Ajker Patrika

ভেনেজুয়েলার উপকূলে হঠাৎ মার্কিন বি-৫২ বোমারু বিমান!

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৪৬
বোয়িং বি-৫২ বোমারু বিমান। ছবি: বিবিসি
বোয়িং বি-৫২ বোমারু বিমান। ছবি: বিবিসি

মার্কিন বিমানবাহিনীর একাধিক বোয়িং বি-৫২ বোমারু বিমান গত বুধবার লুইজিয়ানার ঘাঁটি থেকে উড়ে ক্যারিবীয় সাগর অতিক্রম করে ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছাকাছি আকাশে চক্কর দিয়েছে। এয়ারলাইন ট্র্যাকিং ডেটায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জানিয়েছে বিবিসি।

বিষয়টি নিয়ে বিবিসিকে সামরিক গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষণের আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘জেইনস ডিফেন্স ইনসাইট’ এর পরিচালক নিক ব্রাউন বলেছেন, এই ধরনের বিমান ওই অঞ্চলে পরিচালিত হওয়া ‘খুবই অস্বাভাবিক’।

ব্রাউন জানান, মার্কিন বিমানবাহিনী দীর্ঘ পাল্লার ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ মিশন নিয়মিতই পরিচালনা করে, যাতে ক্রু ও বিমানগুলো সব সময় মিশনের উপযোগী থাকে। তবে ব্রাউনের মতে, এবারের ঘটনাটি স্পষ্টভাবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে বার্তা দেওয়ার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছে। এটা ওই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর অংশ।

বিমানগুলোর গতিবিধি নিয়ে ব্রাউন বলেন, ‘তারা বেশির ভাগ সময় ট্রান্সপনডার চালু রেখেছিল, যাতে তাদের অবস্থান বিমান ট্র্যাকিং ওয়েবসাইটে দেখা যায়। এটি যেমন নিরাপদ বিমান চলাচলের নিয়ম মেনে করা হয়েছে, তেমনি তারা চেয়েছে যেন তাদের উপস্থিতি সবাই দেখে।’

তিনি জানান, বি-৫২ বিমানগুলো গ্লাইড বোমা থেকে শুরু করে ক্রুজ মিসাইল ও পারমাণবিক অস্ত্র পর্যন্ত বিপুল পরিসরের অস্ত্র বহনে সক্ষম। তবে বেশির ভাগ অস্ত্র ভেতরে বহন করা হয় বলে নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না ভেনেজুয়েলার উপকূলে বিমানগুলো তখন অস্ত্রে সজ্জিত ছিল কি না।

গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় স্থল হামলা চালানোর কথা বিবেচনা করছেন। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

এদিকে মার্কিন গ্লোবাল স্ট্রাইক কমান্ডের এক মুখপাত্র বিবিসির সহযোগী মাধ্যম সিবিএস-কে নিশ্চিত করেছেন, অন্তত তিনটি বিমান ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি উড়েছে। তবে এই মিশনের প্রকৃতি সম্পর্কে তিনি কিছু জানাননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীন সরকারের ব্যাপক শুদ্ধি অভিযান, শীর্ষস্থানীয় ৯ জেনারেল বরখাস্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৫১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে। একসঙ্গে ৯ জন শীর্ষস্থানীয় জেনারেলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, এই ৯ জনই গুরুতর আর্থিক অপরাধে অভিযুক্ত। তাঁদের সামরিক বাহিনী থেকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।

বরখাস্ত কর্মকর্তাদের অধিকাংশই ছিলেন থ্রি-স্টার জেনারেল এবং সিসিপির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ৯ জন ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন এবং অনেক বড় অঙ্কের অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুদায়িত্বে অনিয়মে’ সন্দেহভাজন। তাঁদের এখন সামরিক আদালতের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপকে দল ও সামরিক বাহিনীর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

যদিও ক্ষমতাসীন দল এটিকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান হিসেবে দেখাচ্ছে। তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এর পেছনে রাজনৈতিক শুদ্ধি বা ক্ষমতা সুসংহত করার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। ২০ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটির চতুর্থ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন শুরু হওয়ার ঠিক আগে এই বরখাস্তের ঘটনা ঘটল। এই অধিবেশনে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং নতুন সদস্য নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

বরখাস্ত করা ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিলেন হে ওয়েইডং, তিনি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের পরে চীনের সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের (সিএমসি) ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সিসিপির সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা পলিটব্যুরোরও সদস্য ছিলেন। তাঁর দীর্ঘ অনুপস্থিতি থেকেই সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বে শুদ্ধি অভিযানের জল্পনা শুরু হয়েছিল।

বরখাস্তকৃত ৯ শীর্ষ কর্মকর্তা হলেন: হে ওয়েইডং—কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের (সিএমসি) ভাইস চেয়ারম্যান; মিয়াও হুয়া—সিএমসির রাজনৈতিক কর্ম বিভাগের পরিচালক; হে হংজুন—সিএমসির রাজনৈতিক কর্ম বিভাগের কার্যনির্বাহী উপপরিচালক; ওয়াং শিউবিন—সিএমসির যৌথ অভিযান কমান্ড কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী উপপরিচালক; লিন জিয়াংইয়াং—ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডার; কিন শুতোং—সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক কমিশনার; ইউয়ান হুয়াজি—নৌবাহিনীর রাজনৈতিক কমিশনার; ওয়াং হুওবিন—রকেট ফোর্সের কমান্ডার; ওয়াং চুননিং—সশস্ত্র পুলিশ ফোর্সের কমান্ডার।

এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ফেলো নিল থমাস বিবিসিকে বলেন, সি চিনপিংয়ের এই শুদ্ধি অভিযান আসলে ক্ষমতা প্রদর্শন ও দলকে ‘শুদ্ধ, সুশৃঙ্খল এবং কার্যকর সংস্থা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার কৌশল। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, এই ধরনের কঠোর শুদ্ধি অভিযান নতুন উদ্যোগগুলোকে স্থবির করে দিতে পারে এবং প্রশাসনকে আরও অনমনীয় করে তুলতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপ পুরো ব্যবস্থার মধ্যে সতর্কতা বাড়ালেও একই সঙ্গে এটিকে ‘আরও ভঙ্গুর’ করে তুলতে পারে।

বিশ্লেষকেরা এখন আগামী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। তাঁদের মতে, যদি উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়, তবে তা হবে এই শুদ্ধি অভিযানের ব্যাপকতা সম্পর্কে সবচেয়ে স্পষ্ট সরকারি ইঙ্গিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৯ নম্বর, সহজেই সমাধান করা যাবে: পাক-আফগান যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৪৪
ট্রাম্প কি ভারত-পাকিস্তানের মতো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও বিরতি আনতে পারবেন? ছবি: এএফপি
ট্রাম্প কি ভারত-পাকিস্তানের মতো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও বিরতি আনতে পারবেন? ছবি: এএফপি

আটটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন তিনি, এমন দাবি বহুবারই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার সংঘাত নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আবারও সেই দাবির পক্ষে জোর দিলেন তিনি। ইঙ্গিত দিলেন, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য হবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সংঘাতের সমাধান করবেন তিনি, এবং এটি হবে তাঁর ‘নম্বর ৯’। এটি তাঁর জন্য ‘সহজেই সমাধানযোগ্য’।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যদিও আমি বুঝতে পারছি পাকিস্তান আফগানিস্তানে আক্রমণ করেছে বা কোনো সংঘাত চলছে। এটা এমন একটা ব্যাপার, যা আমি চাইলে সহজেই মিটিয়ে ফেলতে পারি। আপাতত আমাকে যুক্তরাষ্ট্র চালাতে হচ্ছে, কিন্তু আমি যুদ্ধ সমাধান করতে ভালোবাসি।’

রিপাবলিকান এই নেতা আবারও দাবি করেন, তিনি একাধিক যুদ্ধ সমাধান করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার শান্তিচুক্তিও। যদিও তাঁর এই দাবি ভারত দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ভারতের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সমঝোতা দুই দেশের সামরিক বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন্সদের (ডিজিএমও) সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়।

ট্রাম্প আক্ষেপ করে বলেন, তিনি ‘৮টি যুদ্ধ সমাধান’ করেও নোবেল শান্তি পুরস্কার পাননি, যা তাঁর দাবি অনুযায়ী এক নজিরবিহীন কৃতিত্ব।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আটটি যুদ্ধ সমাধান করেছি। রুয়ান্ডা ও কঙ্গোয় যান, আর ভারত ও পাকিস্তান নিয়ে কথা বলুন। দেখুন আমরা কতগুলো যুদ্ধ সমাধান করেছি। প্রতিবারই যখন আমি কোনো যুদ্ধ সমাধান করেছি, তখন তারা বলত, “আপনি যদি পরেরটি সমাধান করেন, নোবেল পুরস্কার পাবেন।” আমি নোবেল পাইনি। একজন ভদ্র নারী এটি পেয়েছেন। আমি জানি না তিনি কে, কিন্তু তিনি খুব উদার ছিলেন। এসব ব্যাপারে আমি পাত্তা দিই না। আমি শুধু জীবন বাঁচানো নিয়ে চিন্তা করি। তবে এটা (পাক-আফগান সংঘাত) হবে নম্বর ৯।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমাদের এমন কোনো প্রেসিডেন্ট ছিলেন না, যিনি একটিও যুদ্ধ সমাধান করেছেন। একটিও না। বুশ যুদ্ধ শুরু করেছিলেন...কিন্তু আমি কোটি কোটি জীবন বাঁচিয়েছি।’

গত শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর উভয় দেশই দাবি করে, তারা একে অপরের সীমান্তচৌকি দখল ও ধ্বংস করেছে।

তালেবান সরকারের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) কাবুল ও পাকটিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এ হামলার প্রতিশোধ নিতে শনিবার পাল্টা আক্রমণ করে আফগানিস্তান। এতে অন্তত ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় বলে দাবি করে কাবুল।

অন্যদিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করে, তাদের ২৩ জন সেনা শহীদ হয়েছে। তবে পাল্টা হামলায় ২০০ জন তালেবান ও সহযোগী যোদ্ধা নিহত হয়।

এর পর থেকে থেমে থেমে প্রায় চার দিন ধরে এই পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। সর্বশেষ গত বুধবার দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে সীমান্ত এলাকায় অন্তত ২১ জন নিহত ও আরও অনেকে আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্ষেপণাস্ত্র পাচার: যুক্তরাষ্ট্রে এক পাকিস্তানির ৪০ বছরের কারাদণ্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ২৮
একটি নৌকায় করে ক্ষেপণাস্ত্রের সরঞ্জাম পাচার করছিলেন মুহাম্মদ পালোয়ান। ছবি: মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট
একটি নৌকায় করে ক্ষেপণাস্ত্রের সরঞ্জাম পাচার করছিলেন মুহাম্মদ পালোয়ান। ছবি: মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের কাছে ইরান থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সরঞ্জাম পাচারের দায়ে পাকিস্তানি নাগরিক মুহাম্মদ পালোয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার এই সাজার রায় ঘোষণা করা হয়। ওই অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলাকালে আরব সাগরে দুজন মার্কিন নেভি সিল ডুবে মারা যান।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আরব সাগরে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি অভিযানের সময় পালোয়ানকে তাঁর ‘ইউনুস’ নামের মাছ ধরার নৌকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। নৌকাটিতে ইরান-নির্মিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের যন্ত্রাংশ, যুদ্ধজাহাজ-বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উপাদান এবং একটি ওয়ারহেড পাওয়া যায়। মার্কিন ফেডারেল প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, এগুলো ছিল ‘ইরান অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহ করা সবচেয়ে অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থার মধ্যে কয়েকটি।’

এই অভিযানের সময়ই দুই মার্কিন নেভি সিল অফিসার ক্রিস্টোফার চেম্বারস এবং নাথান গেজ ইনগ্রাম পানিতে পড়ে যান। অতিরিক্ত সরঞ্জাম বহন করার কারণে তাঁরা দ্রুত ডুবে যান। ১০ দিন পর তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে নৌকার আটজন কর্মী জানান, তাঁদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে এই কাজে যুক্ত করা হয়েছিল। তাঁরা জানতেন, মাছ ধরার কাজ করছেন। পালোয়ানকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কর্মীদের নিজের কাজে মনোযোগ দিতে বলেন।

অন্যদিকে পালোয়ান নিজেই জানতেন এই কার্গো কতটা বিপজ্জনক। জানুয়ারির সেই শেষ যাত্রার আগে স্ত্রীকে পাঠানো টেক্সট মেসেজে তিনি নিজেকে ‘জিন্দা লাশ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। আদালতের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত সেই বার্তায় স্ত্রীকে তিনি লেখেন: ‘শুধু দোয়া করো যেন নিরাপদে ফিরে আসতে পারি।’ উত্তরে স্ত্রী কেন এমন কথা বলছেন জানতে চাইলে তিনি জবাব দেন: ‘প্রিয়, কাজের ধরনটাই এমন।’

এই যাত্রার জন্য পালোয়ানকে ১ কোটি ৪০ লাখ ইরানি রিয়াল (প্রায় ৩৩ হাজার ২৭৪ মার্কিন ডলার) দেওয়া হয়েছিল। এটিকে প্রসিকিউটররা ‘বিপজ্জনক কাজের পারিশ্রমিক’ বা ‘ডেঞ্জার মানি’ বলে উল্লেখ করেছেন।

মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি, এ চোরাচালানটি ইসলামিক রেভল্যুশন গার্ড কর্পসের সঙ্গে যুক্ত দুই ইরানি ভাই, ইউনুস এবং শাহাব মিরকাজেই অর্থায়ন ও সমন্বয় করেছিলেন। এই দুই ভাই এখনো ফেরার এবং তাঁরা ইরানেই রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হুতিরা গাজায় হামাসের সমর্থনে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে টার্গেট করে হামলা চালাত।

হুতিদের তৎপরতার কারণে লোহিত সাগর দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজের যাতায়াত নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। যুক্তরাজ্যের একটি থিংকট্যাংকের মতে, প্রাথমিক হামলার পর লোহিত সাগর দিয়ে শিপিং ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কমে গিয়েছিল এবং সেই হার এখনো বজায় আছে। এর ফলে জাহাজগুলোকে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘুরে দীর্ঘ পথ (প্রায় ১০-১২ দিন অতিরিক্ত সময়) নিতে হচ্ছে; যার ফলে প্রতি ট্রিপে আনুমানিক অতিরিক্ত ১ মিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে।

পালোয়ানকে সন্ত্রাসবাদে সহায়তা, গণবিধ্বংসী অস্ত্র কর্মসূচিতে সহায়তা এবং কর্মীদের হুমকি দেওয়াসহ পাঁচটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। পালোয়ানের আইনজীবী দণ্ড কমানোর জন্য আবেদন জানালেও আদালত অপরাধের প্রকৃতি এবং ভয়াবহতা বিবেচনায় সর্বোচ্চ ৪০ বছরের সাজা বহাল রাখেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌন কেলেঙ্কারিতে ডিউক অব ইয়র্ক উপাধি ত্যাগ করলেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রিন্স অ্যান্ড্রু। ছবি: দ্য টাইমস
প্রিন্স অ্যান্ড্রু। ছবি: দ্য টাইমস

ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাঁর ডিউক অব ইয়র্কসহ সব রাজকীয় উপাধি ত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন—দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বিরুদ্ধে চলা অভিযোগ রাজপরিবারের ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলছে, তাই তিনি নিজেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার মধ্যরাতে বিবিসি জানিয়েছে, অ্যান্ড্রু দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যৌন অপরাধী জেফরি অ্যাপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে ছিলেন। রাজপ্রাসাদের ভেতর থেকেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে। অবশেষে রাজা তৃতীয় চার্লস এবং পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি উপাধি ও সম্মাননা ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

বিবৃতিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বলেন, ‘রাজা এবং পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর আমরা মনে করেছি, আমার বিষয়ে চলমান অভিযোগগুলো রাজপরিবারের কাজের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। আমি সব সময় পরিবারের ও দেশের দায়িত্বকেই অগ্রাধিকার দিয়েছি। সেই কারণেই আমি এখন উপাধি ও সম্মাননা ব্যবহার বন্ধ করছি। তবে আমি আগের মতোই আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ অস্বীকার করছি।’

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে মার্কিন নাগরিক ভার্জিনিয়া জিউফরের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের মামলা, যা তিনি আদালতের বাইরে মিটিয়ে ফেলেছিলেন। এ ছাড়া তাঁর আর্থিক লেনদেন এবং এক চীনা গুপ্তচরের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

তিনি এখন থেকে আর ‘ডিউক অব ইয়র্ক’ উপাধি ব্যবহার করবেন না, যদিও তাঁর ‘প্রিন্স’ পরিচয় বহাল থাকবে। এই উপাধি তিনি পেয়েছিলেন প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে। এর আগে তিনি ‘ওয়ার্কিং রয়্যাল’ বা সক্রিয় রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন বন্ধ করেছিলেন এবং ‘এইচআরএইচ’ খেতাবও হারান।

এদিকে অ্যান্ড্রুর প্রাক্তন স্ত্রী সারাহ ফার্গুসনও আর ‘ডাচেস অব ইয়র্ক’ নামে পরিচিত থাকবেন না। তবে তাঁদের দুই কন্যা—প্রিন্সেস বিট্রিস ও ইউজেনির রাজকন্যার মর্যাদা বজায় থাকবে।

উল্লেখ্য, আগামী সপ্তাহে ভার্জিনিয়া জিউফরের একটি স্মৃতিকথা প্রকাশ পেতে যাচ্ছে, যা আবারও প্রিন্স অ্যান্ড্রুর অতীত ও তাঁর অ্যাপস্টেইন–যোগ নিয়ে আলোচনার ঝড় তুলতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত