Ajker Patrika

বিনা দোষে ৪৩ বছর জেল খাটা ব্যক্তিকে এবার ভারতে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ২০
৪৩ বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন সুব্রহ্মণ্যম সুবু বেদাম। ছবি: বিবিসি
৪৩ বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন সুব্রহ্মণ্যম সুবু বেদাম। ছবি: বিবিসি

যুক্তরাষ্ট্রে অন্যায়ের শিকার হয়ে টানা ৪৩ বছর কারাভোগের পর অবশেষে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন সুব্রহ্মণ্যম সুবু বেদাম। কিন্তু মুক্তির আনন্দ উপভোগ করার আগেই নতুন এক সংকটে পড়েছেন তিনি। রোববার (১৯ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ (আইসিই) এখন বেদামকে ভারতে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। অথচ শেষবারের মতো তিনি ভারত ছেড়ে এসেছিলেন জ্ঞান-বুদ্ধি হওয়ার আগেই।

জানা যায়, চার দশকের বেশি সময় আগে বেদামকে অন্যায়ভাবে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তাঁর সে সময়ের রুমমেট টম কিনসারকে হত্যার অভিযোগে। সম্প্রতি তাঁকে কিনসারের হত্যার অভিযোগ থেকে মুক্ত ঘোষণা করেছেন মার্কিন আদালত। কিনসারকে ১৯৮০ সালে হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল। ১৯ বছর বয়সী কলেজশিক্ষার্থী কিনসারের লাশ ৯ মাস পর এক জঙ্গলে পাওয়া যায়। তাঁর মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার চিহ্ন ছিল।

কিনসারকে হত্যার তদন্তে সুস্পষ্ট প্রমাণ না থাকার পরও বেদামকে এর জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে একটি মাদক মামলায়ও তাঁকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়, যা পূর্ববর্তী সাজার সঙ্গে একত্রে ভোগ করতে বলা হয়েছিল।

বেদাম সব সময়ই দাবি করে এসেছেন, তিনি নির্দোষ। দীর্ঘ বছর ধরে তাঁর পরিবার ও সমর্থকেরা কিনসার হত্যার মামলাটি পুনর্বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিল। অবশেষে নতুন প্রমাণের ভিত্তিতে পেনসিলভানিয়ার জেলা অ্যাটর্নি বার্নি ক্যান্টরনা বেদামকে নির্দোষ ঘোষণা করেন।

তবে মুক্তির আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। আদালত থেকে বের হওয়ার আগেই অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তাঁকে ১৯৮৮ সালের পুরোনো বহিষ্কারাদেশ দেখিয়ে আটক করেছে। সেই আদেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁর হত্যার দণ্ড ও মাদক মামলার ভিত্তিতে। যদিও হত্যার অভিযোগ এখন বাতিল, তবু মাদক মামলার রায় বহাল থাকায় আইসিই জানিয়েছে, তারা আইনি প্রক্রিয়াতেই কাজ করছে।

বেদামের বোন সরস্বতী বেদাম বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম এবার তাকে ঘরে নিয়ে আসব। কিন্তু সে আবার বন্দী—শুধু ভিন্ন এক কারাগারে।’

সরস্বতী জানান, সুবু বেদাম যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডধারী। তাঁর জন্ম ভারতে হলেও নয় মাস বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। এখন ভারতে তাঁর ঘনিষ্ঠ কোনো আত্মীয় নেই। পরিবার মনে করে, তাঁকে সেখানে পাঠানো মানে তাঁর জীবন দ্বিতীয়বারের মতো কেড়ে নেওয়া।

বেদামের আইনজীবী আভা বেনাচ বিবিসিকে বলেন, ‘যে মানুষ ৪৩ বছর অন্যায়ের শিকার হয়েছেন, তাঁকে এখন এমন এক দেশে নির্বাসিত করা হবে, যেখানে তাঁর কোনো শিকড় নেই—এটি হবে আরও একটি ভয়াবহ অন্যায়।’

পরিবার ও আইনজীবীরা এখন বেদামের অভিবাসনসংক্রান্ত মামলাটি আবারও খোলার আবেদন প্রস্তুত করছে। তারা আশা করছে, বেদামের মানবিক আচরণ, শিক্ষাগত অর্জন ও সমাজসেবার ইতিহাস আদালতে বিবেচিত হবে এবং সত্যিকার অর্থে তাঁর মুক্তি মিলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...