Ajker Patrika

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ‘নিউটন’ বলে পরিচিতি পেয়েছে যে কিশোর

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭: ৩৩
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ‘নিউটন’ বলে পরিচিতি পেয়েছে যে কিশোর

হাসসাম আল-আত্তা। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর। যে কিনা গাজার নিউটন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে একেবারে মৌলিক পদ্ধতিতে ছোট পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ইসরায়েলি হামলার কারণে অন্ধকারে ছেয়ে যাওয়া গাজায় হাসসামের মতো উদ্যমী কিশোরেরাই যেন আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজার বেশির ভাগ আবাসিক ভবনই মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে। বিদ্যুৎ অবকাঠামো একপ্রকার বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এই অবস্থায় পকেট ডায়নামো আর টিনের পাখা ব্যবহার করে ছোট পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন হাসসাম আল-আত্তা।

আল জাজিরাকে হাসসাম আল-আত্তা বলেছে, ‘আমার এলাকার সবাই আমাকে গাজার নিউটন বলে ডাকে। যুদ্ধের কারণে আমি যেখানে থাকি, সেখানে কোনো বিদ্যুৎ নেই। তাই আমি আমার সাধ্যমতো এখানে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করেছি।’

হাসসাম আরও বলে, ‘আমি বাজার থেকে ১ শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) দিয়ে একটি পকেট ডায়নামো কিনে আনি। সাধারণত, যখন একটি ডায়নামোকে ঘোরানো হয়, তখন এর সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এই মূলনীতি অনুসরণ করে আমি আমাদের বাড়ির চালে একটি ডায়নামো স্থাপন করি এবং এটির সঙ্গে একটি পাখা যুক্ত করে দিই। বাতাসের সাহায্যে এই পাখা ঘুরলে ডায়নামো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।’

হাসসাম আল-আত্তা জানায়, বাতাস থাকলে পাখা ঘোরে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। গাজার এই উদ্যমী কিশোর বলে, ‘আমাদের যদি ব্যাটারি থাকত, তাহলে হয়তো সেগুলোকে রিচার্জ করে রেখে আরও বেশি বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো যেত। আমরা অল্প করে হলেও ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুতের সুবিধা পেতাম।’

গাজার এই নিউটন জানায়, মূলত তার বড় ভাইয়ের দুই যমজ সন্তানের রাতে জেগে উঠে কান্না করার বিষয়টি থেকে সে পকেট ডায়নামো দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চিন্তা করে। কারণ, এই শিশু দুটি রাতের অন্ধকারে খুবই ভয় পায় এবং জেগে উঠে আলো না পাওয়া পর্যন্ত কাঁদতে থাকে। কিন্তু এখন তারা জাগলেই আলো দেখতে পায় এবং খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ে। তারা এখন আর অন্ধকারের ভয়ে ভীত নয়।

গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতি নিয়ে হাসসাম আল-আত্তা আমাদের কোনো খাট নেই, কোনো কম্বল নেই, মাটির ওপর ফেলা বিছানায় আমাদের ঘুমাতে হয়। আমরা উত্তর গাজা থেকে হেঁটে রাফায় পৌঁছেছি। কয়েকটি কম্বল আর পরিধানের কাপড় ছাড়া আর কিছুই নেই আমাদের।

ইসরায়েলি গানবোট আর যুদ্ধবিমানের গর্জন রাফার আশ্রয়শিবিরের শিশুদের ভীত করে তোলে উল্লেখ করে হাসসাম বলে, যুদ্ধবিমান ও গানবোটের আওয়াজ আমাকেও ভীত করে। যেন আমাদের তাঁবুর ঠিক পাশেই গোলাবর্ষণ করছে ইসরায়েলি গানবোট ও যুদ্ধবিমানগুলো।

গাজায় হাসসামের মতো আরও শত শত উদ্যমী, উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন কিশোর আছে। এ বিষয়ে হাসসাম বলে, ‘আমার মতো শত শত উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন কিশোর আছে গাজায়। কিন্তু কেউই তাদের দিকে নজর দেয় না, কাজের প্রশংসা করে না।’ আরব বিশ্বের দেশগুলো ও বিশ্ব সম্প্রদায়কে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এই কিশোর আরও বলে, ‘আমরা আমাদের স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত