Ajker Patrika

বিদেশি হলে সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করা হবে: আসামের মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা প্রতিনিধি  
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। ছবি: পিটিআই
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। ছবি: পিটিআই

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার একটি মন্তব্য ঘিরে দুই বাংলার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সরকারি এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিজেপির এ নেতা বলেছেন, আসামে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। যখনই কাউকে ‘বিদেশি’ বলে শনাক্ত করা হবে, তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে ‘পুশ ইন’ করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।

তাঁর এই মন্তব্যের পরই কলকাতার কূটনৈতিক ও মানবাধিকার মহলে প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে, এই বক্তব্য শুধুই রাজনৈতিক চাপ তৈরির উদ্দেশ্যে নয়, বরং নির্বাচনী রাজনীতির রণকৌশলও হতে পারে। তবে এই ধরনের মন্তব্য দুই দেশের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা।

বাংলাদেশ সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া না দিলেও ঢাকার একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এমন মন্তব্যকে অত্যন্ত ‘অমার্জনীয়’ ও ‘একতরফা সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাঁরা মনে করছেন, ১৯৭১ সালের পর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী এই ধরনের অবস্থান।

কলকাতার কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন যেমন ‘মাস হিউম্যান রাইটস’ ও ‘ডিএইচআরএফ’ মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে। তারা বলছে, একটা স্বাধীন দেশের ভেতরে কাউকে ‘বিদেশি’ ঘোষণা করা এবং জোর করে তাঁকে সীমান্তে ঠেলে দেওয়া মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এই ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে নিরীহ মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে।

রাজ্য রাজনীতিতেও এই ইস্যু নিয়ে পারস্পরিক তর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে কোনো রাজ্য সরকারকে এমন হুমকিসুলভ ভাষায় কথা বলা শোভা পায় না। এটা কূটনৈতিক শালীনতার পরিপন্থী।’

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ইস্যুতে বহু মানুষের ‘নাগরিকত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বহু মানুষকেই ‘ডি-ভোটার’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাঙালি মুসলমান ও হিন্দু রয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য আরও একবার সেই বিতর্ককে উসকে দিল।

কেন্দ্রের তরফ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি, তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে দিল্লি ও ঢাকা। এই বক্তব্য শুধু আসামের নয়, গোটা ভারতীয় কূটনীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছে বিশ্লেষক মহল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি বাসভবনে একাই থাকতেন শরীয়তপুরের ডিসি, পরিবার থাকত ঢাকায়

স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস দিলেন স্ত্রী

‘তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’ বলেই জুলাই যোদ্ধাকে মারধর

ইরানে ভূমিকম্প নিয়ে পারমাণবিক পরীক্ষার জল্পনা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

বুশেহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে, বিশ্লেষকদের হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত