খলিফা মনসুরের বিচারপতির পদ প্রত্যাখ্যান করেন। শাসকদের দুর্নীতিপূর্ণ সিদ্ধান্তে সায় না দেওয়ায় তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত কারাগারেই তিনি ইন্তেকাল করেন। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) খলিফার চাপ উপেক্ষা করে সত্যের ওপর অটল ছিলেন এবং কঠোর নির্যাতন সত্ত্বেও বাতিলের সঙ্গে আপস করেননি। একইভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রহ.) দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে সমাজসংস্কারের ডাক দেন। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, হুসাইন আহমদ মাদানি ও শিবলি নোমানি (রহ.) ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেন এবং জাতিকে নৈতিকতার শিক্ষা দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখেন।
বর্তমান সময়ের আলেম সমাজেরও সমাজসংস্কারে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। এই ক্ষেত্রে তাদের করণীয় হলো:
একটি আদর্শ রাষ্ট্র কেবল বড় বড় অবকাঠামোর ওপর টিকে থাকে না, বরং নৈতিক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই আমাদের নৈতিক উন্নতির দিকে সব সময় নজর রাখতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে ওলামায়ে কেরামের জ্ঞান, চিন্তা ও নেতৃত্ব আজ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। তাঁরা যদি সমাজের প্রতিটি স্তরে নৈতিকতার আলো ছড়িয়ে দেন, তাহলে ইনশা আল্লাহ আমরা একদিন গড়ে তুলতে পারব দুর্নীতিমুক্ত এক কল্যাণরাষ্ট্র। আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
ইসলামি ইতিহাসে জুমার দিনকে বলা হয় ‘সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন’। হাদিসে এসেছে, এ দিনেই হজরত আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এ দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন এবং এ দিনেই পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আবার কিয়ামতও সংঘটিত হবে জুমার দিনেই। তাই এ দিনের মাহাত্ম্য কেবল ইবাদতকেন্দ্রিক নয়, বরং মানবজাতির সৃষ্টিজীবনের এক...
৫ ঘণ্টা আগেপ্রকৃতি ও পরিবেশ মহান আল্লাহর অপার দান। মাটি, পানি, গাছপালা, পশুপাখি, পোকামাকড়—সৃষ্টিকুলের প্রতিটি উপাদানই নিজস্ব কর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এই সুশৃঙ্খল সহাবস্থান মহান রাব্বুল আলামিনের এক অসাধারণ শিল্পকর্ম। আল্লাহর সৃষ্টিতে রয়েছে কত জ্ঞান ও শিক্ষা, যা আমরা অনেক সময় দেখেও দেখি ন
৭ ঘণ্টা আগেদামেস্কের বুকে শায়খ মুহিউদ্দিন মহল্লায়, ইয়াজিদ নদীর শান্ত ধারার পাশে দাঁড়িয়ে আছে এক ঐতিহাসিক নিদর্শন—শায়খ মুহিউদ্দিন ইবনুল আরাবি জামে মসজিদ। এর প্রতিটি ইট-পাথরে মিশে আছে শত শত বছরের ইতিহাস, আধ্যাত্মিকতা আর শিল্পের নৈপুণ্য।
৭ ঘণ্টা আগেআসসালামু আলাইকুম। সুগন্ধি ব্যবহার করাকে ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে। আমরা জানি, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও সুগন্ধি খুব পছন্দ করতেন। কিন্তু বর্তমান বাজারের বেশির ভাগ পারফিউম বা বডি স্প্রেতে অ্যালকোহল থাকে। আমার প্রশ্ন, এ ধরনের অ্যালকোহলযুক্ত পারফিউম ব্যবহার করা কি শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ হবে? এই সুগন্ধিগুলো
৭ ঘণ্টা আগে