Ajker Patrika

দক্ষিণ কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের পোষা কুকুর বললেন কিম জং উনের বোন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১২: ৪৬
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং। ছবি: সংগৃহীত
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং। ছবি: সংগৃহীত

পিয়ংইয়ং কখনোই সিউলকে উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং। আজ বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের অপসারণের পর বর্তমানে দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন উদারপন্থী নেতা লি জে মিয়ং। গত জুনে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দুই কোরিয়ার সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন তিনি। সীমান্তে উত্তর কোরিয়াবিরোধী গান বাজানোসহ তাদের বিরক্ত করে এমন সব কার্যকলাপ বন্ধ করেন তিনি।

গত শুক্রবার লি জে মিয়ং এক ভাষণে বলেন যে তার সরকার উত্তর কোরিয়ার বর্তমান ব্যবস্থাকে সম্মান করে। তারা কোনো ধরনের শত্রুতামূলক কাজ করবে না বলেও ঘোষণা দেন তিনি। কিন্তু কিম ইয়ো জং দাবি করেন, সিউলের এই শান্তির পদক্ষেপগুলোর মোটেই এমন সাধারণ নয়। এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে বলেই মনে করেন তিনি। তার ভাষ্য—লোক দেখানোর জন্য এসব করছে দক্ষিণ কোরিয়া। দুই কোরিয়ার শীতল সম্পর্কের জন্য যাতে উত্তর কোরিয়াকে দোষী হিসেবে উপস্থাপন করা যায় তা-ই তাদের আসল উদ্দেশ্য।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে কিম ইয়ো জং বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক কোনো দিনই স্বাভাবিক হবে না। তিনি দক্ষিণ কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিশ্বস্ত কুকুর’ বলেও অভিহিত করেন। বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াই সবচেয়ে ক্ষতিকর। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পোষা কুকুর। দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের ‘বেপরোয়া’ সামরিক মহড়াগুলো সিউলের বৈরী মনোভাবের প্রমাণ। তাদের বিরুদ্ধে যত দ্রুত সম্ভব যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

একসময় উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ছাড় আদায়ের জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলেছে রাজনৈতিক পট। এখন দক্ষিণ কোরিয়াকে যে কোনো আন্তর্জাতিক অর্জনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দেখে উত্তর কোরিয়া। গত বছর দক্ষিণ কোরিয়াকে চিরশত্রু ঘোষণারও নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিম ইয়ো জং-এর সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সিউল-পিয়ংইয়ং সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তবে, দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রণালয় এ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং-এর সরকার শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রাখবে এবং দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে সম্পর্ক পুনর্গঠনের আহ্বান জানাবে।

সিউলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক কিম ডং-ইয়ুব বলেছেন, কিম ইয়ো জং-এর মন্তব্য আসলে প্রেসিডেন্ট লির সাম্প্রতিক শান্তি-বক্তব্যের জবাব, যা কার্যত আলোচনা ও পুনর্মিলনের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে।

এর আগে গত সোমবার, কিম জং উন দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি পারমাণবিক সক্ষমতাসম্পন্ন নতুন যুদ্ধজাহাজ পরিদর্শনের সময় ঘোষণা দেন, উত্তর কোরিয়া দ্রুত তাদের পারমাণবিক শক্তি বিস্তারের পথে অগ্রসর হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন পিয়ংইয়ং-মস্কো সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করেছে। ইতিমধ্যেই উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে হাজার হাজার সেনা ও বিপুল সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। এই ঘনিষ্ঠতার প্রভাবে পিয়ংইয়ং এখন কোরীয় উপদ্বীপের বাইরেও আন্তর্জাতিক বিষয়ে বেশি সরব হয়ে উঠেছে। মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত থেকে শুরু করে তাইওয়ান প্রণালির টানাপোড়েন—প্রায় সব ক্ষেত্রেই তারা মতামত প্রকাশ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ: অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কিশোরীর মৃত্যুর অভিযোগ, দুই যুবক আটক

গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় মর‍াল এফেক্ট পড়েছে, তবে সেনাবাহিনী ন্যায়ের পক্ষে অটল: সেনাসদর

ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে: সেনাসদর

বিয়ের আংটি পরলেন ইশরাক

দূতাবাসে আফগানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে নারীদের বাধা, ‘কোনো ভূমিকা নেই’ বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত