Ajker Patrika

পেন্টাগনে মোটা জেনারেলদের উপস্থিতি মেনে নেওয়া যায় না: হেগসেথ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ০৬
মার্কিন শীর্ষ জেনারেলদের অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন শীর্ষ জেনারেলদের অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন সশস্ত্রবাহিনীর জেনারেল ও অ্যাডমিরালদের মোটা বলে কটাক্ষ করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। তিনি সেনাবাহিনীর বৈচিত্র্য (ডাইভার্সিটি) নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, এসব উদ্যোগের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সামরিক বাহিনীর শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। রোববার ভার্জিনিয়ার কোয়ান্টিকোতে এক বিরল সম্মেলনে তিনি সরাসরি সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, যারা তাঁর কর্মসূচিকে সমর্থন করেন না, তাদের উচিত হবে পদত্যাগ করা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তিনি ভাষণে ইঙ্গিত দেন, যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলোতে সেনা মোতায়েন করে সেগুলোকে সেনাদের ‘প্রশিক্ষণক্ষেত্র’ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফক্স নিউজের সাবেক উপস্থাপক হেগসেথ ও রিয়্যালিটি শো-র তারকা থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া ট্রাম্পের এমন বক্তব্যকে অনেকে ‘টেলিভিশনের জন্য বানানো নাটকীয় আয়োজন’ বলে মনে করছেন। কারণ, মাত্র কয়েক দিনের নোটিশে সারা বিশ্ব থেকে সেনা কর্মকর্তাদের এই জরুরি বৈঠকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।

হেগসেথ অনুষ্ঠানের শুরুতেই বলেন, ‘বছরের পর বছর নির্বোধ আর বেপরোয়া রাজনৈতিক নেতৃত্ব আমাদের ভুল পথে নিয়েছে। আমরা হয়ে গিয়েছিলাম ওক ডিপার্টমেন্ট। কিন্তু আর নয়।’ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের ভরা অডিটোরিয়ামে তিনি নিজের নেওয়া কঠোর সিদ্ধান্তগুলোর সাফাই দেন। এর মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ কৃষ্ণাঙ্গ জেনারেল ও নৌবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে থাকা এক নারী অ্যাডমিরালকে বরখাস্ত করা। হেগসেথ বলেন, এসব কর্মকর্তারা ভাঙা সংস্কৃতির অংশ ছিলেন।

তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, পেন্টাগনে বৈষম্য সংক্রান্ত অভিযোগ ও অনিয়ম তদন্তের বর্তমান পদ্ধতি পুরোপুরি পাল্টে দেওয়া হবে। তাঁর মতে, এখনকার ব্যবস্থা এমন যে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সব সময় ‘ডিমের খোসার ওপর হাঁটছেন।’ হেগসেথ সরাসরি বলেন, ‘‘আজ আমার কথাগুলো শুনে যদি আপনাদের মন ভেঙে যায়, তবে সম্মানজনক কাজ হবে—পদত্যাগ করা। আমি জানি, আপনারা অধিকাংশই উল্টোটা অনুভব করছেন। আমার কথায় আপনাদের হৃদয় ভরে উঠছে।’

হেগসেথ সমালোচনা করে বলেন, ‘পেন্টাগনের করিডরে মোটা জেনারেল আর অ্যাডমিরালদের উপস্থিতি মেনে নেওয়া যায় না।’ তিনি ঘোষণা দেন, ফিটনেস পরীক্ষার মানদণ্ড একটাই হবে—পুরুষদের জন্য নির্ধারিত মান। পাশাপাশি দাড়ি–গোঁফ ও পোশাকপরিচ্ছদের কড়াকড়িও চালু হবে। তাঁর ভাষায়, ‘অপেশাদার চেহারার যুগ শেষ। আর কোনো দাড়ি–গোঁফওয়ালা নয়।’ তাঁর বক্তৃতা চলাকালে পুরো অডিটোরিয়াম নীরব ছিল।

এদিকে, হোয়াইট হাউস থেকে অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার পথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি যদি কোনো সামরিক নেতাকে পছন্দ না করেন, তবে তাকে সরাসরি বরখাস্ত করবেন। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বক্তৃতায় ট্রাম্প কখনো সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন, কখনো আবার মেতে ওঠেন গণমাধ্যম, ভেনেজুয়েলা কিংবা সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমালোচনায়। মাঝেমধ্যেই মার্কিন পরমাণু সাবমেরিনের শক্তির কথা টেনে আনেন তিনি।

শুরুতেই ট্রাম্প রসিকতা করে বলেন, ‘আমার কথা যদি কারও পছন্দ না হয়, তবে তিনি চাইলে হল থেকে বের হয়ে যেতে পারেন। অবশ্য, বের হলে আপনার পদবি যাবে, ভবিষ্যৎও যাবে।’ ডাইভার্সিটি নীতির বিরোধিতা করে ট্রাম্প বলেন, ‘যোগ্যতা—সবকিছুই যোগ্যতার ওপর নির্ভর করবে। রাজনৈতিক কারণে, কেবল রাজনৈতিকভাবে সঠিক হওয়ার জন্য কাউকে আপনার জায়গায় বসানো হবে না।’

তিনি সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনাদের সমর্থন করি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি শতভাগ আপনাদের পাশে থাকব।’ তবে বক্তৃতা শেষে ট্রাম্প সামরিক নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বসেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী সংবিধানের প্রতি অনুগত, কোনো দল বা রাজনীতির প্রতি নয়—এটাই তাদের নীতি। তাই হেগসেথ বা ট্রাম্পের প্রকাশ্য রাজনৈতিক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেওয়া থেকে বিরত থাকেন কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ