অনলাইন ডেস্ক
তেলেঙ্গানায় নববিবাহিত এক যুবকের খুনের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিয়ের এক মাস পর তেজেস্বর নামের ওই যুবকের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, তাঁর স্ত্রী ঐশ্বর্য ও প্রেমিক তিরুমল রাও ‘মেঘালয়ের রাজা রঘুবংশী মধুচন্দ্রিমা হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তাঁরা তেজেস্বরকে হত্যা করে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য ওই হত্যাকাণ্ডের মতো পরিকল্পনা করার কথাও ভেবেছিলেন।
তেলেঙ্গানা রাজ্যের গাদোওয়াল পুলিশের প্রধান টি শ্রীনিবাস রাও জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঐশ্বর্য ও তিরুমল রাও পুলিশকে বলেছেন, তাঁরা প্রাথমিকভাবে রাজা রঘুবংশীকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই তেজেস্বরকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। পরিকল্পনাটি ছিল সহজ—ঐশ্বর্য তেজেস্বরকে বাইকে করে বাইরে নিয়ে যেতে রাজি করাবেন। পথে ভাড়াটে খুনিরা তাঁদের ওপর হামলা করবে এবং তেজেস্বরকে হত্যা করা হবে। এরপর ঐশ্বর্য তিরুমল রাওয়ের সঙ্গে পালিয়ে যাবেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, এতে পুলিশ বিভ্রান্ত হবে এবং হত্যা ও অপহরণের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে।
রাজা রঘুবংশী হত্যার ঘটনাটিও ঠিক এভাবেই ঘটেছিল। রাজার মরদেহ পাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী সোনম কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। পরে পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে তাঁর সম্পৃক্ততা উদ্ঘাটন করে। তবে ঐশ্বর্য ও তিরুমল রাও জানিয়েছেন, তাঁরা এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করলেও পরে তা বাতিল করে অন্য বিকল্পগুলো বিবেচনা করেছিলেন।
পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ২৩ বছর বয়সী ঐশ্বর্য তাঁর স্বামীর বাইকে একটি জিপিএস ডিভাইস লাগিয়েছিলেন, যাতে তাঁরা তাঁর গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারেন। তাঁরা তেজেস্বরের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে খবর দেওয়ার জন্য প্রতিবেশী মোহন নামের এক ব্যক্তিকেও ভাড়া করেছিলেন।
এই হামলার ঘটনায় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—ঐশ্বর্য, তিরুমল রাও, তাঁর মা সুজাতা (যিনি তেজেস্বরকে হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে), তিরুমলের বাবা (একজন সাবেক কনস্টেবল, যিনি তাঁর ছেলেকে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে), তিন ভাড়াটে হত্যাকারী নাগেশ, পরশুরাম ও রাজেশ এবং প্রতিবেশী মোহন, যিনি তেজেস্বরের পিছু নিয়েছিলেন।
তেলেঙ্গানার গাদোওয়াল থেকে তেজেস্বরের নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ২১ জুন অন্ধ্রপ্রদেশের নন্দীয়াল জেলার পানিয়ামের একটি মাঠে তেজেস্বরের পচা-গলা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর বাহুতে তেলুগু ভাষায় লেখা ‘আম্মা’ ট্যাটু থেকে তাঁকে শনাক্ত করা হয়।
তেজেস্বরের পরিবার তাঁর নববিবাহিত স্ত্রী ঐশ্বর্যের এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। তেজেস্বরের বড় ভাই তেজাভার্দন বলেন, ‘ঐশ্বর্য একজন ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল। আমরা ঐশ্বর্যকে বিয়ে না করার জন্য তেজেস্বরকে সতর্ক করেছিলাম, কিন্তু সে তেজেস্বরকে বোঝায় যে, সে তাঁকে ভালোবাসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন সে নিখোঁজ হয়, আমি ঐশ্বর্যকে লক্ষ করছিলাম, সে এক ফোঁটা অশ্রুও ফেলেনি, কোনো দুঃখ ছিল না, তাই আমি পুলিশকে আমার সন্দেহের কথা জানাই এবং তারা তদন্ত শুরু করে।’
দুই প্রতিবেশী রাজ্যের পুলিশ একসঙ্গে কাজ শুরু করলে তদন্তে এমন এক ভয়াবহ অপরাধের চিত্র উন্মোচিত হয়। তদন্তের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তেজেস্বরের জীবন কেড়ে নেওয়ার জন্য পাঁচবার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং সবকটি থেকেই তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।
পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ঐশ্বর্যের মা সুজাতা একটি ফিন্যান্সিয়াল কোম্পানিতে পরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন। সেখানেই তিনি তিরুমল রাও নামের একজন অফিসারের সঙ্গে পরিচিত হন এবং ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক শুরু হয়। পরে সুজাতা ছুটিতে গেলে ঐশ্বর্য তাঁর জায়গায় কাজ শুরু করেন। সে সময় তিনিও তিরুমল রাওয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। ২০১৯ সালে তিরুমল রাও বিয়ে করেন। পুলিশ জানতে পারে, তিনি তাঁর স্ত্রীকেও হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।
এদিকে সুজাতা যখন জানতে পারেন, তাঁর মেয়ে তিরুমল রাওয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত, তখন তিনি তাঁকে এই সম্পর্ক শেষ করে তেজেস্বরকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তিনি তেজেস্বরকে আগে থেকেই চিনতেন। ঐশ্বর্য প্রথমে এই বিয়েতে রাজি হননি। তবে সুজাতা তাঁকে রাজি করান এবং তেজেস্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু যখন বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়, তখন হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান ঐশ্বর্য। পরে ফিরে এসে তেজেস্বরকে জানান, তাঁর মায়ের যৌতুক দেওয়ার টাকা নেই বলে তিনি লুকিয়ে ছিলেন। তিনি তাঁকে বিয়ে করতে চান। এ সময় তেজেস্বরের পরিবার এই বিয়েতে অমত দিলেও তিনি গত ১৮ মে ঐশ্বর্যকেই বিয়ে করেন।
তেজেস্বরের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ঐশ্বর্য বিয়ের সময়ও তিরুমল রাওয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। তাঁর কলরেকর্ড থেকে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে তাঁরা ২০০০টিরও বেশি ফোনকল করেছেন। জেলা পুলিশের প্রধান টি শ্রীনিবাস রাও এনডিটিভিকে বলেছেন, তেজেস্বর অফিসে থাকাকালীন এবং বিয়ের পরেও তাঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভিডিওকলে কথা বলতেন। এমনকি ঐশ্বর্যের বিয়ের দিনেও তাঁরা ভিডিওকলে ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তেজেস্বরকে হত্যার জন্য তিরুমল ভাড়াটে খুনিদের খুঁজে বের করেন। তিনজন ব্যক্তি তাঁর কাছে ঋণের জন্য এসেছিলেন। তিরুমল তাঁদের বলেছিলেন, তাঁরা যদি হত্যাকাণ্ডটি সফলভাবে শেষ করেন, তবে তাঁরা ঋণ পাবেন, সেই সঙ্গে আরও কিছু টাকা পাবেন।
তদন্তকারী একজন পুলিশ কর্মকর্তা কিছু সিসিটিভি ফুটেজ পান। সেখানে একটি ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি তেজেস্বরকে নিয়ে একটি গাড়িতে উঠছেন। তেজেস্বর একজন ভূমি জরিপকারী ও নৃত্য শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। গাদোওয়াল পুলিশের প্রধান টি শ্রীনিবাস রাও বলেন, ‘খুনিরা ভূমি জরিপের অজুহাতে তাঁকে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। ড্রাইভারের পাশের সিটে থাকা অবস্থায় তারা তাঁর মাথায় আঘাত করে, গলা কেটে দেয় এবং পরে পেটে ছুরিকাঘাত করে।’ তারা মরদেহটি গাড়ির সামনে থেকে পেছনে টেনে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের পোশাক রক্তে ভিজে গেলে তিরুমল রাও তাদের জন্য নতুন পোশাক কিনে দেন।
পুলিশের মতে, খুনিরা ভিডিওকলে তিরুমল রাওকে তেজেস্বরের মরদেহ দেখায় এবং তারপর তাঁর নির্দেশেই লাশ খালে ফেলে দেয়। জেলা পুলিশের প্রধান বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল কুরনুলে যে জমি জরিপ করতে গিয়েছিল, সেখানেই মরদেহ কবর দেবে, কিন্তু সেখানে কিছু লোক দেখতে পেয়ে তারা একটি খালে ফেলে দেয়। তবে খালে পর্যাপ্ত পানি ছিল না। আমরা মোবাইল ফোনের সিগন্যাল ব্যবহার করে তেজেস্বরের অবস্থান ট্র্যাক করি। যখন আমরা মরদেহ খুঁজে পাই, তখন সেটি পচে গিয়েছিল। তাঁর হাতে তেলেগু ভাষায় ‘‘আম্মা’’ লেখা একটি ট্যাটু আমাদের মরদেহ শনাক্ত করতে সাহায্য করে।’
তিরুমল রাও ও ঐশ্বর্য ভেবেছিলেন, তেজেস্বরের মরদেহ পাওয়া যাবে না। তাঁকে নিখোঁজ বলে চালিয়ে দেওয়া হবে। এই ভেবে তাঁরা পালানোর পরিকল্পনাও করেন। পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ঘটনার আগে তিরুমল রাও ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন এবং নিজে ও ঐশ্বর্যের জন্য লাদাখে যাওয়ার টিকিট বুক করেছিলেন। আন্দামানও তাঁদের বিবেচনাধীন একটি গন্তব্য ছিল।
আর সন্দেহ এড়াতে তেজেস্বরকে খুন করেও শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন ঐশ্বর্য। তবে তাঁর এই কৌশল কাজ করেনি। তেজেস্বর নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পরিবার পুলিশের কাছে যায় এবং ঐশ্বর্য ও তিরুমল রাও সম্পর্কে তাদের সন্দেহের কথা জানায়।
গাদোওয়াল পুলিশ যখন তেজেস্বরকে খুঁজে বের করতে মরিয়া, তখন প্রতিবেশী অন্ধ্রপ্রদেশের কুরনুল থেকে ফোন আসে। সেখানকার গ্রামবাসীরা জানান, কৃষিজমিতে একটি মরদেহ পাওয়া গেছে। তেলেঙ্গানা পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং নিশ্চিত করে, এটি তেজেস্বরের। এরপরই বেরিয়ে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তেলেঙ্গানায় নববিবাহিত এক যুবকের খুনের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিয়ের এক মাস পর তেজেস্বর নামের ওই যুবকের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, তাঁর স্ত্রী ঐশ্বর্য ও প্রেমিক তিরুমল রাও ‘মেঘালয়ের রাজা রঘুবংশী মধুচন্দ্রিমা হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তাঁরা তেজেস্বরকে হত্যা করে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য ওই হত্যাকাণ্ডের মতো পরিকল্পনা করার কথাও ভেবেছিলেন।
তেলেঙ্গানা রাজ্যের গাদোওয়াল পুলিশের প্রধান টি শ্রীনিবাস রাও জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঐশ্বর্য ও তিরুমল রাও পুলিশকে বলেছেন, তাঁরা প্রাথমিকভাবে রাজা রঘুবংশীকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই তেজেস্বরকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। পরিকল্পনাটি ছিল সহজ—ঐশ্বর্য তেজেস্বরকে বাইকে করে বাইরে নিয়ে যেতে রাজি করাবেন। পথে ভাড়াটে খুনিরা তাঁদের ওপর হামলা করবে এবং তেজেস্বরকে হত্যা করা হবে। এরপর ঐশ্বর্য তিরুমল রাওয়ের সঙ্গে পালিয়ে যাবেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, এতে পুলিশ বিভ্রান্ত হবে এবং হত্যা ও অপহরণের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে।
রাজা রঘুবংশী হত্যার ঘটনাটিও ঠিক এভাবেই ঘটেছিল। রাজার মরদেহ পাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী সোনম কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। পরে পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে তাঁর সম্পৃক্ততা উদ্ঘাটন করে। তবে ঐশ্বর্য ও তিরুমল রাও জানিয়েছেন, তাঁরা এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করলেও পরে তা বাতিল করে অন্য বিকল্পগুলো বিবেচনা করেছিলেন।
পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ২৩ বছর বয়সী ঐশ্বর্য তাঁর স্বামীর বাইকে একটি জিপিএস ডিভাইস লাগিয়েছিলেন, যাতে তাঁরা তাঁর গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারেন। তাঁরা তেজেস্বরের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে খবর দেওয়ার জন্য প্রতিবেশী মোহন নামের এক ব্যক্তিকেও ভাড়া করেছিলেন।
এই হামলার ঘটনায় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—ঐশ্বর্য, তিরুমল রাও, তাঁর মা সুজাতা (যিনি তেজেস্বরকে হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে), তিরুমলের বাবা (একজন সাবেক কনস্টেবল, যিনি তাঁর ছেলেকে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে), তিন ভাড়াটে হত্যাকারী নাগেশ, পরশুরাম ও রাজেশ এবং প্রতিবেশী মোহন, যিনি তেজেস্বরের পিছু নিয়েছিলেন।
তেলেঙ্গানার গাদোওয়াল থেকে তেজেস্বরের নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ২১ জুন অন্ধ্রপ্রদেশের নন্দীয়াল জেলার পানিয়ামের একটি মাঠে তেজেস্বরের পচা-গলা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর বাহুতে তেলুগু ভাষায় লেখা ‘আম্মা’ ট্যাটু থেকে তাঁকে শনাক্ত করা হয়।
তেজেস্বরের পরিবার তাঁর নববিবাহিত স্ত্রী ঐশ্বর্যের এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। তেজেস্বরের বড় ভাই তেজাভার্দন বলেন, ‘ঐশ্বর্য একজন ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল। আমরা ঐশ্বর্যকে বিয়ে না করার জন্য তেজেস্বরকে সতর্ক করেছিলাম, কিন্তু সে তেজেস্বরকে বোঝায় যে, সে তাঁকে ভালোবাসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন সে নিখোঁজ হয়, আমি ঐশ্বর্যকে লক্ষ করছিলাম, সে এক ফোঁটা অশ্রুও ফেলেনি, কোনো দুঃখ ছিল না, তাই আমি পুলিশকে আমার সন্দেহের কথা জানাই এবং তারা তদন্ত শুরু করে।’
দুই প্রতিবেশী রাজ্যের পুলিশ একসঙ্গে কাজ শুরু করলে তদন্তে এমন এক ভয়াবহ অপরাধের চিত্র উন্মোচিত হয়। তদন্তের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তেজেস্বরের জীবন কেড়ে নেওয়ার জন্য পাঁচবার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং সবকটি থেকেই তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।
পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ঐশ্বর্যের মা সুজাতা একটি ফিন্যান্সিয়াল কোম্পানিতে পরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন। সেখানেই তিনি তিরুমল রাও নামের একজন অফিসারের সঙ্গে পরিচিত হন এবং ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক শুরু হয়। পরে সুজাতা ছুটিতে গেলে ঐশ্বর্য তাঁর জায়গায় কাজ শুরু করেন। সে সময় তিনিও তিরুমল রাওয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। ২০১৯ সালে তিরুমল রাও বিয়ে করেন। পুলিশ জানতে পারে, তিনি তাঁর স্ত্রীকেও হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।
এদিকে সুজাতা যখন জানতে পারেন, তাঁর মেয়ে তিরুমল রাওয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত, তখন তিনি তাঁকে এই সম্পর্ক শেষ করে তেজেস্বরকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তিনি তেজেস্বরকে আগে থেকেই চিনতেন। ঐশ্বর্য প্রথমে এই বিয়েতে রাজি হননি। তবে সুজাতা তাঁকে রাজি করান এবং তেজেস্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু যখন বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়, তখন হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান ঐশ্বর্য। পরে ফিরে এসে তেজেস্বরকে জানান, তাঁর মায়ের যৌতুক দেওয়ার টাকা নেই বলে তিনি লুকিয়ে ছিলেন। তিনি তাঁকে বিয়ে করতে চান। এ সময় তেজেস্বরের পরিবার এই বিয়েতে অমত দিলেও তিনি গত ১৮ মে ঐশ্বর্যকেই বিয়ে করেন।
তেজেস্বরের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ঐশ্বর্য বিয়ের সময়ও তিরুমল রাওয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। তাঁর কলরেকর্ড থেকে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে তাঁরা ২০০০টিরও বেশি ফোনকল করেছেন। জেলা পুলিশের প্রধান টি শ্রীনিবাস রাও এনডিটিভিকে বলেছেন, তেজেস্বর অফিসে থাকাকালীন এবং বিয়ের পরেও তাঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভিডিওকলে কথা বলতেন। এমনকি ঐশ্বর্যের বিয়ের দিনেও তাঁরা ভিডিওকলে ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তেজেস্বরকে হত্যার জন্য তিরুমল ভাড়াটে খুনিদের খুঁজে বের করেন। তিনজন ব্যক্তি তাঁর কাছে ঋণের জন্য এসেছিলেন। তিরুমল তাঁদের বলেছিলেন, তাঁরা যদি হত্যাকাণ্ডটি সফলভাবে শেষ করেন, তবে তাঁরা ঋণ পাবেন, সেই সঙ্গে আরও কিছু টাকা পাবেন।
তদন্তকারী একজন পুলিশ কর্মকর্তা কিছু সিসিটিভি ফুটেজ পান। সেখানে একটি ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি তেজেস্বরকে নিয়ে একটি গাড়িতে উঠছেন। তেজেস্বর একজন ভূমি জরিপকারী ও নৃত্য শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। গাদোওয়াল পুলিশের প্রধান টি শ্রীনিবাস রাও বলেন, ‘খুনিরা ভূমি জরিপের অজুহাতে তাঁকে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। ড্রাইভারের পাশের সিটে থাকা অবস্থায় তারা তাঁর মাথায় আঘাত করে, গলা কেটে দেয় এবং পরে পেটে ছুরিকাঘাত করে।’ তারা মরদেহটি গাড়ির সামনে থেকে পেছনে টেনে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের পোশাক রক্তে ভিজে গেলে তিরুমল রাও তাদের জন্য নতুন পোশাক কিনে দেন।
পুলিশের মতে, খুনিরা ভিডিওকলে তিরুমল রাওকে তেজেস্বরের মরদেহ দেখায় এবং তারপর তাঁর নির্দেশেই লাশ খালে ফেলে দেয়। জেলা পুলিশের প্রধান বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল কুরনুলে যে জমি জরিপ করতে গিয়েছিল, সেখানেই মরদেহ কবর দেবে, কিন্তু সেখানে কিছু লোক দেখতে পেয়ে তারা একটি খালে ফেলে দেয়। তবে খালে পর্যাপ্ত পানি ছিল না। আমরা মোবাইল ফোনের সিগন্যাল ব্যবহার করে তেজেস্বরের অবস্থান ট্র্যাক করি। যখন আমরা মরদেহ খুঁজে পাই, তখন সেটি পচে গিয়েছিল। তাঁর হাতে তেলেগু ভাষায় ‘‘আম্মা’’ লেখা একটি ট্যাটু আমাদের মরদেহ শনাক্ত করতে সাহায্য করে।’
তিরুমল রাও ও ঐশ্বর্য ভেবেছিলেন, তেজেস্বরের মরদেহ পাওয়া যাবে না। তাঁকে নিখোঁজ বলে চালিয়ে দেওয়া হবে। এই ভেবে তাঁরা পালানোর পরিকল্পনাও করেন। পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ঘটনার আগে তিরুমল রাও ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন এবং নিজে ও ঐশ্বর্যের জন্য লাদাখে যাওয়ার টিকিট বুক করেছিলেন। আন্দামানও তাঁদের বিবেচনাধীন একটি গন্তব্য ছিল।
আর সন্দেহ এড়াতে তেজেস্বরকে খুন করেও শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন ঐশ্বর্য। তবে তাঁর এই কৌশল কাজ করেনি। তেজেস্বর নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পরিবার পুলিশের কাছে যায় এবং ঐশ্বর্য ও তিরুমল রাও সম্পর্কে তাদের সন্দেহের কথা জানায়।
গাদোওয়াল পুলিশ যখন তেজেস্বরকে খুঁজে বের করতে মরিয়া, তখন প্রতিবেশী অন্ধ্রপ্রদেশের কুরনুল থেকে ফোন আসে। সেখানকার গ্রামবাসীরা জানান, কৃষিজমিতে একটি মরদেহ পাওয়া গেছে। তেলেঙ্গানা পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং নিশ্চিত করে, এটি তেজেস্বরের। এরপরই বেরিয়ে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় যুদ্ধের মঞ্চে আবারও সক্রিয় হয়েছে ইসরায়েল। এবার তারা সরাসরি জড়িয়েছে বিতর্কিত এক সশস্ত্র গ্যাং ‘আবু শাবাব পপুলার ফোর্স’-এর সঙ্গে। এই গ্যাংটির বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, মাদক পাচার, এমনকি আইএস সদস্য থাকার অভিযোগও রয়েছে।
১৩ মিনিট আগেতেহরানের বিখ্যাত আজাদি স্কয়ারে গতকাল বুধবার বিনা মূল্যের একটি কনসার্ট পরিবেশন করেছে তেহরান সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা। আয়োজনটি ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক ১২ দিনের সংঘর্ষে নিহত ইরানিদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাওয়া ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতা জোহরান মামদানি এবার বাংলাদেশি আন্টিদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। ২৪ জুন মধ্যরাতের পর সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে তাঁর হয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচারণায় অংশ নেওয়া ‘বাংলাদেশি আন্টিদেরও’ ধন্যবাদ দেন জোহরান।
২ ঘণ্টা আগেসংঘাতের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন খামেনি। এবার তিনি প্রকাশ্যে এসেই একটি ভিডিও বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘বিজয়ের’ দাবি করেছেন। ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম প্রকাশ্যে মন্তব্য।
২ ঘণ্টা আগে