Ajker Patrika

গাজা যুদ্ধবিরতির পথে আরেক ধাপ অগ্রগতি, ১০ জিম্মি মুক্তি দিতে চায় হামাস

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, ০৯: ০৯
হামাস আরও ১০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে হামাস। ছবি: আনাদোলু
হামাস আরও ১০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে হামাস। ছবি: আনাদোলু

ফিলিস্তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের পথে আরেক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মিমুক্তির বিষয়ে সদিচ্ছা প্রকাশের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ১০ জিম্মিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে। তবে গোষ্ঠীটি সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলের ‘অনড়’ অবস্থান যুদ্ধবিরতির আলোচনাকে ‘কঠিন’ করে তুলবে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, হামাস জানিয়েছে—অবরুদ্ধ ও বোমাবর্ষণে ক্ষতবিক্ষত গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির উদ্দেশ্যে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে তারা ১০ ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। তবে গোষ্ঠীটি সতর্ক করে বলেছে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনাগুলো ‘কঠিন’ হয়ে উঠেছে ইসরায়েলের ‘অনড় মনোভাবের’ কারণে।

গতকাল বুধবার হামাস এই অবস্থান জানিয়েছে। এদিনও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় অন্তত ৭৪ জন নিহত হয়েছে। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের আশা প্রকাশ করেন যে, শিগগিরই যুদ্ধবিরতি হতে পারে।

হামাস জানিয়েছে, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলা আলোচনায় বেশ কয়েকটি জটিল ইস্যু রয়েছে। এর মধ্যে আছে—গাজায় জরুরি ত্রাণ সহায়তা প্রবাহ, ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য বিশ্বাসযোগ্য নিশ্চয়তা। হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা তাহের আল-নুনু বলেন, তারা সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে এবং ‘আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে, গণহত্যা বন্ধ করতে এবং সম্মানজনকভাবে ত্রাণ পৌঁছাতে’ প্রয়োজনীয় নমনীয়তা দেখিয়েছে, যতক্ষণ না যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হয়।

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ইসরায়েলি বাহিনী কোন এলাকায় ফিরে যাবে, তা এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে ফিলিস্তিনিদের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং তা দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার পথ তৈরি করে দেয়।

এর আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির ‘খুব ভালো সম্ভাবনা’ রয়েছে, যদিও তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্যে আগের মতো জোরালো আশাবাদ দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই সপ্তাহ বা আগামী সপ্তাহে আমরা একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি। তবে কিছুই নিশ্চিত নয়। যুদ্ধ, গাজা কিংবা বাকি জায়গাগুলোয় কোনো কিছুই নিশ্চিত না।’

ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক প্যাটি কালহেইন জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন যতটা আশাবাদী, ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুর সফরের আগমুহূর্তে তিনি যতটা জোর দিয়ে যুদ্ধবিরতির কথা বলছিলেন, এখন আর ততটা বলছেন না। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা বলছেন, এখন একটিমাত্র বিষয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু হামাস বলছে, এটা ভুল তথ্য। তারা এখনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা চায়, চায় সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে—ইসরায়েলি বাহিনী কোথা থেকে সরে যাবে, আর কে মানবিক সহায়তা বিতরণ করবে। হামাসের মতে, আলোচনা এখনো অনেক দূরে।’

এদিকে, ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, যুদ্ধবিরতির জন্য এখন ‘সুযোগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে’, যার আওতায় ১০ জন জীবিত বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ৯ জনের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হলেও গত বুধবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা অব্যাহত রাখে। এতে অন্তত ৭৪ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে ৮ জন প্রাণ হারায় খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষা করার সময়। ওই কেন্দ্র পরিচালনা করে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত