কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার দেবতাখুম পর্যটন স্পট ভ্রমণে আজ বুধবার (১৮ জুন) থেকে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত আবার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
বৃষ্টির কারণে কিছুটা স্বস্তি মিললেও শহরের নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পৌরবাসীরা বলছেন, সামান্য বৃষ্টিতেই পৌরসভার অনেক এলাকায় পানি জমে যায়। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
টানা তীব্র তাপদাহের পর ময়মনসিংহে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে কমেছে উত্তাপ, ফিরেছে স্বস্তি। শনিবার সকাল ৯টার পর থেকে নগরীসহ জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি।
জ্যৈষ্ঠের শেষ সময়ে এসে যেন গরমের তীব্রতা আরও বেড়েছে। দেশের ছয় বিভাগের ৩৬ জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ। বাকি দুই বিভাগে কম-বেশি বৃষ্টি হওয়ায় তাপপ্রবাহ নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের আট বিভাগে বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে। এতে বিভিন্ন জেলায় চলমান তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।
রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের ডাইক, ভোররাতে একই ইউনিয়নের বাখরশাল গ্রামের ডাইক এবং সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল গ্রামের ডাইক ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কয়েক দিনের টানা বর্ষণ এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি উঠে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। সিলেট বিভাগের চার জেলা, তিন পার্বত্য জেলা, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লালমনিরহাটে পানি বাড়ছে।
দেশজুড়ে চলমান ঝড়বৃষ্টির মধ্যেও বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশে একটি জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। আজ শনিবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নির্দেশনা জারি করে প্রতিষ্ঠানটি।
শেরপুর এবং এর সংলগ্ন ভারতের মেঘালয়ে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও উত্তর/উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর বিস্তার লাভ করেছে। এই বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি
আবহাওয়া অফিস জানায়, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ২৪২ মিলিমিটার; যা দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সেখান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল শেরপুরের নদীগুলোর পানির স্তর বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে জেলার ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ নতুন করে বন্যার আশঙ্কায় রয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, এখনো মুহুরি নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত বাড়লে নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে পরশুরাম উপজেলায় ২১টি এবং ফুলগাজী উপজেলায় ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
কয়েক দিন ধরে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বেশ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই প্রবণতা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। গত ২৪ ঘণ্টায় (আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ঢাকা ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে টানা বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে নোয়াখালীতে। দক্ষিণাঞ্চলে এরই মধ্যে
গতকাল সারা দিন-রাত বৃষ্টি দেখল দেশবাসী। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিন বলছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে যা ২৪ ঘণ্টায় অতি ভারী বৃষ্টির যে নির্ধারিত মাত্রা, তার চেয়েও অনেক বেশি। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভারী বৃষ্টিপাত দেখা গেছে নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে, ২৮৫ মিলিমিটার।
আজও সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে সারাদিনই বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে, দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিতই থাকব।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও বৃষ্টির প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েছে। সুন্দরবনের ভেতরের নদীগুলোয় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট পানি বেড়েছে। যার ফলে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের দুবলার চর, করমজলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। গতকাল বুধবার (২৮ মে) রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিনব্যাপী
টানা বৃষ্টি ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের শঙ্খ নদীর পাড় ভেঙে তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে কৃষিজমির ফসল ও ওই এলাকার মৎস্যঘের পানিতে ডুবে গেছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল। এতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেড়েছে। জোয়ারের পানির তোরে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দিনভর ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।