Ajker Patrika

গাজা অভিমুখে এগিয়ে চলছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা, ‘ডুবিয়ে দেওয়ার’ পরিকল্পনা ইসরায়েলের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গ্রিসের ক্রীট দ্বীপের কাছে নোঙররত অবস্থা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার কিছু জাহাজ। ছবি: এএফপি
গ্রিসের ক্রীট দ্বীপের কাছে নোঙররত অবস্থা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার কিছু জাহাজ। ছবি: এএফপি

গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙার উদ্দেশে যাত্রা করা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ জানিয়েছে, তারা এখন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। এই এলাকাতেই আগেরবারের ফ্লোটিলাগুলোকে আটকানো বা আক্রমণ করা হয়েছিল ইসরায়েলের তরফ থেকে। এ ছাড়া, প্রয়োজনে এই ফ্লোটিলার কিছু জাহাজ থেকে লোকজনকে আটক করে সেগুলোকে ডুবিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছে ইসরায়েল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা লিখেছে, ‘আমরা এখন সতর্ক অবস্থায় আছি। ফ্লোটিলার ওপরে ড্রোন কার্যক্রম বাড়ছে।’ তারা আরও জানিয়েছে, ‘আগামী কয়েক ঘণ্টায় বিভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে একাধিক প্রতিবেদন রয়েছে।’

এদিকে, ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান জানিয়েছে, ফ্লোটিলাটি দখলে নিতে ইসরায়েল নৌবাহিনীর কমান্ডো ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী ফ্লোটিলায় থাকা শত শত লোককে বড় একটি নৌযানে তোলা হবে। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আশদোদ বন্দর হয়ে ইসরায়েল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তবে প্রায় ৫০টি জাহাজকে টেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই কিছু জাহাজকে সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই ফ্লোটিলা আগের যেকোনো মিশনের থেকে ভিন্ন। এবার এতে কয়েক ডজন জাহাজ রয়েছে এবং যুদ্ধজাহাজও সঙ্গ দিচ্ছে।

অন্যদিকে ফ্লোটিলার আয়োজকেরা জানিয়েছেন, কিছুক্ষণ আগে তাদের বহরে কিছু ‘অচিহ্নিত জাহাজ’ এগিয়ে এসেছিল। তবে পরে সেগুলো চলে গেছে। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার (জিএসএফ) ভাষ্য, এসব জাহাজের কিছু আবার আলো নিভিয়ে এগিয়ে এসেছিল। সম্ভাব্য ইসরায়েলি হস্তক্ষেপের আশঙ্কায় অংশগ্রহণকারীরা নিরাপত্তা প্রোটোকলও মেনে চলেন।

জিএসএফ আরও জানিয়েছে, তারা গাজার দিকে এগিয়ে চলছে। এখন তারা ১২০ নটিক্যাল মাইল (২২২ কিলোমিটার) দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এটিই সেই এলাকা যেখানে আগের ফ্লোটিলাগুলোকে আটকানো বা আক্রমণ করা হয়েছিল।

ফলে, প্রশ্ন উঠছে—আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় থাকা এসব জাহাজে কি ইসরায়েলের ওঠার অধিকার আছে? উত্তর হলো—না। ব্রাজিলের মানবাধিকারকর্মী ও সুমুদ স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য থিয়াগো আভিলা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলি সামরিক জাহাজ ফ্লোটিলার দুটি জাহাজের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত করেছে।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘ইসরায়েলি সামরিক জাহাজ আমাদের নৌকাগুলোর ওপর ভয় দেখিয়েছে। যোগাযোগব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আরও বিপজ্জনক কৌশল চালিয়ে আমাদের প্রধান জাহাজ আলমা ও সিরিয়াস-এর চারপাশে ঘুরেছে।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির ক্ষতি হলেও কেউ আহত হয়নি। আমরা যাত্রা চালিয়ে যাচ্ছি।’

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বলেছে, তারা ইতিমধ্যে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর সঙ্গে ‘প্রথমবারের মতো মুখোমুখি’ হয়েছে। ইসরায়েলি জাহাজ তাদের প্রধান জাহাজের চারপাশে প্রায় ছয় মিনিট ঘোরাফেরা করেছে এবং দূর থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা জ্যাম করে দেয়।

জিএসএফ জানায়, সংঘর্ষ এড়াতে আলমার ক্যাপ্টেনকে জাহাজ ঘোরানোর জন্য জোরালো কৌশল নিতে হয়। পরে একই ধরনের কৌশল সিরিয়াস জাহাজের চারপাশেও চালানো হয়। সেখানে ইসরায়েলি জাহাজ দীর্ঘক্ষণ ঘোরাফেরা করে চলে যায়। তারা আরও জানিয়েছে, সারা রাত জুড়ে ফ্লোটিলার আশপাশে আরও ইসরায়েলি সামরিক জাহাজের উপস্থিতির খবরও পাওয়া গেছে। তবে তারা প্রস্তুত আছে, আগামী কয়েক ঘণ্টায় একই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।

তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত