Ajker Patrika

মিগ–২৯ পেল ইরান, রাশিয়া–চীন দিচ্ছে ‘বিপুলসংখ্যক’ সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৬
রাশিয়ার আকাশে মিগ–২৯ ও সুখোই–৩০ এম সিরিজের যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার আকাশে মিগ–২৯ ও সুখোই–৩০ এম সিরিজের যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার তৈরি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ইরানে পৌঁছেছে। দেশটির পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সদস্য আবুলফজল জোহরেবান্দ গত মঙ্গলবার স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব যুদ্ধবিমান আনা হয়েছে। ধাপে ধাপে আরও উন্নত সুখোই-৩৫ যুদ্ধবিমান আসবে। পাশাপাশি, রাশিয়া ও চীন থেকে বিপুলসংখ্যক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।

ইরানি সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনালের খবরে বলা হয়েছে, জোহরেবান্দ বলেছেন, মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানগুলো এখন শিরাজে অবস্থান করছে। অন্যদিকে রাশিয়ার সুখোই সু-৩৫ যুদ্ধবিমানও ইরানের পথে আছে।

তিনি আরও জানান, চীনের তৈরি এইচকিউ-৯ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং রাশিয়ার এস-৪০০ সিস্টেমও বিপুল পরিমাণে সরবরাহ করা হচ্ছে। তাঁর ভাষায়, ‘মিগ-২৯-এর এই সরবরাহ স্বল্পমেয়াদি সমাধান। দীর্ঘমেয়াদে ইরানের ভরসা হবে রাশিয়ার সু-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং চীনের এইচকিউ-৯ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।’

ইরানের এই আইনপ্রণেতা নিশ্চিত করেছেন, চীনের দূরপাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এইচকিউ-৯ ইতিমধ্যে ‘বড় সংখ্যায়’ সরবরাহ শুরু হয়েছে। এতে ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি এটি প্রমাণ করছে, ইরানের সামরিক অবস্থান জোরদারে চীনের ভূমিকা দ্রুত বাড়ছে।

এই অস্ত্র সংগ্রহের সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি সিরিয়ায় ইরানি অবস্থানে ইসরায়েলের হামলা বেড়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষও ঘটেছে। এর ফলে দ্রুত প্রতিরক্ষা জোরদারের তাগিদে নেমেছে তেহরান। বিশেষ করে, তারা এমন ব্যবস্থা চাইছে, যা তীব্র যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও আকাশ প্রতিরক্ষাকে টিকিয়ে রাখতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান আর চীনের এইচকিউ-৯ একসঙ্গে হাতে আসায় ইরান স্বল্প থেকে দূরপাল্লার একটি সমন্বিত প্রতিরক্ষা ছাতা পাচ্ছে। এতে প্রতিপক্ষের আক্রমণের পরিকল্পনা জটিল হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে ইরান দূরের আকাশ পর্যন্ত রাডার নজরদারি চালাতে পারবে।

তবে রাশিয়া বা চীন—কেউই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। ইরান বহুদিন ধরে তাদের পুরোনো বিমানবাহিনী আধুনিক করার চেষ্টা করছে। এখনো তাদের ভরসা ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা যুদ্ধবিমান, কিছু রাশিয়ান জেট আর স্থানীয়ভাবে উন্নত করা সীমিত সংখ্যক বিমান।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, প্রথম ধাপে সুখোই সু-৩৫ ইরানের হাতে এসেছে। তবে কতগুলো কার্যকরভাবে চালু আছে, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। পশ্চিমা বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ৫০টি সু-৩৫ যুদ্ধবিমান চাইছে। কিন্তু সরবরাহ ধীর গতিতে হচ্ছে, কারণ রাশিয়ারই ইউক্রেনে এসব বিমানের প্রয়োজন পড়ছে।

যদি সু-৩৫ সরবরাহ অব্যাহত থাকে, তবে ১৯৭৯ সালের পর থেকে এটিই হবে ইরানের বিমানবাহিনীর সবচেয়ে বড় শক্তিবৃদ্ধি। বহুমুখী এই যুদ্ধবিমানগুলো ইরানকে প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ—দুই ক্ষেত্রেই ইসরায়েল ও উপসাগরীয় অঞ্চলের বিমানবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষমতা দেবে।

এ ছাড়া, রাশিয়া ও চীন—দুই দিক থেকে সমানভাবে অস্ত্র কিনে ইরান নিজেদের সরবরাহ ব্যবস্থা নিরাপদ করছে। এতে তারা কোনো একটি দেশের ওপর নির্ভরশীল থাকছে না। একই সঙ্গে বার্তা দিচ্ছে, ইউরেশিয়ান প্রতিরক্ষা জোটের অংশ হতে চায় তারা।

ইরানের জন্য আকাশ প্রতিরক্ষায় নতুন করে জোর দেওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে। কারণ, চলতি বছরের শুরুতে ইসরায়েলি হামলায় দেশটির শেষ রাশিয়ান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৩০০ ধ্বংস হয়ে গেছে। ২০১৬ সালে রাশিয়া থেকে চার ব্যাটালিয়ন এস-৩০০ কিনেছিল ইরান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোদিজি—বিহারে কোনো বাংলাদেশি নেই, তবে দিল্লিতে আপনার বোন বসে আছেন: ওয়াইসি

অধ্যক্ষকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বের করে দেওয়া হলো কলেজ থেকে

বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, বৃষ্টি কবে— জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ: নবনির্বাচিত ভিপি মৃদুল, জিএস রায়হান

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পারমাণবিক শক্তির অধিকারী হবে তুরস্ক, চুক্তি স্বাক্ষর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত