Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেনে ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে ছুরি মেরে হত্যা, গা শিউরে ওঠা ভিডিও ভাইরাল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনায় একটি ট্রেনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা এক শরণার্থীকে। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনায় একটি ট্রেনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা এক শরণার্থীকে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনায় একটি ট্রেনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা এক শরণার্থীকে। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে তাকে হত্যার সেই নির্মম দৃশ্য। যা এরই মধ্যে ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ আগস্ট। গত শুক্রবার ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে শার্লট এরিয়া ট্রানজিট সিস্টেম। প্রকাশিত ওই ফুটেজে দেখা যায়, লিনক্স ব্লু লাইন ট্রেনে জানালার পাশের একটি সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে অভিযুক্ত ডেকলারলস ব্রাউন জুনিয়র। একটি স্টেশনে ট্রেনটি থামলে সেটিতে ওঠেন ইরিনা জারুতস্কা নামের ওই ইউক্রেনীয় নারী। তাঁর পরনে ছিল একটি পিৎজার দোকানের টি-শার্ট ও ক্যাপ। ধারণা করা হয় তিনি ওই দোকানে কাজ করতেন।

ডোকলারলসের সামনের সিটে বসেন ইরিনা। ফুটেজে দেখা যায়, ইরিনা নিজের মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর কানেও ইয়ারফোন ছিল বলে জানা যায়। ইরিনা এসে বসার কিছুক্ষণ পরই পকেট থেকে একটি ছুড়ি বের করে ডেকলারলস। পরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেটি দিয়ে ইরিনাকে আক্রমণ করে বসে সে। এলোপাতাড়ি তাঁর গলা ও ঘাড়ে আঘাত করতে থাকে সে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ইরিনার।

পরে, ইরিনার কাছ থেকে সরে অন্য একটি বগিতে ঢুকে পড়ে ডেকলারলস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় তার শরীর থেকেও রক্ত ঝরছিল। পরের স্টেশনে তিনি ট্রেন থেকে নেমে যান বলেও জানান তারা।

তবে, কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে খুঁজে বের করে পুলিশ। হামলার সময় হামলাকারী নিজেও আঘাত পেয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। দ্য সানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম ডিগ্রি হত্যার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ডেকলারলস ব্রাউন জুনিয়র। ছবি: সংগৃহীত
অভিযুক্ত ডেকলারলস ব্রাউন জুনিয়র। ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে একাধিকবার বিভিন্ন অভিযোগে আটক হয়েছে ডেকলারলস।

চুরি-ডাকাতি, প্রাণঘাতী অস্ত্র সংরক্ষণ এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর আগে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে ডাকাতির দায়ে পাঁচ বছর তিনি জেল খেটেছেন বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুলিশের ওয়েলফেয়ার চেক চলাকালে জরুরি নম্বর ৯১১-এর অপব্যবহারের অভিযোগে ব্রাউনের বিরুদ্ধে একটি মামলা এখনো বিচারাধীন। সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সে সময় ব্রাউন পুলিশকে জানিয়েছিলেন, কেউ তাকে একটি ‘কৃত্রিম পদার্থ’ খাইয়ে দিয়েছে, যা তার খাওয়া, হাঁটা ও কথা বলাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইরিনা জারুতস্কা। ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইরিনা জারুতস্কা। ছবি: সংগৃহীত

আদালতে জমা দেওয়া নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে: ‘ব্রাউন চান পুলিশ তার শরীরের ভেতরে থাকা ওই কৃত্রিম পদার্থ তদন্ত করুক।’ পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে জানান, তিনি চিকিৎসাজনিত সমস্যায় ভুগছেন এবং এ বিষয়ে পুলিশের কিছু করার নেই। এ উত্তরে ক্ষুব্ধ হয়ে ব্রাউন ৯১১-এ ফোন দেন এবং কিছুক্ষণ পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২২ আগস্ট ইউক্রেনীয় ওই নারীর ওপর ভয়াবহ এই হামলার তদন্ত এখনো চলছে। কী কারণে তাঁর ওপর ডেকলারলস হামলা চালাতে পার তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

দ্য সানের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে একটি নিরাপদ জীবনের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গিয়েছিলেন ইরিনা। আর তার মাত্র এক সপ্তাহ পরই এমন নৃশংসভাবে হত্যা হতে হলো তাঁকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত