Ajker Patrika

ইউক্রেন যুদ্ধে বন্ধ দেশি-বিদেশি কোম্পানি দখল করে রাশিয়ার ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়

অনলাইন ডেস্ক
মস্কো বিজনেস সিটি সেন্টারের সামনে একজন নারী। ছবি: সংগৃহীত
মস্কো বিজনেস সিটি সেন্টারের সামনে একজন নারী। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া গত তিন বছরে প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ দখল করেছে, যা দেশটির যুদ্ধকালীন অর্থনৈতিক কাঠামোর নাটকীয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। একে গবেষকেরা বলছেন, ‘ফোর্ট্রেস রাশিয়া’ মডেলের উত্থান। গবেষণা সংস্থা ও মস্কোভিত্তিক আইন ফার্ম এনএসপির গবেষণার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে, বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এনএসপি বলছে, ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বহু প্রতিষ্ঠান তাদের সম্পদ হারিয়েছে, যা মূলত রাষ্ট্রীয় দখলের মাধ্যমে হয়েছে। ইউক্রেন আক্রমণের পর রাশিয়ায় ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে হাজারের বেশি পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে রয়েছে ম্যাকডোনাল্ডস, মার্সিডিজ বেঞ্জের মতো জায়ান্ট কোম্পানিগুলো। কেউ কেউ নিজেদের শাখা রুশ ম্যানেজারদের কাছে হস্তান্তর করেছে, কেউ আবার কোনো ধরনের আর্থিক বিনিময় ছাড়াই সম্পদ ছেড়ে গেছে।

এরই মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একাধিক ডিক্রি স্বাক্ষর করেছেন, যার মাধ্যমে পশ্চিমা কোম্পানির সম্পদ দখলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় জার্মানির ইউনিপার ও ডেনমার্কের কার্লসবার্গ-এর মতো প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে শুধু বিদেশি প্রতিষ্ঠান নয়, দেশীয় অনেক বড় কোম্পানিরও মালিকানা রাষ্ট্র দখল করেছে। কেউ কেউ দুর্নীতির অভিযোগে, কেউ কৌশলগত সম্পদের অজুহাতে, আবার কেউ ‘ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা’র দায়ে সম্পদ হারিয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রাশিয়ার স্বর্ণ উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান উজুরালজোলোটোর (Uzhuralzoloto) কথা। এই প্রতিষ্ঠানটির ওপর এখন রাষ্ট্র মালিকানা দাবি করছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বিনিয়োগকারী বিলিয়নিয়ার কনস্তানতিন স্ত্রুকভ আছেন রাষ্ট্রের নজরে।

রুশ সংবাদপত্র কমারসান্ত তাদের প্রতিবেদনে একে ‘ফোর্ট্রেস রাশিয়া’ অর্থনীতি বলে উল্লেখ করেছে। এই ‘ফোর্ট্রেস রাশিয়া’ অর্থনীতি এমন একটি মডেল, যেখানে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রের ভূমিকা শক্তিশালী হয়েছে, আর ব্যবসায়িক স্বাধীনতা কমেছে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯১ সালে রাশিয়ায় মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ৯০ দশকে ব্যাপক দুর্নীতি, আর্থিক বিশৃঙ্খলা ও মাফিয়াচক্র এই আশাকে ম্লান করে দেয়।

পুতিন প্রথমবার ক্ষমতায় এসে কিছু মুক্ত অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে ২০০ বিলিয়ন ডলার আকারের অর্থনীতি ২০০৮ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলারে। তবে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল এবং তৎপরবর্তী পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে বড় ধাক্কা দেয়। ২০২৪ সালে রাশিয়ার জিডিপি ছিল ২.২ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক ছোট।

পুতিন দাবি করছেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে নিজস্ব শিল্প গড়ে তুলতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, পশ্চিমের বিশ্বায়নের পুরোনো মডেলের পরিবর্তে রাশিয়ার দরকার ‘নতুন উন্নয়ন মডেল’। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই মডেলের ফলে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে, আর বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের ভয়ের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত

ট্রাম্পের গোপন অডিও ফাঁস: মস্কো-বেইজিংয়ে বোমা মারার হুমকি পুতিন ও সিকে

চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের স্বার্থ মিলে গেলে ভারতের নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি হতে পারে: জেনারেল অনিল চৌহান

নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

অতিরিক্ত কসমেটিকস আনলেন বিমানবালা, মুচলেকা দিয়ে ছাড়া

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত