আপনার জিজ্ঞাসা
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
প্রশ্ন: ইসলামি আলোচকদের আলোচনায় প্রায় শোনা যায়, কিয়ামতের আগে আল্লাহর নবী হজরত ঈসা (আ.) পুনরায় পৃথিবীতে আগমন করবেন। কোরআন-হাদিসের আলোকে এর সত্যতা জানতে চাই। জোবায়ের রায়হান আবীর, কক্সবাজার
উত্তর: হজরত ঈসা (আ.)-এর ব্যাপারে ইসলামের সর্বসম্মত বিশ্বাস হলো, কেউ তাঁকে হত্যা করতে পারেনি এবং ক্রুশবিদ্ধও করেনি। বরং আল্লাহ তাআলা তাঁকে অলৌকিকভাবে আসমানে তুলে নেন এবং সেখানে জীবিত অবস্থায় আছেন। কিয়ামতের আগে তিনি পৃথিবীতে দ্বিতীয়বার আগমন করবেন। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর স্বপক্ষে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।
পবিত্র কোরআনের কয়েকটি আয়াত থেকে ঈসা (আ.)-এর পুনরাগমনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। যেমন আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘আর তিনি তো কিয়ামতের নিদর্শন। অতএব, তোমরা কিয়ামত সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ কোরো না এবং আমারই অনুসরণ করো। এটাই সরল পথ।’ (সুরা জুখরুফ: ৬১)
ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে ‘তিনি’ বলতে ঈসা (আ.)-কে বোঝানো হয়েছে। তাঁর পুনরাগমন কিয়ামতের আলামত হিসেবে গণ্য হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), আবু হুরায়রা (রা.) ও মুজাহিদ (রহ.)সহ অনেক সাহাবি ও তাবেয়ির বর্ণনা এ ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘কিতাবিদের মধ্যে এমন কেউ থাকবে না, যারা তার মৃত্যুর আগে তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে না।’ (সুরা নিসা: ১৫৯) প্রখ্যাত মুফাসসির ইবনে আব্বাস, হাসান বসরি, মুজাহিদ, ইকরিমাসহ অধিকাংশ সাহাবি ও তাবেয়ির মতে এখানে ‘তাঁর মৃত্যুর আগে’ বলতে ঈসা (আ.)-এর মৃত্যুর আগের কথা বোঝানো হয়েছে। সুতরাং এই আয়াত থেকেও প্রমাণিত হয়, ঈসা (আ.) পুনরায় পৃথিবীতে আসবেন এবং সেই সময় সবাই তাঁর সত্যতা এবং ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করবে। (তাফসিরে তাবারি)
হাদিসে তাঁর জীবিত থাকা ও পুনরায় আগমনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি (রহ.) ‘আত তাসরিহ বিমা তাওয়াতারা ফি নুজুলি মাসিহ’ নামক কিতাবে ঈসা (আ.)-এর পুনরাগমনের ওপর শতাধিক হাদিস একত্র করেছেন। সেখান থেকে দু-একটি এখানে তুলে ধরা হলো:
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ঈসা ইবনে মারইয়াম অবতরণ করবেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি ক্রুশ ভেঙে দেবেন, শূকর হত্যা করবেন এবং জিজিয়া উঠিয়ে দেবেন। সে সময় সম্পদের এত প্রাচুর্য হবে যে কেউ তা গ্রহণ করতে চাইবে না।’ (বুখারি: ৩৪৪৮; মুসলিম: ১৫৫)
অন্য হাদিসে নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দাজ্জাল যখন ফিতনা সৃষ্টি করবে, তখন আল্লাহ তাআলা ঈসা ইবনে মারইয়ামকে পাঠাবেন। তিনি পূর্বদিকের সাদা মিনারে (দামেস্কে) অবতরণ করবেন। তিনি দাজ্জালকে লুদ নামক স্থানে হত্যা করবেন।’ (মুসলিম: ২৯৩৭)
আরেক হাদিসে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঈসা (আ.) যখন আসবেন, তখন আহলে কিতাব সম্প্রদায় তাঁর প্রতি ইমান আনবে এবং ইসলামের বিজয় ঘটবে।’ (বুখারি: ৩৪৪৮)
কোরআনের আয়াত, প্রামাণ্য হাদিস ও ইজমার মাধ্যমে ঈসা (আ.)-এর পুনরাগমন সুপ্রমাণিত হওয়ার কারণে আলেমগণ তা অস্বীকারকারীকে কাফের সাব্যস্ত করেছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে, আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরির আকিদাতুল ইসলাম ফি হায়াতি ঈসা আলাইহিস সালাম, ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতির কিতাবুল ইলাম বিহুকমি ঈসা আলাইহিস সালাম এবং আল্লামা ইদ্রিস কান্ধলভির হায়াতে ঈসা আলাইহিস সালাম ইত্যাদি বইয়ে। বিস্তারিত সেখানে দেখা যেতে পারে।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ, শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
প্রশ্ন: ইসলামি আলোচকদের আলোচনায় প্রায় শোনা যায়, কিয়ামতের আগে আল্লাহর নবী হজরত ঈসা (আ.) পুনরায় পৃথিবীতে আগমন করবেন। কোরআন-হাদিসের আলোকে এর সত্যতা জানতে চাই। জোবায়ের রায়হান আবীর, কক্সবাজার
উত্তর: হজরত ঈসা (আ.)-এর ব্যাপারে ইসলামের সর্বসম্মত বিশ্বাস হলো, কেউ তাঁকে হত্যা করতে পারেনি এবং ক্রুশবিদ্ধও করেনি। বরং আল্লাহ তাআলা তাঁকে অলৌকিকভাবে আসমানে তুলে নেন এবং সেখানে জীবিত অবস্থায় আছেন। কিয়ামতের আগে তিনি পৃথিবীতে দ্বিতীয়বার আগমন করবেন। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর স্বপক্ষে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।
পবিত্র কোরআনের কয়েকটি আয়াত থেকে ঈসা (আ.)-এর পুনরাগমনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। যেমন আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘আর তিনি তো কিয়ামতের নিদর্শন। অতএব, তোমরা কিয়ামত সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ কোরো না এবং আমারই অনুসরণ করো। এটাই সরল পথ।’ (সুরা জুখরুফ: ৬১)
ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে ‘তিনি’ বলতে ঈসা (আ.)-কে বোঝানো হয়েছে। তাঁর পুনরাগমন কিয়ামতের আলামত হিসেবে গণ্য হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), আবু হুরায়রা (রা.) ও মুজাহিদ (রহ.)সহ অনেক সাহাবি ও তাবেয়ির বর্ণনা এ ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘কিতাবিদের মধ্যে এমন কেউ থাকবে না, যারা তার মৃত্যুর আগে তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে না।’ (সুরা নিসা: ১৫৯) প্রখ্যাত মুফাসসির ইবনে আব্বাস, হাসান বসরি, মুজাহিদ, ইকরিমাসহ অধিকাংশ সাহাবি ও তাবেয়ির মতে এখানে ‘তাঁর মৃত্যুর আগে’ বলতে ঈসা (আ.)-এর মৃত্যুর আগের কথা বোঝানো হয়েছে। সুতরাং এই আয়াত থেকেও প্রমাণিত হয়, ঈসা (আ.) পুনরায় পৃথিবীতে আসবেন এবং সেই সময় সবাই তাঁর সত্যতা এবং ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করবে। (তাফসিরে তাবারি)
হাদিসে তাঁর জীবিত থাকা ও পুনরায় আগমনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি (রহ.) ‘আত তাসরিহ বিমা তাওয়াতারা ফি নুজুলি মাসিহ’ নামক কিতাবে ঈসা (আ.)-এর পুনরাগমনের ওপর শতাধিক হাদিস একত্র করেছেন। সেখান থেকে দু-একটি এখানে তুলে ধরা হলো:
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ঈসা ইবনে মারইয়াম অবতরণ করবেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি ক্রুশ ভেঙে দেবেন, শূকর হত্যা করবেন এবং জিজিয়া উঠিয়ে দেবেন। সে সময় সম্পদের এত প্রাচুর্য হবে যে কেউ তা গ্রহণ করতে চাইবে না।’ (বুখারি: ৩৪৪৮; মুসলিম: ১৫৫)
অন্য হাদিসে নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দাজ্জাল যখন ফিতনা সৃষ্টি করবে, তখন আল্লাহ তাআলা ঈসা ইবনে মারইয়ামকে পাঠাবেন। তিনি পূর্বদিকের সাদা মিনারে (দামেস্কে) অবতরণ করবেন। তিনি দাজ্জালকে লুদ নামক স্থানে হত্যা করবেন।’ (মুসলিম: ২৯৩৭)
আরেক হাদিসে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঈসা (আ.) যখন আসবেন, তখন আহলে কিতাব সম্প্রদায় তাঁর প্রতি ইমান আনবে এবং ইসলামের বিজয় ঘটবে।’ (বুখারি: ৩৪৪৮)
কোরআনের আয়াত, প্রামাণ্য হাদিস ও ইজমার মাধ্যমে ঈসা (আ.)-এর পুনরাগমন সুপ্রমাণিত হওয়ার কারণে আলেমগণ তা অস্বীকারকারীকে কাফের সাব্যস্ত করেছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে, আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরির আকিদাতুল ইসলাম ফি হায়াতি ঈসা আলাইহিস সালাম, ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতির কিতাবুল ইলাম বিহুকমি ঈসা আলাইহিস সালাম এবং আল্লামা ইদ্রিস কান্ধলভির হায়াতে ঈসা আলাইহিস সালাম ইত্যাদি বইয়ে। বিস্তারিত সেখানে দেখা যেতে পারে।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ, শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
পবিত্র কোরআনের অন্যতম ফজিলতপূর্ণ আয়াত হলো ‘আয়াতুল কুরসি।’ মহানবী (সা.) এই আয়াতটিকে কোরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। একবার তিনি সাহাবি উবাই ইবনে কাআব (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার মতে কোরআনের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মহান?’ জবাবে উবাই (রা.) বলেন, ‘আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া...’
৩ ঘণ্টা আগেক্ষমতা বা রাজত্ব পেলে মানুষ আল্লাহ ভোলা হয়ে যায়। হয়ে ওঠে বেপরোয়া ও অহংকারী। দুর্বলের ওপর অবাধে চালায় অত্যাচার ও নিপীড়ন। আসলে ক্ষমতাসীনদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এটা একটা বড় পরীক্ষা। ক্ষমতা পেয়ে বান্দা কেমন আচরণ করে, সেটাই দেখতে চান আল্লাহ তাআলা। তবে সবাই তো এক না।
১৭ ঘণ্টা আগেআল্লাহ তাআলার অফুরন্ত নেয়ামতের অবারিত ঠিকানা জান্নাত। জান্নাতকে পার্থিব নেয়ামত দ্বারা আল্লাহ তাআলা সাজিয়েছেন—যা কোনো চোখ চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং কোনো ব্যক্তির অন্তর তা কল্পনাও করতে পারেনি।
১৯ ঘণ্টা আগেমহান আল্লাহ আমাদের একমাত্র রিজিকদাতা। সমগ্র সৃষ্টিকুলের রিজিকের ব্যবস্থা তিনিই করে থাকেন। তাই রিজিকের সন্ধানে দিশেহারা নয়, বরং আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকা জরুরি। কোরআন ও হাদিসের আলোকে ৪টি আমল করলে রিজিক বৃদ্ধি হবে বলে আশা করা যায়।
২০ ঘণ্টা আগে