আমজাদ ইউনুস
সোলায়মান (আ.)–এর পুত্র দাউদ (আ.)। পিতার মতো তিনিও নবী ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে নবুয়ত, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও তাঁর পিতার রাজত্বের স্থলাভিষিক্ত করেছেন। পাশাপাশি তাঁকে এমন কিছু নিয়ামত দান করা হয়েছিল, যা অন্য কোনো নবীকে দান করা হয়নি।
মহান আল্লাহ তাআলা নবী সোলায়মান (আ.)–কে গভীর প্রজ্ঞা, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং সুবিচারের যোগ্যতা দান করেছিলেন। যখন তাঁর সামনে বিভিন্ন মামলা উপস্থাপিত হতো, তখন তিনি সঠিক রায় দিতেন। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি (দাউদ ও সোলায়মান) উভয়কেই বিচারশক্তি ও জ্ঞান দিয়েছিলাম।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৭৯)
রাসুল (সা.) একদিন সাহাবিদের একটি ঘটনা বলেছিলেন। ঘটনাটি তাওরাতেও বর্ণিত হয়েছে। তবে তাওরাতের বর্ণনাটিতে বিকৃত ও অসত্য তথ্য রয়েছে। রাসুল (সা.)–এর বর্ণিত ঘটনাটিই সত্য ও বাস্তব ছিল। সেই ঘটনায় সোলায়মান (আ.)–এর বিচারকার্য পরিচালনার নিপুণতা ও দক্ষতা ফুটে ওঠে। নিচে হাদিসের আলোকে ঘটনাটি তুলে ধরা হলো।
রাসুল (সা.) বলেন, দুজন নারী ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে দুটি সন্তানও ছিল। হঠাৎ একটি বাঘ এসে তাঁদের একজনের ছেলে নিয়ে গেল। এক নারী বললেন, ‘তোমার ছেলেটিকে বাঘ নিয়ে গেছে।’ অন্য নারীটি বললেন, ‘না, বাঘ তোমার ছেলেকেই নিয়ে গেছে।’ এরপর উভয় নারীই দাউদ (আ.)–এর কাছে এ বিরোধ মীমাংসার জন্য বিচারপ্রার্থী হলেন। তখন তিনি ছেলেটির বিষয়ে বয়স্ক নারীটির পক্ষে রায় দিলেন। এরপর তাঁরা উভয়ে বেরিয়ে দাউদ (আ.)–এর পুত্র সোলায়মান (আ.)–এর পাশ দিয়ে যেতে লাগলেন এবং দুজনে তাঁকে ব্যাপারটি জানালেন। তখন তিনি লোকজনকে বললেন, ‘তোমরা আমার কাছে একটি ছুরি নিয়ে আসো। আমি ছেলেটিকে দু–টুকরা করে তাদের দুজনের মধ্যে ভাগ করে দেই। এ কথা শুনে অল্প বয়স্ক নারীটি বলে উঠলেন, তা করবেন না, আল্লাহ আপনার ওপর রহম করুন, ছেলেটি তারই। তখন তিনি ছেলেটি সম্পর্কে অল্পবয়স্ক নারীটির অনুকূলে রায় দিলেন। (সহিহ্ বুখারি, হাদিস: ৩৪২৭)
হাদিস থেকে শিক্ষা
বিচারকের কৌশল গ্রহণ করার ক্ষমতা: বিচারকের জন্য প্রতিপক্ষের অবস্থান বুঝে যেকোনো কৌশল গ্রহণের বৈধতা রয়েছে। প্রতিপক্ষের প্রকৃত অভিপ্রায় বুঝতে তিনি কিছু কৌশল গ্রহণ করতে পারবেন। যেমনটি এ ঘটনায় সোলায়মান (আ.) গ্রহণ করেছিলেন।
বিচারকের রায় বাতিলের ক্ষমতা: একজন বিচারক অন্য বিচারকের রায় বাতিল করতে পারেন। হাদিস বিশারদগণ এ হাদিস থেকে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, একজন বিচারক অন্য বিচারকের রায় বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন। তবে এর জন্য পরবর্তী বিচারকের জ্ঞান ও দক্ষতা বেশি হতে হবে।
প্রকৃত মায়ের ভালোবাসা: এ ঘটনায় একজন প্রকৃত মায়ের ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের সর্বোচ্চ উদাহরণ ফুটে ওঠে। সোলায়মান (আ.)-এর রায়ের ঘটনায় প্রকৃত মা সন্তানের প্রাণ রক্ষায় নিজের দাবি ছেড়ে দেন। সত্যিকারের মমত্ববোধ সকল স্বার্থপরতার ঊর্ধ্বে। একজন সত্যিকারের মা সন্তানের কল্যাণই কামনা করেন।
নবীদের বিচারকার্যের নীতি: নবীগণ ইজতিহাদের ভিত্তিতে বিচার করতেন। তাঁদের সামনে উপস্থাপিত বিষয়গুলো নিজেদের ইজতিহাদ (ব্যক্তিগত যুক্তি) অনুযায়ী বিচার করতেন। নবী দাউদ (আ.) ও সোলায়মান (আ.)-এর রায়ের মধ্যে পার্থক্য ছিল। যদিও তাদের সিদ্ধান্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে অহির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছিল।
জ্ঞান অর্জনের বয়স নেই: ধর্মীয় ও যেকোনো প্রকারের জ্ঞান শুধুমাত্র বয়সের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। কখনো কখনো কম বয়সী ব্যক্তি একজন প্রবীণ ব্যক্তির চেয়ে গভীর জ্ঞান রাখেন। যেমন, দাউদ (আ.) ও পুত্র সোলায়মান (আ.)-এর ক্ষেত্রে দেখা যায়। তেমনিভাবে একবার রাসুল (সা.) একটি প্রশ্ন করেছিলেন, যার সঠিক উত্তর আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) দিয়েছিলেন। অথচ তখন তিনি বয়সে ছোট ছিলেন এবং সেই বৈঠকে আবু বকর ও ওমর (রা.)-এর মতো সম্মানিত ও প্রবীণ সাহাবি উপস্থিত ছিলেন।
সোলায়মান (আ.)–এর পুত্র দাউদ (আ.)। পিতার মতো তিনিও নবী ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে নবুয়ত, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও তাঁর পিতার রাজত্বের স্থলাভিষিক্ত করেছেন। পাশাপাশি তাঁকে এমন কিছু নিয়ামত দান করা হয়েছিল, যা অন্য কোনো নবীকে দান করা হয়নি।
মহান আল্লাহ তাআলা নবী সোলায়মান (আ.)–কে গভীর প্রজ্ঞা, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং সুবিচারের যোগ্যতা দান করেছিলেন। যখন তাঁর সামনে বিভিন্ন মামলা উপস্থাপিত হতো, তখন তিনি সঠিক রায় দিতেন। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি (দাউদ ও সোলায়মান) উভয়কেই বিচারশক্তি ও জ্ঞান দিয়েছিলাম।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৭৯)
রাসুল (সা.) একদিন সাহাবিদের একটি ঘটনা বলেছিলেন। ঘটনাটি তাওরাতেও বর্ণিত হয়েছে। তবে তাওরাতের বর্ণনাটিতে বিকৃত ও অসত্য তথ্য রয়েছে। রাসুল (সা.)–এর বর্ণিত ঘটনাটিই সত্য ও বাস্তব ছিল। সেই ঘটনায় সোলায়মান (আ.)–এর বিচারকার্য পরিচালনার নিপুণতা ও দক্ষতা ফুটে ওঠে। নিচে হাদিসের আলোকে ঘটনাটি তুলে ধরা হলো।
রাসুল (সা.) বলেন, দুজন নারী ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে দুটি সন্তানও ছিল। হঠাৎ একটি বাঘ এসে তাঁদের একজনের ছেলে নিয়ে গেল। এক নারী বললেন, ‘তোমার ছেলেটিকে বাঘ নিয়ে গেছে।’ অন্য নারীটি বললেন, ‘না, বাঘ তোমার ছেলেকেই নিয়ে গেছে।’ এরপর উভয় নারীই দাউদ (আ.)–এর কাছে এ বিরোধ মীমাংসার জন্য বিচারপ্রার্থী হলেন। তখন তিনি ছেলেটির বিষয়ে বয়স্ক নারীটির পক্ষে রায় দিলেন। এরপর তাঁরা উভয়ে বেরিয়ে দাউদ (আ.)–এর পুত্র সোলায়মান (আ.)–এর পাশ দিয়ে যেতে লাগলেন এবং দুজনে তাঁকে ব্যাপারটি জানালেন। তখন তিনি লোকজনকে বললেন, ‘তোমরা আমার কাছে একটি ছুরি নিয়ে আসো। আমি ছেলেটিকে দু–টুকরা করে তাদের দুজনের মধ্যে ভাগ করে দেই। এ কথা শুনে অল্প বয়স্ক নারীটি বলে উঠলেন, তা করবেন না, আল্লাহ আপনার ওপর রহম করুন, ছেলেটি তারই। তখন তিনি ছেলেটি সম্পর্কে অল্পবয়স্ক নারীটির অনুকূলে রায় দিলেন। (সহিহ্ বুখারি, হাদিস: ৩৪২৭)
হাদিস থেকে শিক্ষা
বিচারকের কৌশল গ্রহণ করার ক্ষমতা: বিচারকের জন্য প্রতিপক্ষের অবস্থান বুঝে যেকোনো কৌশল গ্রহণের বৈধতা রয়েছে। প্রতিপক্ষের প্রকৃত অভিপ্রায় বুঝতে তিনি কিছু কৌশল গ্রহণ করতে পারবেন। যেমনটি এ ঘটনায় সোলায়মান (আ.) গ্রহণ করেছিলেন।
বিচারকের রায় বাতিলের ক্ষমতা: একজন বিচারক অন্য বিচারকের রায় বাতিল করতে পারেন। হাদিস বিশারদগণ এ হাদিস থেকে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, একজন বিচারক অন্য বিচারকের রায় বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন। তবে এর জন্য পরবর্তী বিচারকের জ্ঞান ও দক্ষতা বেশি হতে হবে।
প্রকৃত মায়ের ভালোবাসা: এ ঘটনায় একজন প্রকৃত মায়ের ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের সর্বোচ্চ উদাহরণ ফুটে ওঠে। সোলায়মান (আ.)-এর রায়ের ঘটনায় প্রকৃত মা সন্তানের প্রাণ রক্ষায় নিজের দাবি ছেড়ে দেন। সত্যিকারের মমত্ববোধ সকল স্বার্থপরতার ঊর্ধ্বে। একজন সত্যিকারের মা সন্তানের কল্যাণই কামনা করেন।
নবীদের বিচারকার্যের নীতি: নবীগণ ইজতিহাদের ভিত্তিতে বিচার করতেন। তাঁদের সামনে উপস্থাপিত বিষয়গুলো নিজেদের ইজতিহাদ (ব্যক্তিগত যুক্তি) অনুযায়ী বিচার করতেন। নবী দাউদ (আ.) ও সোলায়মান (আ.)-এর রায়ের মধ্যে পার্থক্য ছিল। যদিও তাদের সিদ্ধান্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে অহির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছিল।
জ্ঞান অর্জনের বয়স নেই: ধর্মীয় ও যেকোনো প্রকারের জ্ঞান শুধুমাত্র বয়সের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। কখনো কখনো কম বয়সী ব্যক্তি একজন প্রবীণ ব্যক্তির চেয়ে গভীর জ্ঞান রাখেন। যেমন, দাউদ (আ.) ও পুত্র সোলায়মান (আ.)-এর ক্ষেত্রে দেখা যায়। তেমনিভাবে একবার রাসুল (সা.) একটি প্রশ্ন করেছিলেন, যার সঠিক উত্তর আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) দিয়েছিলেন। অথচ তখন তিনি বয়সে ছোট ছিলেন এবং সেই বৈঠকে আবু বকর ও ওমর (রা.)-এর মতো সম্মানিত ও প্রবীণ সাহাবি উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষমতা বা রাজত্ব পেলে মানুষ আল্লাহ ভোলা হয়ে যায়। হয়ে ওঠে বেপরোয়া ও অহংকারী। দুর্বলের ওপর অবাধে চালায় অত্যাচার ও নিপীড়ন। আসলে ক্ষমতাসীনদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এটা একটা বড় পরীক্ষা। ক্ষমতা পেয়ে বান্দা কেমন আচরণ করে, সেটাই দেখতে চান আল্লাহ তাআলা। তবে সবাই তো এক না।
৮ ঘণ্টা আগেআল্লাহ তাআলার অফুরন্ত নেয়ামতের অবারিত ঠিকানা জান্নাত। জান্নাতকে পার্থিব নেয়ামত দ্বারা আল্লাহ তাআলা সাজিয়েছেন—যা কোনো চোখ চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং কোনো ব্যক্তির অন্তর তা কল্পনাও করতে পারেনি।
১০ ঘণ্টা আগেমহান আল্লাহ আমাদের একমাত্র রিজিকদাতা। সমগ্র সৃষ্টিকুলের রিজিকের ব্যবস্থা তিনিই করে থাকেন। তাই রিজিকের সন্ধানে দিশেহারা নয়, বরং আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকা জরুরি। কোরআন ও হাদিসের আলোকে ৪টি আমল করলে রিজিক বৃদ্ধি হবে বলে আশা করা যায়।
১২ ঘণ্টা আগেইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১৯ ঘণ্টা আগে