Ajker Patrika

রবিউস সানির তৃতীয় জুমা: আত্মার শান্তি ও নেকির দিন

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ 
পবিত্র কোরআন। ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র কোরআন। ছবি: সংগৃহীত

ইসলামি পঞ্জিকা অনুযায়ী রবিউস সানি মাসের তৃতীয় জুমা মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। জুমা আমাদের জন্য সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। আল্লাহ তাআলা কোরআনে আমাদের স্মরণ করিয়েছেন, ‘হে ইমানদারগণ, যখন জুমার দিন নামাজের জন্য ডাক পাও, তখন ব্যবসা বন্ধ করো এবং আল্লাহর স্মরণে চলে যাও। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম।’ (সুরা জুমা: ৯)

এই আয়াত আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে জুমার দিনে নামাজ, দোয়া এবং আল্লাহর স্মরণে মনোযোগী হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত রবিউস সানির তৃতীয় জুমা; এটি আমাদের আত্মার প্রশান্তি ও নেকি অর্জনের একটি বিশেষ সুযোগ।

নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনে দোয়া গ্রহণযোগ্য হয়।’ (জামে তিরমিজি)

এই হাদিস আমাদের জানায়, এই দিনে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য দোয়া ও ইবাদত বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু নামাজ নয়, সদকা, খয়রাত এবং দরিদ্রদের সহায়তা—সবই এই দিনে আল্লাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

রবিউস সানির তৃতীয় জুমা শুধু নামাজের দিন নয়; এটি আত্মার পরিশুদ্ধি ও কোরআন পাঠের দিন। নবী করিম (সা.)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী, এই দিনে বেশি করে নামাজ, দোয়া ও নেক আমল করা উচিত। দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিদের সাহায্য, পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করা এবং প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

হাদিসে এসেছে, সদকা দিয়ে দুনিয়ার দুঃখ দূর হয় এবং কবরের অন্ধকার আলোকিত হয়। (বুখারি)। এই হাদিস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, নেকি শুধু ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক দায়বোধও জাগিয়ে তোলে।

জুমার দিনে মসজিদগুলোয় মুসলিমরা একত্র হয়। ইমাম খুতবা দিয়ে নৈতিক ও আত্মিক উন্নতির দিশা দেখান। নবী করিম (সা.) বলেছেন, একত্র হয়ে নামাজ আদায় করলে আল্লাহর দয়া বেশি হয়। (মুসনাদে আহমাদ)। একত্র হয়ে নামাজ আদায় করা শুধু আধ্যাত্মিক নয়, সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতির প্রতীকও।

রবিউস সানির তৃতীয় জুমা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের ব্যস্ততা ও দৈনন্দিন কাজের মধ্যে ধ্যান ও আত্মসংযম কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে ইবাদত ও দোয়া হৃদয়কে শান্তি দেয়, মানসিক চাপ কমায় এবং আল্লাহর প্রতি ভক্তি বৃদ্ধি করে।

পরিশেষে সার্বিকভাবে রবিউস সানি বা তৃতীয় জুমা মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক শিক্ষা ও নৈতিক অনুপ্রেরণার দিন। এটি শুধু নামাজ ও দোয়ার জন্য নয়, বরং সহমর্মিতা, সামাজিক দায়িত্ববোধ, ধৈর্য এবং ন্যায়পরায়ণতার পাঠ শেখার এক অনন্য সুযোগ। এই দিনে মুসলিমদের উৎসাহিত করা হয়, যেন তারা ইবাদত, দোয়া, সদকা ও নেক কাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে। রবিউস সানি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আল্লাহর প্রতি ভক্তি ও সৎ কর্মের মাধ্যমে পূর্ণ করা যায়। এমন ভক্তি ও নৈতিকতা ব্যক্তিজীবনের শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে সাহায্য করে এবং সমাজকে উন্নতির পথে নিয়ে যায়।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ফোন বন্ধ পেলে ধরে নিবা মারা গেছি’, স্ত্রীকে বলেছিলেন ইউক্রেনে নিহত রাজবাড়ীর নজরুল

শাহবাগে গত রাতে ফুটপাত থেকে নারীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

নার্সিং হোমে বয়স্ক পুরুষদের ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতে মিনি স্কার্ট পরে তরুণীর নাচ

ফিলিস্তিনিদের বের করে দেওয়া হবে না, বরং উল্টোটা ঘটবে: ট্রাম্প

যে কারণে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ইসরায়েলের দুজন প্রধানমন্ত্রী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত