Ajker Patrika

গাজায় মোট প্রাণহানির অর্ধেকই ইসরায়েল ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চলে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ১৪
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত একটি এলাকা। ছবি: আনাদোলু
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত একটি এলাকা। ছবি: আনাদোলু

প্রায় দুই বছর ধরে চলমান আগ্রাসনে আরও একটি রক্তক্ষয়ী দিন দেখল গাজাবাসী। গতকাল শনিবারও উপত্যকাজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। কাতারি সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলের অব্যাহত আক্রমণে গতকাল শনিবার অন্তত ৯১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৪৫ জন।

হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারের মিডিয়া অফিস ইসরায়েলের কৌশলকে ‘প্রতারণামূলক’ আখ্যা দিয়েছে। গাজার কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণাঞ্চলকে ‘মানবিক নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে প্রচার করলেও বাস্তবে এসব এলাকায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গাজা সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ১১ আগস্ট গাজা সিটি থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত শুধু কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণাঞ্চলে ১৩৩টি হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। এসব হামলায় প্রায় ২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যা এ সময়কালে মোট মৃত্যুর প্রায় ৪৬ শতাংশ। তাদের দাবি, এ তথ্য প্রমাণ করে, বেসামরিক নাগরিকদেরই সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এ সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতাকে ‘আরও গণহত্যার জন্য সবুজ সংকেত’ বলে নিন্দা জানিয়েছে তারা।

এদিকে, অনবরত হামলায় একের পর এক হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শনিবার ভোরে ভারী বোমাবর্ষণের কারণে গাজার অন্যতম প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র জর্ডান ফিল্ড হাসপাতাল থেকে ১০৭ রোগী ও পুরো মেডিকেল স্টাফকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। গাজার হাসপাতালগুলো দীর্ঘদিন ধরেই কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অ্যানেস্থেসিয়া ও অ্যান্টিবায়োটিকসহ মৌলিক ওষুধের অভাবে কঠিন হয়ে পড়েছে চিকিৎসা কার্যক্রম। একই সঙ্গে খাবারের অভাবে চিকিৎসকেরাও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

কেন্দ্রীয় গাজায় আংশিকভাবে চালু রয়েছে কয়েকটি হাসপাতাল। তবে, এত বিপুলসংখ্যক মানুষের স্থানসংকুলান সম্ভব হচ্ছে না সেগুলোয়। অনেকে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে এলেও তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে যে, এক বিছানায় দুই রোগীকে শোয়াতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিৎসকেরা।’

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভ চলছে। শনিবার জার্মানির বার্লিন ও যুক্তরাজ্যের লিভারপুলসহ বিভিন্ন শহরে মানুষ রাস্তায় নামে।

গত শুক্রবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘গাজার জন্য একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে।’ যদিও কোনো বিস্তারিত তথ্য বা সময়সীমা তিনি জানাননি। তবে হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা এখনো তারা পায়নি। হামাসের এক কর্মকর্তা আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে কোনো প্রস্তাব আসেনি।’

উল্লেখ্য, আগামী সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে ট্রাম্পের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত