ফয়জুল্লাহ রিয়াদ

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।
এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।
হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা
৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।
নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।
মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান
নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।
হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।
মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।
এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।
হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা
৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।
নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।
মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান
নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।
হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।
মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
ফয়জুল্লাহ রিয়াদ

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।
এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।
হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা
৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।
নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।
মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান
নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।
হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।
মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা। জীবন্ত মেয়েকে পুঁতে ফেলতে একটুও বিচলিত হয় না পাষণ্ড বাবার হৃদয়। মানুষের তৈরি প্রতিমা প্রভুত্বের আসনে সমাসীন। পায়ে তার মাথা ঠুকছে সবাই। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। সময়ের আবর্তে তা রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। সংঘাত চলে বছরের পর বছর। যুগটাকে বলা হয়—আইয়ামে জাহেলিয়া—মূর্খতা ও বর্বরতার যুগ।
এহেন পরিস্থিতিতে ধরায় এলেন এক মহামানব। মা আমেনার কোল আলোকিত করে। শান্তির পতাকা হাতে। সুখের বার্তা নিয়ে। হৃদয়টা তাঁর মানবতায় পরিপূর্ণ। সবার সুখে হাসেন। সবার দুঃখে পাশেও থাকেন। দুঃখ-সুখে সবার সমান অংশীদার তিনি। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন অকুণ্ঠ। দুর্বলদের পাশে দাঁড়ান। সদা সত্য কথা বলেন। আমানতের খেয়ানত করেন না। অঙ্গীকার পূরণ করেন। লোকজন তাঁকে একনামে চেনে। ‘আল আমিন’ খেতাবে ভূষিত করে। পবিত্র কোরআন তাঁকে ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ উপাধিতে আখ্যায়িত করেছে। (সুরা আম্বিয়া: ১০৭) নবী করিম (সা.)-এর জীবনের ধাপে ধাপে, প্রতিটি পদক্ষেপে, পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শান্তির বার্তা। সুখময় সমাজ গঠনের দিকনির্দেশনা। বিশ্বমানবতার অনুপম আদর্শ তিনি শান্তির আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নয়। অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাঁর সফলতম অভিযান—এ শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত নবী-জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল শান্তির জন্য। মানবজাতির কল্যাণে। তিনি যা করেছেন, যা বলেছেন, তার সব কর্মকাণ্ডেই বিশ্বমানবতার মঙ্গল নিহিত।
হিলফুল ফুজুল শান্তি সংঘের সূচনা
৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। মক্কাবাসীর বার্ষিক আনন্দ উৎসব উকাজ মেলা চলছে। মেলাকে কেন্দ্র করেই দুই গোত্রের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাস তাকে ‘হারবুল ফুজ্জার’ (অন্যায় সমর) নামে অভিহিত করেছে। নবীজি (সা.) তখন বালক। চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়স। তিনি ভাবতে থাকেন কীভাবে এই সংঘাত রোধ করা যায়! চলমান এ বিশৃঙ্খলার সমাধান বের করতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ভেবেচিন্তে তিনি গ্রহণ করলেন যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। মক্কার যুবকদের একত্র করলেন। গঠন করলেন পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম সংগঠন—হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠনের বিশেষ কয়েকটি নীতিমালা ছিল এমন—এক. দেশজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। দুই. চলমান এই যুদ্ধ (হারবুল ফুজ্জার) বন্ধ করা। তিন. সমাজের অন্যায় অবিচার রোধ করা। চার. অসহায়, দুর্বল ও এতিমদের সাহায্য করা। পাঁচ. বণিকদের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। ছয়. সর্বোপরি সব ধরনের অন্যায় অবিচার রোধ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো।
নবীজি (সা.) পরিকল্পনায় পরিপূর্ণ সফল হয়েছিলেন। বন্ধ হয়েছিল হারবুল ফুজ্জার নামক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। বিশেষ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত হলেও এ শান্তি সংঘের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৫০ বছর।
মদিনা সনদ এক আদর্শ রাষ্ট্রীয় সংবিধান
নবী করিম (সা.) মদিনায় হিজরতের পর সেখানকার বিবদমান দুই গোত্র, আউস ও খাজরাজ এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। ৪৭ ধারার এই সনদে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এর উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো ছিল: সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে, মদিনার ওপর যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ সবাই মিলে প্রতিহত করবে এবং ব্যক্তিগত অপরাধের জন্য কোনো গোত্রকে দায়ী করা হবে না। এই সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান, যা ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।
হুদাইবিয়ার সন্ধি আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিজয়
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবীজি (সা.)-এর দূরদর্শিতার এক অনন্য উদাহরণ। ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলমানরা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার কাছে গেলে কুরাইশরা তাদের বাধা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অসম কিছু শর্ত মেনে নিয়ে একটি সন্ধিচুক্তি করেন। সাহাবিরা এই সন্ধি নিয়ে শঙ্কিত হলেও হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকে, যা ইসলাম প্রচারের পথ খুলে দেয়। পবিত্র কোরআনে এই আপাত পরাজয়কে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই সন্ধিই মক্কা বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।
মক্কা বিজয় প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষমা
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গের ফলে নবীজি ১০ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। দীর্ঘদিনের শত্রুদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি রক্তপাতহীন বিজয়ের পথ বেছে নেন। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সেখানকার সকল বাসিন্দার জন্য সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেন। যে লোকজন তাঁকে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিল, তাদের প্রতি এমন মহানুভবতা ও ক্ষমা ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। এই শান্তিপূর্ণ বিজয় প্রমাণ করে, নবী করিম (সা.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিশোধ নয়, বরং শান্তি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এই পদক্ষেপগুলো প্রমাণ করে যে তিনি কেবল একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক ও শান্তির অগ্রদূত ছিলেন। বর্তমান বিশ্বের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা গেলে শান্তি ও সম্প্রীতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ্ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

আবু লাহাব ছিল ইসলামের ঘোর বিরোধী, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম প্রধান শত্রু এবং মক্কার বিখ্যাত কাফিরদের মধ্যে একজন। ইসলাম প্রচারে বাধা দেওয়া, জুলুম করা, অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানোর কারণে বিশ্বের মুসলিমেরা তাকে ঘৃণার চোখে দেখে।
৫ ঘণ্টা আগে
একজন মুমিনের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও সবচেয়ে বড় সফলতা হলো আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়া। যদি আল্লাহ কাউকে ভালোবাসেন, তবে তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সব কল্যাণ ও সফলতা সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, আসমান ও জমিনের সব মাখলুকের মাঝেও তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে দেন।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতকাল ইবাদতে আগ্রহী মুমিনের জন্য বিশেষ উপহার। হাদিসের ভাষায় একে বলা হয়েছে ‘মুমিনের বসন্তকাল’। বসন্তকালে যেমন প্রকৃতি সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, তেমনি শীতকাল মুমিন বান্দাকে ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মিক উন্নতি সাধনের এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

আবু লাহাব ছিল ইসলামের ঘোর বিরোধী, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম প্রধান শত্রু এবং মক্কার বিখ্যাত কাফিরদের মধ্যে একজন। ইসলাম প্রচারে বাধা দেওয়া, জুলুম করা, অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানোর কারণে বিশ্বের মুসলিমেরা তাকে ঘৃণার চোখে দেখে। কোরআনুল কারিমে তার ধ্বংস ও পরিণতির কথা উল্লেখ করে সুরা লাহাব নাজিল হয়।
নবী (সা.) যখন মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিতেন, আবু লাহাব তখন তাঁকে জাদুকর বলে অপবাদ দিত এবং মানুষদের দূরে সরিয়ে রাখত। প্রিয় নবী (সা.) ইসলামের পথে আনার জন্য অনেক চেষ্টা করলেও সে শত্রুতা ও বিরোধিতা চালিয়ে যেত। একবার তিনি (সা.) যখন বাজারে মানুষকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার মাধ্যমে সফলতা অর্জনের আহ্বান জানাচ্ছিলেন, তখন আবু লাহাব পেছন থেকে পাথর নিক্ষেপ করে তাঁর শরীর মোবারক রক্তাক্ত করে দেয় এবং মানুষকে তাঁকে অনুসরণ করতে বারণ করে।
আবু লাহাবের নির্মম পরিণতি
আবু লাহাব ছিল মক্কার চারজন সম্পদশালী লোকের মধ্যে একজন, কিন্তু সে ছিল অত্যন্ত কৃপণ। ধনসম্পদ জমা করত, কিন্তু কোনো দান-খয়রাত করত না। বদর যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় এবং কাফিরদের পরাজয়ের পর সে হতাশ হয়ে পড়ে এবং বসন্ত রোগে (একধরনের মারাত্মক সংক্রামক রোগ) আক্রান্ত হয়। তার আপন স্ত্রী-সন্তানেরা সংক্রমণের ভয়ে তাকে ঘরে একা ফেলে চলে যায়।
ঘরের মধ্যে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরানোর একপর্যায়ে আবু লাহাব মারা যায়। তার মৃতদেহ একা ঘরের মধ্যে পড়ে থাকায় চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা অতিষ্ঠ হয়ে তার এক ছেলের কাছে অভিযোগ করলে, সে কিছু লোক ভাড়া করে। তারা একটি গর্ত খনন করে লাঠি দিয়ে লাশটি সেখানে ফেলে মাটি চাপা দেয় এবং গর্তের মুখ পাথর দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘ধ্বংস হোক আবু লাহাবের হস্তদ্বয় এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধনসম্পদ ও তার উপার্জন তার কোনো উপকারে আসবে না।’ (সুরা লাহাব: ১-২)
আবু লাহাবের স্ত্রীর পরিণতি
আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিলও স্বামীর মতোই খারাপ স্বভাবের এবং নবীজির দুশমন ছিল। সে রাতের আঁধারে নবীজির ঘরের সামনে কাঁটা বিছিয়ে কষ্ট দিত। এ ছাড়া সে মহিলাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে এবং অন্যের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলত। একদিন সে কাঠের বোঝা বহন করার পর ক্লান্ত হয়ে পাথরের ওপর বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। সেই সময় একজন ফেরেশতা পেছন থেকে রশি টেনে ধরলে সে পড়ে যায় এবং সে অবস্থাতেই তার মৃত্যু হয়।
আল্লাহ বলেন, ‘অচিরেই সে শিখাবিশিষ্ট জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করবে এবং তার স্ত্রীও—যে ইন্ধন বহন করে। তার গলদেশে খেজুর বাকলের রজ্জু রয়েছে।’ (সুরা লাহাব: ৩-৫)
নবী (সা.)-কে কষ্ট দেওয়ার কারণে আবু লাহাব ও তার স্ত্রী চিরস্থায়ী জাহান্নামি হয়েছে। তারা জাহান্নামের তলদেশে লেলিহান শিখাযুক্ত আগুনে জ্বলবে।
লেখক: মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহী, ইসলামবিষয়ক গবেষক

আবু লাহাব ছিল ইসলামের ঘোর বিরোধী, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম প্রধান শত্রু এবং মক্কার বিখ্যাত কাফিরদের মধ্যে একজন। ইসলাম প্রচারে বাধা দেওয়া, জুলুম করা, অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানোর কারণে বিশ্বের মুসলিমেরা তাকে ঘৃণার চোখে দেখে। কোরআনুল কারিমে তার ধ্বংস ও পরিণতির কথা উল্লেখ করে সুরা লাহাব নাজিল হয়।
নবী (সা.) যখন মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিতেন, আবু লাহাব তখন তাঁকে জাদুকর বলে অপবাদ দিত এবং মানুষদের দূরে সরিয়ে রাখত। প্রিয় নবী (সা.) ইসলামের পথে আনার জন্য অনেক চেষ্টা করলেও সে শত্রুতা ও বিরোধিতা চালিয়ে যেত। একবার তিনি (সা.) যখন বাজারে মানুষকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার মাধ্যমে সফলতা অর্জনের আহ্বান জানাচ্ছিলেন, তখন আবু লাহাব পেছন থেকে পাথর নিক্ষেপ করে তাঁর শরীর মোবারক রক্তাক্ত করে দেয় এবং মানুষকে তাঁকে অনুসরণ করতে বারণ করে।
আবু লাহাবের নির্মম পরিণতি
আবু লাহাব ছিল মক্কার চারজন সম্পদশালী লোকের মধ্যে একজন, কিন্তু সে ছিল অত্যন্ত কৃপণ। ধনসম্পদ জমা করত, কিন্তু কোনো দান-খয়রাত করত না। বদর যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় এবং কাফিরদের পরাজয়ের পর সে হতাশ হয়ে পড়ে এবং বসন্ত রোগে (একধরনের মারাত্মক সংক্রামক রোগ) আক্রান্ত হয়। তার আপন স্ত্রী-সন্তানেরা সংক্রমণের ভয়ে তাকে ঘরে একা ফেলে চলে যায়।
ঘরের মধ্যে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরানোর একপর্যায়ে আবু লাহাব মারা যায়। তার মৃতদেহ একা ঘরের মধ্যে পড়ে থাকায় চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা অতিষ্ঠ হয়ে তার এক ছেলের কাছে অভিযোগ করলে, সে কিছু লোক ভাড়া করে। তারা একটি গর্ত খনন করে লাঠি দিয়ে লাশটি সেখানে ফেলে মাটি চাপা দেয় এবং গর্তের মুখ পাথর দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘ধ্বংস হোক আবু লাহাবের হস্তদ্বয় এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধনসম্পদ ও তার উপার্জন তার কোনো উপকারে আসবে না।’ (সুরা লাহাব: ১-২)
আবু লাহাবের স্ত্রীর পরিণতি
আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিলও স্বামীর মতোই খারাপ স্বভাবের এবং নবীজির দুশমন ছিল। সে রাতের আঁধারে নবীজির ঘরের সামনে কাঁটা বিছিয়ে কষ্ট দিত। এ ছাড়া সে মহিলাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে এবং অন্যের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলত। একদিন সে কাঠের বোঝা বহন করার পর ক্লান্ত হয়ে পাথরের ওপর বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। সেই সময় একজন ফেরেশতা পেছন থেকে রশি টেনে ধরলে সে পড়ে যায় এবং সে অবস্থাতেই তার মৃত্যু হয়।
আল্লাহ বলেন, ‘অচিরেই সে শিখাবিশিষ্ট জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করবে এবং তার স্ত্রীও—যে ইন্ধন বহন করে। তার গলদেশে খেজুর বাকলের রজ্জু রয়েছে।’ (সুরা লাহাব: ৩-৫)
নবী (সা.)-কে কষ্ট দেওয়ার কারণে আবু লাহাব ও তার স্ত্রী চিরস্থায়ী জাহান্নামি হয়েছে। তারা জাহান্নামের তলদেশে লেলিহান শিখাযুক্ত আগুনে জ্বলবে।
লেখক: মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহী, ইসলামবিষয়ক গবেষক

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২৯ আগস্ট ২০২৫
একজন মুমিনের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও সবচেয়ে বড় সফলতা হলো আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়া। যদি আল্লাহ কাউকে ভালোবাসেন, তবে তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সব কল্যাণ ও সফলতা সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, আসমান ও জমিনের সব মাখলুকের মাঝেও তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে দেন।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতকাল ইবাদতে আগ্রহী মুমিনের জন্য বিশেষ উপহার। হাদিসের ভাষায় একে বলা হয়েছে ‘মুমিনের বসন্তকাল’। বসন্তকালে যেমন প্রকৃতি সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, তেমনি শীতকাল মুমিন বান্দাকে ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মিক উন্নতি সাধনের এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২০ ঘণ্টা আগেমুফতি আইয়ুব নাদীম

একজন মুমিনের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও সবচেয়ে বড় সফলতা হলো আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়া। যদি আল্লাহ কাউকে ভালোবাসেন, তবে তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সব কল্যাণ ও সফলতা সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, আসমান ও জমিনের সব মাখলুকের মাঝেও তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে দেন।
আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে পারলে নিম্নোক্ত তিনটি সফলতা বয়ে আসে জীবনে:
এক. মাখলুকের মহব্বত লাভ: প্রতিটি মুমিনের অন্তরে একটি গভীর আকাঙ্ক্ষা থাকে—আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা। আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া মানেই তাঁর নৈকট্য লাভ করা—যা মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য। যে বান্দা আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা যত বেশি অর্জন করবে, আল্লাহ তাআলা সমস্ত মাখলুকের মধ্যে তার ভালোবাসা বাড়িয়ে দেবেন।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন তিনি জিবরাইলকে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আমি অমুককে ভালোবাসি, অতএব তুমিও তাকে ভালোবাসো। এরপর জিবরাইলও তাকে ভালোবাসতে থাকেন। অতঃপর তিনি আসমানবাসীর মধ্যে ঘোষণা করে দেন—‘আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন। কাজেই তোমরাও তাকে ভালোবাসো।’ তখন আকাশবাসীরা তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। অতঃপর পৃথিবীতেও তাকে গ্রহণযোগ্য করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩২০৯)
দুই. সমস্ত মাখলুক সেবায় নিয়োজিত হয়: মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যই হলো, সে আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বন্দেগি করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর যত বেশি ইবাদত করবে, আল্লাহ তাআলা যাবতীয় মাখলুককে মানুষের কল্যাণ ও সেবায় নিয়োজিত করে দেবেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি পৃথিবীতে যা কিছু আছে, তা তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা বাকারা: ২৯)
আরও একটি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা কি লক্ষ করোনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, আল্লাহ সেগুলোকে তোমাদের কাজে নিয়োজিত রেখেছেন এবং তিনি তার প্রকাশ্য ও গুপ্ত নেয়ামতসমূহ তোমাদের প্রতি পরিপূর্ণভাবে বর্ষণ করেছেন।’ (সুরা লুকমান: ২০)
তিন. মাখলুকের ভয়: মানুষ আল্লাহকে যে পরিমাণ ভয় করবে, আল্লাহ তাআলা মাখলুকের দিলে তার ভয় ততখানি দিয়ে দেবেন। নবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা ভয়ের নেয়ামত দান করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে এমন পাঁচটি বস্তু দান করা হয়েছে, যা আমার আগে কাউকে দেওয়া হয়নি। এক মাস পথ চলার দূরত্ব থেকে শত্রুর মাঝে ভীতি সঞ্চার করার ক্ষমতা দিয়ে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। আমার জন্য মাটিকে মসজিদ ও পবিত্রতা অবলম্বনের উপকরণ করা হয়েছে। অতএব, আমার উম্মতের কোনো ব্যক্তির সামনে যেখানেই নামাজের সময় উপস্থিত হয়, সে সেখানে নামাজ আদায় করতে পারে। আর আমাকে শাফাআত দান করা হয়েছে—যা আমার আগে কোনো নবীকে দান করা হয়নি। এ ছাড়া আমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য পাঠানো হয়েছে। আমার আগের প্রত্যেক নবী কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হতেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩৩৫)
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদ্রাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল

একজন মুমিনের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও সবচেয়ে বড় সফলতা হলো আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়া। যদি আল্লাহ কাউকে ভালোবাসেন, তবে তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সব কল্যাণ ও সফলতা সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, আসমান ও জমিনের সব মাখলুকের মাঝেও তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে দেন।
আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে পারলে নিম্নোক্ত তিনটি সফলতা বয়ে আসে জীবনে:
এক. মাখলুকের মহব্বত লাভ: প্রতিটি মুমিনের অন্তরে একটি গভীর আকাঙ্ক্ষা থাকে—আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা। আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া মানেই তাঁর নৈকট্য লাভ করা—যা মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য। যে বান্দা আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা যত বেশি অর্জন করবে, আল্লাহ তাআলা সমস্ত মাখলুকের মধ্যে তার ভালোবাসা বাড়িয়ে দেবেন।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন তিনি জিবরাইলকে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আমি অমুককে ভালোবাসি, অতএব তুমিও তাকে ভালোবাসো। এরপর জিবরাইলও তাকে ভালোবাসতে থাকেন। অতঃপর তিনি আসমানবাসীর মধ্যে ঘোষণা করে দেন—‘আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন। কাজেই তোমরাও তাকে ভালোবাসো।’ তখন আকাশবাসীরা তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। অতঃপর পৃথিবীতেও তাকে গ্রহণযোগ্য করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩২০৯)
দুই. সমস্ত মাখলুক সেবায় নিয়োজিত হয়: মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যই হলো, সে আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বন্দেগি করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর যত বেশি ইবাদত করবে, আল্লাহ তাআলা যাবতীয় মাখলুককে মানুষের কল্যাণ ও সেবায় নিয়োজিত করে দেবেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি পৃথিবীতে যা কিছু আছে, তা তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা বাকারা: ২৯)
আরও একটি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা কি লক্ষ করোনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, আল্লাহ সেগুলোকে তোমাদের কাজে নিয়োজিত রেখেছেন এবং তিনি তার প্রকাশ্য ও গুপ্ত নেয়ামতসমূহ তোমাদের প্রতি পরিপূর্ণভাবে বর্ষণ করেছেন।’ (সুরা লুকমান: ২০)
তিন. মাখলুকের ভয়: মানুষ আল্লাহকে যে পরিমাণ ভয় করবে, আল্লাহ তাআলা মাখলুকের দিলে তার ভয় ততখানি দিয়ে দেবেন। নবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা ভয়ের নেয়ামত দান করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে এমন পাঁচটি বস্তু দান করা হয়েছে, যা আমার আগে কাউকে দেওয়া হয়নি। এক মাস পথ চলার দূরত্ব থেকে শত্রুর মাঝে ভীতি সঞ্চার করার ক্ষমতা দিয়ে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। আমার জন্য মাটিকে মসজিদ ও পবিত্রতা অবলম্বনের উপকরণ করা হয়েছে। অতএব, আমার উম্মতের কোনো ব্যক্তির সামনে যেখানেই নামাজের সময় উপস্থিত হয়, সে সেখানে নামাজ আদায় করতে পারে। আর আমাকে শাফাআত দান করা হয়েছে—যা আমার আগে কোনো নবীকে দান করা হয়নি। এ ছাড়া আমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য পাঠানো হয়েছে। আমার আগের প্রত্যেক নবী কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হতেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩৩৫)
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদ্রাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২৯ আগস্ট ২০২৫
আবু লাহাব ছিল ইসলামের ঘোর বিরোধী, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম প্রধান শত্রু এবং মক্কার বিখ্যাত কাফিরদের মধ্যে একজন। ইসলাম প্রচারে বাধা দেওয়া, জুলুম করা, অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানোর কারণে বিশ্বের মুসলিমেরা তাকে ঘৃণার চোখে দেখে।
৫ ঘণ্টা আগে
শীতকাল ইবাদতে আগ্রহী মুমিনের জন্য বিশেষ উপহার। হাদিসের ভাষায় একে বলা হয়েছে ‘মুমিনের বসন্তকাল’। বসন্তকালে যেমন প্রকৃতি সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, তেমনি শীতকাল মুমিন বান্দাকে ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মিক উন্নতি সাধনের এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়।
১৩ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

শীতকাল ইবাদতে আগ্রহী মুমিনের জন্য বিশেষ উপহার। হাদিসের ভাষায় একে বলা হয়েছে ‘মুমিনের বসন্তকাল’। বসন্তকালে যেমন প্রকৃতি সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, তেমনি শীতকাল মুমিন বান্দাকে ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মিক উন্নতি সাধনের এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। বছরের অন্যান্য সময়ে যেসব ইবাদত আদায় করা কষ্টসাধ্য, শীতে তা পালন করা সহজ ও আরামদায়ক।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যেমন বলেছেন, ‘শীতকালকে মোবারকবাদ। এতে বরকতের ঝরনাধারা নাজিল হয়। রাত দীর্ঘ হয় তাহাজ্জুদের জন্য। আর দিন ছোট হয় রোজা রাখার জন্য।’ (লাতায়িফুল মাআরিফ: পৃ. ৩২৭)
শীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ (শুআবুল ইমান: ৩৯৪০)।
এই বরকতময় সময়ে নফল ইবাদতের পাশাপাশি রমজানের কাজা রোজা আদায় করার জন্যও সবচেয়ে উপযুক্ত। কারণ বছরের অন্যান্য ঋতুতে প্রচণ্ড গরমের কারণে রোজা রাখা তুলনামূলক কঠিন হয়। আল্লাহ তাআলা কাজা রোজা আদায়ের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি অসুস্থ বা মুসাফির, সে অন্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে (কাজা আদায় করবে)। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজটাই চান, কঠিন করতে চান না।’ (সুরা বাকারা: ১৮৫)
যেহেতু কাজা রোজা আদায় করা ফরজ, তাই এই শীতল ও ছোট দিনের সুযোগ গ্রহণ করে বিগত বছরগুলোতে কারও রমজানের ফরজ রোজা কাজা হয়ে থাকলে তা দ্রুত আদায় করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

শীতকাল ইবাদতে আগ্রহী মুমিনের জন্য বিশেষ উপহার। হাদিসের ভাষায় একে বলা হয়েছে ‘মুমিনের বসন্তকাল’। বসন্তকালে যেমন প্রকৃতি সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, তেমনি শীতকাল মুমিন বান্দাকে ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মিক উন্নতি সাধনের এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। বছরের অন্যান্য সময়ে যেসব ইবাদত আদায় করা কষ্টসাধ্য, শীতে তা পালন করা সহজ ও আরামদায়ক।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যেমন বলেছেন, ‘শীতকালকে মোবারকবাদ। এতে বরকতের ঝরনাধারা নাজিল হয়। রাত দীর্ঘ হয় তাহাজ্জুদের জন্য। আর দিন ছোট হয় রোজা রাখার জন্য।’ (লাতায়িফুল মাআরিফ: পৃ. ৩২৭)
শীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম হয় এবং আবহাওয়া থাকে শীতল। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ (শুআবুল ইমান: ৩৯৪০)।
এই বরকতময় সময়ে নফল ইবাদতের পাশাপাশি রমজানের কাজা রোজা আদায় করার জন্যও সবচেয়ে উপযুক্ত। কারণ বছরের অন্যান্য ঋতুতে প্রচণ্ড গরমের কারণে রোজা রাখা তুলনামূলক কঠিন হয়। আল্লাহ তাআলা কাজা রোজা আদায়ের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি অসুস্থ বা মুসাফির, সে অন্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে (কাজা আদায় করবে)। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজটাই চান, কঠিন করতে চান না।’ (সুরা বাকারা: ১৮৫)
যেহেতু কাজা রোজা আদায় করা ফরজ, তাই এই শীতল ও ছোট দিনের সুযোগ গ্রহণ করে বিগত বছরগুলোতে কারও রমজানের ফরজ রোজা কাজা হয়ে থাকলে তা দ্রুত আদায় করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২৯ আগস্ট ২০২৫
আবু লাহাব ছিল ইসলামের ঘোর বিরোধী, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম প্রধান শত্রু এবং মক্কার বিখ্যাত কাফিরদের মধ্যে একজন। ইসলাম প্রচারে বাধা দেওয়া, জুলুম করা, অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানোর কারণে বিশ্বের মুসলিমেরা তাকে ঘৃণার চোখে দেখে।
৫ ঘণ্টা আগে
একজন মুমিনের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও সবচেয়ে বড় সফলতা হলো আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়া। যদি আল্লাহ কাউকে ভালোবাসেন, তবে তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সব কল্যাণ ও সফলতা সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, আসমান ও জমিনের সব মাখলুকের মাঝেও তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে দেন।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২০ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৯ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৫০ মিনিট | ০৬: ০৬ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪০ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪১ মিনিট | ০৫: ১৫ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৭ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৪: ৪৯ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৯ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৫০ মিনিট | ০৬: ০৬ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪০ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪১ মিনিট | ০৫: ১৫ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৭ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৪: ৪৯ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

সময়টা ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবী। মানবতার লেশমাত্র নেই কোথাও। দুর্বলেরা নিষ্পেষিত। সবলেরা সমাজের কর্ণধার। তরবারি যার শক্তিশালী, সে-ই গোত্রপতি। সভ্যতার ছিটেফোঁটাও নেই। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়া যেন অমার্জনীয় অপরাধ। শাস্তি তাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২৯ আগস্ট ২০২৫
আবু লাহাব ছিল ইসলামের ঘোর বিরোধী, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অন্যতম প্রধান শত্রু এবং মক্কার বিখ্যাত কাফিরদের মধ্যে একজন। ইসলাম প্রচারে বাধা দেওয়া, জুলুম করা, অত্যাচার ও নিপীড়ন চালানোর কারণে বিশ্বের মুসলিমেরা তাকে ঘৃণার চোখে দেখে।
৫ ঘণ্টা আগে
একজন মুমিনের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও সবচেয়ে বড় সফলতা হলো আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়া। যদি আল্লাহ কাউকে ভালোবাসেন, তবে তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সব কল্যাণ ও সফলতা সহজ হয়ে যায়। এ ছাড়া আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, আসমান ও জমিনের সব মাখলুকের মাঝেও তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে দেন।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতকাল ইবাদতে আগ্রহী মুমিনের জন্য বিশেষ উপহার। হাদিসের ভাষায় একে বলা হয়েছে ‘মুমিনের বসন্তকাল’। বসন্তকালে যেমন প্রকৃতি সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, তেমনি শীতকাল মুমিন বান্দাকে ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মিক উন্নতি সাধনের এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়।
১৩ ঘণ্টা আগে