Ajker Patrika

জার্মানিতে ‘নিরামিষ’ মাংস নিয়ে বিতর্ক

ডয়চে ভেলে
জার্মানিতে ‘নিরামিষ’ মাংস নিয়ে বিতর্ক

গোটা বিশ্বে যেভাবে বিশাল আকারে মাংস খাওয়ার চল দেখা যাচ্ছে, তা শরীর-স্বাস্থ্যের সঙ্গে পরিবেশেরও ক্ষতি করছে। জার্মানিতে প্রকৃত মাংসের বদলে ‘ভিগান’ বিকল্প জনপ্রিয় করার নানা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। 

জার্মানির ডানিয়েল কিস সসেজ তৈরি করেন। তবে যে সে সসেজ নয়। তার সসেজে কোনো মাংস নেই, পুরোপুরি ভিগান। জার্মানির অনেক মানুষের কাছে সেটাই একটা সমস্যা।

ডানিয়েল বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু কটু মন্তব্য পেয়েছি। অনেকে আমাদের দ্রুত বিনাশ কামনা করেছেন। অনেকে চেয়েছেন, আমাদের গোটা কোম্পানি যেন বন্ধ হয়ে যায়, বা কেউ সেটা ধ্বংস করে দেয়।’

জার্মানি মাংসের দেশ হিসেবে পরিচিত হওয়ায় এমন উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। শূকরের মাংসের নানা রূপ ও কারি সসেজ চিরায়ত পদের মধ্যে পড়ে। অনেকের ভয়, তাদের কাছ থেকে সেই সব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভিগান বিকল্প কি সত্যি জার্মান জীবনযাত্রার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে?

ড্রেসডেন শহরে ‘ভেগান কসাইখানা’ নজর আকর্ষণ করছে। সেখানে এমন সব বিকল্প পাওয়া যায়, যা মাংসের প্রয়োজন মেটাতে পারে। সে কারণে অনলাইনে অনেক প্রশংসার পাশাপাশি হুমকি ও গালিগালাজও শোনা গেছে।

নিল্স স্টাইগার ও তার সহযোগীরা কিন্তু মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে চান না। মাংস ছাড়াও বিকল্প খাদ্যতালিকা যে সম্ভব, শুধু সেটাই তারা তুলে ধরতে চান। নিল্স বলেন, ‘আমি নিজে পাঁচ বছর আগে ভিগান হয়েছি। আগে বেশি মাংস খাবার কারণে আমি পরিচিত ছিলাম। আমি বন্ধুদের সঙ্গে বারবিকিউ করতাম এবং মাংসের স্বাদ খুব উপভোগ করতাম। আমি এখনো সেই স্বাদ পছন্দ করি। শুধু মাংস ছাড়া। আমি চাই না, সে কারণে প্রাণী হত্যা হোক বা কৃষিজমি ব্যবহার করা হোক।’

জার্মানিতে মাংস খাওয়ার প্রবণতা কমেই চলেছে। ২০২২ সালে দেশটিতে বছরে মাথাপিছু ‘মাত্র’ ৫২ কিলোগ্রাম মাংস খাওয়া হয়েছে। ১৯৮৯ সালের পর যা সবচেয়ে কম হার। কম মাংস খাওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় ১৫ শতাংশের জন্য পশু কেন্দ্রিক শিল্পক্ষেত্র দায়ী।

কোম্পানির রন্ধন বিষয়ের প্রধান হিসেবে ডানিয়েল কিস মূলত ভালো রান্না করতে চান। মাংসের স্বাদ নকল করা মোটেই কঠিন নয়। তার জন্য বিশেষ মসলা রয়েছে। সঠিক টেক্সচার সৃষ্টি করাই আসল চ্যালেঞ্জ।

ডানিয়েল বলেন, ‘আমি যখন সবাইকে বলি গুলাশ রান্না করছি, তখন সেই পদের মধ্যে ছোটবেলায় মা বা দাদি-নানির রান্নার স্বাদ কিছুটা হলেও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করতে হয়। তা ছাড়া সসেজ খাওয়ার সময় কার্টিলেজে কামড় দেওয়ার মতো অনুভূতি পেতে হবে। অথবা স্টেক খাওয়ার সময়েও মাংসের মতো স্বাদ পেলে ভালো হয়।’

বার্লিনেও ২০১৭ সাল থেকে এক ভিগান মাংসের দোকান রয়েছে। সেখানেও উত্তেজনা কম নয়। মালিক পাউল পলিঙার বলেন, ‘আমরা নাকি এই পেশাকে অপবিত্র ও অসম্মান করছি, এমন সব কথা শুনতে পাই।’

তবে ড্রেসডেনের ‘ভিগান’ মাংসের দোকানের তুলনায় তাদের উদ্দেশ্য আলাদা। তারা মাংস ও সসেজের মৌলিক স্বাদ অনুকরণের চেষ্টা না করে একেবারে নিজস্ব স্বাদ ও পণ্যের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছেন।

পাউল বলেন, ‘আমাদের কাছে স্বাদই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা কিছু সৃষ্টির সময় খতিয়ে দেখি, নিজেরাই সেই স্বাদ উপভোগ করছি কি না।’

জার্মানির মতো মাংসপ্রধান দেশেও চিরায়ত সসেজের বিকল্প দেখা যাচ্ছে। একবার চেখে দেখলে ক্ষতি কী?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত