Ajker Patrika

‘যুদ্ধ’ নিয়ে যা ভাবছেন রাশিয়ায় থাকা ইউক্রেনীয়রা

আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ০০
‘যুদ্ধ’ নিয়ে যা ভাবছেন রাশিয়ায় থাকা ইউক্রেনীয়রা

মুখোমুখি রাশিয়া-ইউক্রেন। যেকোনো সময় বেঁধে যেতে পারে যুদ্ধ। ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন এবং বেলারুশের সৈন্যদের সঙ্গে মহড়ায় অংশ নেওয়া এই যুদ্ধের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে অন্তত ৭০ শতাংশ সেনা জড়ো করেছে রাশিয়া। এর অর্থ হচ্ছে হামলার প্রস্তুতি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অবশ্য সব সময়ই বলে আসছেন, ইউক্রেনে হামলা করার কোনো ইচ্ছা তাঁদের নেই।

এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ায় বসবাসরত ইউক্রেনের মানুষ কী ভাবছেন? আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় এসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। 

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন সরকারের ২০১৮ সালের এক হিসাবমতে, রাশিয়ায় ৩০ লাখের কাছাকাছি ইউক্রেনের নাগরিক বাস করেন। ইউক্রেনীয়রাই রাশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রবাসী। ইভান আলেক্সিভিচ তেমনই একজন প্রবাসী ইউক্রেনীয়। তিনি প্রায় চার বছর ধরে মস্কো থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরের কিরভ শহরে বাস করছেন। ৬৭ বছর বয়সী ইভান এসেছেন ইউক্রেনের লুহানস্ক থেকে। 

ইভান আলেক্সিভিচ বলেন, ‘আমি এখন রাশিয়ার নাগরিক। কিন্তু আমার অন্তরে ইউক্রেন, আমার মাতৃভূমি। আমি সেখানে জন্মেছি, সেখানকার স্কুলে পড়েছি। চাইলেই আমি লুহানস্কে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সুখে-শান্তিতে থাকতে পারতাম। কিন্তু ২০১৪ সালে আমাদের ওপর মর্টার হামলা হয়। আমরা তখন আমাদের অ্যাপার্টমেন্টের বেসমেন্টে লুকিয়ে ছিলাম। দিন-রাত গোলাগুলি চলছিল। সত্তরের দশকে সেনাসদস্য হিসেবে আমি অ্যাঙ্গোলায় ছিলাম, সেখানে তখন যুদ্ধ চলছিল। ইউক্রেনে এমনটা চলতে পারে আমি কল্পনাও করিনি।’ 

ইভান আলেক্সিভিচ জানান, এর পরই তিনি মূলত সপরিবারে রাশিয়ায় চলে আসেন। 

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, রুশ, ইউক্রেন ও বেলারুশের মানুষ আসলে একটাই জাতি, যারা বিভক্ত হয়ে গেছে। অনেক বিখ্যাত রুশ ব্যক্তিত্ব যেমন ফেডর এমেলিয়েনকো ইউক্রেন বংশোদ্ভূত। বিখ্যাত লেখক নিকোলাই গোগলও ইউক্রেন থেকে এসেছিলেন। 

পুতিনের এই বক্তব্যকে সমর্থন করেন ইভান। তিনি বলেন, ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদকে তিনি ঘৃণা করেন। 

ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের দিক থেকে এই তিন দেশ কাছাকাছি হলেও তারা এখনো এক জাতি—এই ধারণা নিয়ে বিতর্ক আছে। 

ইভান আলেক্সিভিচ আরও বলেন, “আমি সোভিয়েত ইউনিয়নে বড় হয়েছি। সেখানে ভাইবোনরা একসঙ্গে ছিলাম। ১৯৭০ সালে আমি পশ্চিম ইউক্রেনে সেনাবাহিনীতে কাজ করেছি। সেখানে ‘ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদ’ একটি গালি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। রাশিয়াতেও এটি জাতিগত গালি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।” 

৩০ বছর বয়সী লেনা বাস করেন সেন্ট পিটার্সবার্গে। তিনি তাঁর পূর্ণ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার স্বামী এখানে কাজ করতে এসেছেন। আমি তাঁর সঙ্গে এসেছি। ছেলেমেয়েরাও আমাদের সঙ্গে আছে। আমরা হয়তো একদিন ইউক্রেনে ফিরে যাব। আমি বিশ্বাস করি না, রাশিয়া আমার দেশে আক্রমণ করতে পারে।’ 

লেনা ইউক্রেনের মারিওপোল থেকে ২০১৪ সালে রাশিয়ায় এসেছেন। 

ইউক্রেনের মানুষের জন্য সমবেদনা প্রকাশ করেন ৩৪ বছর বয়সী আন্দ্রে জেচিকভ। তিনি ক্রিমিয়ার কোকতেবেল থেকে অভিবাসী হয়ে রাশিয়ায় এসেছেন। আন্দ্রে বলেন, ‘ক্রিমিয়ার মানুষ হিসেবে আমি ২০১৪ সালের ঘটনা দ্বারা প্রভাবিত হইনি। আমার চারপাশে অনেক কিছু বদলে গেছে—আইন, মুদ্রা, নীতি ইত্যাদি। আপনি জানেন, এসবের ওপর একটি সমাজ দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু এই সবকিছু বদলে গেলেও আমার চারপাশের মানুষগুলোর খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি। তারা একই রকম মানসিকতা নিয়ে আছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেঘমল্লারের জবাবের পর ডাকসু ও বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যা লিখলেন শশী থারুর

জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস, বিপক্ষে ভোট দিল যারা

উপদেষ্টা পরিষদের ভেতরে মাহফুজকে হত্যার মৌন সম্মতি তৈরি করা হয়েছে: নাহিদ

রপ্তানিতে দ্বিতীয় থেকে ১০ নম্বরে নামল চিংড়ি

২০ শতাংশ অতিরিক্ত ভোটার কারা, প্রশ্ন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তারের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত