Ajker Patrika

মুম্বাইয়ে ২০০৫ সালের বন্যার আতঙ্ক, ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৯৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি

কলকাতা প্রতিনিধি  
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ০১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মহারাষ্ট্রের বাণিজ্য নগরী মুম্বাই আবারও ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি। টানা বর্ষণে শহর কার্যত থমকে গিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সান্তাক্রুজ এলাকায় ৯৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০০৫ সালের ভয়াবহ মুম্বাই বন্যার স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। রাজ্যজুড়ে গত চার দিনের টানা বর্ষণে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলমগ্ন রাস্তায় শত শত গাড়ি ডুবে রয়েছে। রেল, বিমান, মনোরেল—সব ধরনের পরিবহনব্যবস্থাই মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুটি মনোরেল মাঝপথে বিকল হয়ে পড়লে প্রায় ৭৫০ জন যাত্রী আটকা পড়েন। কয়েক ঘণ্টা তৎপরতার পর তাঁদের উদ্ধার করা হয়। রেললাইন ডুবে যাওয়ায় একাধিক লোকাল ট্রেন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। মুম্বাই বিমানবন্দরেও অন্তত ১০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে।

মহারাষ্ট্র রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগ জানিয়েছে, টানা বর্ষণে রাজ্যজুড়ে এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নান্দেড় জেলায় পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ও রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) মোট ২৪টি দল উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রয়োজনে আরও দল মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনবিস।

রাজধানী মুম্বাইয়ের পাশাপাশি কোঙ্কন, মরাঠওয়াড়া ও পশ্চিম মহারাষ্ট্রের একাধিক জেলাও ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। বহু এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। কুরলা এলাকায় মিঠি নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁয়ে যাওয়ায় দ্রুত ৪০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, এবারের এ ভোগান্তির পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা স্পষ্ট। আইআইটি ও এমআইটির গবেষকেরা বলছেন, আরব সাগরে অস্বাভাবিক উষ্ণায়ন ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে এমন ভারী বর্ষণের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আবহাওয়াবিদ ড. রঘু মুর্তুগুদ্দে বলেছেন, প্রাকৃতিক মৌসুমি বৃষ্টি প্রতিবছরই হয়, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন সেটিকে স্টেরয়েডের মতো আরও তীব্র করে তুলছে।

২০০৫ সালেও মুম্বাইয়ে ২৪ ঘণ্টায় ৯৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল, সেবার প্রায় এক হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সামাজিক মাধ্যমে অনেক বাসিন্দা লিখছেন, আবারও কি সেই ২০০৫ ফিরে এল?

বিপর্যয় মোকাবিলায় দ্রুত নিকাশিব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। বৃহন্নমুম্বাই পৌর করপোরেশন (বিএমসি) হিন্দমাতা এলাকায় অতিরিক্ত পাম্প বসিয়েছে এবং কিং সার্কেলে বিশেষ স্টর্ম-ড্রেন সক্রিয় করা হয়েছে। তবে শহরজুড়ে এত পরিমাণ বৃষ্টির পানি দ্রুত সরানো কঠিন হয়ে পড়ছে।

রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে সেনা নামানোর প্রস্তুতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে জানিয়েছেন, মুম্বাই ও মহারাষ্ট্রের পাশে সব রকমভাবে দাঁড়াবে কেন্দ্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভিসা ছাড়া পাকিস্তান সফরের চুক্তি হতে পারে শিগগির

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

সাদাপাথর লুট: ৫১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুদক

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত