Ajker Patrika

দুই নারীর মারামারি ভাইরাল, পরে জানা গেল স্কুলের প্রিন্সিপাল ও লাইব্রেরিয়ান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছবি: এনডিটিভি।
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছবি: এনডিটিভি।

পাঠদান ও পাঠ গ্রহণ এবং শিক্ষার সংস্পর্শে সময় কাটানো ছাড়া বিদ্যালয়ে থাকার সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাথায় অন্য কোনো ভাবনা খুব একটা আসে না। কিন্তু যদি স্কুলের ভেতরে বেঁধে যায় হট্টগোল, তখন প্রশ্ন ওঠে কী শিখছে শিক্ষার্থীরা। ভারতের মধ্যপ্রদেশের এক স্কুল একদিন হঠাৎ পরিণত হয় ‘কুস্তি’র ময়দানে। দেখা যায়, স্কুলের প্রিন্সিপাল ও লাইব্রেরিয়ান জড়িয়েছেন কথা-কাটাকাটিতে, যা গিয়ে পৌঁছেছে হাতাহাতি, চুল টানাটানি ও চড়-থাপ্পড়ে।

মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরের খারগোন এলাকার এক স্কুলের নাম একলব্য আদর্শ বিদ্যালয়। এই স্কুলে ঘটেছে এমন ঘটনা। আর সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, যা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে দেশটিতে।

ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, প্রিন্সিপাল ও লাইব্রেরিয়ানের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চলছে। লাইব্রেরিয়ান সেটি নিজের ফোনে ভিডিও করছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রিন্সিপাল তাঁকে চড় মেরে বসেন। তাঁর হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলেন।

ভাইরাল ভিডিওতে শোনা যায়, লাইব্রেরিয়ান চিৎকার করে বলেন, ‘ম্যাডাম, আপনার সাহস কীভাবে হলো? আপনি আমাকে থাপ্পড় মারলেন কীভাবে? আমার ফোন ভেঙে দিলেন কেন?’

এরপর দেখা যায়, প্রিন্সিপাল মাটিতে পড়ে থাকা ফোনটি তুলে আবার ছুড়ে ফেলেন। তখন ফোনটি ভেঙে যায়।

লাইব্রেরিয়ান ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশ্ন তোলেন, ‘আপনি আমার ফোন ভাঙলেন কীভাবে? আমাকে থাপ্পড় মারলেন কেন?’

এরপর প্রিন্সিপাল নিজের ফোনে দুজনের বচসার ভিডিও করতে শুরু করেন। তখন লাইব্রেরিয়ান পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রিন্সিপালকে হাতে থাপ্পড় মারেন।

এরপরই দুজনের মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে যায়।

ভিডিওর একপর্যায়ে দেখা যায়, লাইব্রেরিয়ান প্রিন্সিপালের ওড়না টানেন। জবাবে প্রিন্সিপাল তাঁকে জাপটে ধরে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। দুজনই একে অপরের চুল ধরে টানতে থাকেন এবং ঘুষি-থাপ্পড় দিতে থাকেন।

লাইব্রেরিয়ানকে বারবার প্রশ্ন করতে শোনা যায়, ‘আপনি আমাকে ছুঁলেন কীভাবে? আপনার সাহস কীভাবে হলো?’ প্রিন্সিপাল পাল্টা উত্তর দেন, ‘সেলফ-ডিফেন্স।’

ভিডিওতে এই হাতাহাতি চলাকালে এক কিশোরের কণ্ঠে শোনা যায়, ‘মা, থেমে যাও।’ এ সময় এক নারী (স্কুলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী) এগিয়ে এসে শান্ত গলায় বলেন, ‘দয়া করে আপনারা থামুন। সরে আসুন।’ তখন দুজন লড়াই থামান।

এ ঘটনার পর দুজনকে বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। দুজনই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়। বর্তমানে বিষয়টি মধ্যপ্রদেশের সহকারী কমিশনার প্রশান্ত আর্যের দপ্তরে বদলি করা হয়েছে।

এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর নেটাগরিকদের মধ্যে দেখা গেছে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া।

কেউ এই সংঘর্ষকে ব্যঙ্গ করে ‘ক্যাট ফাইট’ বলে মন্তব্য করেছেন। একজন লড়াই থামানো নারীটির প্রশংসা করে টুইটারে লিখেছেন, ‘সবার চেয়ে বুদ্ধিমান হলেন সেই পরিচ্ছন্নতাকর্মী, যিনি ঝগড়া থামিয়েছেন। বাকি দুজন শিক্ষিত হলেও, তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।’

এক ব্যবহারকারী পুরো ঘটনার জন্য লাইব্রেরিয়ানকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, দোষ লাইব্রেরিয়ানের। কারণ তিনি ঝগড়ার ভিডিও করছিলেন। তিনি লেখেন,

‘লাইব্রেরিয়ান ভিডিও করে বেশি চালাকি করেছিলেন। যা পেয়েছেন, তা-ই প্রাপ্য। এই টিকটক সংস্কৃতি মানুষকে নষ্ট করেছে। এদের কাছে সবই ভিডিও করার মতো বিষয়।’

একজন ব্যবহারকারী প্রিন্সিপালের আচরণের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘প্রিন্সিপাল অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ছিলেন এবং একজন নারী গুন্ডার মতো আচরণ করেছেন। তিনি মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতেন। তিনি মোটেও প্রিন্সিপাল হওয়ার যোগ্য নন।’

এ ঘটনা শুধুই একটি ব্যক্তিগত বিরোধ নয়, বরং তা বিদ্যালয়ে পেশাদার আচরণের অভাব, সহকর্মীদের মধ্যকার সংকট, এবং স্কুল প্রশাসনের ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে উঠে এসেছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের পেশাদারিত্ব, সহনশীলতা ও উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এমন কাণ্ড শিশুদের সামনে ঘটায় শিক্ষার পরিবেশ এবং মনস্তত্ত্বে কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...