Ajker Patrika

ট্রাম্পের ব্রিটেন সফরের আলোচিত পাঁচ বিষয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিয়ার স্টারমার। ছবি: এএফপি
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিয়ার স্টারমার। ছবি: এএফপি

তিন দিনের সফরে যুক্তরাজ্য গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফর শেষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে একযোগে নানা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তুলে ধরেছেন। সাম্প্রতিক টানাপোড়েন সত্ত্বেও তিনি দুই দেশের মজবুত মৈত্রীর ওপর জোর দেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ব্রিটেনের আতিথেয়তার প্রশংসা করেন। অন্যদিকে স্টারমার জানান, বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য একে অপরের ‘প্রথম অংশীদার।’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাণিজ্যনীতি ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের অনিশ্চিত অবস্থান ইউরোপের কিছু দেশকে বিরক্ত করেছে। তবে যুক্তরাজ্যে তাঁকে দেওয়া উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং বৃহস্পতিবার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ বক্তব্য ও উপস্থিতি ওয়াশিংটন–লন্ডনের ‘অটল’ সম্পর্কই ফুটিয়ে তোলে।

‘পুতিন আমাকে হতাশ করেছেন’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প আবারও বলেন, তিনি ভাবেননি—সংঘাত সমাধান এত কঠিন হবে। এ সময় তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক থাকায় এটা সবচেয়ে সহজ হবে। কিন্তু তিনি আমাকে হতাশ করেছেন। সত্যিই হতাশ করেছেন।’

অন্যদিকে স্টারমার জানান, যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে সহায়তায় ‘আগ্রহীদের জোট’—এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা আলোচনা করেছি কীভাবে প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করা যায়, ইউক্রেনকে আরও সহায়তা দেওয়া যায় এবং পুতিনের ওপর চাপ বাড়িয়ে একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তি করানো যায়।’

‘মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দিনগুলোর একটি’

গাজায় ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বারবার হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার কথা টেনে আনেন। এমনকি সাংবাদিকেরা যখন সরাসরি গাজার ধ্বংস ও গণহত্যার বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখনো তিনি ফিরে যান সেই দিনের ঘটনায়। ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা তো জানেন, ৭ অক্টোবর কী ঘটেছিল—এটা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দিনগুলোর একটি।’

সেদিন হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে বন্দী করে। এরপর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার ১৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের তদন্ত দল, গবেষক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে গণহত্যা বলছে।

ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে তাঁর ‘কিছুটা দ্বিমত’ আছে। তবে হামাসকে নিন্দা জানাতে গিয়ে স্টারমারকে পিঠ চাপড়ে দেন তিনি। দুই নেতার কেউই ইসরায়েলের ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দমননীতির সমালোচনা করেননি। তবে ট্রাম্প দাবি করেন, গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি ‘খুব নিকটেই।’ তিনি বলেন,‘আমরা ইসরায়েল ও গাজা নিয়ে খুব কঠোর পরিশ্রম করছি। জটিলতা আছে, তবে এটা শেষ হবে। সব ঠিকঠাক হবে।’

ন্যাটোর প্রশংসা

ন্যাটোর ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহপ্রবণ হিসেবে পরিচিত হলেও ট্রাম্প এবার জোটটির প্রশংসা করেছেন। বিশেষভাবে, তিনি মহাসচিব মার্ক রুটের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ন্যাটোকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাদের অসাধারণ প্রধান মার্ক দারুণ কাজ করেছেন।’

ন্যাটো দেশগুলোর জিডিপির পাঁচ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে খরচের প্রতিশ্রুতিকে তিনি স্বাগত জানান। তিনি ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ন্যাটোকে প্রচুর অস্ত্র পাঠাচ্ছি। ন্যাটো পুরো অর্থ পরিশোধ করছে। আমরা দারুণ কাজ করছি এবং তারা যা প্রয়োজন তা পাচ্ছে।’

বাগরাম ঘাঁটি ফিরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত

আফগানিস্তান থেকে ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে আবারও বাইডেন প্রশাসনকে আক্রমণ করেন ট্রাম্প। তবে এবার তিনি ইঙ্গিত দেন, তালেবানের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আবার আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটিতে ফিরতে পারে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সেটি ফেরত আনার চেষ্টা করছি। এটা হয়তো কিছুটা ব্রেকিং নিউজ। তারা আমাদের কাছ থেকে কিছু চাইছে। আমরা ওই ঘাঁটি চাই। কারণ আপনারা জানেন, চীনের যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি হয়, সেখান থেকে এটা মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে।’ যুক্তরাষ্ট্র এখনো তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং কাবুলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে।

জিমি কিমেল প্রতিভাবান ব্যক্তি নন

আমেরিকান টেলিভিশন উপস্থাপক জিমি কিমেলকে এবিসি থেকে ছাঁটাই করার প্রসঙ্গেও কথা বলেন ট্রাম্প। সম্প্রতি কিমেল ডানপন্থী প্রভাবশালী চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এরপর থেকে রিপাবলিকান রাজনীতিকেরা তাঁকে চাকরিচ্যুত করার দাবি তোলেন।

ট্রাম্প বলেন, কিমেলকে আসলে কম দর্শকসংখ্যার কারণে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জিমি কিমেল খারাপ রেটিংয়ের কারণে চাকরি হারিয়েছেন। তিনি চার্লি কার্ক নামের একজন মহান ব্যক্তিকে নিয়ে ভয়ংকর কথা বলেছেন। আর জিমি কিমেল প্রতিভাবান ব্যক্তি নন। অনেক আগে তাকে বরখাস্ত করা উচিত ছিল।’

ট্রাম্পের ভাষায়, ‘এটাকে আপনারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলতে পারেন বা না-ও পারেন। তবে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে প্রতিভার অভাবের কারণে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেষ ওভারে নবির ছক্কাবৃষ্টি, বাংলাদেশের সমীকরণ কী দাঁড়াল

কুমিল্লায় ৪ মাজারে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, পুলিশ-সেনাবাহিনী মোতায়েন

আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটি ফেরত চান ট্রাম্প, লক্ষ্য চীনের পারমাণবিক স্থাপনা

দিয়াবাড়ির কাশবনে নারীর অর্ধগলিত লাশ, মৃত্যু ১০-১২ দিন আগে: পুলিশ

সেনা আশ্রয় ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে নেপালের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত