আসআদ শাহীন

সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবং শিক্ষণীয়। কেননা ক্ষমতার লোভ বা ইচ্ছে সবারই থাকে, কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা কল্পনাতীত বিষয়। তেমনি এক বাদশাহর গল্প, যিনি ছিলেন এক সময়ের পরাক্রমশালী রাজা—সমৃদ্ধি, ক্ষমতা ও জৌলুসে পরিপূর্ণ যাঁর জীবন। তাঁর সামনে ছিল অসংখ্য অনুচর, ছিল রাজকীয় মহিমা ও বিলাসিতা। কিন্তু এক রাতে, যখন আকাশে চাঁদের আলো নেমে এসেছিল, তিনি চিন্তায় মগ্ন হলেন।
রাজপ্রাসাদের উঁচু মিনারে দাঁড়িয়ে তিনি গভীরভাবে ভাবতে লাগলেন—এ রাজ্য, এই ক্ষমতা, এই আভিজাত্য কি চিরস্থায়ী? তাঁর অন্তর কেঁপে উঠল। তিনি অনুভব করলেন, এ রাজসিক জীবন তাঁকে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তাই তিনি শাসন ও রাজত্ব ছেড়ে এমন এক জায়গায় চলে যান, যেখানে তাঁকে কেউ চেনে না। সেখানে তিনি কেবল আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকেন এবং নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিচে গল্পটি হাদিসের ভাষ্যে উপস্থাপন করা হলো—
হজরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন—বনি ইসরাইলের এক বাদশা, যিনি হজরত মুসা (আ.)–এর পর শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন, এক রাতে বায়তুল মুকাদ্দাসের ছাদে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত সেই রাতে তিনি তাঁর অতীত জীবনের বিভিন্ন ঘটনা স্মরণ করতে লাগলেন। গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে তিনি উপলব্ধি করলেন যে, তাঁর রাজত্ব, ক্ষমতা—এসব কিছুই একদিন বিলীন হয়ে যাবে। তাঁর অন্তর উদ্বেগে কেঁপে উঠল।
অবশেষে, তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন—এই জগতের জৌলুস তাঁকে আর আটকে রাখতে পারবে না। এক নির্জন রাতে, কাউকে কিছু না জানিয়ে, তিনি এক রশির সাহায্যে নিচে নেমে এলেন। পরদিন সকালে দেখা গেল, সেই রশিটি মসজিদে ঝুলে আছে, কিন্তু তিনি সেখানে নেই। তিনি চলতে চলতে সমুদ্রের তীরে এসে পৌঁছালেন। সেখানে দেখলেন, একদল শ্রমিক ইট বানানোর কাজে ব্যস্ত। তিনি তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, তাঁরা কীভাবে উপার্জন করেন। শ্রমিকেরা তাঁকে তাঁদের পরিশ্রমের বিনিময়ে পাওয়া মজুরির কথা জানালে, তিনি তাঁদের দলে যোগ দিলেন।
নিজের হাতে পরিশ্রম করতে লাগলেন, কষ্টার্জিত উপার্জন দিয়ে আহার করতেন এবং বাকি অংশ দান করে দিতেন। যখন নামাজের সময় হতো, তিনি ইবাদতে মগ্ন হয়ে যেতেন। একসময় শ্রমিকেরা এই ব্যতিক্রমী মানুষটির কথা তাঁদের মহাজনের কাছে জানালেন। মহাজন বিস্মিত হলেন—এই সাধারণ জীর্ণশীর্ণ শ্রমিক আসলে কে? তিনি তাঁকে ডেকে পাঠালেন। কিন্তু তিনবার পাঠানো হলেও, তিনি যেতে অস্বীকৃতি জানালেন।
অবশেষে, মহাজন নিজেই তাঁকে দেখতে এলেন। বাদশাহ যখন দেখলেন যে, কেউ তাঁকে খুঁজতে এসেছে, তখন তিনি পালিয়ে গেলেন। কিন্তু মহাজন তাঁর পিছু নিলেন এবং অবশেষে তাঁকে ধরে ফেললেন। তিনি বললেন, ‘একটু দাঁড়ান, আমি শুধু আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।’
বাদশাহ থামলেন এবং ধীরে ধীরে নিজের কাহিনি বলতে লাগলেন, ‘আমি একসময়ের বাদশা ছিলাম, কিন্তু এক রাতে আমি উপলব্ধি করলাম, এই রাজ্য, এই ক্ষমতা—এসব কিছুই ক্ষণস্থায়ী। এগুলো আমাকে আমার প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম, আমার আসল কর্তব্য হলো, আমার রবের ইবাদত করা। তাই আমি সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছি, যেন কেবল আল্লাহর জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারি।’
মহাজন বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘আপনি যদি সব ছেড়ে আল্লাহর পথে আসতে পারেন, তবে আমি কেন পারব না?’ তিনিও বাহন থেকে নেমে এলেন এবং বাদশাহকে অনুসরণ করলেন। এরপর তাঁরা দুজন একসঙ্গে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হয়ে গেলেন। তাঁরা আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করলেন, ‘হে আমাদের রব, আমাদের মৃত্যু যেন এক সঙ্গেই হয়।’
অবশেষে, তাঁদের দোয়া কবুল হলো। তাঁরা একসঙ্গে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন এবং তাঁদের কবর মিসরের রুমাইলা নামক স্থানে পাশাপাশি রয়েছে।
হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘যদি আমি মিসরের রুমাইলায় থাকতাম, তাহলে রাসুলুল্লাহ (সা.) যে বর্ণনা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী আমি তাঁদের কবর তোমাদের দেখিয়ে দিতে পারতাম।’ (আল বাহরুজ জাখখার,৪ / ২৬৭, হাদিস: ৩৬৮৯, আল মুজামুল কাবির, ১০ / ২১৬, হাদিস: ১০৩৭০)
গল্প থেকে শিক্ষা
চিন্তা ও গভীর মননশীলতার উপকারিতা, যা মানুষকে সঠিক উপলব্ধি ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করে। এটি সর্বোত্তম ফল ও কল্যাণকর পরিণতি এনে দেয়, যেমনটি এই দুই ব্যক্তি চিন্তা ও বিবেচনার মাধ্যমে অর্জন করেছিলেন।
দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তি ও পরকালের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার মাহাত্ম্য। আল্লাহর কাছে যে অনন্ত পুরস্কার রয়েছে, তা কখনো ক্ষয়প্রাপ্ত হবে না, বরং স্থায়ী ও চিরকালীন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কাছে যা কিছু আছে, তা ফুরিয়ে যাবে; আর আল্লাহর কাছে যা আছে, তা চিরস্থায়ী।’ (সুরা নাহল: ৯৬)
এটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অবধারিত সত্য। কেননা কোরআন-হাদিসে বারবার দুনিয়ার মোহমুক্তির প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং দুনিয়াকে তুচ্ছ মনে করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও তাঁর কথা, আচরণ ও কর্মের মাধ্যমে মানুষকে দুনিয়াবিমুখতার শিক্ষা দিয়েছেন।
পরকালীন সফলতার জন্য পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করা কোনোভাবেই দুনিয়াবিমুখতার (জুহদ) পরিপন্থী নয়। বরং দুনিয়াবিমুখতার বিরোধী হলো, বিলাসিতায় মত্ত হওয়া, ভোগবিলাসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়া, পরিপূর্ণ স্বাচ্ছন্দ্য খোঁজা, দামি পোশাক-পরিচ্ছদ ও বাহন নিয়ে অতিরিক্ত আসক্ত হওয়া। এ দুই ব্যক্তি দুনিয়াবিমুখতা অবলম্বন করেছিলেন—তাঁরা কেবল প্রয়োজনীয় আহারের জন্য পরিশ্রম করতেন, কিন্তু ভোগবিলাসের পথে নিজেদের জড়াননি।

সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবং শিক্ষণীয়। কেননা ক্ষমতার লোভ বা ইচ্ছে সবারই থাকে, কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা কল্পনাতীত বিষয়। তেমনি এক বাদশাহর গল্প, যিনি ছিলেন এক সময়ের পরাক্রমশালী রাজা—সমৃদ্ধি, ক্ষমতা ও জৌলুসে পরিপূর্ণ যাঁর জীবন। তাঁর সামনে ছিল অসংখ্য অনুচর, ছিল রাজকীয় মহিমা ও বিলাসিতা। কিন্তু এক রাতে, যখন আকাশে চাঁদের আলো নেমে এসেছিল, তিনি চিন্তায় মগ্ন হলেন।
রাজপ্রাসাদের উঁচু মিনারে দাঁড়িয়ে তিনি গভীরভাবে ভাবতে লাগলেন—এ রাজ্য, এই ক্ষমতা, এই আভিজাত্য কি চিরস্থায়ী? তাঁর অন্তর কেঁপে উঠল। তিনি অনুভব করলেন, এ রাজসিক জীবন তাঁকে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তাই তিনি শাসন ও রাজত্ব ছেড়ে এমন এক জায়গায় চলে যান, যেখানে তাঁকে কেউ চেনে না। সেখানে তিনি কেবল আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকেন এবং নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিচে গল্পটি হাদিসের ভাষ্যে উপস্থাপন করা হলো—
হজরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন—বনি ইসরাইলের এক বাদশা, যিনি হজরত মুসা (আ.)–এর পর শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন, এক রাতে বায়তুল মুকাদ্দাসের ছাদে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত সেই রাতে তিনি তাঁর অতীত জীবনের বিভিন্ন ঘটনা স্মরণ করতে লাগলেন। গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে তিনি উপলব্ধি করলেন যে, তাঁর রাজত্ব, ক্ষমতা—এসব কিছুই একদিন বিলীন হয়ে যাবে। তাঁর অন্তর উদ্বেগে কেঁপে উঠল।
অবশেষে, তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন—এই জগতের জৌলুস তাঁকে আর আটকে রাখতে পারবে না। এক নির্জন রাতে, কাউকে কিছু না জানিয়ে, তিনি এক রশির সাহায্যে নিচে নেমে এলেন। পরদিন সকালে দেখা গেল, সেই রশিটি মসজিদে ঝুলে আছে, কিন্তু তিনি সেখানে নেই। তিনি চলতে চলতে সমুদ্রের তীরে এসে পৌঁছালেন। সেখানে দেখলেন, একদল শ্রমিক ইট বানানোর কাজে ব্যস্ত। তিনি তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, তাঁরা কীভাবে উপার্জন করেন। শ্রমিকেরা তাঁকে তাঁদের পরিশ্রমের বিনিময়ে পাওয়া মজুরির কথা জানালে, তিনি তাঁদের দলে যোগ দিলেন।
নিজের হাতে পরিশ্রম করতে লাগলেন, কষ্টার্জিত উপার্জন দিয়ে আহার করতেন এবং বাকি অংশ দান করে দিতেন। যখন নামাজের সময় হতো, তিনি ইবাদতে মগ্ন হয়ে যেতেন। একসময় শ্রমিকেরা এই ব্যতিক্রমী মানুষটির কথা তাঁদের মহাজনের কাছে জানালেন। মহাজন বিস্মিত হলেন—এই সাধারণ জীর্ণশীর্ণ শ্রমিক আসলে কে? তিনি তাঁকে ডেকে পাঠালেন। কিন্তু তিনবার পাঠানো হলেও, তিনি যেতে অস্বীকৃতি জানালেন।
অবশেষে, মহাজন নিজেই তাঁকে দেখতে এলেন। বাদশাহ যখন দেখলেন যে, কেউ তাঁকে খুঁজতে এসেছে, তখন তিনি পালিয়ে গেলেন। কিন্তু মহাজন তাঁর পিছু নিলেন এবং অবশেষে তাঁকে ধরে ফেললেন। তিনি বললেন, ‘একটু দাঁড়ান, আমি শুধু আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।’
বাদশাহ থামলেন এবং ধীরে ধীরে নিজের কাহিনি বলতে লাগলেন, ‘আমি একসময়ের বাদশা ছিলাম, কিন্তু এক রাতে আমি উপলব্ধি করলাম, এই রাজ্য, এই ক্ষমতা—এসব কিছুই ক্ষণস্থায়ী। এগুলো আমাকে আমার প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম, আমার আসল কর্তব্য হলো, আমার রবের ইবাদত করা। তাই আমি সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছি, যেন কেবল আল্লাহর জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারি।’
মহাজন বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘আপনি যদি সব ছেড়ে আল্লাহর পথে আসতে পারেন, তবে আমি কেন পারব না?’ তিনিও বাহন থেকে নেমে এলেন এবং বাদশাহকে অনুসরণ করলেন। এরপর তাঁরা দুজন একসঙ্গে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হয়ে গেলেন। তাঁরা আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করলেন, ‘হে আমাদের রব, আমাদের মৃত্যু যেন এক সঙ্গেই হয়।’
অবশেষে, তাঁদের দোয়া কবুল হলো। তাঁরা একসঙ্গে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন এবং তাঁদের কবর মিসরের রুমাইলা নামক স্থানে পাশাপাশি রয়েছে।
হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘যদি আমি মিসরের রুমাইলায় থাকতাম, তাহলে রাসুলুল্লাহ (সা.) যে বর্ণনা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী আমি তাঁদের কবর তোমাদের দেখিয়ে দিতে পারতাম।’ (আল বাহরুজ জাখখার,৪ / ২৬৭, হাদিস: ৩৬৮৯, আল মুজামুল কাবির, ১০ / ২১৬, হাদিস: ১০৩৭০)
গল্প থেকে শিক্ষা
চিন্তা ও গভীর মননশীলতার উপকারিতা, যা মানুষকে সঠিক উপলব্ধি ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করে। এটি সর্বোত্তম ফল ও কল্যাণকর পরিণতি এনে দেয়, যেমনটি এই দুই ব্যক্তি চিন্তা ও বিবেচনার মাধ্যমে অর্জন করেছিলেন।
দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তি ও পরকালের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার মাহাত্ম্য। আল্লাহর কাছে যে অনন্ত পুরস্কার রয়েছে, তা কখনো ক্ষয়প্রাপ্ত হবে না, বরং স্থায়ী ও চিরকালীন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কাছে যা কিছু আছে, তা ফুরিয়ে যাবে; আর আল্লাহর কাছে যা আছে, তা চিরস্থায়ী।’ (সুরা নাহল: ৯৬)
এটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অবধারিত সত্য। কেননা কোরআন-হাদিসে বারবার দুনিয়ার মোহমুক্তির প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং দুনিয়াকে তুচ্ছ মনে করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও তাঁর কথা, আচরণ ও কর্মের মাধ্যমে মানুষকে দুনিয়াবিমুখতার শিক্ষা দিয়েছেন।
পরকালীন সফলতার জন্য পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করা কোনোভাবেই দুনিয়াবিমুখতার (জুহদ) পরিপন্থী নয়। বরং দুনিয়াবিমুখতার বিরোধী হলো, বিলাসিতায় মত্ত হওয়া, ভোগবিলাসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়া, পরিপূর্ণ স্বাচ্ছন্দ্য খোঁজা, দামি পোশাক-পরিচ্ছদ ও বাহন নিয়ে অতিরিক্ত আসক্ত হওয়া। এ দুই ব্যক্তি দুনিয়াবিমুখতা অবলম্বন করেছিলেন—তাঁরা কেবল প্রয়োজনীয় আহারের জন্য পরিশ্রম করতেন, কিন্তু ভোগবিলাসের পথে নিজেদের জড়াননি।
আসআদ শাহীন

সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবং শিক্ষণীয়। কেননা ক্ষমতার লোভ বা ইচ্ছে সবারই থাকে, কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা কল্পনাতীত বিষয়। তেমনি এক বাদশাহর গল্প, যিনি ছিলেন এক সময়ের পরাক্রমশালী রাজা—সমৃদ্ধি, ক্ষমতা ও জৌলুসে পরিপূর্ণ যাঁর জীবন। তাঁর সামনে ছিল অসংখ্য অনুচর, ছিল রাজকীয় মহিমা ও বিলাসিতা। কিন্তু এক রাতে, যখন আকাশে চাঁদের আলো নেমে এসেছিল, তিনি চিন্তায় মগ্ন হলেন।
রাজপ্রাসাদের উঁচু মিনারে দাঁড়িয়ে তিনি গভীরভাবে ভাবতে লাগলেন—এ রাজ্য, এই ক্ষমতা, এই আভিজাত্য কি চিরস্থায়ী? তাঁর অন্তর কেঁপে উঠল। তিনি অনুভব করলেন, এ রাজসিক জীবন তাঁকে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তাই তিনি শাসন ও রাজত্ব ছেড়ে এমন এক জায়গায় চলে যান, যেখানে তাঁকে কেউ চেনে না। সেখানে তিনি কেবল আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকেন এবং নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিচে গল্পটি হাদিসের ভাষ্যে উপস্থাপন করা হলো—
হজরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন—বনি ইসরাইলের এক বাদশা, যিনি হজরত মুসা (আ.)–এর পর শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন, এক রাতে বায়তুল মুকাদ্দাসের ছাদে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত সেই রাতে তিনি তাঁর অতীত জীবনের বিভিন্ন ঘটনা স্মরণ করতে লাগলেন। গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে তিনি উপলব্ধি করলেন যে, তাঁর রাজত্ব, ক্ষমতা—এসব কিছুই একদিন বিলীন হয়ে যাবে। তাঁর অন্তর উদ্বেগে কেঁপে উঠল।
অবশেষে, তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন—এই জগতের জৌলুস তাঁকে আর আটকে রাখতে পারবে না। এক নির্জন রাতে, কাউকে কিছু না জানিয়ে, তিনি এক রশির সাহায্যে নিচে নেমে এলেন। পরদিন সকালে দেখা গেল, সেই রশিটি মসজিদে ঝুলে আছে, কিন্তু তিনি সেখানে নেই। তিনি চলতে চলতে সমুদ্রের তীরে এসে পৌঁছালেন। সেখানে দেখলেন, একদল শ্রমিক ইট বানানোর কাজে ব্যস্ত। তিনি তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, তাঁরা কীভাবে উপার্জন করেন। শ্রমিকেরা তাঁকে তাঁদের পরিশ্রমের বিনিময়ে পাওয়া মজুরির কথা জানালে, তিনি তাঁদের দলে যোগ দিলেন।
নিজের হাতে পরিশ্রম করতে লাগলেন, কষ্টার্জিত উপার্জন দিয়ে আহার করতেন এবং বাকি অংশ দান করে দিতেন। যখন নামাজের সময় হতো, তিনি ইবাদতে মগ্ন হয়ে যেতেন। একসময় শ্রমিকেরা এই ব্যতিক্রমী মানুষটির কথা তাঁদের মহাজনের কাছে জানালেন। মহাজন বিস্মিত হলেন—এই সাধারণ জীর্ণশীর্ণ শ্রমিক আসলে কে? তিনি তাঁকে ডেকে পাঠালেন। কিন্তু তিনবার পাঠানো হলেও, তিনি যেতে অস্বীকৃতি জানালেন।
অবশেষে, মহাজন নিজেই তাঁকে দেখতে এলেন। বাদশাহ যখন দেখলেন যে, কেউ তাঁকে খুঁজতে এসেছে, তখন তিনি পালিয়ে গেলেন। কিন্তু মহাজন তাঁর পিছু নিলেন এবং অবশেষে তাঁকে ধরে ফেললেন। তিনি বললেন, ‘একটু দাঁড়ান, আমি শুধু আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।’
বাদশাহ থামলেন এবং ধীরে ধীরে নিজের কাহিনি বলতে লাগলেন, ‘আমি একসময়ের বাদশা ছিলাম, কিন্তু এক রাতে আমি উপলব্ধি করলাম, এই রাজ্য, এই ক্ষমতা—এসব কিছুই ক্ষণস্থায়ী। এগুলো আমাকে আমার প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম, আমার আসল কর্তব্য হলো, আমার রবের ইবাদত করা। তাই আমি সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছি, যেন কেবল আল্লাহর জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারি।’
মহাজন বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘আপনি যদি সব ছেড়ে আল্লাহর পথে আসতে পারেন, তবে আমি কেন পারব না?’ তিনিও বাহন থেকে নেমে এলেন এবং বাদশাহকে অনুসরণ করলেন। এরপর তাঁরা দুজন একসঙ্গে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হয়ে গেলেন। তাঁরা আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করলেন, ‘হে আমাদের রব, আমাদের মৃত্যু যেন এক সঙ্গেই হয়।’
অবশেষে, তাঁদের দোয়া কবুল হলো। তাঁরা একসঙ্গে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন এবং তাঁদের কবর মিসরের রুমাইলা নামক স্থানে পাশাপাশি রয়েছে।
হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘যদি আমি মিসরের রুমাইলায় থাকতাম, তাহলে রাসুলুল্লাহ (সা.) যে বর্ণনা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী আমি তাঁদের কবর তোমাদের দেখিয়ে দিতে পারতাম।’ (আল বাহরুজ জাখখার,৪ / ২৬৭, হাদিস: ৩৬৮৯, আল মুজামুল কাবির, ১০ / ২১৬, হাদিস: ১০৩৭০)
গল্প থেকে শিক্ষা
চিন্তা ও গভীর মননশীলতার উপকারিতা, যা মানুষকে সঠিক উপলব্ধি ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করে। এটি সর্বোত্তম ফল ও কল্যাণকর পরিণতি এনে দেয়, যেমনটি এই দুই ব্যক্তি চিন্তা ও বিবেচনার মাধ্যমে অর্জন করেছিলেন।
দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তি ও পরকালের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার মাহাত্ম্য। আল্লাহর কাছে যে অনন্ত পুরস্কার রয়েছে, তা কখনো ক্ষয়প্রাপ্ত হবে না, বরং স্থায়ী ও চিরকালীন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কাছে যা কিছু আছে, তা ফুরিয়ে যাবে; আর আল্লাহর কাছে যা আছে, তা চিরস্থায়ী।’ (সুরা নাহল: ৯৬)
এটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অবধারিত সত্য। কেননা কোরআন-হাদিসে বারবার দুনিয়ার মোহমুক্তির প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং দুনিয়াকে তুচ্ছ মনে করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও তাঁর কথা, আচরণ ও কর্মের মাধ্যমে মানুষকে দুনিয়াবিমুখতার শিক্ষা দিয়েছেন।
পরকালীন সফলতার জন্য পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করা কোনোভাবেই দুনিয়াবিমুখতার (জুহদ) পরিপন্থী নয়। বরং দুনিয়াবিমুখতার বিরোধী হলো, বিলাসিতায় মত্ত হওয়া, ভোগবিলাসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়া, পরিপূর্ণ স্বাচ্ছন্দ্য খোঁজা, দামি পোশাক-পরিচ্ছদ ও বাহন নিয়ে অতিরিক্ত আসক্ত হওয়া। এ দুই ব্যক্তি দুনিয়াবিমুখতা অবলম্বন করেছিলেন—তাঁরা কেবল প্রয়োজনীয় আহারের জন্য পরিশ্রম করতেন, কিন্তু ভোগবিলাসের পথে নিজেদের জড়াননি।

সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবং শিক্ষণীয়। কেননা ক্ষমতার লোভ বা ইচ্ছে সবারই থাকে, কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা কল্পনাতীত বিষয়। তেমনি এক বাদশাহর গল্প, যিনি ছিলেন এক সময়ের পরাক্রমশালী রাজা—সমৃদ্ধি, ক্ষমতা ও জৌলুসে পরিপূর্ণ যাঁর জীবন। তাঁর সামনে ছিল অসংখ্য অনুচর, ছিল রাজকীয় মহিমা ও বিলাসিতা। কিন্তু এক রাতে, যখন আকাশে চাঁদের আলো নেমে এসেছিল, তিনি চিন্তায় মগ্ন হলেন।
রাজপ্রাসাদের উঁচু মিনারে দাঁড়িয়ে তিনি গভীরভাবে ভাবতে লাগলেন—এ রাজ্য, এই ক্ষমতা, এই আভিজাত্য কি চিরস্থায়ী? তাঁর অন্তর কেঁপে উঠল। তিনি অনুভব করলেন, এ রাজসিক জীবন তাঁকে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তাই তিনি শাসন ও রাজত্ব ছেড়ে এমন এক জায়গায় চলে যান, যেখানে তাঁকে কেউ চেনে না। সেখানে তিনি কেবল আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকেন এবং নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিচে গল্পটি হাদিসের ভাষ্যে উপস্থাপন করা হলো—
হজরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন—বনি ইসরাইলের এক বাদশা, যিনি হজরত মুসা (আ.)–এর পর শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন, এক রাতে বায়তুল মুকাদ্দাসের ছাদে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত সেই রাতে তিনি তাঁর অতীত জীবনের বিভিন্ন ঘটনা স্মরণ করতে লাগলেন। গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে তিনি উপলব্ধি করলেন যে, তাঁর রাজত্ব, ক্ষমতা—এসব কিছুই একদিন বিলীন হয়ে যাবে। তাঁর অন্তর উদ্বেগে কেঁপে উঠল।
অবশেষে, তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন—এই জগতের জৌলুস তাঁকে আর আটকে রাখতে পারবে না। এক নির্জন রাতে, কাউকে কিছু না জানিয়ে, তিনি এক রশির সাহায্যে নিচে নেমে এলেন। পরদিন সকালে দেখা গেল, সেই রশিটি মসজিদে ঝুলে আছে, কিন্তু তিনি সেখানে নেই। তিনি চলতে চলতে সমুদ্রের তীরে এসে পৌঁছালেন। সেখানে দেখলেন, একদল শ্রমিক ইট বানানোর কাজে ব্যস্ত। তিনি তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, তাঁরা কীভাবে উপার্জন করেন। শ্রমিকেরা তাঁকে তাঁদের পরিশ্রমের বিনিময়ে পাওয়া মজুরির কথা জানালে, তিনি তাঁদের দলে যোগ দিলেন।
নিজের হাতে পরিশ্রম করতে লাগলেন, কষ্টার্জিত উপার্জন দিয়ে আহার করতেন এবং বাকি অংশ দান করে দিতেন। যখন নামাজের সময় হতো, তিনি ইবাদতে মগ্ন হয়ে যেতেন। একসময় শ্রমিকেরা এই ব্যতিক্রমী মানুষটির কথা তাঁদের মহাজনের কাছে জানালেন। মহাজন বিস্মিত হলেন—এই সাধারণ জীর্ণশীর্ণ শ্রমিক আসলে কে? তিনি তাঁকে ডেকে পাঠালেন। কিন্তু তিনবার পাঠানো হলেও, তিনি যেতে অস্বীকৃতি জানালেন।
অবশেষে, মহাজন নিজেই তাঁকে দেখতে এলেন। বাদশাহ যখন দেখলেন যে, কেউ তাঁকে খুঁজতে এসেছে, তখন তিনি পালিয়ে গেলেন। কিন্তু মহাজন তাঁর পিছু নিলেন এবং অবশেষে তাঁকে ধরে ফেললেন। তিনি বললেন, ‘একটু দাঁড়ান, আমি শুধু আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।’
বাদশাহ থামলেন এবং ধীরে ধীরে নিজের কাহিনি বলতে লাগলেন, ‘আমি একসময়ের বাদশা ছিলাম, কিন্তু এক রাতে আমি উপলব্ধি করলাম, এই রাজ্য, এই ক্ষমতা—এসব কিছুই ক্ষণস্থায়ী। এগুলো আমাকে আমার প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম, আমার আসল কর্তব্য হলো, আমার রবের ইবাদত করা। তাই আমি সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছি, যেন কেবল আল্লাহর জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারি।’
মহাজন বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘আপনি যদি সব ছেড়ে আল্লাহর পথে আসতে পারেন, তবে আমি কেন পারব না?’ তিনিও বাহন থেকে নেমে এলেন এবং বাদশাহকে অনুসরণ করলেন। এরপর তাঁরা দুজন একসঙ্গে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হয়ে গেলেন। তাঁরা আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করলেন, ‘হে আমাদের রব, আমাদের মৃত্যু যেন এক সঙ্গেই হয়।’
অবশেষে, তাঁদের দোয়া কবুল হলো। তাঁরা একসঙ্গে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন এবং তাঁদের কবর মিসরের রুমাইলা নামক স্থানে পাশাপাশি রয়েছে।
হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘যদি আমি মিসরের রুমাইলায় থাকতাম, তাহলে রাসুলুল্লাহ (সা.) যে বর্ণনা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী আমি তাঁদের কবর তোমাদের দেখিয়ে দিতে পারতাম।’ (আল বাহরুজ জাখখার,৪ / ২৬৭, হাদিস: ৩৬৮৯, আল মুজামুল কাবির, ১০ / ২১৬, হাদিস: ১০৩৭০)
গল্প থেকে শিক্ষা
চিন্তা ও গভীর মননশীলতার উপকারিতা, যা মানুষকে সঠিক উপলব্ধি ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করে। এটি সর্বোত্তম ফল ও কল্যাণকর পরিণতি এনে দেয়, যেমনটি এই দুই ব্যক্তি চিন্তা ও বিবেচনার মাধ্যমে অর্জন করেছিলেন।
দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তি ও পরকালের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার মাহাত্ম্য। আল্লাহর কাছে যে অনন্ত পুরস্কার রয়েছে, তা কখনো ক্ষয়প্রাপ্ত হবে না, বরং স্থায়ী ও চিরকালীন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কাছে যা কিছু আছে, তা ফুরিয়ে যাবে; আর আল্লাহর কাছে যা আছে, তা চিরস্থায়ী।’ (সুরা নাহল: ৯৬)
এটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অবধারিত সত্য। কেননা কোরআন-হাদিসে বারবার দুনিয়ার মোহমুক্তির প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং দুনিয়াকে তুচ্ছ মনে করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও তাঁর কথা, আচরণ ও কর্মের মাধ্যমে মানুষকে দুনিয়াবিমুখতার শিক্ষা দিয়েছেন।
পরকালীন সফলতার জন্য পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করা কোনোভাবেই দুনিয়াবিমুখতার (জুহদ) পরিপন্থী নয়। বরং দুনিয়াবিমুখতার বিরোধী হলো, বিলাসিতায় মত্ত হওয়া, ভোগবিলাসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়া, পরিপূর্ণ স্বাচ্ছন্দ্য খোঁজা, দামি পোশাক-পরিচ্ছদ ও বাহন নিয়ে অতিরিক্ত আসক্ত হওয়া। এ দুই ব্যক্তি দুনিয়াবিমুখতা অবলম্বন করেছিলেন—তাঁরা কেবল প্রয়োজনীয় আহারের জন্য পরিশ্রম করতেন, কিন্তু ভোগবিলাসের পথে নিজেদের জড়াননি।

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৪ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৯ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১১ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১৩ ঘণ্টা আগেশায়খ আহমাদুল্লাহ

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হলো, মানুষের জীবন ও সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির পথেই ব্যয় হওয়া উচিত। পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের সময়গুলোকে এমন সব আচার-অনুষ্ঠান ও বিজাতীয় উৎসবে খরচ করছি, যার ভেতর না আছে দুনিয়ার কল্যাণ, না আছে পরকালের মুক্তি। তেমনই একটি অনর্থক ও শরিয়ত বিবর্জিত উৎসবের নাম ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের গোড়ার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর সঙ্গে পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জামশিদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে এবং পরবর্তী সময়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে নববর্ষের প্রচলন করেন। মূলত এটি ইংরেজি নববর্ষ নয়, খ্রিষ্টীয় বা গ্রেগরিয়ান নববর্ষ, যা পোপ গ্রেগরির নামানুসারে প্রবর্তিত। প্রাচীনকালে পারস্যের প্রকৃতি পূজারিরা বিশ্বাস করত, বছরের প্রথম দিন আনন্দ-ফুর্তিতে কাটালে সারা বছর ভালো থাকা যাবে। সেই কুসংস্কার আজও আধুনিক সমাজের তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের মধ্যে গেঁথে আছে। অথচ বছরের প্রথম দিন উল্লাস করলে সারা বছর ভালো যাবে—এর চেয়ে অযৌক্তিক ও হাস্যকর বিশ্বাস আর কী হতে পারে!
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো উৎসব পালন করতে হলে কোরআন-সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আমলের প্রামাণ্যতা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা যায়, নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সপক্ষে ইসলামে কোনো দলিল নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ)। কোনো জাগতিক কাজ তখনই বৈধ হয়, যখন তা শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করে না এবং সৃষ্টির হক নষ্ট করে না। কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনে এই দুটি শর্তই চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। এটি একদিকে যেমন বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ, অন্যদিকে এর মাধ্যমে নাগরিক শান্তি ও মানুষের অধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়।
এই উৎসবের সামাজিক ও নৈতিক ক্ষতির দিকগুলো অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রথমত, এতে বিপুল অর্থের অপচয় হয়। যে রাতে আতশবাজি, ফানুস ও ডিজে পার্টির নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, সেই হাড়কাঁপানো শীতের রাতেই দেশের লাখো গরিব মানুষ এক টুকরো গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। অপচয়কারীকে পবিত্র কোরআনে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত বিকট শব্দে আতশবাজি ও সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটে। শহরের ফ্ল্যাটে থাকা বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থ রোগীরা এই শব্দদূষণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ে। এমনকি পটকার শব্দে শিশুর মৃত্যু কিংবা ফানুসের আগুনে দগ্ধ হওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও প্রতিবছর আমাদের দেখতে হয়।
তদুপরি এই বিজাতীয় সংস্কৃতি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এক ভোগবাদী ও নৈতিকতাহীন পথে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক, গান-বাজনা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার মাধ্যমে অশ্লীলতার বিস্তার ঘটছে, যা ইসলামের সুমহান দর্শনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসলাম আমাদের ত্যাগের উৎসব শিখিয়েছে, যেখানে ভোগের চেয়ে অপরের কল্যাণ ও গরিবের হক বেশি গুরুত্ব পায়। অথচ থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো উৎসবে আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদ ছাড়া আর কিছুই নেই। আমাদের নিজস্ব সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থাকতে কেন আমরা অন্যের দেউলিয়া সংস্কৃতির দ্বারস্থ হচ্ছি, সেটি আজ এক বড় প্রশ্ন।
প্রকৃতপক্ষে নতুন বছর আসা মানেই নতুনের আগমন নয়, বরং জীবন থেকে একটি বছরের পাতা ঝরে যাওয়া। জীবনের বরফ প্রতিনিয়ত গলে যাচ্ছে। আমরা কি একবারও ভাবি, কবরের দিকে আমাদের পা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল! একজন ফাঁসির আসামির কাছে যেমন প্রতিটি সূর্যোদয় মৃত্যুর নিকটবর্তী হওয়ার সংকেত, আমাদের জীবনও ঠিক তেমনি ফুরিয়ে আসছে। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে নেশা ও উন্মাদনায় মত্ত না হয়ে বিগত জীবনের গুনাহের জন্য তওবা করা এবং আগামীর জন্য নেক পরিকল্পনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সন্তান, পরিবার ও সমাজকে এই ভ্রান্ত সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করা আমাদের ইমানি ও নাগরিক দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা আমাদের বিজাতীয় সংস্কৃতি পরিহার করে ইসলামি জীবনাদর্শ গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন।
জুমার মিম্বর থেকে গ্রন্থনা: সাব্বির জাদিদ

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হলো, মানুষের জীবন ও সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির পথেই ব্যয় হওয়া উচিত। পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের সময়গুলোকে এমন সব আচার-অনুষ্ঠান ও বিজাতীয় উৎসবে খরচ করছি, যার ভেতর না আছে দুনিয়ার কল্যাণ, না আছে পরকালের মুক্তি। তেমনই একটি অনর্থক ও শরিয়ত বিবর্জিত উৎসবের নাম ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের গোড়ার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর সঙ্গে পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জামশিদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে এবং পরবর্তী সময়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে নববর্ষের প্রচলন করেন। মূলত এটি ইংরেজি নববর্ষ নয়, খ্রিষ্টীয় বা গ্রেগরিয়ান নববর্ষ, যা পোপ গ্রেগরির নামানুসারে প্রবর্তিত। প্রাচীনকালে পারস্যের প্রকৃতি পূজারিরা বিশ্বাস করত, বছরের প্রথম দিন আনন্দ-ফুর্তিতে কাটালে সারা বছর ভালো থাকা যাবে। সেই কুসংস্কার আজও আধুনিক সমাজের তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের মধ্যে গেঁথে আছে। অথচ বছরের প্রথম দিন উল্লাস করলে সারা বছর ভালো যাবে—এর চেয়ে অযৌক্তিক ও হাস্যকর বিশ্বাস আর কী হতে পারে!
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো উৎসব পালন করতে হলে কোরআন-সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আমলের প্রামাণ্যতা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা যায়, নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সপক্ষে ইসলামে কোনো দলিল নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ)। কোনো জাগতিক কাজ তখনই বৈধ হয়, যখন তা শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করে না এবং সৃষ্টির হক নষ্ট করে না। কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনে এই দুটি শর্তই চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। এটি একদিকে যেমন বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ, অন্যদিকে এর মাধ্যমে নাগরিক শান্তি ও মানুষের অধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়।
এই উৎসবের সামাজিক ও নৈতিক ক্ষতির দিকগুলো অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রথমত, এতে বিপুল অর্থের অপচয় হয়। যে রাতে আতশবাজি, ফানুস ও ডিজে পার্টির নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, সেই হাড়কাঁপানো শীতের রাতেই দেশের লাখো গরিব মানুষ এক টুকরো গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। অপচয়কারীকে পবিত্র কোরআনে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত বিকট শব্দে আতশবাজি ও সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটে। শহরের ফ্ল্যাটে থাকা বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থ রোগীরা এই শব্দদূষণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ে। এমনকি পটকার শব্দে শিশুর মৃত্যু কিংবা ফানুসের আগুনে দগ্ধ হওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও প্রতিবছর আমাদের দেখতে হয়।
তদুপরি এই বিজাতীয় সংস্কৃতি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এক ভোগবাদী ও নৈতিকতাহীন পথে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক, গান-বাজনা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার মাধ্যমে অশ্লীলতার বিস্তার ঘটছে, যা ইসলামের সুমহান দর্শনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসলাম আমাদের ত্যাগের উৎসব শিখিয়েছে, যেখানে ভোগের চেয়ে অপরের কল্যাণ ও গরিবের হক বেশি গুরুত্ব পায়। অথচ থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো উৎসবে আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদ ছাড়া আর কিছুই নেই। আমাদের নিজস্ব সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থাকতে কেন আমরা অন্যের দেউলিয়া সংস্কৃতির দ্বারস্থ হচ্ছি, সেটি আজ এক বড় প্রশ্ন।
প্রকৃতপক্ষে নতুন বছর আসা মানেই নতুনের আগমন নয়, বরং জীবন থেকে একটি বছরের পাতা ঝরে যাওয়া। জীবনের বরফ প্রতিনিয়ত গলে যাচ্ছে। আমরা কি একবারও ভাবি, কবরের দিকে আমাদের পা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল! একজন ফাঁসির আসামির কাছে যেমন প্রতিটি সূর্যোদয় মৃত্যুর নিকটবর্তী হওয়ার সংকেত, আমাদের জীবনও ঠিক তেমনি ফুরিয়ে আসছে। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে নেশা ও উন্মাদনায় মত্ত না হয়ে বিগত জীবনের গুনাহের জন্য তওবা করা এবং আগামীর জন্য নেক পরিকল্পনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সন্তান, পরিবার ও সমাজকে এই ভ্রান্ত সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করা আমাদের ইমানি ও নাগরিক দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা আমাদের বিজাতীয় সংস্কৃতি পরিহার করে ইসলামি জীবনাদর্শ গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন।
জুমার মিম্বর থেকে গ্রন্থনা: সাব্বির জাদিদ

সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবং শিক্ষণীয়। কেননা ক্ষমতার লোভ বা ইচ্ছে সবারই থাকে, কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা কল্পনাতীত বিষয়। তেমনি এক বাদশাহর গল্প, যিনি ছিলেন এক সময়ের পরাক্রমশালী রাজা—সমৃদ্ধি, ক্ষমতা ও জৌলুসে পরিপূর্ণ যাঁর জীবন।
১৭ মার্চ ২০২৫
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৯ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১১ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১৩ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)
আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।
এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)
আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।
এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবং শিক্ষণীয়। কেননা ক্ষমতার লোভ বা ইচ্ছে সবারই থাকে, কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা কল্পনাতীত বিষয়। তেমনি এক বাদশাহর গল্প, যিনি ছিলেন এক সময়ের পরাক্রমশালী রাজা—সমৃদ্ধি, ক্ষমতা ও জৌলুসে পরিপূর্ণ যাঁর জীবন।
১৭ মার্চ ২০২৫
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৪ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১১ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১৩ ঘণ্টা আগেআবরার নাঈম

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবং শিক্ষণীয়। কেননা ক্ষমতার লোভ বা ইচ্ছে সবারই থাকে, কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা কল্পনাতীত বিষয়। তেমনি এক বাদশাহর গল্প, যিনি ছিলেন এক সময়ের পরাক্রমশালী রাজা—সমৃদ্ধি, ক্ষমতা ও জৌলুসে পরিপূর্ণ যাঁর জীবন।
১৭ মার্চ ২০২৫
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৪ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৯ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১৩ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

সহিহ হাদিসে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এবং শিক্ষণীয়। কেননা ক্ষমতার লোভ বা ইচ্ছে সবারই থাকে, কিন্তু ক্ষমতা পাওয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা কল্পনাতীত বিষয়। তেমনি এক বাদশাহর গল্প, যিনি ছিলেন এক সময়ের পরাক্রমশালী রাজা—সমৃদ্ধি, ক্ষমতা ও জৌলুসে পরিপূর্ণ যাঁর জীবন।
১৭ মার্চ ২০২৫
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৪ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৯ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১১ ঘণ্টা আগে