Ajker Patrika

চীনকে ঠেকাতে তিব্বতিদের শিক্ষা ঢেলে সাজাচ্ছে ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৮: ৩৮
ভারতে প্রায় ৬০০ মঠ রয়েছে। ছবি: ট্রিভোডটকম
ভারতে প্রায় ৬০০ মঠ রয়েছে। ছবি: ট্রিভোডটকম

ভারত-চীনের সঙ্গে বহু পুরোনো বৈরী সম্পর্ক। সীমান্ত-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দেশ নিয়ে এই প্রতিবেশীদ্বয়ের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর অংশ হিসেবে চীন সীমান্তের কাছে হিমালয়ের ধর্মীয় কেন্দ্রগুলোর শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ভারত। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ভারত এই মাসে বৌদ্ধ মঠগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম একীভূত করা এবং ‘দেশপ্রেম জাগ্রত করার’ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।

বৌদ্ধধর্মের জন্মস্থান হিসেবে অনেক প্রাচীন মঠের আবাসস্থল ভারত। ১৯৫০-এর দশকে তিব্বতিদের আগমনে এখানে অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল, কিন্তু এখন ভারত ধর্মীয় শিক্ষাকে ‘চীনের প্রভাবমুক্ত’ করার চেষ্টা করছে।

সিকিম, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রায় ৬০০ মঠ চার ধরনের তিব্বতি এবং ভারতীয় বৌদ্ধ ঐতিহ্যের প্রশিক্ষণ দেয়। এই মঠগুলোতে আধুনিক বিষয় ও ইংরেজিও শেখানো হয়। তবে যে পাঠ্যক্রম অনুসরণ করা হয়, তা সামগ্রিক ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ভারতে ভাষা-ধর্ম-সংস্কৃতিনির্বিশেষে জাতীয় পরিচয় গড়ে তুলতে যে শিক্ষা কার্যক্রম অনুসরণ করা হচ্ছে, তার সঙ্গে এর মিল পাওয়া যায় না।

ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বৌদ্ধ কর্মী মালিং গোম্বু বলেন, ‘আমরা বৌদ্ধধর্মের শিক্ষার পাশাপাশি ভারতীয় পরিচয়ে শিক্ষিত করার চেষ্টা করছি, যাতে চীন হিমালয়ের মঠগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে।’

অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় বৌদ্ধ ঐতিহ্য ও জাতীয় শিক্ষার প্রচারকারী দলের অন্যতম সদস্য গোম্বু আরও বলেন, ‘পৃথক ও বিচ্ছিন্ন এই মঠগুলোতে বসবাসকারী এবং অধ্যয়নরত হাজার হাজার শিশুর ভারত কর্তৃক স্বীকৃত এবং সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত শিক্ষা পাওয়া প্রয়োজন।’

চীন এই সীমান্ত রাজ্য নিজেদের দাবি করে, যদিও নয়াদিল্লি এই দাবি অস্বীকার করে এসেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওপেন স্কুলিংয়ের পরিচালক রাজীব কুমার সিং বলেন, মঠগুলোতে সন্ন্যাসী বা সন্ন্যাসিনীরা যে ধর্মীয় শিক্ষার বাইরে যা শিক্ষা দিচ্ছেন, সেগুলো বাইরে স্বীকৃত শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

মঠের নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে কাজ করা রাজীব কুমার সিং বলেন, ‘ভারতীয় ও তিব্বতি পড়ুয়াদের ভারতীয় শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করা হবে। তারা (তিব্বতিরা) তিব্বতের ইতিহাস ও ঐতিহ্য শিখছে, তবে যেহেতু তারা এখানে বসবাস করছে, তাদের ভারত সম্পর্কেও জানা উচিত এবং ভবিষ্যতে মঠের বাইরে কর্মক্ষেত্রে নিজ জায়গা করে নেওয়ার জন্য যথাযথ শিক্ষা গ্রহণ প্রয়োজন।’

মঠগুলোতে ভারতীয় ও তিব্বতিরা বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা নিয়ে থাকে। ছবি: ট্রিভোডটকম
মঠগুলোতে ভারতীয় ও তিব্বতিরা বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা নিয়ে থাকে। ছবি: ট্রিভোডটকম

একটি সরকারি নথির বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন সীমান্তের ৩ হাজার কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অবস্থিত ২০টি মঠ এই নতুন পাঠ্যক্রম গ্রহণে রাজি হয়েছে এবং বাকিগুলো চলতি বছরের শেষের দিকে পর্যায়ক্রমে চলে আসবে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পাঠক্রম তৈরির জন্য মঠগুলোর সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করলেও নতুন পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ এবং মঠগুলোতে নতুন শিক্ষক নিয়োগে বেশ সময় লাগবে। কারণ, বেশির ভাগ স্কুল জনবিরল এলাকায় অবস্থিত। তবে অরুণাচল প্রদেশের গনৎসে গার্ডেন রবগি লিং মঠের মতো কিছু মঠের সন্ন্যাসীদের দাবি, তাঁদের পাঠ্যক্রম আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি বৌদ্ধ দর্শনের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে যত্নসহকারে তৈরি করা হয়েছে, যাতে তাঁরা ধর্মপ্রচারক হতে পারেন।

মঠের ধর্মীয় শিক্ষক গেশে ডনডুপ বলেন, ‘আমাদের মঠে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত পাঠ্য নির্দেশিকা প্রয়োজন বলে মনে করি না। কারণ, এটি ১৯৭০-এর দশক থেকে তৈরি প্রথাকে ভেঙে দিতে পারে।’

মঠগুলোতে ভারতীয় ও তিব্বতিরা বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা নিয়ে থাকে। ছবি: ট্রিভোডটকম
মঠগুলোতে ভারতীয় ও তিব্বতিরা বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা নিয়ে থাকে। ছবি: ট্রিভোডটকম

১৯৫৯ সালে চীনা সৈন্যদের হাতে দমনের পর আধ্যাত্মিক নেতা এবং শান্তিতে নোবেলজয়ী দালাই লামাসহ হাজার হাজার তিব্বতি ভারতে পালিয়ে আসেন। বর্তমানে দালাই লামার নির্বাসিত সরকার কেন্দ্রীয় তিব্বত প্রশাসন (সিটিএ) দ্বারা পরিচালিত বসতিতে প্রায় ৭৫ হাজার তিব্বতি বাস করে। সিটিএ কিছু মঠকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে, তবে তিব্বতি ঐতিহ্যের বাইরে থাকা মঠগুলোকে নয়।

মঠগুলোর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এবং ভারতীয় বৌদ্ধ পণ্ডিতেরা মিলে যে নতুন পাঠ্যবই তৈরি করেছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে রয়টার্স জানায়, বইগুলোতে ভারতের আধুনিক ও প্রাচীন ইতিহাস এবং তিব্বতের স্বাধীনতাসংগ্রামে তাদের ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে। বইগুলোতে ইংরেজি, হিন্দি ও স্থানীয় ভোটি ভাষায় বাধ্যতামূলক অধ্যয়নের পাশাপাশি গণিত, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

সিটিএর শিক্ষামন্ত্রী থারলাম দোলমা বলেন, ঐতিহাসিকভাবে মঠের স্কুলগুলো তাদের অর্থায়নের ভিত্তিতে সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীদের দ্বারা পরিচালিত হয়।

তবে দালাই লামার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মঠগুলোতে ভারতীয় ও তিব্বতিরা বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা নিয়ে থাকে। ছবি: ট্রিভোডটকম
মঠগুলোতে ভারতীয় ও তিব্বতিরা বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা নিয়ে থাকে। ছবি: ট্রিভোডটকম

বৈদেশিক অর্থায়নে এবং বৌদ্ধধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায় দ্বারা কয়েক দশক ধরে পরিচালিত এই মঠগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ, সন্ন্যাসীদের বৃত্তি প্রদান এবং বার্ষিক পরীক্ষার পথ প্রশস্ত করার জন্য শিগগির তহবিল প্রদান শুরু করবে ভারত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সীমান্তবর্তী কৌশলগত এলাকাগুলোর মঠগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম চীনের প্রভাব থেকে বিচ্ছিন্ন করার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে মন্তব্য চেয়ে যোগাযোগ করা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ই-মেইলের জবাব দেননি।

২০২০ সালে সীমান্তে সংঘর্ষে ২০ জনের বেশি সেনা নিহতের পর সৃষ্ট সামরিক অচলাবস্থা দূর করতে কাজ শুরু করেছে এশিয়ার দুই পরাশক্তি। তবে সম্পর্কের উন্নয়ন ধীরগতিতে হলেও সীমান্ত এলাকাগুলোর উন্নয়নে আরও ব্যয়ের লক্ষ্য ভারতের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বন্ডি বিচে সন্ত্রাসী হামলায় শনাক্ত কে এই নাভিদ আকরাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিডনির বন্ডি বিচে দুই হামলাকারীর মধ্যে একজন নাভিদ আকরাম। ছবি: এক্স
সিডনির বন্ডি বিচে দুই হামলাকারীর মধ্যে একজন নাভিদ আকরাম। ছবি: এক্স

সিডনির বন্ডি বিচে দুই হামলাকারীর মধ্যে একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ নিশ্চিত করেছে, হামলাকারী যুবক ২৪ বছর বয়সী নাভিদ আকরাম। তিনি সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিমের বনিরিগ এলাকার বাসিন্দা।

অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার সময় আকরাম গুলিবিদ্ধ হন। এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে এবং বর্তমানে তিনি হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্য বন্দুকধারী ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

বর্তমানে বনিরিগের পাতিয়া এলাকায় আকরামের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এই সম্পত্তি তাঁর পরিবার এক বছর ধরে ব্যবহার করছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে বলছেন, নাভিদ আকরাম পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। তবে এ বিষয়ে এখনো তেমন শক্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এই ভয়াবহ হামলায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ১২ জন নিহত ও কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার সময় বন্ডি বিচে ইহুদিদের অন্যতম প্রধান উৎসব হানুক্কার প্রথম দিনের একটি অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘চানুকা বাই দ্য সি ২০২৫’। আজ রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে বিচসংলগ্ন শিশুদের খেলার মাঠে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। চাবাদ অব বন্ডি নামের একটি ইহুদি কেন্দ্র এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ক্যাম্পবেল প্যারেডসংলগ্ন বন্ডি প্যাভিলিয়নের কাছে একটি গাড়ি থেকে দুই ব্যক্তি নেমে আসেন। এরপর তাঁরা গুলি চালাতে শুরু করেন।

এদিকে এ ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইমামস কাউন্সিল ও কাউন্সিল অব ইমামস এনএসডব্লিউ এক যৌথ বিবৃতিতে বন্ডি বিচে গুলিবর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের সমাজে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের পূর্ণ জবাবদিহি ও আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।’

তারা নিহত ব্যক্তিদের পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত ও এই ভয়াবহ হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়সহ সব অস্ট্রেলিয়ানের উচিত ঐক্য, সহানুভূতি ও সংহতি নিয়ে একসঙ্গে দাঁড়ানো, সহিংসতাকে প্রত্যাখ্যান করা এবং সামাজিক সম্প্রীতি ও সব অস্ট্রেলিয়ানের নিরাপত্তার প্রতি আমাদের যৌথ অঙ্গীকার নিশ্চিত করা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লিংকডইনে গার্লফ্রেন্ড চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর যা ঘটল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৩
‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া।
‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া।

চাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।

ভারতের হরিয়ানার গুরুগ্রামের দীনেশ বৈরাগী। ‘পূর্ণকালীন’ চাকরির অফার দিয়ে নারীবন্ধু খুঁজেছেন লিংকডইনে। ওই বিজ্ঞাপনের বিবরণে সম্ভাব্য ‘গার্লফ্রেন্ড’-এর জন্য প্রয়োজনীয় নানা গুণাবলির কথাও উল্লেখ করেছেন দীনেশ।

টেক মাহিন্দ্রার সাবেক সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট দীনেশ চাকরির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন, ‘গুরগাঁওয়ে পূর্ণকালীন গার্লফ্রেন্ডের পদ খালি আছে। সরাসরি দেখা করা এবং দূর থেকে দায়িত্ব পালন দুটোই করতে হবে।’

প্রযুক্তিখাতে অভিজ্ঞ এই যুবক চাকরির বিজ্ঞাপনে আরও লিখেছেন, ‘এই ভূমিকায় শক্তিশালী আবেগগত সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তা বজায় রাখা, অর্থবহ কথোপকথনে অংশ নেওয়া, সঙ্গ দেওয়া, পারস্পরিক সমর্থন এবং সঙ্গীর সঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রম বা শখে যুক্ত থাকার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘সক্রিয় যোগাযোগ, পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়া এই ভূমিকাটির ভিত্তি হবে। পাশাপাশি যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইতিবাচক ও সহায়ক সম্পর্কের পরিবেশ গড়ে তোলাও এর অন্তর্ভুক্ত।’

দীনেশ চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার আবেগগত বুদ্ধিমত্তা, শোনার সক্ষমতা, সহমর্মিতা ও আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তিনি জানান, এমন একজনকে তিনি খুঁজছেন, যাঁর মধ্যে রসবোধ, দয়া এবং ইতিবাচক মানসিকতা থাকবে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও যৌথ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। শখ, কার্যক্রমে আগ্রহ বা একসঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা গড়ে তোলার মানসিকতারও প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি সম্পর্কের ভেতরে পারস্পরিক সমর্থন ও বিকাশে আগ্রহী হতে হবে।’

লিংকডইনে দেওয়া এই চাকরি খোঁজার মতো করে গার্লফ্রেন্ড খোঁজার পোস্টটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি নিয়ে রসিকতার বন্যা বইয়ে দেন নেটিজেনরা। অনেকেই এই অদ্ভুত চাকরির বিজ্ঞাপন নিয়ে ঠাট্টা–মশকরা করেন, আবার কেউ কেউ সরাসরি পারিশ্রমিক বা বেতন প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চান।

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ওহ, এখন সব পরিষ্কার! তাহলে আমার প্রাক্তন আমার সঙ্গে ছয় মাস গার্লফ্রেন্ড হিসেবে ইন্টার্নশিপ করেছিল, এরপর অন্য কোথাও ফুলটাইম গার্লফ্রেন্ডের চাকরি পেয়ে চলে গেছে।’

আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘আপনি যদি আসলেই ভারতীয় হন, তাহলে যেকোনো অ্যাপই ডেটিং অ্যাপ বানিয়ে ফেলবেন।’

তৃতীয় একজন লিখেছেন, ‘পদের বিবরণ দেখে বেশ চমকপ্রদই লাগছে, কিন্তু স্যালারি কত?’

একজন ব্যবহারকারী প্রশ্ন করেন, ‘তিনি কি লিংকডইনের পোস্টের মাধ্যমে কোনো পরীক্ষা চালাচ্ছেন?’ উত্তরে দীনেশ বলেন, ‘একেবারেই না। এটি একটি প্রকৃত শূন্যপদ। প্রোফাইলটি ভালোভাবে বোঝার জন্য আমি চাকরির বিবরণ দেখার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কেউ যদি আগ্রহী ও যোগ্য হন, তাদেরও নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।’

শেষ আপডেট অনুযায়ী দীনেশ জানিয়েছেন, এই ‘চাকরির’ জন্য এরইমধ্যে ২৬ জন আবেদন করেছেন। এখন নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি বিচে বন্দুকধারীদের গুলি, নিহত অন্তত ১০

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪২
সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে বন্দুকধারীদের হামলায় অনেক হতাহত। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে বন্দুকধারীদের হামলায় অনেক হতাহত। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বন্ডি বিচে ভয়াবহ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ বন্ডি বিচ ও এর সংলগ্ন এলাকায় বড় আকারের অপারেশন শুরু করেছে।

নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ ‘এক্স’ হ্যান্ডলে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পুলিশি অভিযান এখনো চলছে এবং জনসাধারণকে ওই এলাকা এড়িয়ে চলার অনুরোধ করা হচ্ছে।

পুলিশের বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দুক হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হামলাকারী বা বন্দুকধারীও রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১২ জন সাধারণ নাগরিক, দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, হামলার সময় বন্ডি বিচে ইহুদিদের অন্যতম প্রধান উৎসব হানুক্কার প্রথম দিনের একটি অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘চানুকা বাই দ্য সি ২০২৫’ এবং এটি আজ রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে বিচসংলগ্ন শিশুদের খেলার মাঠের কাছে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। চাবাদ অব বন্ডি নামের একটি ইহুদি কেন্দ্র এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।

হামলার সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা প্রত্যক্ষদর্শী ব্যারি জানান, তিনি তাঁর সন্তানদের নিয়ে হানুক্কার অনুষ্ঠানে ছিলেন, তখনই গুলির শব্দ শুরু হয়। তিনি দেখতে পান, দুজন ব্যক্তি একটি ব্রিজের ওপর থেকে জনসমাবেশের দিকে গুলি চালাচ্ছেন। তিনি ঘটনাস্থলে একাধিক মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি সন্তানদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে বন্ধুর গাড়িতে পালিয়ে যান। ব্যারি এ সময় অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে একটি ইহুদি অনুষ্ঠানে এমন হামলা হওয়াকে ‘অবিশ্বাস্য’ বলে বর্ণনা করেন।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী, যিনি ব্রোন্টে বিচে ছিলেন, তিনি প্রায় ২০টি গুলির শব্দ শুনতে পান। প্রথমে ভেবেছিলেন, আতশবাজির শব্দ। পরে হেলিকপ্টার উড়তে দেখে ও শুটিংয়ের খবর পেয়ে তিনি ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে পারেন।

অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি বন্দুকধারীদের অস্ত্র নামিয়ে রাখার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা সে কথায় কান দেননি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ও যাচাই করা ভিডিওগুলোতে বন্ডি বিচের ঘটনার পরের ভয়ংকর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ক্যাম্পবেল প্যারেডের কারপার্ক থেকে সমুদ্রসৈকতের দিকে যাওয়া একটি ছোট সেতু থেকে দুজন বন্দুকধারী গুলি চালাচ্ছেন। সেতুটি বন্ডি পার্ক প্লেগ্রাউন্ড থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে অবস্থিত।

অন্য একটি যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যায়, একই সেতুর ওপর বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। একজনের বুকে সিপিআর দেওয়া হচ্ছে আর অন্য একজন চিৎকার করে বলছেন, ‘সে মারা গেছে, সে মারা গেছে।’ আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, নিথর পড়ে থাকা অন্য এক ব্যক্তির জামাকাপড় কাঁচি দিয়ে কেটে দেওয়া হচ্ছে। মেঝেতে রক্তের দাগ, একটি বুলেটপ্রুফ ভেস্ট এবং কমপক্ষে আটটি গুলির খোসা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ঘটনাস্থলে একটি বিশেষ নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করেছে এবং হাতে তৈরি বিস্ফোরক (আইইডি) নিষ্ক্রিয় করার জন্য বিশেষ দল ও সরঞ্জাম আনা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে এই এক্সক্লুশন জোনের সঠিক অবস্থান এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এইচ–১বি ভিসা ফি বৃদ্ধি: ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২০ অঙ্গরাজ্যের মামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৬
ট্রাম্প এইচ–১বি ভিসার ফি বাড়ানোয় তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে ২০ মার্কিন অঙ্গরাজ্য। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প এইচ–১বি ভিসার ফি বাড়ানোয় তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে ২০ মার্কিন অঙ্গরাজ্য। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন দেশটিতে বিদেশি দক্ষ শ্রমশক্তি নিয়োগ দেওয়ার ভিসা এইচ–১ বি’র ফি বাড়িয়ে ১ লাখ ডলার করেছেন। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ২০টি মার্কিন অঙ্গরাজ্য। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বনটা গত শুক্রবার ঘোষণা করেছেন, এইচ–১বি ভিসা আবেদনের ফি বাড়িয়ে ১ লাখ মার্কিন ডলার করায় ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে ক্যালিফোর্নিয়া ও আরও উনিশটি রাজ্য মামলা করছে।

বনটা দাবি করেন, দক্ষ কর্মীদের জন্য নির্ধারিত এই ভিসার জন্য ফি বৃদ্ধি বেআইনি। কারণ, এটি কংগ্রেসে অনুমোদিত সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং এই কর্মসূচি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাদের মূল উদ্দেশ্যকে ক্ষুণ্ন করছে। মামলার সঙ্গে যুক্ত সকল রাজ্যেই অ্যাটর্নি জেনারেলরা ডেমোক্র্যাট দলের।

সান ফ্রান্সিসকোতে একটি সংবাদ সম্মেলনে বনটা সাফ বলেন, ‘কোনো প্রেসিডেন্টের প্রশাসন অভিবাসন আইনকে নতুন করে লিখতে পারে না। কোনো প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের মতো সরকারকে উপেক্ষা করতে পারেন না, সংবিধান বা আইনকেও এড়িয়ে যেতে পারেন না।’

এই ভিসার সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী হলো বড় টেক কোম্পানিগুলো, যারা দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিয়ে আসে। ট্রাম্পের মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন ক্যাম্পেইনের রিপাবলিকান সমর্থকেরা অভিযোগ করছেন, কোম্পানিগুলো সস্তা শ্রমের জন্য আমেরিকানদের পাশ কাটিয়ে এই কর্মসূচির অপব্যবহার করছে। কিন্তু বনটা যুক্তি দেন, এই ফি আরোপের ফলে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য খাতেও শ্রমিকের ঘাটতি আরও বাড়বে। এতে চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষক, নার্স ও সরকারি সেবাকর্মীর মতো পদগুলো পূরণ করা আরও কঠিন হবে।

তিনি এও সতর্ক করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সেপ্টেম্বরে এক নির্বাহী ঘোষণায় যে ১ লাখ ডলারের ফি ধার্য করেছেন, তা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোমের ইচ্ছানুযায়ী বেছে বেছে প্রয়োগ করা হতে পারে। দক্ষ অভিবাসন এবং বিশেষ করে এইচ–১বি ভিসা এর আগেও ট্রাম্পের জনতুষ্টিমূলক সমর্থক আর বিশ্বজুড়ে প্রতিভা আকর্ষণে চিন্তিত সিলিকন ভ্যালির মিত্রদের মধ্যে মতভেদের কারণ হয়েছিল।

এই নীতি ঘোষণার পর এবং প্রোগ্রামটি ব্যবহারকারী প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার পর প্রেসিডেন্ট তাঁর অবস্থানে খানিকটা নমনীয় হয়েছেন বলেই মনে হয়। গত মাসে ফক্স নিউজের উপস্থাপক লরা ইনগ্রাহামের সঙ্গে এইচ–১বি ভিসা নিয়ে আলোচনার সময় তিনি এই দাবি অস্বীকার করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে যথেষ্ট প্রতিভাবান মানুষ রয়েছে; তিনি তখন বলেছিলেন যে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কর্মীর প্রয়োজন এখনো আছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র টেইলর রজার্স গত শুক্রবার প্রশাসনের পদক্ষেপের পক্ষ নিয়ে বলেন, এটি কেবল আইনসম্মতই নয়, বরং এটি ‘এইচ–১বি প্রোগ্রামের প্রয়োজনীয় সংস্কারের দিকে একটি জরুরি, প্রাথমিক, ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপ।’

মামলার জবাবে এক বিবৃতিতে রজার্স বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকান কর্মীদের প্রথম স্থানে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এবং এইচ–১বি ভিসার ওপর তাঁর এই সাধারণ পদক্ষেপ সে কাজটাই করছে। এটি কোম্পানিগুলোকে সিস্টেমের অপব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করবে এবং আমেরিকানদের মজুরি কমিয়ে দেওয়া থেকে বিরত রাখবে, আবার যে সকল নিয়োগকর্তার বিদেশ থেকে সেরা প্রতিভা আনার প্রয়োজন, তাঁদের কাছে নিশ্চয়তাও দেবে।’

বনটা শুক্রবার এইচ–১বি প্রক্রিয়ায় সুনির্দিষ্ট কোনো সংস্কারের সুপারিশ করেননি, যদিও তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন যে যেকোনো প্রোগ্রাম বা নীতির মতোই এরও ‘সম্ভবত উন্নতির সুযোগ রয়েছে।’ চলতি বছরের শুরুর দিকে ইউএস চেম্বার অব কমার্স একটি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে এই নতুন ফি-এর বিরুদ্ধে আলাদা একটি মামলা দায়ের করেছিল। তাদের আপত্তি ছিল যে প্রশাসন এইচ–১বি প্রোগ্রাম পরিচালনাকারী আইনের বিধানগুলো অগ্রাহ্য করেছে। এ ছাড়া, ভিন্ন ভিন্ন খাতের শ্রমিক সংগঠনসহ আরও বড় একটি গোষ্ঠী থেকেও আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নতুন মামলা ম্যাসাচুসেটসের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা হবে এবং এর নেতৃত্ব দেবেন বনটা ও বে স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল আন্দ্রেয়া জয় ক্যাম্পবেল। এই নিয়ে বনটা চলতি বছর ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ৪৯ বারের মতো আদালতে গেলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত