Ajker Patrika

ফিলিস্তিন দ্বিরাষ্ট্র সমাধানে বিশ্বনেতাদের সম্মেলন আজ, আয়োজনে ফ্রান্স-সৌদি আরব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৭
ছবি: এএফপি
ছবি: এএফপি

দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে সমর্থন জোগাতে বেশ কয়েকটি দেশকে নিয়ে একটি বৈঠক করতে যাচ্ছে সৌদি আরব ও ফ্রান্স। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ সোমবারই নিউইয়র্কে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এ বৈঠক ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কড়া প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকেই। এরই মধ্যে এই বৈঠকের বিরোধিতা করছে ইসরায়েল ও এর মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এই সম্মেলন বয়কট করবে। তিনি এই ইভেন্টটিকে একটি সার্কাস বলে অভিহিত করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি না চলমান সংকট সমাধানে এটি কোনোভাবে সাহায্য করতে পারে। এটি আসলে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করছে।’

এদিকে, গতকাল রোববার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে অধিকৃত পশ্চিম তীরের আরও ভূমি দখল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। শিগগিরই স্বীকৃতি দেবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সও। যারা ইসরায়েলবিরোধী পদক্ষেপ নেবে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে মার্কিন প্রশাসনও। এর হুমকির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এই সপ্তাহের বৈঠকের ঠিক আগে এই সম্মেলনটি হচ্ছে। এই সম্মেলন এমন একসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী হামাসের ইসরায়েলে আক্রমণের দুই বছর পরেও যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যেই ইসরায়েল গাজা সিটিতে নতুন করে স্থল অভিযান শুরু করেছে, কয়েক গুণ বাড়িয়েছে বিমান হামলা।

গাজা সিটিতে ইসরায়েলি অভিযানের মাত্রা বৃদ্ধি আর পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেটলারদের সহিংসতা ক্রমেই বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বনেতাদের মধ্যে এই বোধ জোরালো হয়েছে যে, এখনই দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান নিশ্চিতে একটি পদক্ষেপ নিতে হবে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ একটি সাত পৃষ্ঠার ঘোষণাপত্র অনুমোদন করেছে। এই ঘোষণাপত্রে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের দিকে যাওয়ার জন্য ‘সুনির্দিষ্ট, সময়সীমা-নির্ধারিত এবং অপরিবর্তনীয় পদক্ষেপের’ রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, এতে হামাসের নিন্দা জানানো হয়েছে এবং গোষ্ঠীটিকে আত্মসমর্পণ করে নিরস্ত্র হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারো ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিউইয়র্ক ঘোষণাপত্রটি সুদূর ভবিষ্যতের জন্য কোনো অস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি নয়, বরং এটি এমন একটি পথনির্দেশিকা যা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারগুলোর কথা বলছে। যেমন—যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় অবাধ মানবিক সহায়তার প্রবেশ। এগুলো নিশ্চিত হলে এরপরের চিন্তার বিষয় হচ্ছে যুদ্ধবিরতির পর কী হবে? সেটা নিয়েই সোমবার আলোচনা হবে।’

এরই মধ্যে এই ঘোষণাপত্র নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসরায়েল ও এর মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এটি ক্ষতিকর ও লোক দেখানো আখ্যা দিয়েছে তারা।

চলতি বছর জুলাইয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ ঘোষণা দেন শিগগিরই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স। মূলত এর পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে এ নিয়ে আলোচনা গতি পায়। এর আগে তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী দেশগুলো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে সরব ছিল। ফ্রান্সের মতো বড় একটি দেশ এ ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার পর যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় ও শক্তিশালী দেশগুলোও এ ইস্যুতে নড়েচড়ে বসে। গতকাল রোববার, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজ সোমবার, ফ্রান্সসহ আরও পাঁচটি দেশেরও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত