Ajker Patrika

এপস্টেইনের নতুন নথি প্রকাশ্যে, ইলন মাস্কসহ আরও যাদের নাম এল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইলন মাস্ক ও জেফরি এপস্টেইন। ছবি: সংগৃহীত
ইলন মাস্ক ও জেফরি এপস্টেইন। ছবি: সংগৃহীত

যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দৈনন্দিন কর্মসূচির তালিকা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যরা। এই সময়সূচিতে দেখা গেছে, তিনি শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক এবং রিপাবলিকান পার্টির দাতা পিটার থিয়েল, পাশাপাশি কনজারভেটিভ মিডিয়া কমেন্টেটর স্টিভ ব্যাননের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

গতকাল শুক্রবার ডেমোক্র্যাটরা জানান, আগস্ট মাসে জারি করা একটি কংগ্রেসনাল সাবপেনার (আদালতের নির্দেশ) মাধ্যমে ৮ হাজার ৫৪৫টি নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এই নথির মধ্যে রয়েছে ফোনে আসা টেক্সটের লগ, বিমানের ফ্লাইট লগ, লেনদেনের রেকর্ড এবং দৈনন্দিন কর্মসূচির তালিকা।

প্রকাশিত নথির সঙ্গে দেওয়া একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দৈনন্দিন কর্মসূচির তালিকায় জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে ইলন মাস্ক, পিটার থিয়েল, স্টিভ ব্যানন ও প্রিন্স অ্যান্ড্রুর মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যোগাযোগের উল্লেখ রয়েছে।

ওভারসাইট কমিটির মুখপাত্র সারা গুয়েরেরো বলেন, ‘সব মার্কিন নাগরিকের কাছে এটা স্পষ্ট হওয়া উচিত যে জেফরি এপস্টেইন ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এবং ধনী কিছু মানুষের বন্ধু। ভুক্তভোগী ও জীবিতদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা যখন কাজ করছি, তখন প্রতিটি নতুন নথিই নতুন নতুন তথ্য সরবরাহ করছে।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘এপস্টেইনের জঘন্য অপরাধগুলোর সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের সবাইকে শনাক্ত না করা পর্যন্ত ওভারসাইট ডেমোক্র্যাটরা থামবে না। অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির এখন সব ফাইল প্রকাশ করার সময় এসেছে।’

বিবৃতি থেকে জানা যায়, নথিগুলোতে বিলিয়নিয়ার ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট থিয়েল ও ব্যাননের সঙ্গে এপস্টেইনের বৈঠক নির্ধারিত ছিল।

এছাড়া, প্রযুক্তি বিলিয়নিয়ার মাস্কের এপস্টেইনের কুখ্যাত দ্বীপ লিটল সেন্ট জেমসে ভ্রমণে যাওয়ার কথা ছিল। সেই দ্বীপে যেখানে বহু নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। এপস্টেইন ফাইলে দেখা যায়, ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর তারিখে মাস্কের এই সফর হওয়ার কথা ছিল।

নথিগুলোতে আরও উল্লেখ রয়েছে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর নাম। ২০০০ সালে এপস্টেইনের দীর্ঘদিনের সঙ্গী এবং সাজাপ্রাপ্ত যৌন পাচারকারী ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে নিউইয়র্ক থেকে ফ্লোরিডার পাম বিচগামী এপস্টেইনের ব্যক্তিগত জেটে যাত্রী হিসেবে এই বিতর্কিত ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।

তবে এপস্টেইনের সঙ্গে মাস্ক, থিয়েল ও ব্যাননের বৈঠকগুলো আদৌ হয়েছিল কি না গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত দৈনন্দিন কর্মসূচির তালিকাগুলোতে এটি নিশ্চিত করা হয়নি। সেইসঙ্গে এই তিন ব্যক্তি বা প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অন্যায় কাজের অভিযোগ আনা হয়নি।

নথিগুলো নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের উল্লেখ করে এক্স-এ ইলন মাস্ক দাবি করেন, ‘এটা মিথ্যা।’

নতুন প্রকাশিত নথিগুলোতে থাকা আর্থিক তথ্যে ‘সম্ভাব্য প্রমাণ’ পাওয়া গেছে যে এপস্টেইন ‘অ্যান্ড্রু’ নামে একজনের পক্ষ থেকে নারী মাসাজ কর্মীদের অর্থ প্রদান করেছিলেন।

তবে, থিয়েল, ব্যানন ও প্রিন্স অ্যান্ড্রু এখনো এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ওভারসাইট কমিটি জানিয়েছে, নথিপত্রের আরও পর্যালোচনা চলছে। নথিগুলোতে ভুক্তভোগীদের পরিচয় এবং চলমান তদন্তের স্বার্থে আংশিকভাবে অপ্রকাশিত রাখা হয়েছে।

এপস্টেইন ২০১৯ সালে নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন কারেকশনাল সেন্টারে তাঁর সেলে আত্মহত্যা করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ আমেরিকার ধনী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কারণে তার এই মৃত্যু ষড়যন্ত্র তত্ত্বের উৎস হয়ে উঠেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এপস্টেইন মামলার পরিচালনার ধরন এই মামলা ধামাচাপা দেওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিচার বিভাগ জুলাই মাসে ঘোষণা করে যে তারা তাদের তদন্তের ফাইল প্রকাশ করবে না। এর ফলে ফাইলগুলো প্রকাশ করার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার মিত্রদের আগের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসা হয়।

গত জুন মাসে মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যে বিতর্কের পর মাস্ক দাবি করেছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই ফাইলে নিজেই জড়িত থাকায় এর প্রকাশ আটকে দিচ্ছেন।

শুক্রবার প্রকাশিত এপস্টেইনের দৈনন্দিন কর্মসূচির তালিকাগুলোতে মাস্ক, থিয়েল এবং ব্যাননের সঙ্গে তার পরিকল্পিত বৈঠকের যে সময়গুলোর উল্লেখ করা হয়েছে, তা ২০১৯ সালে ফেডারেল যৌন পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার আগের সময়কার। তবে, এটি ছিল ২০০৮ সালে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পতিতাবৃত্তির অভিযোগ এবং অপ্রাপ্তবয়স্কের কাছ থেকে পতিতাবৃত্তি চাওয়ার অভিযোগে দোষ স্বীকার করার পরের সময়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় ওয়াকআউট করল কোন কোন দেশ, বাংলাদেশও কি ছিল

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফার্স্টলেডির সঙ্গে ড. ইউনূস, পাশে মেয়ে দীনা

বাগমারা উপজেলা বিএনপি: বেপরোয়া বহিষ্কৃত নেতারা

বিএনপির চোখ জামায়াত ও চরমোনাইয়ের দিকে

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: হাইব্রিড পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয় চলবে দুপুর থেকে সন্ধ্যা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত