Ajker Patrika

জন্মদিনের উপহার পছন্দ না হওয়ায় স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১২: ১৩
হত্যাকাণ্ডের শিকার কুসুম সিনহা ও প্রিয়া সেহগাল। ছবি: এনডিটিভি
হত্যাকাণ্ডের শিকার কুসুম সিনহা ও প্রিয়া সেহগাল। ছবি: এনডিটিভি

ছেলের জন্মদিনের উপহার নিয়ে ঝগড়ার পর স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যার অভিযোগে দিল্লির এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নাতির জন্মদিন পালন করতে মেয়ের বাড়িতে এসেছিলেন কুসুম সিনহা (৬৩)। জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলার সময় উপহার নিয়ে তাঁর কন্যা প্রিয়া সেহগাল (৩৪) ও তাঁর স্বামী যোগেশের মধ্যে ঝগড়া হয়। বিষয়টি মেটাতে কুসুম প্রিয়ার বাড়িতেই থেকে যান। তারপর ঘটে এ ঘটনা।

পুলিশ জানায়, গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে কেএনকে মার্গ থানায় ফোন করে এক ব্যক্তি জানান, রোহিনীর সেক্টর-১৭-এ তাঁর মা ও বোনকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কুসুম ও তাঁর মেয়ে প্রিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। কলটি করেছিলেন কুসুম সিনহার ছেলে মেঘ সিনহা (৩০)।

পুলিশকে মেঘ সিনহা জানান, গত ২৮ আগস্ট তাঁর মা প্রিয়ার বাড়িতে গিয়েছিলেন নাতি চিরাগের জন্মদিন পালন করতে।

একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জন্মদিনের অনুষ্ঠানের সময় উপহার নিয়ে প্রিয়া ও তাঁর স্বামী যোগেশের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে কুসুম মেয়ের বাড়িতেই থেকে যান।

পুলিশ জানায়, গতকাল ৩০ আগস্ট যখন ছেলে মেঘ সিনহা তাঁর মাকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কোনো সাড়া পাননি। এরপর তিনি প্রিয়ার বাড়িতে এসে দেখেন ফ্ল্যাটটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ এবং দরজার কাছে রক্তের দাগ দেখা যাচ্ছে।

তিনি সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের খবর দেন এবং তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে ঘরে রক্তের স্রোতের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁর মা ও বোনকে। অভিযোগ করা হয়, প্রিয়ার স্বামী যোগেশ সেহগাল তাঁর মা ও বোনকে হত্যা করে সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে গেছেন।

যোগেশ কোনো কাজকর্ম করতেন না বলে জানান মেঘ সিনহা।

প্রিয়ার আরেক ভাই হিমালয় পিটিআইকে বলেন, ‘মা আমার বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন এক দিন থেকেই চলে আসবেন। পরে ফোন দিলে জানান বোন আর দুলাভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে। সেটা মিটিয়ে দিয়ে ফিরবেন। কিন্তু আর ফেরেননি। পরদিন সকাল থেকে আমরা বারবার ফোন করি সকাল ১১ টা, ১১টা ৩০ মিনিট এবং আবার দুপুর ১২টায় কিন্তু মা বা বোন, কেউই ফোন ধরেনি। তখন ভেবেছিলাম হয়তো ঘুমাচ্ছে। দুপুরের পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই, গিয়ে দেখে আসব। যখন বাড়িতে পৌঁছে দরজায় কড়া নাড়ি, তখন তালায় রক্তের দাগ দেখতে পাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভেতরে গিয়ে দেখি মা আর প্রিয়া পড়ে আছে। চারদিকে রক্ত। আমরা সাড়ে ৩টার দিকে সেখানে গিয়েছিলাম। আমার দুলাভাই তাঁদের খুন করে সন্তানদের নিয়ে পালিয়েছে।’

হিমালয় আরও বলেন, ‘এ রকম কে করে? স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতেই পারে, ওদের তো বিয়ে হয়েছে ১৭ বছর। কিন্তু স্ত্রী আর শাশুড়িকে এভাবে খুন করা, এটা কীভাবে পারল!’

যোগেশকে গ্রেপ্তার করেছে কেএনকে মার্গ থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা কাপড় ও একটি কাঁচি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এগুলো হত্যায় ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ধারণা করছে তারা। অপরাধ তদন্ত দল ও ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (এফএসএল) টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছে। আরও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ মনে করছে, এ ঘটনার পেছনে পারিবারিক দ্বন্দ্বই প্রধান কারণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত