কলকাতা প্রতিনিধি
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) নিয়মে বড় পরিবর্তন ঘোষণা করেছে। বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সমস্ত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রতিবেশী দেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে ভারতে প্রবেশ করেছেন এবং যাঁদের বৈধ পাসপোর্ট-ভিসা কিংবা কাগজপত্র নেই বা থাকলেও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে, তাঁরা এবার কাগজ ছাড়াই আবেদন করতে পারবেন নাগরিকত্বের জন্য, যা কার্যত ২০১৪ সালের নির্ধারিত সীমাকে বাড়িয়ে দিয়ে এক নতুন দিকের উন্মোচন করল।
এর ফলে বিপুলসংখ্যক অনুপ্রবেশকারী জনগোষ্ঠী সরাসরি উপকৃত হবেন—এমনটাই মনে করা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
এই পরিবর্তনকে শুধু প্রশাসনিক নির্দেশিকা হিসেবে দেখা হচ্ছে না, বরং বিজেপির দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেই ধরা হচ্ছে। কারণ একদিকে এই পরিবর্তনের মাধ্যমে অমুসলিম জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে সংবিধানের মৌলিক অধিকারে সমতার ধারা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিরোধীরা বলছে, বিজেপি চাইছে ধর্মকে ভিত্তি করে দেশকে ধাপে ধাপে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করতে এবং সেই লক্ষ্যেই ভোটের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। কারণ এরা সরাসরি এই আইনের আওতায় আসবেন।
অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি কেবল প্রশাসনিক সুবিধা নয়, বরং ভোটের কৌশল, যাতে বিজেপি নিজেদের স্থায়ী ভোট ব্যাংক তৈরি করতে পারে।
বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে, যেখানে অমুসলিম অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
আসামের ছাত্র সংগঠন আসু এরই মধ্যে এই নতুন নির্দেশনার বিরোধিতা করেছে।
তাদের অভিযোগ, এর মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের আসাম চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করা হচ্ছে। চুক্তিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর যে কেউ আসামে প্রবেশ করলে তিনি বৈধ হবেন না। ধর্ম-নির্বিশেষে বিজেপির এই পদক্ষেপে সেই ঐতিহাসিক চুক্তিকে অমান্য করছে এবং আসামে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধর্মভিত্তিক বৈধতা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে এটি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই শুরু হলে আশ্চর্যের কিছুই থাকবে না।
তবে বিজেপি মনে করছে, সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা হিন্দু শরণার্থী গোষ্ঠীর মন জয় করতে পারবে এবং সেটিই তাদের নির্বাচনী কৌশলের মূল লক্ষ্য।
বিরোধী শিবির মনে করছে, বিজেপি মূলত নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘু বিরোধী উগ্র হিন্দুত্ববাদী কার্ড খেলতে চাইছে, যা একদিকে হিন্দু ভোটকে একত্র করবে; অন্যদিকে দেশকে আরও বিভক্ত করবে।
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, নাগরিকত্বের প্রশ্নকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগ করে দেওয়া হলে সমাজে বৈষম্য বাড়বে, সাম্প্রদায়িক বিভাজন গভীর হবে এবং রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বিজেপি রাষ্ট্রনীতিকে বিপজ্জনক পথে নিয়ে যাচ্ছে।
সমালোচকেরা বলছেন, এটি ভোটবাক্সে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগোষ্ঠীকে খুশি করার জন্য নিছক কৌশলগত পদক্ষেপ।
অন্যদিকে বিজেপির সমর্থকেরা বলছেন, ন্যায়বিচার করা হলো সেই সব হিন্দু শিখ বৌদ্ধ জৈন পার্সি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে, যারা প্রতিবেশী দেশে বছরের পর বছর ধরে নিপীড়নের শিকার হয়েছে। তাদের স্বপ্ন পূরণের পথ খুলে দেওয়া হলো।
যদিও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন মূলত সেই সব সম্প্রদায়ের মানুষ, যাদের বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের রাজনৈতিক ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশেষত মতুয়া সমাজের মতো জনগোষ্ঠী; পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণে যারা অত্যন্ত প্রভাবশালী।
বিশ্লেষকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, এই সুযোগ কি মানবিক, নাকি নিছক ‘রাজনৈতিক মানবাধিকারের’ নামে বিজেপি হিন্দুত্ববাদী কৌশল বাস্তবায়ন করছে?
ভবিষ্যতে এর প্রভাব ভারতীয় রাজনীতির মানচিত্রে কেমন পড়বে, সেটিই এখন আলোচ্য বিষয়।
আরও খবর পড়ুন:
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) নিয়মে বড় পরিবর্তন ঘোষণা করেছে। বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সমস্ত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রতিবেশী দেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে ভারতে প্রবেশ করেছেন এবং যাঁদের বৈধ পাসপোর্ট-ভিসা কিংবা কাগজপত্র নেই বা থাকলেও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে, তাঁরা এবার কাগজ ছাড়াই আবেদন করতে পারবেন নাগরিকত্বের জন্য, যা কার্যত ২০১৪ সালের নির্ধারিত সীমাকে বাড়িয়ে দিয়ে এক নতুন দিকের উন্মোচন করল।
এর ফলে বিপুলসংখ্যক অনুপ্রবেশকারী জনগোষ্ঠী সরাসরি উপকৃত হবেন—এমনটাই মনে করা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
এই পরিবর্তনকে শুধু প্রশাসনিক নির্দেশিকা হিসেবে দেখা হচ্ছে না, বরং বিজেপির দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেই ধরা হচ্ছে। কারণ একদিকে এই পরিবর্তনের মাধ্যমে অমুসলিম জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে সংবিধানের মৌলিক অধিকারে সমতার ধারা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিরোধীরা বলছে, বিজেপি চাইছে ধর্মকে ভিত্তি করে দেশকে ধাপে ধাপে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করতে এবং সেই লক্ষ্যেই ভোটের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। কারণ এরা সরাসরি এই আইনের আওতায় আসবেন।
অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি কেবল প্রশাসনিক সুবিধা নয়, বরং ভোটের কৌশল, যাতে বিজেপি নিজেদের স্থায়ী ভোট ব্যাংক তৈরি করতে পারে।
বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে, যেখানে অমুসলিম অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
আসামের ছাত্র সংগঠন আসু এরই মধ্যে এই নতুন নির্দেশনার বিরোধিতা করেছে।
তাদের অভিযোগ, এর মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের আসাম চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করা হচ্ছে। চুক্তিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর যে কেউ আসামে প্রবেশ করলে তিনি বৈধ হবেন না। ধর্ম-নির্বিশেষে বিজেপির এই পদক্ষেপে সেই ঐতিহাসিক চুক্তিকে অমান্য করছে এবং আসামে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধর্মভিত্তিক বৈধতা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে এটি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই শুরু হলে আশ্চর্যের কিছুই থাকবে না।
তবে বিজেপি মনে করছে, সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা হিন্দু শরণার্থী গোষ্ঠীর মন জয় করতে পারবে এবং সেটিই তাদের নির্বাচনী কৌশলের মূল লক্ষ্য।
বিরোধী শিবির মনে করছে, বিজেপি মূলত নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘু বিরোধী উগ্র হিন্দুত্ববাদী কার্ড খেলতে চাইছে, যা একদিকে হিন্দু ভোটকে একত্র করবে; অন্যদিকে দেশকে আরও বিভক্ত করবে।
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, নাগরিকত্বের প্রশ্নকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগ করে দেওয়া হলে সমাজে বৈষম্য বাড়বে, সাম্প্রদায়িক বিভাজন গভীর হবে এবং রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বিজেপি রাষ্ট্রনীতিকে বিপজ্জনক পথে নিয়ে যাচ্ছে।
সমালোচকেরা বলছেন, এটি ভোটবাক্সে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগোষ্ঠীকে খুশি করার জন্য নিছক কৌশলগত পদক্ষেপ।
অন্যদিকে বিজেপির সমর্থকেরা বলছেন, ন্যায়বিচার করা হলো সেই সব হিন্দু শিখ বৌদ্ধ জৈন পার্সি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে, যারা প্রতিবেশী দেশে বছরের পর বছর ধরে নিপীড়নের শিকার হয়েছে। তাদের স্বপ্ন পূরণের পথ খুলে দেওয়া হলো।
যদিও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন মূলত সেই সব সম্প্রদায়ের মানুষ, যাদের বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের রাজনৈতিক ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশেষত মতুয়া সমাজের মতো জনগোষ্ঠী; পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণে যারা অত্যন্ত প্রভাবশালী।
বিশ্লেষকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, এই সুযোগ কি মানবিক, নাকি নিছক ‘রাজনৈতিক মানবাধিকারের’ নামে বিজেপি হিন্দুত্ববাদী কৌশল বাস্তবায়ন করছে?
ভবিষ্যতে এর প্রভাব ভারতীয় রাজনীতির মানচিত্রে কেমন পড়বে, সেটিই এখন আলোচ্য বিষয়।
আরও খবর পড়ুন:
পশ্চিমা গুরুত্বপূর্ণ দেশের কাছ থেকে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র স্বীকৃতি মিলেছে। গত রোববার যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা স্বীকৃতি দেওয়ার পর ফিলিস্তিনে এখনো হামলা চলছে। তবে এরপরও পশ্চিমাদের স্বীকৃতিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
১ ঘণ্টা আগেপ্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। ইরানের মরফিন ও অন্যান্য ওপিওয়েড উৎপাদকেরা এত দিন জব্দকৃত অবৈধ আফগান মাদকের ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু ২০২২ সালে তালেবান সরকার আফিম চাষে কড়াকড়ি আরোপ করার পর জব্দকৃত মাদকের পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমে যায়।
৩ ঘণ্টা আগেজাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচনায় এইচ-১বি ভিসা ইস্যু ও বাণিজ্যিক টানাপোড়েন প্রধানত গুরুত্ব পেয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেওই নারীর স্বামী আমাজনের একজন প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন। তিনি স্ত্রীকে বিচ্ছেদ বাবদ ৩৫ লাখ রুপি দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর স্ত্রী দাবি করেছেন ৫ কোটি রুপি। তবে ওই নারীর আইনজীবী বলেন, মধ্যস্থতা কেন্দ্রে ৫ কোটি রুপি থেকে খোরপোশের পরিমাণ কমানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে